alt

পোষ্য কোটা: রাতভর উত্তেজনার পর সকালে শান্ত রাবি ক্যাম্পাস, আজ সিন্ডিকেট সভা, কর্মরিবতি

প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পোষ্য কোটা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ও প্যারিস রোড থেকে সরে যান। আজ রোববার সকালে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের কাউকে দেখ যায়নি।

এর আগে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে জানানো হয়, রোববার এ বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।

তবে আজ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দিনভর কর্মবিরতি পালন করার কথা। এই ঘোষণা দেওয়া হয় গতকাল। তবে সকালে ক্যাম্পাসে সব একাডেমিক ভবনের ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ভবনও খুলেছে। বাসে করে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে দেখা গেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে এসেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই বিরতিতে থাকবেন। কোনো কাজ করবেন না। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে ক্যাম্পাসে তারা দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। সিন্ডিকেট সভার দিকেই তাদের নজর। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত দেখে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

ফেইসবুক পেইজের ঘোষণা মেনে নেয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিল, উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে সরাসরি কোটা বাতিল ঘোষণা করতে হবে। রাত গভীর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে স্থান ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে বাসভবনের সামনে থেকে সরে যেতে থাকেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সব শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও স্থান ত্যাগ করেন।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিয়াদ খান বলেন, “প্রশাসন থেকে আর কোনো সাড়া না পাওয়াতেই আমরা চলে যাচ্ছি। সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে। তবে পরিস্থিতি এমন যে রাকসু নির্বাচন নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে আমার হলে আবাসিকতার ভাইভা বাতিল করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী মারুফ বলেন, “রাত গভীর হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে স্থান ত্যাগ করেছেন। আজকের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।”

গতকাল দুপুরের পর থেকেই পোষ্য কোটা নিয়ে উত্তেজনা ছিলো ক্যাম্পাসে। বেলা তিনটার দিকে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তার বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। বাসায় ঢুকতে না পেরে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তার সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন।

বিকেল সোয়া চারটার দিকে জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছাত্রদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এমন পরিস্থিতিতে রাত পৌনে ১০টার দিকে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার অভিযোগে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে জানান।

রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে সহ-উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক প্রায় সাত ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্তি পান। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এসে জড়ো হন প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। সেখানে নারী শিক্ষার্থীরাও ছিলেন।

রাত প্রায় দেড়টার দিকে বাসভবনের ফটকের কাছে আসেন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব। মাইকে তিনি ঘোষণা দেন, “শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।”

তবে উপাচার্যের এ বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। তখন উপাচার্য বাসভবনের ভেতরে চলে যান।

শিংক্ষার্থীদের দাবিতে আগে বাতিল করা পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনা হয় গত বৃহস্পতিবারের ভর্তি উপকমিটির সভায়। ওই দিন রাতে এটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। দশ শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ওই কোটা পূনর্বহালের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তারপর থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।

ছবি

উপ-উপাচার্য লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রাবিতে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি

ছবি

আন্দোলনের মুখে ফের রাবির ‘পোষ্য কোটা’ স্থগিত

ছবি

রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ধস্তাধস্তি

ছবি

রাকসু নির্বাচন : ২৪ দফা ইশতেহার নিয়ে শিবিরের ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’

ছবি

প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড পেলেন স্যার আশুতোষ কলেজের পাভেল

ছবি

রাবিতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি

ছবি

জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের বর্জন সত্ত্বেও বিজয়ীদের শপথ গ্রহণ

ছবি

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, প্রতিবাদে ফের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি

রাকসু: সাবেক সমন্বয়কদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ালেন এজিএস প্রার্থীও

ছবি

রাবি: পোষ্য কোটার প্রতিবাদে বৃষ্টিতেও অনশন, অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী

ছবি

রাকসু : ২৪ দফা ইশতেহার দিলো শিবিরের ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’

ছবি

রাকসু: আলোচনার কেন্দ্রে আবাসন সংকট, নানা প্রতিশ্রুতিতে প্রার্থীরা

ছবি

রাকসু: ভয় কাটিয়ে উৎসবের হাওয়া, অভিনব কায়দায় নির্বাচনী প্রচারণা

ছবি

চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-শিবিরের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা

ছবি

রাকসু: হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের তথ্য প্রকাশ

সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়: ত্রিমুখী অবস্থানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ঘোষণা

ছবি

রাকসু: উৎসবের হাওয়া,অভিনব কায়দায় নির্বাচনী প্রচারণা

ছবি

রাকসু: ভোটের আগে উপাচার্যের ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক

ছবি

দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিবির ও ছাত্রদলের ভিন্ন ভিন্ন দাবি

ছবি

ফের পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি, অন্যথায় ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচি

ছবি

‘কাকতাড়ুয়া দহন’ কর্মসূচি দিয়ে সড়ক ছাড়লেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা

ছবি

জকসু: ২৭ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন

ছবি

রাকসু: হাতে ভোট গোণা ও ৫ দাবি ছাত্রদলের, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটের সিদ্ধান্ত

ছবি

সাজেকে চাঁন্দের গাড়ি খাদে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

ছবি

জগন্নাথ: নির্বাচনসহ ৩ দাবিতে ৪ জনের অনশনে ৩ জন অসুস্থ

চাকসু নির্বাচনে মনোনয়ন নেওয়ার সময় বাড়ল এক দিন

ছবি

গাজীপুরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের রেলপথ অবরোধ, বিক্ষোভ

ছবি

রাকসু: ১৭ কেন্দ্রে ভোট, নিরাপত্তায় থাকবে দুই হাজার পুলিশ

ছবি

জকসুসহ ৩ দাবিতে বাগছাস ও ছাত্র অধিকারের অনশন

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: ভোট হাতে গণনার আবেদন উমামা ফাতেমার

ছবি

এক সপ্তাহের মধ্যে জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ ৫ দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের

ছবি

নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুর দাবি, প্রো-ভিসির আশ্বাস

ছবি

রাকসু: চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা, ভিপি পদে ১৮

tab

পোষ্য কোটা: রাতভর উত্তেজনার পর সকালে শান্ত রাবি ক্যাম্পাস, আজ সিন্ডিকেট সভা, কর্মরিবতি

প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পোষ্য কোটা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ও প্যারিস রোড থেকে সরে যান। আজ রোববার সকালে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের কাউকে দেখ যায়নি।

এর আগে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে জানানো হয়, রোববার এ বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।

তবে আজ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দিনভর কর্মবিরতি পালন করার কথা। এই ঘোষণা দেওয়া হয় গতকাল। তবে সকালে ক্যাম্পাসে সব একাডেমিক ভবনের ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ভবনও খুলেছে। বাসে করে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে দেখা গেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে এসেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই বিরতিতে থাকবেন। কোনো কাজ করবেন না। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। তবে ক্যাম্পাসে তারা দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। সিন্ডিকেট সভার দিকেই তাদের নজর। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত দেখে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

ফেইসবুক পেইজের ঘোষণা মেনে নেয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিল, উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে সরাসরি কোটা বাতিল ঘোষণা করতে হবে। রাত গভীর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে স্থান ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে বাসভবনের সামনে থেকে সরে যেতে থাকেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সব শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও স্থান ত্যাগ করেন।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিয়াদ খান বলেন, “প্রশাসন থেকে আর কোনো সাড়া না পাওয়াতেই আমরা চলে যাচ্ছি। সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে। তবে পরিস্থিতি এমন যে রাকসু নির্বাচন নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে আমার হলে আবাসিকতার ভাইভা বাতিল করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী মারুফ বলেন, “রাত গভীর হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে স্থান ত্যাগ করেছেন। আজকের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করব।”

গতকাল দুপুরের পর থেকেই পোষ্য কোটা নিয়ে উত্তেজনা ছিলো ক্যাম্পাসে। বেলা তিনটার দিকে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তার বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। বাসায় ঢুকতে না পেরে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তার সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন।

বিকেল সোয়া চারটার দিকে জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছাত্রদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এমন পরিস্থিতিতে রাত পৌনে ১০টার দিকে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার অভিযোগে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে জানান।

রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে সহ-উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক প্রায় সাত ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্তি পান। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এসে জড়ো হন প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে। সেখানে নারী শিক্ষার্থীরাও ছিলেন।

রাত প্রায় দেড়টার দিকে বাসভবনের ফটকের কাছে আসেন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব। মাইকে তিনি ঘোষণা দেন, “শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।”

তবে উপাচার্যের এ বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। তখন উপাচার্য বাসভবনের ভেতরে চলে যান।

শিংক্ষার্থীদের দাবিতে আগে বাতিল করা পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনা হয় গত বৃহস্পতিবারের ভর্তি উপকমিটির সভায়। ওই দিন রাতে এটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। দশ শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ওই কোটা পূনর্বহালের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তারপর থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন।

back to top