alt

রাকসু: আলোচনার কেন্দ্রে আবাসন সংকট, নানা প্রতিশ্রুতিতে প্রার্থীরা

জাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাড়ে তিন দশক পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান দাবি হিসেবে আবারও সামনে এসেছে আবাসন সংকট। বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্যকণিকা অনুযায়ী, ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই রাজশাহী কলেজ, বড়কুঠিসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শুরুতে শিক্ষার্থী ছিলেন মাত্র ১৬১ জন। ১৯৫৮ সালে মতিহারে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ১৯৬৪ সালে ৭৫৩ একর জায়গাজুড়ে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয়।

হল সংখ্যা বনাম শিক্ষার্থী

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ অনুষদের আওতায় ৫৯টি বিভাগ ও ৬টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। তবে ১৭টি আবাসিক হল ও একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র ৯ হাজার ৬৭৩ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ কেবল ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন সুবিধা আছে।

ছেলেদের জন্য ১১টি এবং মেয়েদের জন্য ৬টি হল। আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে থাকেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও এমফিল-পিএইচডি গবেষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কাইভস থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে শিক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ২১ হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজারে। অর্থাৎ ২৫ বছরে শিক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৯ হাজার। তবে এ সময়ে নতুন হল হয়েছে মাত্র তিনটি।

গত ২৫ বছরে ২৩টি নতুন বিভাগ, ৭টি অনুষদ এবং ৪টি ইনস্টিটিউট চালু হলেও আবাসন সমস্যা সমাধানে খুব বেশি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ছাত্রী হলে সংকট প্রকট

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি ছাত্রী হলে আসনসংকট সবচেয়ে তীব্র। প্রতিটি হলে গণরুম আছে, যেখানে গাদাগাদি করে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে পড়াশোনা ও বিশ্রাম — দুইই ব্যাহত হয়। রোকেয়া হলের এক শিক্ষার্থী জানান, মেসে থাকার মতো সামর্থ্য না থাকায় শিক্ষকদের সুপারিশে হলে আসন পেয়েছেন, কিন্তু সেখানে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে।

বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শারমিন হামিদ জানান, তার হলে আসনসংখ্যা ১ হাজার ২০০ হলেও আসনসংকটে অর্ধেক শিক্ষার্থী জায়গা পান না। বাড়তি ১০০ ছাত্রীকে রাখতে গণরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য ছাত্রী হলগুলোর অবস্থাও একই রকম।

দখল ও অনিয়মের অভিযোগ

বিগত সরকারের শেষ মেয়াদে হলের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে আসন পেতে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হতো সংগঠনটির নেতাদের। অনেকে নিয়মমাফিক আসন পেলেও তাদের নির্যাতন করে বের করে দেওয়া হতো। অনেক কক্ষ অছাত্র নেতা-কর্মীরা দখল করে রাখতেন।

তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে দাবি প্রশাসনের। এখন তাদের দাবি মেধার ভিত্তিতে আসন দেওয়া হচ্ছে।

নির্মাণে নতুন হল

২০১৮ সালে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও শেখ হাসিনা হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। কামারুজ্জামান হলের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীরা উঠতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এতে এক হাজার শিক্ষার্থী জায়গা পাবেন। আর শেখ হাসিনা হলের ৮০০ আসন থাকবে, এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুনে এটির নির্মাণ শেষ হবে বলে প্রত্যাশা।

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি

রাকসু নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা আবাসন সমস্যাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই যেন সব শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারেন — এ দাবিকে তারা গুরুত্ব দেবেন।

ছাত্রদল মনোনীত জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম (জীবন) বলেন, আবাসনের সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। তারা নির্বাচিত হলে নতুন হল নির্মাণের দাবি জানাবেন এবং যারা হলে থাকতে পারে না তাদের জন্য ভর্তুকি চালুর দাবি তুলবেন।

‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, নারী শিক্ষার্থীরা হলে আসন না পেয়ে বাইরে থাকতে বাধ্য হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে সরকারকে অবহিত করতে হবে।

শিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, আবাসনসংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে। এই দাবি বাস্তবায়নে তারা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন।

ছবি

রাকসু: ভয় কাটিয়ে উৎসবের হাওয়া, অভিনব কায়দায় নির্বাচনী প্রচারণা

ছবি

চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-শিবিরের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা

ছবি

রাকসু: হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের তথ্য প্রকাশ

সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়: ত্রিমুখী অবস্থানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ঘোষণা

ছবি

রাকসু: উৎসবের হাওয়া,অভিনব কায়দায় নির্বাচনী প্রচারণা

ছবি

রাকসু: ভোটের আগে উপাচার্যের ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক

ছবি

দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিবির ও ছাত্রদলের ভিন্ন ভিন্ন দাবি

ছবি

ফের পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি, অন্যথায় ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচি

ছবি

‘কাকতাড়ুয়া দহন’ কর্মসূচি দিয়ে সড়ক ছাড়লেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা

ছবি

জকসু: ২৭ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন

ছবি

রাকসু: হাতে ভোট গোণা ও ৫ দাবি ছাত্রদলের, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটের সিদ্ধান্ত

ছবি

সাজেকে চাঁন্দের গাড়ি খাদে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

ছবি

জগন্নাথ: নির্বাচনসহ ৩ দাবিতে ৪ জনের অনশনে ৩ জন অসুস্থ

চাকসু নির্বাচনে মনোনয়ন নেওয়ার সময় বাড়ল এক দিন

ছবি

গাজীপুরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের রেলপথ অবরোধ, বিক্ষোভ

ছবি

রাকসু: ১৭ কেন্দ্রে ভোট, নিরাপত্তায় থাকবে দুই হাজার পুলিশ

ছবি

জকসুসহ ৩ দাবিতে বাগছাস ও ছাত্র অধিকারের অনশন

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: ভোট হাতে গণনার আবেদন উমামা ফাতেমার

ছবি

এক সপ্তাহের মধ্যে জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ ৫ দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের

ছবি

নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুর দাবি, প্রো-ভিসির আশ্বাস

ছবি

রাকসু: চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা, ভিপি পদে ১৮

ছবি

জাকসু নির্বাচন নিয়ে ১৬ অভিযোগ: নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

ছবি

রাকসু: তিন সাবেক সমন্বয়কের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল, শিবিরের ‘ছায়ার’ গুঞ্জন

ছবি

জাকসু: ভোট গণনায় অসঙ্গতি, বৈধ ভোটের চেয়ে বেশী ভোটের হিসাব, বিজয়ী ঘোষণা করে পরে বাতিল

ছবি

রাকসু: নির্বাচনী প্রচারণায় মানতে হবে যেসব নিয়ম

ছবি

রাকসু: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৯ জন হল সংসদে নির্বাচিত

ছবি

ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-রাকসু নির্বাচনে ঘোষিত নয়টি প্যানেল

ছবি

চাকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু, প্রথম দিনেই সংগ্রহ ২৮টি

ছবি

রাকসু: স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একাংশের প্যানেল, তবে নেই ভিপি, জিএস, এজিএস

ছবি

ডাকসুর প্রথম সভায় সিনেটের জন্য ৫ প্রতিনিধি মনোনীত

ছবি

৩৫ বছর পর চাকসু: মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

ছবি

রাকসুর নীতিমালা সংশোধন, লটারিতে নির্ধারিত হবে ব্যালট নম্বর

tab

রাকসু: আলোচনার কেন্দ্রে আবাসন সংকট, নানা প্রতিশ্রুতিতে প্রার্থীরা

জাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাড়ে তিন দশক পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান দাবি হিসেবে আবারও সামনে এসেছে আবাসন সংকট। বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্যকণিকা অনুযায়ী, ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই রাজশাহী কলেজ, বড়কুঠিসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শুরুতে শিক্ষার্থী ছিলেন মাত্র ১৬১ জন। ১৯৫৮ সালে মতিহারে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ১৯৬৪ সালে ৭৫৩ একর জায়গাজুড়ে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয়।

হল সংখ্যা বনাম শিক্ষার্থী

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ অনুষদের আওতায় ৫৯টি বিভাগ ও ৬টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। তবে ১৭টি আবাসিক হল ও একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র ৯ হাজার ৬৭৩ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ কেবল ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন সুবিধা আছে।

ছেলেদের জন্য ১১টি এবং মেয়েদের জন্য ৬টি হল। আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে থাকেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও এমফিল-পিএইচডি গবেষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কাইভস থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে শিক্ষার্থী ছিলেন প্রায় ২১ হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজারে। অর্থাৎ ২৫ বছরে শিক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৯ হাজার। তবে এ সময়ে নতুন হল হয়েছে মাত্র তিনটি।

গত ২৫ বছরে ২৩টি নতুন বিভাগ, ৭টি অনুষদ এবং ৪টি ইনস্টিটিউট চালু হলেও আবাসন সমস্যা সমাধানে খুব বেশি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ছাত্রী হলে সংকট প্রকট

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি ছাত্রী হলে আসনসংকট সবচেয়ে তীব্র। প্রতিটি হলে গণরুম আছে, যেখানে গাদাগাদি করে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে পড়াশোনা ও বিশ্রাম — দুইই ব্যাহত হয়। রোকেয়া হলের এক শিক্ষার্থী জানান, মেসে থাকার মতো সামর্থ্য না থাকায় শিক্ষকদের সুপারিশে হলে আসন পেয়েছেন, কিন্তু সেখানে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে।

বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শারমিন হামিদ জানান, তার হলে আসনসংখ্যা ১ হাজার ২০০ হলেও আসনসংকটে অর্ধেক শিক্ষার্থী জায়গা পান না। বাড়তি ১০০ ছাত্রীকে রাখতে গণরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য ছাত্রী হলগুলোর অবস্থাও একই রকম।

দখল ও অনিয়মের অভিযোগ

বিগত সরকারের শেষ মেয়াদে হলের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে আসন পেতে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হতো সংগঠনটির নেতাদের। অনেকে নিয়মমাফিক আসন পেলেও তাদের নির্যাতন করে বের করে দেওয়া হতো। অনেক কক্ষ অছাত্র নেতা-কর্মীরা দখল করে রাখতেন।

তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে দাবি প্রশাসনের। এখন তাদের দাবি মেধার ভিত্তিতে আসন দেওয়া হচ্ছে।

নির্মাণে নতুন হল

২০১৮ সালে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও শেখ হাসিনা হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। কামারুজ্জামান হলের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীরা উঠতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এতে এক হাজার শিক্ষার্থী জায়গা পাবেন। আর শেখ হাসিনা হলের ৮০০ আসন থাকবে, এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুনে এটির নির্মাণ শেষ হবে বলে প্রত্যাশা।

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি

রাকসু নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা আবাসন সমস্যাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই যেন সব শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারেন — এ দাবিকে তারা গুরুত্ব দেবেন।

ছাত্রদল মনোনীত জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম (জীবন) বলেন, আবাসনের সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। তারা নির্বাচিত হলে নতুন হল নির্মাণের দাবি জানাবেন এবং যারা হলে থাকতে পারে না তাদের জন্য ভর্তুকি চালুর দাবি তুলবেন।

‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, নারী শিক্ষার্থীরা হলে আসন না পেয়ে বাইরে থাকতে বাধ্য হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে সরকারকে অবহিত করতে হবে।

শিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, আবাসনসংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দিতে হবে। এই দাবি বাস্তবায়নে তারা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন।

back to top