alt

অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জাকসুতেও অধিকাংশ শিবির, তবে ভিপি স্বতন্ত্র সাবেক ছাত্রলীগ

ইউসুফ জামিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

https://sangbad.net.bd/images/2025/September/13Sep25/news/jnu.jpg

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ - জাকসুতেও অধিকাংশ পদে ইসলামী ছাত্র শিবির সমর্থিতরা জিতেছেন বলে ঘোষণা হয়েছে। তবে ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র আব্দুর রশিদ জিতু, যিনি আগে এখন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন।জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ছিলেন।

জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীদের। এই প্যানেলের বাইরে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক ও একটি কার্যকরী সদস্য পদে অন্যরা জিতেছেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

নতুন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসব পদে জিতেছেন।

ভোট শেষ হবার ৪৫ ঘন্টা সময় নিয়ে দীর্ঘ গণনার পর শনিবার সন্ধ্যায় জাকসুর ফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবার পর থেকেই নানা অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া।

ভিপি স্বতন্ত্র প্যানেলের জিতু
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ফল অনুযায়ী, ভিপি পদে তিন হাজার ৩৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্যানেল ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের’ প্রার্থী আব্দুর রশিদ (জিতু)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। আন্দোলনের আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আরিফ উল্লাহ পেয়েছেন ২ হাজার ৩৯২ ভোট।

ভিপি পদে বাগছাস সমর্থিত প্যানেলের আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল পেয়েছেন ১ হাজার ২১১ ভোট। ভোটের দিন বিকেল চারটার দিকে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের শেখ সাদী হাসান পেয়েছেন ৬৪৮ ভোট।

জিএস-এজিএসসহ ২০ পদে শিবির
জিএস পদে তিন হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. মাজহারুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের আবু তৌহিদ মো. সিয়াম পেয়েছেন ১ হাজার ২৩৮ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের মো. শাকিল আলী পেয়েছেন ৯৫৯ ভোট। নির্বাচন বর্জন করা ছাত্রদলের তানজিলা হোসাইল বৈশাখী পেয়েছেন ৯৪১ ভোট।

https://sangbad.net.bd/images/2025/September/13Sep25/news/jnu-2.jpg

দীর্ঘ ভোট গণনায় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই শিক্ষক-সংবাদ

এজিএস (পুরুষ) পদে বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ফেরদৌস আল হাসান। তিনি ২ হাজার ৩৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের জিয়া উদ্দিন পেয়েছেন ২ হাজার ১৪ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের তৌহিদুল ইসলাম ভূঁঞা পেয়েছেন ৭১৫ ভোট। ছাত্রদলের মো. সাজ্জাদউল ইসলাম পেয়েছেন ৭০১ ভোট।

এজিএস (নারী) পদে ৩ হাজার ৪০২ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের মালিহা নামলাহ পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৬ ভোট। ছাত্রদলের আঞ্জুমান আরা ইকরা পেয়েছেন ৭৬৪ ভোট।

পদত্যাগ, বর্জন
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হওয়ায় প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। ভোট গণনা শুরু হয় একই দিন রাত ১০টার পর। এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১,৮৯৭ জন। প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। পরে ব্যালট বাক্সগুলো সিনেট ভবনে নিয়ে এসে রাত ১০টার পর থেকে ভোট গণনা শুরু হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা ঘিরে তালগোলের মধ্যে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে দুই নির্বাচন কমিশনার ও তিন কর্মকর্তা সরে দাঁড়ান। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে ভোট গণনা চলাকালে কমিশনের সদস্য নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা পদত্যাগ করেন। স্নিগ্ধা বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সমাজবিজ্ঞান ভবন কমিটির নৃবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিনিধি ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা অসংগতি ও অনিয়মের কথা বলছিলেন। তবে তখন সরাসরি ভোট কারচুপির অভিযোগ কেউ করেননি। তারা অভিযোগ করেন- কেন্দ্রে ভোটের চেয়ে ব্যালট বেশি যাওয়া, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি ভঙ্গ করা, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন কেনা, পোলিং এজেন্টের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডোপ টেস্টের ফলাফল প্রকাশ না করা এবং নির্বাচনকে ‘ম্যানিপুলেট’ করার নানা প্রচেষ্টা।

এই পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রথম বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী। এ সময় তার পাশে ছিলেন একই প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসান।

এরপর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল। ক্যাম্পাসের মুরাদ চত্বরে এ ঘোষণা দেন প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী শরণ এহসান। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ প্যানেল। একই পথে হাঁটে ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ ছাড়া নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। তারা হলেন-গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।

ছাত্র সংসদের ভোট গণনা চলাকালে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে নির্বাচনি প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বিএনপিপন্থি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

তার পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় রাত পৌনে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। এ প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন কমিশনারের ‘লেজ গুটিয়ে’ পালানো এক ধরনের প্রতারণা।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক এবং নাটকীয়তার পর অবশেষে শনিবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ২১টি কেন্দ্রের ভোট গোণা শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী দুপুর আড়াইটার দিকে গণনা শেষের কথা জানান। তবে চূড়ান্ত ফলের জন্য সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। নির্বাচনের ফলাফল প্রস্তুত করতে সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

দীর্ঘ ভোট গণনা
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান জানান, হাতে হাতে ভোট গণনার কারণে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হয়েছে। তিনি বলেন, “জাকসু নির্বাচনে কোনো ভোট কারচুপি বা জালভোটের ঘটনা প্রমাণ করতে পারলে আমি চাকরি ছেড়ে দেব এবং পেনশনের টাকাও নেব না। কতিপয় বর্জনকারী ছাড়া কেউই বলবে না কারচুপি হয়েছে।”

‘স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে’ ভোট গণনার পুরো প্রক্রিয়া ক্যাম্পাসের চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে — নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মহুয়া চত্বর, প্রীতিলতা হলের সামনে, বটতলা এবং ট্রান্সপোর্ট চত্বরে — চারটি জায়ান্ট স্ক্রিনে বা বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তবে প্রায় ৪৬ ঘণ্টা ধরে গণনা চলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।

অনিয়মের অভিযোগ ও পদত্যাগের হিড়িক
নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগে উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। আর ভোটের দিন শেষ পর্যায়ে নানা অভিযোগ তুলে পাঁচটি প্যানেল বর্জনের ঘোষণা দেয়।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের সদস্য ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের (জাবি শাখা) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার অনিয়ম, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব এবং নানা অভিযোগের বিষয়ে কোনে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে পদত্যাগ করেন। তিনি সিনেট ভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং কমিশন এতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”

গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের অনুষদ কমিটির সাবেক প্রতিনিধি ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। তিনি শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সারাদিন ভোট গণনায় অংশ নিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, “জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে, যা স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিপন্থী।”

আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব ও অনিয়মের অভিযোগে বিএনপিপন্থী তিনজন শিক্ষকও পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।

তারা ভোটের দিন বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে বর্জনের ঘোষণা দেন। অর্থাৎ মোট পাঁচজন শিক্ষক এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান এই পদত্যাগের বিষয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারাই পদত্যাগ করে জাকসুকে বিতর্কিত করতে চেয়েছে। যদি কোনো কমিশনারের অভিযোগ থাকে, তাহলে ভোটের দিন পদত্যাগ না করে এখন কেন? এ থেকেই বোঝা যায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেনন, ‘কিছু বর্জনকারী দল ছাড়া অন্য কেউ কারচুপির অভিযোগ তুলছে না।’

নির্বাচনকে ঘিরে তিন দিন ধরে চলমান অনিয়মের অভিযোগ, বয়কট, পদত্যাগ এবং দীর্ঘ ভোট গণনার প্রক্রিয়া ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা শুরু হয়।

জাবি: রোববার ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীগগিরই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকল ক্লাস, পরীক্ষা এবং অফিস কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। তবে, জরুরি সেবা যেমন চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথারীতি চালু থাকবে। আগামীকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিয়মিত ক্লাস চলবে, তবে চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো স্থগিত থাকবে।

ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অনিয়মের অভিযোগ শিক্ষক ফোরামের
নির্বাচন কমিশনের ‘কয়েকজন সদস্যের ছত্রছায়ায়’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণ্য অপপ্রচার’ ও নির্বাচনী অনিয়মের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে জানাচ্ছি যে, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রকাশ করা হয়। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য ও অনলাইন এক্টিভিস্টরা সেটি ফলাও করে প্রচার (ভাইরাল) করে।

‘অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, ঐসময় রিটার্নিং অফিসারগণের তত্ত্বাবধানে শুধুমাত্র ব্যালটবাক্স সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়। ব্যালট পেপার বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয় নির্বাচনের দিন অর্থাৎ পরদিন সকাল ৮.৩০ এর দিকে। এ ধরণের ঘৃণ্য মিথ্যাচারের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই ছাত্রদলকে কোনঠাসা করে ফেলা হয়। এই বিশেষ রাজনৈতিক দল যদিও মুখে মুখে সব সময় সৃষ্টিকর্তার নাম নেয় কিন্তু একটি নির্বাচনে বিজয়ের জন্য এরা মিথ্যাচারের মতো পাপে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত হয়নি!’

বিবৃতিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের পক্ষে থাকা শিক্ষকদের তালিকায় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রায়হান শরীফের নাম উল্লেখ করা হয়। গতকাল তিনি এক ফেইসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘ইলেকশন মনিটরিং সেলের একজন সদস্য হিসেবে আজ সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা অব্দি ছাত্রদের ১১টি হল এবং ছাত্রীদের ২টি হলে জাকসু নির্বাচন মনিটর করেছি।কয়েকটি অসংগতি পেয়ে দ্রুততম সময়ে সেগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রিপোর্ট করেছি। কিছু ক্ষেত্রে নিজের উদ্যোগে (যেখানে প্রযোজ্য) ব্যবস্থা বাতলে দিয়েছি। জাকসু নির্বাচন আমার অভিজ্ঞতায় সুষ্ঠু হয়েছে। কেউ নির্বাচন বয়কট করলে আমি বলবো সেটি তাদের বিবেচনা।’ জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতির সাথে তিনি একমত কিনা প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আমি মাত্রই দেখলাম, এবিষয়ে আমি অবগত নই।’

শিবির সমর্থিত যারা জয়ী
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ইংরেজি বিভাগের(৪৮তম ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম। সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতœতত্ত্ব বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফেরদৌস আল হাসান। এজিএস (ছাত্রী) পদে দর্শন বিভাগের (৪৮ ব্যাচ) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ফার্মেসি বিভাগের আবু উবায়দা উসামা। পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক পদে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাফায়েত মীর। সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি। সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান উদ্দিন। নাট্য সম্পাদক হিসেবে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের রুহুল ইসলাম। সহ-ক্রীড়া (ছাত্র) পদে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মাহাদী হাসান। সহ-ক্রীড়া (ছাত্রী ) পদে গণিত বিভাগের ফারহানা লুবনা। আইটি ও গ্রন্থাগার পদে ফার্মেসি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের রাশেদুল ইমন লিখন। সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে মাইক্রোবায়োলজি (ছাত্র) তৌহিদ ইসলাম। সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন (ছাত্রী) পদে ফার্মেসি বিভাগের নিগার সুলতানা। স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হুসনী মোবারক। পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তানভীর রহমান মনোনীত হয়েছেন ।

এছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে রয়েছেন - ফাবলিহা জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন, নুসরাত জাহান ইমা, হাফেজ তরিকুল ইসলাম, আবু তালহা।

অন্য যারা
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে শেখ জিসান আহমেদ। সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে আহসান লাবিব। ক্রীড়া সম্পাদক পদে বাংলা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মাহমুদুল হাসান কিরণ। সদস্য পদে মোহাম্মদ আলী চিশতী।

ছবি

রাকসু: আচরণবিধি ‘লঙ্ঘন’ করে চলছে প্রচার-প্রচারণা

ছবি

৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ভিপি, শিবিরের প্রার্থী জিএসে বিজয়ী

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর: হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল, বিজয়ীদের তালিকা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর: হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল, বিজয়ীদের তালিকা

ছবি

অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জাকসুতেও অধিকাংশ শিবির, ভিপি স্বতন্ত্র সাবেক ছাত্রলীগ

ছবি

বেরোবির দাওয়া সোসাইটি’র নবীন বরণে শিক্ষার্থীদের কুরআনসহ বিভিন্ন উপহার প্রদান

ছবি

জাকসু: অবশেষে ভোটের ফল ঘোষণা চলছে

ছবি

জাকসু নির্বাচন: আরেক কমিশনারের পদত্যাগ, অনিয়মে বর্জনের হিড়িক

ছবি

জাকসু: অবশেষে ভোট গোণা শেষ, তবে ফল ঘোষণা সন্ধ্যায়

ছবি

জাবি: রোববার ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ

ছবি

জাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতে পারে শনিবার সন্ধ্যায়

ছবি

জাকসু: এবার বেলা ১টার মধ্যে ভোট গণনা ‘শেষের আশা’

ছবি

জাকসু: ৪০ ঘণ্টা পরও গণনা শেষ হয়নি

জাকসু: ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অনিয়মের অভিযোগে বিবৃতি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের, অবগত নয় তালিকাভুক্ত শিক্ষক

ছবি

জাকসু: অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলেন তিন শিক্ষক

ছবি

প্রশ্নবিদ্ধ জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলছেই

ছবি

জাকসু: নির্বাচন বানচালে বিএনপিপন্থী দুই শিক্ষক ইন্ধন দিচ্ছেন, অভিযোগ শিবির প্রার্থীর

ছবি

জাকসু: ভোট গণনা চল‌ছে, বিভ্রান্ত না হতে কমিশনের আহ্বান

ছবি

জাকসুঃ অনিয়মের অভিযোগ করে পদত্যাগ করলেন নির্বাচন কমিশনের এক সদস্য

ছবি

জাকসু: ছাত্রদলের নারী এজিএস প্রার্থীর ফল মেনে নেওয়ার ঘোষণা

ছবি

জাবি: ভোটের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকার মৃত্যুতে শোক, প্রশ্ন

জাকসু: কয়েকটি হলের ভোটের ফল ফেইসবুকে, নির্বাচন কমিশনারের ক্ষোভ

ছবি

জাকসু নির্বাচন: ভোট গোণায় দেরী, যা বলছেন দায়িত্বপ্রপ্তরা

ছবি

জাকসু নির্বাচনের ফল রাত ১০টায় প্রকাশের সম্ভাবনা: প্রক্টর

ছবি

জাকসু নির্বাচনের ফল পেতে অপেক্ষা, বিকেলের আগে সম্ভাবনা কম

ছবি

চবিতে ৯ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন: তৃতীয় দিনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে তিনজন

ছবি

জাকসু: ভোট গণনার সময় শিক্ষিকার মৃত্যু

ছবি

মতবিনিময় সভা বর্জন করল ছাত্রদল

ছবি

চবিতে ৯ শিক্ষার্থীর অনশন: ৭ দাবি

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের ‘টেস্ট’ ছিল ডাকসু: প্রেস সচিব

ছবি

নানা অভিযোগ নিয়ে জাকসু নির্বাচন সম্পন্ন

জাকসু নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৭.৭৬ শতাংশ, প্রত্যাশার তুলনায় উপস্থিতি কম

ছবি

জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন, বিশৃঙ্খলা-অনিয়মের অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হল ভোট

ছবি

জাকসু: ভোট বর্জন করে পুনর্নির্বাচনের দাবি চার প্যানেলের

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু ও হল সংসদের ভোট শেষ

জাকসু: আরও দুই সংগঠনের ভোট বর্জনের ঘোষণা, অভিযোগ ‘ব্যাপক অনিয়মের’

tab

news » campus

অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে জাকসুতেও অধিকাংশ শিবির, তবে ভিপি স্বতন্ত্র সাবেক ছাত্রলীগ

ইউসুফ জামিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

https://sangbad.net.bd/images/2025/September/13Sep25/news/jnu.jpg

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ - জাকসুতেও অধিকাংশ পদে ইসলামী ছাত্র শিবির সমর্থিতরা জিতেছেন বলে ঘোষণা হয়েছে। তবে ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র আব্দুর রশিদ জিতু, যিনি আগে এখন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন।জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ছিলেন।

জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীদের। এই প্যানেলের বাইরে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক ও একটি কার্যকরী সদস্য পদে অন্যরা জিতেছেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

নতুন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসব পদে জিতেছেন।

ভোট শেষ হবার ৪৫ ঘন্টা সময় নিয়ে দীর্ঘ গণনার পর শনিবার সন্ধ্যায় জাকসুর ফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবার পর থেকেই নানা অব্যবস্থাপনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া।

ভিপি স্বতন্ত্র প্যানেলের জিতু
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ফল অনুযায়ী, ভিপি পদে তিন হাজার ৩৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্যানেল ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের’ প্রার্থী আব্দুর রশিদ (জিতু)। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। আন্দোলনের আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আরিফ উল্লাহ পেয়েছেন ২ হাজার ৩৯২ ভোট।

ভিপি পদে বাগছাস সমর্থিত প্যানেলের আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল পেয়েছেন ১ হাজার ২১১ ভোট। ভোটের দিন বিকেল চারটার দিকে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের শেখ সাদী হাসান পেয়েছেন ৬৪৮ ভোট।

জিএস-এজিএসসহ ২০ পদে শিবির
জিএস পদে তিন হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. মাজহারুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের আবু তৌহিদ মো. সিয়াম পেয়েছেন ১ হাজার ২৩৮ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের মো. শাকিল আলী পেয়েছেন ৯৫৯ ভোট। নির্বাচন বর্জন করা ছাত্রদলের তানজিলা হোসাইল বৈশাখী পেয়েছেন ৯৪১ ভোট।

https://sangbad.net.bd/images/2025/September/13Sep25/news/jnu-2.jpg

দীর্ঘ ভোট গণনায় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই শিক্ষক-সংবাদ

এজিএস (পুরুষ) পদে বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ফেরদৌস আল হাসান। তিনি ২ হাজার ৩৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের জিয়া উদ্দিন পেয়েছেন ২ হাজার ১৪ ভোট। স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের তৌহিদুল ইসলাম ভূঁঞা পেয়েছেন ৭১৫ ভোট। ছাত্রদলের মো. সাজ্জাদউল ইসলাম পেয়েছেন ৭০১ ভোট।

এজিএস (নারী) পদে ৩ হাজার ৪০২ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের মালিহা নামলাহ পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৬ ভোট। ছাত্রদলের আঞ্জুমান আরা ইকরা পেয়েছেন ৭৬৪ ভোট।

পদত্যাগ, বর্জন
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হওয়ায় প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। ভোট গণনা শুরু হয় একই দিন রাত ১০টার পর। এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১,৮৯৭ জন। প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। পরে ব্যালট বাক্সগুলো সিনেট ভবনে নিয়ে এসে রাত ১০টার পর থেকে ভোট গণনা শুরু হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা ঘিরে তালগোলের মধ্যে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে দুই নির্বাচন কমিশনার ও তিন কর্মকর্তা সরে দাঁড়ান। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে ভোট গণনা চলাকালে কমিশনের সদস্য নৃবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা পদত্যাগ করেন। স্নিগ্ধা বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সমাজবিজ্ঞান ভবন কমিটির নৃবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিনিধি ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকাল থেকেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা অসংগতি ও অনিয়মের কথা বলছিলেন। তবে তখন সরাসরি ভোট কারচুপির অভিযোগ কেউ করেননি। তারা অভিযোগ করেন- কেন্দ্রে ভোটের চেয়ে ব্যালট বেশি যাওয়া, প্রতিপক্ষের আচরণবিধি ভঙ্গ করা, জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন কেনা, পোলিং এজেন্টের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডোপ টেস্টের ফলাফল প্রকাশ না করা এবং নির্বাচনকে ‘ম্যানিপুলেট’ করার নানা প্রচেষ্টা।

এই পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রথম বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী। এ সময় তার পাশে ছিলেন একই প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদি হাসান।

এরপর জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল। ক্যাম্পাসের মুরাদ চত্বরে এ ঘোষণা দেন প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী শরণ এহসান। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ প্যানেল। একই পথে হাঁটে ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ ছাড়া নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। তারা হলেন-গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম ও অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।

ছাত্র সংসদের ভোট গণনা চলাকালে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে নির্বাচনি প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বিএনপিপন্থি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

তার পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় রাত পৌনে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। এ প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন কমিশনারের ‘লেজ গুটিয়ে’ পালানো এক ধরনের প্রতারণা।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক এবং নাটকীয়তার পর অবশেষে শনিবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ২১টি কেন্দ্রের ভোট গোণা শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী দুপুর আড়াইটার দিকে গণনা শেষের কথা জানান। তবে চূড়ান্ত ফলের জন্য সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। নির্বাচনের ফলাফল প্রস্তুত করতে সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

দীর্ঘ ভোট গণনা
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান জানান, হাতে হাতে ভোট গণনার কারণে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হয়েছে। তিনি বলেন, “জাকসু নির্বাচনে কোনো ভোট কারচুপি বা জালভোটের ঘটনা প্রমাণ করতে পারলে আমি চাকরি ছেড়ে দেব এবং পেনশনের টাকাও নেব না। কতিপয় বর্জনকারী ছাড়া কেউই বলবে না কারচুপি হয়েছে।”

‘স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে’ ভোট গণনার পুরো প্রক্রিয়া ক্যাম্পাসের চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে — নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মহুয়া চত্বর, প্রীতিলতা হলের সামনে, বটতলা এবং ট্রান্সপোর্ট চত্বরে — চারটি জায়ান্ট স্ক্রিনে বা বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তবে প্রায় ৪৬ ঘণ্টা ধরে গণনা চলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।

অনিয়মের অভিযোগ ও পদত্যাগের হিড়িক
নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগে উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। আর ভোটের দিন শেষ পর্যায়ে নানা অভিযোগ তুলে পাঁচটি প্যানেল বর্জনের ঘোষণা দেয়।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের সদস্য ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের (জাবি শাখা) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার অনিয়ম, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব এবং নানা অভিযোগের বিষয়ে কোনে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে পদত্যাগ করেন। তিনি সিনেট ভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এবং কমিশন এতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”

গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের অনুষদ কমিটির সাবেক প্রতিনিধি ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন। তিনি শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সারাদিন ভোট গণনায় অংশ নিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, “জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে, যা স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিপন্থী।”

আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব ও অনিয়মের অভিযোগে বিএনপিপন্থী তিনজন শিক্ষকও পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন—ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নাহরীন ইসলাম খান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এবং অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।

তারা ভোটের দিন বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে বর্জনের ঘোষণা দেন। অর্থাৎ মোট পাঁচজন শিক্ষক এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান এই পদত্যাগের বিষয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারাই পদত্যাগ করে জাকসুকে বিতর্কিত করতে চেয়েছে। যদি কোনো কমিশনারের অভিযোগ থাকে, তাহলে ভোটের দিন পদত্যাগ না করে এখন কেন? এ থেকেই বোঝা যায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেনন, ‘কিছু বর্জনকারী দল ছাড়া অন্য কেউ কারচুপির অভিযোগ তুলছে না।’

নির্বাচনকে ঘিরে তিন দিন ধরে চলমান অনিয়মের অভিযোগ, বয়কট, পদত্যাগ এবং দীর্ঘ ভোট গণনার প্রক্রিয়া ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা শুরু হয়।

জাবি: রোববার ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীগগিরই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকল ক্লাস, পরীক্ষা এবং অফিস কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। তবে, জরুরি সেবা যেমন চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথারীতি চালু থাকবে। আগামীকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিয়মিত ক্লাস চলবে, তবে চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো স্থগিত থাকবে।

ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অনিয়মের অভিযোগ শিক্ষক ফোরামের
নির্বাচন কমিশনের ‘কয়েকজন সদস্যের ছত্রছায়ায়’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ‘ঘৃণ্য অপপ্রচার’ ও নির্বাচনী অনিয়মের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে জানাচ্ছি যে, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রকাশ করা হয়। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য ও অনলাইন এক্টিভিস্টরা সেটি ফলাও করে প্রচার (ভাইরাল) করে।

‘অথচ বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, ঐসময় রিটার্নিং অফিসারগণের তত্ত্বাবধানে শুধুমাত্র ব্যালটবাক্স সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়। ব্যালট পেপার বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয় নির্বাচনের দিন অর্থাৎ পরদিন সকাল ৮.৩০ এর দিকে। এ ধরণের ঘৃণ্য মিথ্যাচারের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই ছাত্রদলকে কোনঠাসা করে ফেলা হয়। এই বিশেষ রাজনৈতিক দল যদিও মুখে মুখে সব সময় সৃষ্টিকর্তার নাম নেয় কিন্তু একটি নির্বাচনে বিজয়ের জন্য এরা মিথ্যাচারের মতো পাপে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত হয়নি!’

বিবৃতিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের পক্ষে থাকা শিক্ষকদের তালিকায় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রায়হান শরীফের নাম উল্লেখ করা হয়। গতকাল তিনি এক ফেইসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘ইলেকশন মনিটরিং সেলের একজন সদস্য হিসেবে আজ সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা অব্দি ছাত্রদের ১১টি হল এবং ছাত্রীদের ২টি হলে জাকসু নির্বাচন মনিটর করেছি।কয়েকটি অসংগতি পেয়ে দ্রুততম সময়ে সেগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রিপোর্ট করেছি। কিছু ক্ষেত্রে নিজের উদ্যোগে (যেখানে প্রযোজ্য) ব্যবস্থা বাতলে দিয়েছি। জাকসু নির্বাচন আমার অভিজ্ঞতায় সুষ্ঠু হয়েছে। কেউ নির্বাচন বয়কট করলে আমি বলবো সেটি তাদের বিবেচনা।’ জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতির সাথে তিনি একমত কিনা প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আমি মাত্রই দেখলাম, এবিষয়ে আমি অবগত নই।’

শিবির সমর্থিত যারা জয়ী
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ইংরেজি বিভাগের(৪৮তম ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম। সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতœতত্ত্ব বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফেরদৌস আল হাসান। এজিএস (ছাত্রী) পদে দর্শন বিভাগের (৪৮ ব্যাচ) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ফার্মেসি বিভাগের আবু উবায়দা উসামা। পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক পদে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাফায়েত মীর। সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি। সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান উদ্দিন। নাট্য সম্পাদক হিসেবে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের রুহুল ইসলাম। সহ-ক্রীড়া (ছাত্র) পদে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মাহাদী হাসান। সহ-ক্রীড়া (ছাত্রী ) পদে গণিত বিভাগের ফারহানা লুবনা। আইটি ও গ্রন্থাগার পদে ফার্মেসি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের রাশেদুল ইমন লিখন। সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে মাইক্রোবায়োলজি (ছাত্র) তৌহিদ ইসলাম। সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন (ছাত্রী) পদে ফার্মেসি বিভাগের নিগার সুলতানা। স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হুসনী মোবারক। পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তানভীর রহমান মনোনীত হয়েছেন ।

এছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে রয়েছেন - ফাবলিহা জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন, নুসরাত জাহান ইমা, হাফেজ তরিকুল ইসলাম, আবু তালহা।

অন্য যারা
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে শেখ জিসান আহমেদ। সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে আহসান লাবিব। ক্রীড়া সম্পাদক পদে বাংলা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মাহমুদুল হাসান কিরণ। সদস্য পদে মোহাম্মদ আলী চিশতী।

back to top