image

রাকসুর জিএসের আচরণ ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শামিল’: রাবি ছাত্রদল

সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের আচরণকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ শামিল বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করে একটি কুচক্রী মহল অরাজক পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ সংগঠনটির।

রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহদপ্তর সম্পাদক সিয়াম বিন আইয়ুব স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত বৃহস্পতিবার রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার নিজের ব্যক্তিগত ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ নামের একটি গ্রুপে পোস্ট দিয়ে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেন। ওই পোস্টে ডিনদের চেয়ারে দেখা গেলে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং ‘বাকিটা বুঝিয়ে দেব’— এমন হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

‘এছাড়া শুক্রবার তিনি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা চাকরিতে থাকলে তাঁদের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখার হুমকিও দেন।’

রোববার সকালে ছয়টি অনুষদের ডিনদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি সকালে রাকসু ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ডিনদের কেউ ক্যাম্পাসে না থাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে একে একে তাদের ফোন করেন এবং তাদের উদ্দেশে লেখা পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেন।

পরে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ক্লাস নিচ্ছেন— এমন তথ্য পেয়ে তার বিভাগে যান সালাহউদ্দিন আম্মার। তবে সেখানে ওই শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। এরপর দুপুরে শিক্ষার্থীরা ডিনস কমপ্লেক্স ভবনের তিনজন ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে উপাচার্যসহ প্রশাসন ভবনের সব কক্ষে তালা দেওয়া হয়। প্রশাসনের আশ্বাসে পরবর্তীতে তালাগুলো খুলে দেওয়া হয়।

রাকসুর জিএসের এসব বক্তব্যকে হুমকিমূলক উল্লেখ করে ছাত্রদল জানায়, ‘শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে দেওয়া এ ধরনের বক্তব্য অছাত্রসুলভ আচরণের বহিঃপ্রকাশ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। একজন ছাত্রনেতা হিসেবে বারবার শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন ও মারমুখী আচরণ করা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই শামিল।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে তথাকথিত ‘তালা ঝোলানো’ সংস্কৃতি ফ্যাসিবাদের দুঃসময়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। অতীতে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সহ-উপাচার্যসহ এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা শিক্ষক সমাজকে অপমানিত করেছিল, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. সৈয়দ শামসুজ্জোহার ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অপচেষ্টা চালানো হলে শাখা ছাত্রদলের সব স্তরের নেতা-কর্মী তা শক্ত হাতে প্রতিহত করবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

ছাত্রদল বলছে, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ ‘কিন্তু তথ্য-উপাত্ত ছাড়া অহেতুক ট্যাগিং ও হুমকির মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হলে’ সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানায় সংগঠনটি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী ও সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুল ইসলাম যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি হুমকি, অশালীন ও মারমুখী আচরণ জ্ঞানচর্চার পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। একজন ছাত্রনেতার কাছ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য ও অছাত্রসুলভ। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া অপপ্রচার ও হুমকির মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা বরদাশত করা হবে না।’

‘ক্যাম্পাস’ : আরও খবর

সম্প্রতি