রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক অবমাননা, হেনস্থা এবং মব সৃষ্টি করে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপিপন্থী তিনটি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবিও জানানো হয়।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে উপাচার্যের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষক সংগঠনগুলো হলো—রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব), জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এবং জিয়া পরিষদ।
বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলিম বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করছে। কার্যালয়ে তালা দেওয়া, অফিসে কুয়েরি করা —এগুলো কোনো শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, এসব কার্যক্রম রাকসুর নাম ব্যবহার করে করা হচ্ছে, অথচ রাকসু সভাপতি স্বয়ং উপাচার্য। “রাকসুর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই তারা রাকসুর পরিচয় ব্যবহার করছে,” বলেন তিনি।
ডিনদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, “ডিনরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী একাডেমিক লিডার। তাদের বাঁশে ঝুলানো, কলার ধরে টেনে আনার মতো বক্তব্য আমরা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় চলবে নিয়ম-কানুন অনুযায়ী —এটাই আমাদের দাবি।”
উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে তিনি বলেন, “উপাচার্য আমাদের দাবিকে সমর্থন করেন ঠিকই, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেন না।”
বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখার দাবিও তোলা হয়। এ বিষয়ে অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর কেবল রুটিন কার্যক্রম চলে, কোনো নিয়োগ কার্যক্রম হয় না। আমরা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছি।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দিন ও অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। শিক্ষক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফরিদুল ইসলাম এবং ইউট্যাব সভাপতি অধ্যাপক মামুনুর রশীদ।
অভ্যুত্থানকালীন সময়ের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার এ বছর জুলাই–আগস্টে পোষ্যকোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রশাসন ভবনে দিনব্যাপী তালা দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে গত সেপ্টেম্বরে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দিনসহ একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তার সঙ্গে তার হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।
সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর দুই বছর আগে নির্বাচিত ১২ ডিনের মেয়াদ শেষ হয়। উপাচার্য তাদের রুটিন দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিলে ছয়জন আওয়ামীপন্থী ডিনকে অপসারণের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গালিগালাজ ও পদত্যাগের চাপ সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীতে ওই ছয় ডিন উপাচার্যের কাছে রুটিন দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানান। এসব ঘটনায় আম্মারের কথিত ‘আক্রমণাত্মক’ আচরণ নিয়ে শিক্ষক মহলে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়।
সারাদেশ: বরুড়ায় কৃষি উপকরণ বিতরণ
সারাদেশ: মোহনগঞ্জে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প
সারাদেশ: পূর্বধলায় ভারতীয় মদসহ আটক ৩