ছাত্রদলের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তিন শিক্ষক। নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এ শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।
গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে ভোট গণণার জন্য যে মেশিনটি আনার কথা ছিল, এবং যে ব্যালট ছাপানো হয়েছে, সেটা প্রমাণ সহকারে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসছে—সেটা জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো হয়েছে।”
প্রমাণ পেয়ে নির্বাচন কমিশন মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণণা থেকে সরে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়েছে যে কোম্পানির মাধ্যমে তারা ব্যালট পেপার ছাপিয়েছেন, ভোট গণনার দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ছিল। কারচুপি করার জন্য বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, অতিরিক্ত ব্যালট ছাপিয়ে এনে গোপনে তারা হয়তোবা এভাবে ভোটাধিক্য দেখিয়ে জয়লাভ করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে ছেলেদের হলগুলোতে বিশেষ করে তাজউদ্দিন হল, কবি নজরুল হল, এছাড়া ১৫ নম্বর ছাত্রী হল, খালেদা জিয়া হল, জাহানারা ইমাম হলসহ প্রায় সব হলে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ছিল।
“একটা বিশেষ দলের-বিশেষ গোষ্ঠীর যেরকম উগ্রপন্থী আচরণ ছিল, সে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর মধ্যে নির্বাচন বর্জন করেছে। সেজন্য আমরা শিক্ষকরাও যে দায়িত্ব পালন করছিলাম তা থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”
অধ্যাপক শামিমা সুলতানা বলেন, “এখানে নানান ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আমরা গতকাল থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম, আপনারা ফেসবুকে দেখেছেন—অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। কেন অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হলো, নিশ্চয়ই এটার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।”
নির্বাচনের সময় নতুন নতুন ভোটার তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
“আমাদের মনে হয়েছে আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেটা একটা সাজানো নাটক। এই নাটক থেকে আমাদের সরে আসা দরকার, তাই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আছে যাদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠেনি, যাদের এক্সিস্টিং ছাত্র-ছাত্রী। এটা কেন হলো—এসব প্রশ্নের প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে।”
বুধবার রাত থেকে অনেকগুলো বিষয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেকগুলো অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারপরও আমাদের অনুরোধগুলোকে কর্ণপাত করা হয়নি। আমি যখন কলমের কালি (অমোছনীয় কালি) নিয়ে অভিযোগ করেছি, যারা দায়িত্বে আছেন তারা এটাকে হালকাভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি এটা কোনোভাবেই হালকাভাবে দেখা সম্ভব না। নির্বাচন সেটা যত বড় বা ছোট জায়গাতেই হোক সেটা সুষ্ঠু হতে হবে, একটা জাল ভোটও যাতে এ ক্যাম্পাসে না পড়ে।”
নির্বাচন বর্জন করার কারণ হিসেবে অধ্যাপক নাহরিন বলেন, “আমরা যারা দায়িত্বে আছি, আমরা মনে করি, এই দায়িত্বে থাকা মানে আমাদের নিজেদের কাছে জবাবদিহিতা নাই। আমরা যদি নির্বাচনে এ রকম প্রহসন দেখেও নির্বাচনের সাথে থাকি তাহলে কোনোভাবেই আমার বিবেকের কাছে জবাব দিতে পারব না।”
এ সময় পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকা যেসব ছাত্রী অনিয়মের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদের প্রশংসাও করেন এই শিক্ষক। তবে কতজন শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্ব বর্জন করেছেন সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলেও কোনো সংখ্যা তিনি বলেননি।
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছাত্রদলের পর এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তিন শিক্ষক। নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত এ শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।
গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে ভোট গণণার জন্য যে মেশিনটি আনার কথা ছিল, এবং যে ব্যালট ছাপানো হয়েছে, সেটা প্রমাণ সহকারে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসছে—সেটা জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক নেতার কোম্পানি থেকে ছাপানো হয়েছে।”
প্রমাণ পেয়ে নির্বাচন কমিশন মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণণা থেকে সরে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, “এতে প্রমাণিত হয়েছে যে কোম্পানির মাধ্যমে তারা ব্যালট পেপার ছাপিয়েছেন, ভোট গণনার দায়িত্ব দিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ছিল। কারচুপি করার জন্য বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, অতিরিক্ত ব্যালট ছাপিয়ে এনে গোপনে তারা হয়তোবা এভাবে ভোটাধিক্য দেখিয়ে জয়লাভ করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে ছেলেদের হলগুলোতে বিশেষ করে তাজউদ্দিন হল, কবি নজরুল হল, এছাড়া ১৫ নম্বর ছাত্রী হল, খালেদা জিয়া হল, জাহানারা ইমাম হলসহ প্রায় সব হলে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম ছিল।
“একটা বিশেষ দলের-বিশেষ গোষ্ঠীর যেরকম উগ্রপন্থী আচরণ ছিল, সে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর মধ্যে নির্বাচন বর্জন করেছে। সেজন্য আমরা শিক্ষকরাও যে দায়িত্ব পালন করছিলাম তা থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি।”
অধ্যাপক শামিমা সুলতানা বলেন, “এখানে নানান ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আমরা গতকাল থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম, আপনারা ফেসবুকে দেখেছেন—অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। কেন অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো হলো, নিশ্চয়ই এটার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।”
নির্বাচনের সময় নতুন নতুন ভোটার তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
“আমাদের মনে হয়েছে আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেটা একটা সাজানো নাটক। এই নাটক থেকে আমাদের সরে আসা দরকার, তাই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী আছে যাদের নাম ভোটার লিস্টে ওঠেনি, যাদের এক্সিস্টিং ছাত্র-ছাত্রী। এটা কেন হলো—এসব প্রশ্নের প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে।”
বুধবার রাত থেকে অনেকগুলো বিষয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেকগুলো অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারপরও আমাদের অনুরোধগুলোকে কর্ণপাত করা হয়নি। আমি যখন কলমের কালি (অমোছনীয় কালি) নিয়ে অভিযোগ করেছি, যারা দায়িত্বে আছেন তারা এটাকে হালকাভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি এটা কোনোভাবেই হালকাভাবে দেখা সম্ভব না। নির্বাচন সেটা যত বড় বা ছোট জায়গাতেই হোক সেটা সুষ্ঠু হতে হবে, একটা জাল ভোটও যাতে এ ক্যাম্পাসে না পড়ে।”
নির্বাচন বর্জন করার কারণ হিসেবে অধ্যাপক নাহরিন বলেন, “আমরা যারা দায়িত্বে আছি, আমরা মনে করি, এই দায়িত্বে থাকা মানে আমাদের নিজেদের কাছে জবাবদিহিতা নাই। আমরা যদি নির্বাচনে এ রকম প্রহসন দেখেও নির্বাচনের সাথে থাকি তাহলে কোনোভাবেই আমার বিবেকের কাছে জবাব দিতে পারব না।”
এ সময় পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকা যেসব ছাত্রী অনিয়মের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদের প্রশংসাও করেন এই শিক্ষক। তবে কতজন শিক্ষক নির্বাচনের দায়িত্ব বর্জন করেছেন সাংবাদিকরা তা জানতে চাইলেও কোনো সংখ্যা তিনি বলেননি।