ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনে সিসিটিভি ফুটেজ এবং ভোটারদের সই থাকা তালিকা প্রকাশের দাবি উঠলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাতে ‘অপারগতা’ প্রকাশ করেছে। প্রশাসনের দাবি, এগুলো ‘পাবলিক’ কোনো নথি নয়; বরং ‘গোপনীয়’ ও ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন জানায়, ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ভোটে ছাত্রশিবিরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রার্থীরা। তবে কোনো পদেই তারা জয়ী হতে পারেনি। সম্পাদকীয় যে তিনটি পদ শিবিরের হাতছাড়া হয়, সেখানে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ভোটের ১৩ দিন পর, গত সোমবার ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে কারচুপির অভিযোগ তোলে। তারা ডাকসু নির্বাচনে ১১টি অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপস্থিতির আগেই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর থাকা, নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার সরবরাহসহ নানা জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ভিডিও চেয়ে আবেদন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ ও ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল। তারাও প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ তোলে। এর পর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে সেখানে সবার সব অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়নি; মূলত ছাত্রদলের অভিযোগ নিয়েই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্য সবার আবেদনেরও আলাদা জবাব দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, “আমাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেকটি আবেদনপত্র বিচার-বিশ্লেষণ করে পৃথকভাবে জবাব দেওয়া হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, গত সোমবার একটি ছাত্রসংগঠন সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগগুলো করেছে, সেগুলোর মধ্যে দুটি বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দেওয়া প্রয়োজন মনে করছি।”
সিসিটিভি ফুটেজ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, “কয়েকজন আবেদনকারী নির্বাচনের দিন ধারণকৃত ও সংরক্ষিত সিসিটিভি ফুটেজের পুরোটাই চেয়েছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছি ও আইনজীবীদের মতামত নিয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ কোনো ‘পাবলিক ডকুমেন্ট’ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণ ও সংরক্ষিত ফুটেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদ আমানত হিসেবে থাকে। এটি কেবল নির্বাচনি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বা ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
“আমরা আবেদনগুলো বিশ্লেষণ করেছি। অধিকাংশ আবেদন অস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট কারণ বা কোন সময়ের ফুটেজ প্রয়োজন তা উল্লেখ করা হয়নি। অনেক আবেদন সাধারণ বা ব্যাপক প্রশ্নমালা আকারে করা হয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তবে কোনো প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট সময়ের কোনো ঘটনার ফুটেজ দেখতে চান, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নির্ধারিত স্থানে তা দেখা যাবে।”
ভোটারদের সই করা তালিকা নিয়ে প্রশাসন জানায়, “এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গোপনীয়। ডাকসু নির্বাচনবিধিতে এর কপি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভোটকেন্দ্রে এসে প্রাথমিক তথ্য দিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে যে তালিকায় সই করেছেন, তা গোপনীয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এ তালিকা প্রকাশ করা যাবে না। এছাড়া কেন এ তালিকা প্রয়োজন, আবেদনগুলোতে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। তাই অস্পষ্ট ও সারবত্তাহীন আবেদনের ভিত্তিতে তালিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসন অপারগতা জানাচ্ছে।”
ব্যালট পেপার মুদ্রণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, “ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রতিষ্ঠান বা ভেন্ডারদের পরিচয় সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যে ওএমআর মেশিনে স্ক্যান করে ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে, তা নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্ভব নয়। পুরো প্রক্রিয়ায় গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হয়েছে, তাই এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই।”
বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচনে সিসিটিভি ফুটেজ এবং ভোটারদের সই থাকা তালিকা প্রকাশের দাবি উঠলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাতে ‘অপারগতা’ প্রকাশ করেছে। প্রশাসনের দাবি, এগুলো ‘পাবলিক’ কোনো নথি নয়; বরং ‘গোপনীয়’ ও ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন জানায়, ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ভোটে ছাত্রশিবিরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রার্থীরা। তবে কোনো পদেই তারা জয়ী হতে পারেনি। সম্পাদকীয় যে তিনটি পদ শিবিরের হাতছাড়া হয়, সেখানে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ভোটের ১৩ দিন পর, গত সোমবার ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে কারচুপির অভিযোগ তোলে। তারা ডাকসু নির্বাচনে ১১টি অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপস্থিতির আগেই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর থাকা, নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার সরবরাহসহ নানা জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ভিডিও চেয়ে আবেদন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ ও ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল। তারাও প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ তোলে। এর পর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে সেখানে সবার সব অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়নি; মূলত ছাত্রদলের অভিযোগ নিয়েই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্য সবার আবেদনেরও আলাদা জবাব দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, “আমাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেকটি আবেদনপত্র বিচার-বিশ্লেষণ করে পৃথকভাবে জবাব দেওয়া হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, গত সোমবার একটি ছাত্রসংগঠন সংবাদ সম্মেলনে যে অভিযোগগুলো করেছে, সেগুলোর মধ্যে দুটি বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দেওয়া প্রয়োজন মনে করছি।”
সিসিটিভি ফুটেজ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, “কয়েকজন আবেদনকারী নির্বাচনের দিন ধারণকৃত ও সংরক্ষিত সিসিটিভি ফুটেজের পুরোটাই চেয়েছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করেছি ও আইনজীবীদের মতামত নিয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ কোনো ‘পাবলিক ডকুমেন্ট’ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণ ও সংরক্ষিত ফুটেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদ আমানত হিসেবে থাকে। এটি কেবল নির্বাচনি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বা ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
“আমরা আবেদনগুলো বিশ্লেষণ করেছি। অধিকাংশ আবেদন অস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট কারণ বা কোন সময়ের ফুটেজ প্রয়োজন তা উল্লেখ করা হয়নি। অনেক আবেদন সাধারণ বা ব্যাপক প্রশ্নমালা আকারে করা হয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তবে কোনো প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট সময়ের কোনো ঘটনার ফুটেজ দেখতে চান, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নির্ধারিত স্থানে তা দেখা যাবে।”
ভোটারদের সই করা তালিকা নিয়ে প্রশাসন জানায়, “এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গোপনীয়। ডাকসু নির্বাচনবিধিতে এর কপি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভোটকেন্দ্রে এসে প্রাথমিক তথ্য দিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে যে তালিকায় সই করেছেন, তা গোপনীয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এ তালিকা প্রকাশ করা যাবে না। এছাড়া কেন এ তালিকা প্রয়োজন, আবেদনগুলোতে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। তাই অস্পষ্ট ও সারবত্তাহীন আবেদনের ভিত্তিতে তালিকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসন অপারগতা জানাচ্ছে।”
ব্যালট পেপার মুদ্রণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, “ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রতিষ্ঠান বা ভেন্ডারদের পরিচয় সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যে ওএমআর মেশিনে স্ক্যান করে ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে, তা নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্ভব নয়। পুরো প্রক্রিয়ায় গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হয়েছে, তাই এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই।”