ছাত্রদল ও বামপন্থি দুটি দলের ভোট বর্জন-অনাস্থা এবং বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদের ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ২১টি হলে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বড় ধরনের কোনো গোলযোগ ছাড়াই বিকাল ৫টায় শেষ হয়। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে সকালে ঢিমেতালে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। পরে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। এতে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে কোনো সমস্যা না হলেও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন।
কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৫ জন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভুল ছিল। ভোটাররা বলছেন, কার্যকরী সদস্য পদে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যালটে দেওয়া নির্দেশনায় একজনের নামের পাশে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে। পরে সেটি ব্যালট সংশোধন করা হয়।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ আসার পর জটিলতা তৈরি হলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রায় সোয়া ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুপুরে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী হল পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু তিনি হলে ঢুকতে পারেননি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসান। তারপরই জটিলতার সৃষ্টি হয়। একই কারণে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ভোটগ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
নারী ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি নারী সাংবাদিকরাও সেসব কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসবের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী। এ সময় তার পাশে প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসানও ছিলেন।
বৈশাখী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ভোটকেন্দ্র মনিটর করার জন্য জামায়াত নেতার কোম্পানি ঘিরে টেলিকাস্টসহ ভিডিও ক্যামেরা সাপ্লাই দিয়ে সিসি টিভির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে পুরো ভোটকেন্দ্র শিবিরকে মনিটর করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিজয় ব্যাহত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত শিবিরের সঙ্গে এক হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায়ের সত্যিকার প্রতিফলন ঘটছে না। তাই আমরা নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি।”
এর পর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুরাদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই অনাস্থার কথা জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শরণ এহসান।
পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা ও ছাত্রশিবিরকে ভোট জালিয়াতিতে সহযোগিতার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ প্যানেল। একই অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেলের প্রার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ঘোষণা দিয়েছেন ভোট বর্জনের।
এছাড়া নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। তারা হলেন, গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা। বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান তারা।
ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা অসংগতি ও অনিয়মের কথা বলছিলেন। কিন্তু ভোট কারচুপির সরাসরি অভিযোগ কারও ছিল না। তারা কেন্দ্রে ভোটের চেয়ে ব্যালট বেশি যাওয়া, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি ভঙ্গ করা, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা, পোলিং এজেন্টের অনুমতি থাকলেও তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডোপটেস্টের ফলাফল না আসা, নির্বাচনকে ‘ম্যানিপুলেট’ করার নানা অভিযোগ আনেন।
এর মধ্যে দুপুরের দিকে ছাত্রদলের প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ‘নীলনকশার মাধ্যমে ছাত্রশিবির জয়ী হতে পরিকল্পনা’ করছে বলে তারা মনে করছেন। পরে তাদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ব্যালট পেপার মেশিনের পরিবর্তে হাতে গোনার সিদ্ধান্ত নেয়।
নির্বাচন শেষে হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট হলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ভোট গণনা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
কার কী প্যানেল
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলে আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি এবং মো. শাকিল আলীর জিএস পদে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ছাত্রদল লড়ছে শেখ সাদী হাসান এবং তানজিলা হোসেন বৈশাখীর নেতৃত্বে।
ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে লড়বে। তাদের ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব এবং জিএস মাজহারুল ইসলাম।
বাগাছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ লড়বে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়ামের নেতৃত্বে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি লড়বেন। এই প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্যদে’ জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস-নারী পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস লড়াই করছেন।
ভোটার তথ্য
জাকসুতে এবার মোট ভোটার ১১,৮৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬১১৫, ছাত্রী ৫৭২৮। একজন ভোটার ভোট দেবেন ৪০টি করে; কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি, হল সংসদে ১৫টি পদে।
এবার জাকসু ভোটের মোট প্রার্থী ১৭৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ১৩২ জন, নারী প্রার্থী ৪৬ জন। এখানে পদের সংখ্যা ২৫টি।
মোট ২১টি হল সংসদে পদের সংখ্যা ৩১৫টি। প্রতি হলে পদ সংখ্যা ১৫টি। মোট ৪৪৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ১১ ছাত্র হলের প্রার্থী সংখ্যা ৩১৬ জন এবং ১০ ছাত্রী হলের প্রার্থী সংখ্যা ১৩১ জন।
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছাত্রদল ও বামপন্থি দুটি দলের ভোট বর্জন-অনাস্থা এবং বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদের ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ২১টি হলে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বড় ধরনের কোনো গোলযোগ ছাড়াই বিকাল ৫টায় শেষ হয়। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে সকালে ঢিমেতালে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। পরে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। এতে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে কোনো সমস্যা না হলেও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন।
কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে লড়ছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৫ জন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভুল ছিল। ভোটাররা বলছেন, কার্যকরী সদস্য পদে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যালটে দেওয়া নির্দেশনায় একজনের নামের পাশে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে। পরে সেটি ব্যালট সংশোধন করা হয়।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ আসার পর জটিলতা তৈরি হলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রায় সোয়া ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুপুরে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী হল পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু তিনি হলে ঢুকতে পারেননি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসান। তারপরই জটিলতার সৃষ্টি হয়। একই কারণে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ভোটগ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
নারী ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি নারী সাংবাদিকরাও সেসব কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসবের মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী। এ সময় তার পাশে প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসানও ছিলেন।
বৈশাখী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ভোটকেন্দ্র মনিটর করার জন্য জামায়াত নেতার কোম্পানি ঘিরে টেলিকাস্টসহ ভিডিও ক্যামেরা সাপ্লাই দিয়ে সিসি টিভির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে পুরো ভোটকেন্দ্র শিবিরকে মনিটর করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিজয় ব্যাহত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াত শিবিরের সঙ্গে এক হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের রায়ের সত্যিকার প্রতিফলন ঘটছে না। তাই আমরা নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হচ্ছি।”
এর পর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুরাদ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই অনাস্থার কথা জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শরণ এহসান।
পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা ও ছাত্রশিবিরকে ভোট জালিয়াতিতে সহযোগিতার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ প্যানেল। একই অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন ও পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেলের প্রার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ঘোষণা দিয়েছেন ভোট বর্জনের।
এছাড়া নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। তারা হলেন, গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা। বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান তারা।
ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা অসংগতি ও অনিয়মের কথা বলছিলেন। কিন্তু ভোট কারচুপির সরাসরি অভিযোগ কারও ছিল না। তারা কেন্দ্রে ভোটের চেয়ে ব্যালট বেশি যাওয়া, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি ভঙ্গ করা, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা, পোলিং এজেন্টের অনুমতি থাকলেও তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডোপটেস্টের ফলাফল না আসা, নির্বাচনকে ‘ম্যানিপুলেট’ করার নানা অভিযোগ আনেন।
এর মধ্যে দুপুরের দিকে ছাত্রদলের প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ‘নীলনকশার মাধ্যমে ছাত্রশিবির জয়ী হতে পরিকল্পনা’ করছে বলে তারা মনে করছেন। পরে তাদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ব্যালট পেপার মেশিনের পরিবর্তে হাতে গোনার সিদ্ধান্ত নেয়।
নির্বাচন শেষে হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট হলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ভোট গণনা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
কার কী প্যানেল
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলে আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি এবং মো. শাকিল আলীর জিএস পদে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ছাত্রদল লড়ছে শেখ সাদী হাসান এবং তানজিলা হোসেন বৈশাখীর নেতৃত্বে।
ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে লড়বে। তাদের ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব এবং জিএস মাজহারুল ইসলাম।
বাগাছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ লড়বে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়ামের নেতৃত্বে।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি লড়বেন। এই প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্যদে’ জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস-নারী পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস লড়াই করছেন।
ভোটার তথ্য
জাকসুতে এবার মোট ভোটার ১১,৮৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬১১৫, ছাত্রী ৫৭২৮। একজন ভোটার ভোট দেবেন ৪০টি করে; কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি, হল সংসদে ১৫টি পদে।
এবার জাকসু ভোটের মোট প্রার্থী ১৭৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ১৩২ জন, নারী প্রার্থী ৪৬ জন। এখানে পদের সংখ্যা ২৫টি।
মোট ২১টি হল সংসদে পদের সংখ্যা ৩১৫টি। প্রতি হলে পদ সংখ্যা ১৫টি। মোট ৪৪৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ১১ ছাত্র হলের প্রার্থী সংখ্যা ৩১৬ জন এবং ১০ ছাত্রী হলের প্রার্থী সংখ্যা ১৩১ জন।