ডাকসু নির্বাচনের ভোট গণনার মধ্যে নীলক্ষেত, শাহবাগ ও চানখারপুল এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনা শুরু হয়। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে ৫টার পর মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আবিদসহ ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের একাংশ।
আবিদ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এসব সন্ত্রাসী অবস্থান থেকে মুক্ত করুন। এ ধরণের যুদ্ধাংদেহী অবস্থান, আমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আশা করি না।”
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়। এ সময় চারটি প্যানেলের পক্ষ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ওঠে। ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের দুই প্রার্থীর ব্যালটে আগে থেকে টিক দেওয়া থাকার অভিযোগে টিএসসিতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করে ছাত্রদল।
বিকালে সংবাদ সম্মেলনে আবিদ অভিযোগ করে বলেন, “প্রশাসন তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছে না, তা আজকের ডাকসু নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। অনেক সাংবাদিক আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমাদের কোনো অভিযোগ আছে কিনা। আমি বলেছি, আমরা অভিযোগের রাজনীতিতে ফিরতে চাই না, আমরা সামনে এগোতে চাই। আমরা ভেবেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে যেমনভাবে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করা হয়েছে, তেমনভাবেই অপরাজনীতিকেও বিতাড়িত করা হয়েছে।”
নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানো হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আজকে সকাল থেকে প্রচার করা হয়েছে, আমি নাকি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পর্যন্ত বিভ্রান্ত করা হয়েছে। কিন্তু গঠনতন্ত্র পড়লে দেখা যায়, এটা মিথ্যা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে আমাদের কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।”
আবিদ বলেন, “প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে যাওয়াটা নিয়ম লঙ্ঘন নয়। আগের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি, জিএস প্রার্থীরা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, তাদের পরিচয়পত্রও ছিল। কিন্তু এবার আমরা যখন কেন্দ্রে গিয়েছি, তখন আমাদের এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে, সময় নষ্ট করা হয়েছে।”
রোকেয়া হলে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি ও জিএস পদপ্রার্থী সাদিক কায়েম এবং ফরহাদের নামে আগে থেকেই ব্যালটে ক্রস দেওয়া ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। “রোকেয়া হলের একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে, তাকে যে ব্যালটপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে আগে থেকেই ক্রস দেওয়া ছিল। অমর একুশে হলেও একই ঘটনা ঘটেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা নিজেরাও বলেছেন—এটা কীভাবে হয়েছে তারা জানেন না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি না কত ব্যালটে ক্রস চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। যেহেতু দুটি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছি, তাই এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে। অমর একুশে হলের ঘটনায় একজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগও তোলেন আবিদ। তিনি বলেন, “আমরা ঘুরে দেখেছি, অনেক বহিরাগত এসেছেন। কেউ বলছে কুড়িগ্রাম থেকে এসেছে, কেউ বলছে সে এলাকার নেতা। জামায়াতের অনেক নেতা আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। প্রক্টর আমাদের পোলিং এজেন্ট দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন, কিন্তু নিরাপত্তা পাসের নামে জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রবেশ করিয়েছেন। এটা কোনোভাবেই বরদাশতযোগ্য নয়।”
রোকেয়া হলের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। “আমাদের সহকারী প্রক্টর মনামী ম্যাম আমাদের প্রার্থী সূচনাকে বলেছেন, ‘তোমার ছাত্রত্ব কীভাবে থাকে আমি দেখে নেব।’ ম্যাডামের এ ধরনের হিংস্র আচরণ করার প্রয়োজন ছিল না। রোকেয়া হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েও আমি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আমরা শুরুতে অভিযোগ করতে চাইনি, গণতন্ত্র অনুভব করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যখন এসব ঘটনা চলতে থাকে, তখন চুপ থাকা যায় না।”
আবিদ আরও বলেন, “দুই কেন্দ্রে কারচুপি হয়েছে ধরে নিতে পারি। এমন আরও হয়েছে। আমরা এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তবে যদি ভোট গণনায় কারসাজির চেষ্টা হয়, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।”
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ডাকসু নির্বাচনের ভোট গণনার মধ্যে নীলক্ষেত, শাহবাগ ও চানখারপুল এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনা শুরু হয়। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে ৫টার পর মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আবিদসহ ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের একাংশ।
আবিদ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এসব সন্ত্রাসী অবস্থান থেকে মুক্ত করুন। এ ধরণের যুদ্ধাংদেহী অবস্থান, আমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আশা করি না।”
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়। এ সময় চারটি প্যানেলের পক্ষ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ওঠে। ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের দুই প্রার্থীর ব্যালটে আগে থেকে টিক দেওয়া থাকার অভিযোগে টিএসসিতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করে ছাত্রদল।
বিকালে সংবাদ সম্মেলনে আবিদ অভিযোগ করে বলেন, “প্রশাসন তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছে না, তা আজকের ডাকসু নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। অনেক সাংবাদিক আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমাদের কোনো অভিযোগ আছে কিনা। আমি বলেছি, আমরা অভিযোগের রাজনীতিতে ফিরতে চাই না, আমরা সামনে এগোতে চাই। আমরা ভেবেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে যেমনভাবে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করা হয়েছে, তেমনভাবেই অপরাজনীতিকেও বিতাড়িত করা হয়েছে।”
নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানো হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আজকে সকাল থেকে প্রচার করা হয়েছে, আমি নাকি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পর্যন্ত বিভ্রান্ত করা হয়েছে। কিন্তু গঠনতন্ত্র পড়লে দেখা যায়, এটা মিথ্যা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে আমাদের কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।”
আবিদ বলেন, “প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে যাওয়াটা নিয়ম লঙ্ঘন নয়। আগের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি, জিএস প্রার্থীরা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, তাদের পরিচয়পত্রও ছিল। কিন্তু এবার আমরা যখন কেন্দ্রে গিয়েছি, তখন আমাদের এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে, সময় নষ্ট করা হয়েছে।”
রোকেয়া হলে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি ও জিএস পদপ্রার্থী সাদিক কায়েম এবং ফরহাদের নামে আগে থেকেই ব্যালটে ক্রস দেওয়া ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। “রোকেয়া হলের একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে, তাকে যে ব্যালটপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে আগে থেকেই ক্রস দেওয়া ছিল। অমর একুশে হলেও একই ঘটনা ঘটেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা নিজেরাও বলেছেন—এটা কীভাবে হয়েছে তারা জানেন না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি না কত ব্যালটে ক্রস চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। যেহেতু দুটি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছি, তাই এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে। অমর একুশে হলের ঘটনায় একজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগও তোলেন আবিদ। তিনি বলেন, “আমরা ঘুরে দেখেছি, অনেক বহিরাগত এসেছেন। কেউ বলছে কুড়িগ্রাম থেকে এসেছে, কেউ বলছে সে এলাকার নেতা। জামায়াতের অনেক নেতা আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। প্রক্টর আমাদের পোলিং এজেন্ট দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন, কিন্তু নিরাপত্তা পাসের নামে জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রবেশ করিয়েছেন। এটা কোনোভাবেই বরদাশতযোগ্য নয়।”
রোকেয়া হলের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। “আমাদের সহকারী প্রক্টর মনামী ম্যাম আমাদের প্রার্থী সূচনাকে বলেছেন, ‘তোমার ছাত্রত্ব কীভাবে থাকে আমি দেখে নেব।’ ম্যাডামের এ ধরনের হিংস্র আচরণ করার প্রয়োজন ছিল না। রোকেয়া হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েও আমি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আমরা শুরুতে অভিযোগ করতে চাইনি, গণতন্ত্র অনুভব করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যখন এসব ঘটনা চলতে থাকে, তখন চুপ থাকা যায় না।”
আবিদ আরও বলেন, “দুই কেন্দ্রে কারচুপি হয়েছে ধরে নিতে পারি। এমন আরও হয়েছে। আমরা এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তবে যদি ভোট গণনায় কারসাজির চেষ্টা হয়, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।”