লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচির কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটের কথা থাকলেও প্রার্থীদের প্রচারণায় ভাটা পড়েছে। সোমবার সকাল থেকে প্রার্থীদের প্রচারণায় নামতে দেখা যায়নি।
২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে পূজার ছুটি। শাটডাউন কর্মসূচি ও ছুটির কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যাচ্ছে। ফলে পূজার পর নির্বাচন করার দাবি তুলেছে ছাত্রদলসহ পাঁচটি প্যানেল। তবে ছাত্র শিবির যথাসময়ে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।
স্বতন্ত্র ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের’ ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “এখন নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে সেটার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। কারণ অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে গেছে। তাই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হোক এবং তারপর রাকসু নির্বাচন হোক।”
ছাত্রদল মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূরউদ্দিন আবির বলেন, “৪৮ ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে যে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল, ভোটার এবং প্রার্থীদের আনাগোনা ছিল, তা এখন অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে। ভোটার নেই বললেই চলে। আমরা চাই সবার উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। তাই পূজার পর নির্বাচন হওয়া জরুরি।”
স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী শাহ্ পরাণ (লিখন) বলেন, “কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যে রাকসু করতে চাইছে। পূজার ছুটি ধরলে টানা ১৫ দিন বন্ধ। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে গেছে। মানে, কী দরকার ভাই? এর চেয়ে ইলেকশন ছাড়াই তাদের দিয়া দেন। খুবই বিশ্রী অবস্থা! হোয়াট শ্যুড উই ডু?”
তবে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের’ জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা ২৫ সেপ্টেম্বরেই নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, “আমরা চাই ২৫ তারিখে রাকসু নির্বাচন হোক। শুরু থেকে একটা চক্র রাকসু নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। পূজার পর পরীক্ষা থাকায় তখন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আরও কম হবে।”
*শনিবারের ঘটনায় শাস্তি দাবী*
শনিবার রাতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে আন্দোলনের মধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক–কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শিক্ষক সংগঠন ও অফিসার্স সমিতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্ত কমিটি গঠন এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানায়।
রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পর সোমবার থেকে লাগাতার শাটডাউন শুরু হয়। সব একাডেমিক ভবন ও প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলছে। ক্যাম্পাস কার্যত ফাঁকা হয়ে গেছে।
শনিবারের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমীরুল ইসলাম বলেন, “শনিবার শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করছি। কারণ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
ইউনিভার্সিটি টিচারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সালাহউদ্দিন আম্মার এবং তার সহযোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার নীলনকশা নিয়ে মাঠে নেমেছে। এই আম্মার এমন এক বেয়াদব এবং সন্ত্রাসী যে হাতে পিস্তল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে। শনিবার এই সন্ত্রাসীরা শিক্ষকদের যেভাবে লাঞ্ছিত করেছে, আমরা যদি এর সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আমাদেরও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের দাবি হলো চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে তাদের সনদ বাতিল করতে হবে। এছাড়া যারা রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী আছে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।”
আর বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, “গত ৯ মাসে প্রশাসন অসংখ্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু কোনোটিরই ফলাফল আসেনি। তাই আমরা আর অপেক্ষা করব না। শিক্ষকদের ওপর হামলার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেখে আমরা শান্ত হব না।”
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচির কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটের কথা থাকলেও প্রার্থীদের প্রচারণায় ভাটা পড়েছে। সোমবার সকাল থেকে প্রার্থীদের প্রচারণায় নামতে দেখা যায়নি।
২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে পূজার ছুটি। শাটডাউন কর্মসূচি ও ছুটির কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যাচ্ছে। ফলে পূজার পর নির্বাচন করার দাবি তুলেছে ছাত্রদলসহ পাঁচটি প্যানেল। তবে ছাত্র শিবির যথাসময়ে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।
স্বতন্ত্র ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের’ ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “এখন নির্বাচনের পরিবেশ নাই। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে সেটার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। কারণ অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে গেছে। তাই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হোক এবং তারপর রাকসু নির্বাচন হোক।”
ছাত্রদল মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূরউদ্দিন আবির বলেন, “৪৮ ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে যে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল, ভোটার এবং প্রার্থীদের আনাগোনা ছিল, তা এখন অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে। ভোটার নেই বললেই চলে। আমরা চাই সবার উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হোক। তাই পূজার পর নির্বাচন হওয়া জরুরি।”
স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী শাহ্ পরাণ (লিখন) বলেন, “কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যে রাকসু করতে চাইছে। পূজার ছুটি ধরলে টানা ১৫ দিন বন্ধ। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাসায় চলে গেছে। মানে, কী দরকার ভাই? এর চেয়ে ইলেকশন ছাড়াই তাদের দিয়া দেন। খুবই বিশ্রী অবস্থা! হোয়াট শ্যুড উই ডু?”
তবে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের’ জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা ২৫ সেপ্টেম্বরেই নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, “আমরা চাই ২৫ তারিখে রাকসু নির্বাচন হোক। শুরু থেকে একটা চক্র রাকসু নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। পূজার পর পরীক্ষা থাকায় তখন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আরও কম হবে।”
*শনিবারের ঘটনায় শাস্তি দাবী*
শনিবার রাতে পোষ্য কোটা ইস্যুতে আন্দোলনের মধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক–কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শিক্ষক সংগঠন ও অফিসার্স সমিতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্ত কমিটি গঠন এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানায়।
রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পর সোমবার থেকে লাগাতার শাটডাউন শুরু হয়। সব একাডেমিক ভবন ও প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলছে। ক্যাম্পাস কার্যত ফাঁকা হয়ে গেছে।
শনিবারের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমীরুল ইসলাম বলেন, “শনিবার শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করছি। কারণ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
ইউনিভার্সিটি টিচারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সালাহউদ্দিন আম্মার এবং তার সহযোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার নীলনকশা নিয়ে মাঠে নেমেছে। এই আম্মার এমন এক বেয়াদব এবং সন্ত্রাসী যে হাতে পিস্তল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করে। শনিবার এই সন্ত্রাসীরা শিক্ষকদের যেভাবে লাঞ্ছিত করেছে, আমরা যদি এর সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যতে আমাদেরও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের দাবি হলো চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে তাদের সনদ বাতিল করতে হবে। এছাড়া যারা রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী আছে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।”
আর বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, “গত ৯ মাসে প্রশাসন অসংখ্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু কোনোটিরই ফলাফল আসেনি। তাই আমরা আর অপেক্ষা করব না। শিক্ষকদের ওপর হামলার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেখে আমরা শান্ত হব না।”