alt

জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা তিন শিক্ষকের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছাত্রদলের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তিন শিক্ষক। নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এ শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।

গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে ভোট গণণার জন্য যে মেশিনটি আনার কথা ছিল, এবং যে ব্যালট ছাপানো হয়েছে, সেটা প্রমাণ সহকারে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসছে—সেটা জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো হয়েছে।”

প্রমাণ পেয়ে নির্বাচন কমিশন মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণণা থেকে সরে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়েছে যে কোম্পানির মাধ্যমে তারা ব্যালট পেপার ছাপিয়েছেন, ভোট গণনার দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ছিল। কারচুপি করার জন্য বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, অতিরিক্ত ব্যালট ছাপিয়ে এনে গোপনে তারা হয়তোবা এভাবে ভোটাধিক্য দেখিয়ে জয়লাভ করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে ছেলেদের হলগুলোতে বিশেষ করে তাজউদ্দিন হল, কবি নজরুল হল, এছাড়া ১৫ নম্বর ছাত্রী হল, খালেদা জিয়া হল, জাহানারা ইমাম হলসহ প্রায় সব হলে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ছিল।

“একটা বিশেষ দলের-বিশেষ গোষ্ঠীর যেরকম উগ্রপন্থী আচরণ ছিল, সে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর মধ্যে নির্বাচন বর্জন করেছে। সেজন্য আমরা শিক্ষকরাও যে দায়িত্ব পালন করছিলাম তা থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”

অধ্যাপক শামিমা সুলতানা বলেন, “এখানে নানান ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আমরা গতকাল থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম, আপনারা ফেসবুকে দেখেছেন—অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। কেন অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হলো, নিশ্চয়ই এটার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।”

নির্বাচনের সময় নতুন নতুন ভোটার তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“আমাদের মনে হয়েছে আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেটা একটা সাজানো নাটক। এই নাটক থেকে আমাদের সরে আসা দরকার, তাই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আছে যাদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠেনি, যাদের এক্সিস্টিং ছাত্র-ছাত্রী। এটা কেন হলো—এসব প্রশ্নের প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে।”

বুধবার রাত থেকে অনেকগুলো বিষয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেকগুলো অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারপরও আমাদের অনুরোধগুলোকে কর্ণপাত করা হয়নি। আমি যখন কলমের কালি (অমোছনীয় কালি) নিয়ে অভিযোগ করেছি, যারা দায়িত্বে আছেন তারা এটাকে হালকাভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি এটা কোনোভাবেই হালকাভাবে দেখা সম্ভব না। নির্বাচন সেটা যত বড় বা ছোট জায়গাতেই হোক সেটা সুষ্ঠু হতে হবে, একটা জাল ভোটও যাতে এ ক্যাম্পাসে না পড়ে।”

নির্বাচন বর্জন করার কারণ হিসেবে অধ্যাপক নাহরিন বলেন, “আমরা যারা দায়িত্বে আছি, আমরা মনে করি, এই দায়িত্বে থাকা মানে আমাদের নিজেদের কাছে জবাবদিহিতা নাই। আমরা যদি নির্বাচনে এ রকম প্রহসন দেখেও নির্বাচনের সাথে থাকি তাহলে কোনোভাবেই আমার বিবেকের কাছে জবাব দিতে পারব না।”

এ সময় পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকা যেসব ছাত্রী অনিয়মের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদের প্রশংসাও করেন এই শিক্ষক। তবে কতজন শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্ব বর্জন করেছেন সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলেও কোনো সংখ্যা তিনি বলেননি।

ছবি

চবিতে ৯ শিক্ষার্থীর অনশন: ৭ দাবি

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের ‘টেস্ট’ ছিল ডাকসু: প্রেস সচিব

ছবি

নানা অভিযোগ নিয়ে জাকসু নির্বাচন সম্পন্ন

জাকসু নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৭.৭৬ শতাংশ, প্রত্যাশার তুলনায় উপস্থিতি কম

ছবি

জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন, বিশৃঙ্খলা-অনিয়মের অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হল ভোট

ছবি

জাকসু: ভোট বর্জন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি চার প্যানেলের

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু ও হল সংসদের ভোট শেষ

জাকসু: আরও দুই সংগঠনের ভোট বর্জনের ঘোষণা, অভিযোগ ‘ব্যাপক অনিয়মের’

ছবি

জাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ বামপন্থী ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের

ছবি

জাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভোট জালিয়াতি ও বিভ্রান্তির অভিযোগ

ছবি

জাকসু: শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলে ভোট স্থগিত, ছাত্রদল নেতা আটক

ছবি

জাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভোট জালিয়াতি ও বিভ্রান্তির অভিযোগ

ছবি

জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা ছাত্রদলের

ছবি

জাকসুর ব্যালট-মেশিন ‘জামায়াতের কোম্পানির’, পক্ষপাতের অভিযোগ ছাত্রদলের

ছবি

জাকসু: দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি

ছবি

ছাত্রদলের অভিযোগ, জাকসু নির্বাচনে ভোট হাতে গণনার সিদ্ধান্ত

ছবি

জাবি জাকসু নির্বাচনে ‘শিবিরকে জেতাতে নীল নকশা’, অভিযোগ ছাত্রদল প্রার্থীর

ছবি

জাকসু:অনিয়মের অভিযোগ, সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন ছাত্রশিবির ভিপি প্রার্থী

ছবি

জাকসু: ভোট শুরু, উপস্থিতি কম

ছবি

জাকসুর ভোটের আগের রাতে নাটকীয়তা: কমিশন কার্যালয়ে বহিরাগত, সাংবাদিক হয়রানি

জাকসু নির্বাচন: বিতর্ক ও অভিযোগ

ছবি

জাকসু: ভোট বৃহস্পতিবার, উৎসবের পরিবেশে শঙ্কা, অভিযোগ

ছবি

পরিকল্পিত কারচুপির অভিযোগ অনেকের

ছবি

হল সংসদে স্বতন্ত্রদের জয়-জয়কার, অনেকেই শিবির সমর্থিত

ছবি

ডাকসু: সবাইকে অবাক করে ছাত্র শিবিরের বিপুল জয়

ছবি

রাকসু নির্বাচন: সাবেক সমন্বয়কদের ঘোষণা ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল

ছবি

জাকসু নির্বাচন: অমর্ত্যর প্রার্থিতা বাতিলে আদালতের রায়ের পর উত্তেজনা

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: ফল প্রত্যাখ্যান করলেন আবিদ, সুষ্ঠু অনুসন্ধানের আশা

ছবি

জাকসু: ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের শঙ্কা

ছবি

জাকসু নির্বাচন: প্রচারণার শেষ মুহূর্তে কী হলো

ছবি

জাকসু: উৎসবে মুখর জাহাঙ্গীরনগর, কাল ভোট

ছবি

এ জয় জুলাই প্রজন্মের: সাদিক কায়েম

ছবি

ডাকসুর ২৮ পদে শিবিরের দাপট, স্বতন্ত্র ও বামপন্থীদেরও জয়

ছবি

বয়কট! বয়কট! ডাকসু বর্জন করলাম: উমামা ফাতেমা

ছবি

ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে আলোচিত প্রার্থীদের ভোটের হিসাব

ছবি

ডাকসু: বিপুল ভোটে জয় শিবিরের সাদিক-ফরহাদের

tab

news » campus

জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা তিন শিক্ষকের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছাত্রদলের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তিন শিক্ষক। নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এ শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।

গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে ভোট গণণার জন্য যে মেশিনটি আনার কথা ছিল, এবং যে ব্যালট ছাপানো হয়েছে, সেটা প্রমাণ সহকারে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসছে—সেটা জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো হয়েছে।”

প্রমাণ পেয়ে নির্বাচন কমিশন মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণণা থেকে সরে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়েছে যে কোম্পানির মাধ্যমে তারা ব্যালট পেপার ছাপিয়েছেন, ভোট গণনার দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ছিল। কারচুপি করার জন্য বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, অতিরিক্ত ব্যালট ছাপিয়ে এনে গোপনে তারা হয়তোবা এভাবে ভোটাধিক্য দেখিয়ে জয়লাভ করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে ছেলেদের হলগুলোতে বিশেষ করে তাজউদ্দিন হল, কবি নজরুল হল, এছাড়া ১৫ নম্বর ছাত্রী হল, খালেদা জিয়া হল, জাহানারা ইমাম হলসহ প্রায় সব হলে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ছিল।

“একটা বিশেষ দলের-বিশেষ গোষ্ঠীর যেরকম উগ্রপন্থী আচরণ ছিল, সে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর মধ্যে নির্বাচন বর্জন করেছে। সেজন্য আমরা শিক্ষকরাও যে দায়িত্ব পালন করছিলাম তা থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”

অধ্যাপক শামিমা সুলতানা বলেন, “এখানে নানান ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আমরা গতকাল থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম, আপনারা ফেসবুকে দেখেছেন—অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। কেন অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হলো, নিশ্চয়ই এটার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।”

নির্বাচনের সময় নতুন নতুন ভোটার তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“আমাদের মনে হয়েছে আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেটা একটা সাজানো নাটক। এই নাটক থেকে আমাদের সরে আসা দরকার, তাই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আছে যাদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠেনি, যাদের এক্সিস্টিং ছাত্র-ছাত্রী। এটা কেন হলো—এসব প্রশ্নের প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে।”

বুধবার রাত থেকে অনেকগুলো বিষয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেকগুলো অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারপরও আমাদের অনুরোধগুলোকে কর্ণপাত করা হয়নি। আমি যখন কলমের কালি (অমোছনীয় কালি) নিয়ে অভিযোগ করেছি, যারা দায়িত্বে আছেন তারা এটাকে হালকাভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি এটা কোনোভাবেই হালকাভাবে দেখা সম্ভব না। নির্বাচন সেটা যত বড় বা ছোট জায়গাতেই হোক সেটা সুষ্ঠু হতে হবে, একটা জাল ভোটও যাতে এ ক্যাম্পাসে না পড়ে।”

নির্বাচন বর্জন করার কারণ হিসেবে অধ্যাপক নাহরিন বলেন, “আমরা যারা দায়িত্বে আছি, আমরা মনে করি, এই দায়িত্বে থাকা মানে আমাদের নিজেদের কাছে জবাবদিহিতা নাই। আমরা যদি নির্বাচনে এ রকম প্রহসন দেখেও নির্বাচনের সাথে থাকি তাহলে কোনোভাবেই আমার বিবেকের কাছে জবাব দিতে পারব না।”

এ সময় পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকা যেসব ছাত্রী অনিয়মের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদের প্রশংসাও করেন এই শিক্ষক। তবে কতজন শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্ব বর্জন করেছেন সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলেও কোনো সংখ্যা তিনি বলেননি।

back to top