alt

ঢাবির আবাসিক হল খোলা ছাড়া পরীক্ষা নয়: ছাত্রনেতাদের মত-দাবি

প্রতিনিধি , ঢাবি : শনিবার, ০৫ জুন ২০২১

করোনাকালে আবাসিক হল না খোলার শর্তে সশরীরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থগিত থাকা অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষা আগামী ১৫ জুন এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্যান্য সেমিস্টার ফাইনাল, বার্ষিক কোর্স ফাইনাল ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসমূহ আগামী ১ জুলাই থেকে অনুষ্ঠিত হবে।

তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ‘হল-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দাও’ আন্দোলনের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করছেন একদল শিক্ষার্থী। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী, হল খোলার দাবিতে আগামীকাল রবিবার (৬ জুন) রাজু ভাস্কর্যে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

তাদের মতে, হল না খোলার শর্তে সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্তকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমাদের দাবি ধাপে ধাপে পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দিতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে‍। পূর্বে স্থগিত যেসব পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সেগুলো ১৫ জুন থেকেই নিতে হবে‍।

সধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দাবিও একই। তাদের মতে, আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে তা অবান্তর। করোনার এই বন্ধে যেসব নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী টিউশনি করে তাদের পড়াশোনা চালাতো তারা আর্থিক-মানসিকভাবে খুবই বিপদে আছে। তারা এখন কিভাবে মেসভাড়া দিয়ে পরীক্ষা দিবে? এই অবস্থায় সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার আগে হলগুলো খুলে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার যে বক্তব্য-সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে তা অবান্তর। কারণ যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করে চলতো তারা কিভাবে মেসভাড়া দিয়ে পরীক্ষা দিবে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের অনেকে এখনো হলে অবস্থান করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি? তারা যদি হলে থাকতে পারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন পারবে না?

“প্রথমত, একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। তারপর করোনা টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সংকট সৃষ্টি হবে।

পূর্ব পরিকল্পনা অর্থাৎ রোডম্যাপ থাকলে এ সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব হবে। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নরুল হক নুর বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই এই পরিস্থিতিতে এত দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকেনি। সেক্ষেত্রে ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন ছাত্র-সংগঠন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এখন অন্ততঃ বিকল্প উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা উচিত। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে পাঁচদিনের পরিবর্তে অন্ততঃ দুইদিন ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া দেশে যেহেতু ভ্যাকসিন আসছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলেই শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে পারে।

“দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তারা মাদক, অনলাইন আসক্তিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাই যেকোনো ভাবে হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াটা এখন সময়ের দাবি।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, হল খুলে দেওয়ার দাবিটা খুবই যৌক্তিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রদের পারিবারিক-আর্থিক-মানসিক অবস্থা খুবই বিপর্যস্ত। এটা কত ভয়ানক যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে ধরলে এই সংখ্যা ৪০ এরও বেশি।

তিনি বলেন, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা যারা টিউশনি করে তাদের পড়াশোনা চালাতো তারা আর্থিক-মানসিকভাবে খুবই বিপদে আছে। অথচ পুরো সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াইনি। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার আগে হলগুলো খুলে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুবই ম্যাচিউর। অন্যান্য যেকোনো স্থানের তুলনায় এখানে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব।

ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমদের পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানিয়ে আসছি ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার জন্য। যেখানে দেশের সবকিছু আগের মত চলছে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রশাসনে পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরের যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সেটা ভুলে গিয়ে গণভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া সরকারের যে দুর্বৃত্তায়ন, গুম, খুন-রাহাজানি চলছে, এগুলোর বিরুদ্ধে একটা প্রচন্ড গণ-আন্দোলনের হতে পারে এই ভয়ে তারা ক্যাম্পাস খুলে দিতে চাচ্ছে না।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোন বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসকে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ছবি

জবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক হলেন খাদিজা

ছবি

রাবিতে নবীনবরণ: এক মঞ্চে রাকসু, ডাকসু ও চাকসুর ভিপি

ছবি

ঢাবি রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

ছবি

ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাবেক নেতা আটক

ডাকসু, জাকসু, রাকসু, চাকসু: সম্মিলিত ছাত্র সংসদের বিবৃতি

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

ছবি

রাকসু জিএসের সঙ্গে বাকবিতন্ডা, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাইলেন রাকসুর প্রতিনিধিরা

ছবি

‘সোহ্রাওয়ার্দীতে গাঁজা বেঁচতে নিষেধ করায় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে হত্যা’: ডিবি

ছবি

সৈয়দপুরে আর্মি ইউনিভার্সিটিতে মেট্রোরেল বিষয়ক সেমিনার

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

রাকসুর প্রথম অধিবেশনে ১২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা যৌক্তিক সময়ে নেওয়ার দাবি উত্তীর্ণদের

ছবি

জকসুতে এমফিল বাদ: আমাদের মাইনাস করার মাস্টারপ্ল্যান, বলছে ছাত্রদল

ছবি

বিএনপির বিরুদ্ধে ডাকসুর শিবিরের তিন নেতার বিবৃতি

ছবি

ইবিতে জুলাইবিরোধী ৩০ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত

ছবি

সিটি ইউনিভার্সিটিতে সংবাদ সম্মেলন: শাস্তি, ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

ছবি

জবি ছাত্রদলের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

রাবি: দুই প্রশিক্ষকের উপস্থিতিতে ডুবেছেন সায়মা, তদন্তে পাওয়া গেছে অন্যান্য ‘গাফিলতি’

ছবি

‘বৈষম্য’ বাতিলের দাবীতে লাগাতার কর্মবিরতিতে রাবির স্কুল শিক্ষকরা

ছবি

জকসু নির্বাচন: পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন

ছবি

রাবি: সায়মার মৃত্যুর ‘সুষ্ঠু বিচার’ দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরা, বিক্ষোভ

ছবি

চবির শহীদ আবদুর রব হলে সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন

ছবি

রাবি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

ছবি

রাবি: সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

রাবি: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদ থেকে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল

ছাত্র সংসদ এখন থেকে জাতীয় ছাত্রশক্তি

ছবি

বুয়েটের শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে মামলায় ধর্মানুভূতিতে আঘাতের ধারা

ছবি

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

ছবি

ছাত্রীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য: বুয়েটছাত্র শ্রীশান্ত কারাগারে

ছবি

রাবি: সভাপতির অপসরণসহ চার দাবিতে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’

ছবি

রাকসুর গেজেট প্রকাশ, শপথ ‘২৬ অক্টোবর’

ছবি

ব্রিটিশ কাউন্সিল পুরস্কার পেলেন ইংরেজি মাধ্যমের ৪২ শিক্ষার্থী

ছবি

তিস্তা প্রকল্পের দাবিতে রাবিতে ‘তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন’ কর্মসূচী

tab

ঢাবির আবাসিক হল খোলা ছাড়া পরীক্ষা নয়: ছাত্রনেতাদের মত-দাবি

প্রতিনিধি , ঢাবি

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১

করোনাকালে আবাসিক হল না খোলার শর্তে সশরীরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থগিত থাকা অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষা আগামী ১৫ জুন এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্যান্য সেমিস্টার ফাইনাল, বার্ষিক কোর্স ফাইনাল ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসমূহ আগামী ১ জুলাই থেকে অনুষ্ঠিত হবে।

তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ‘হল-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দাও’ আন্দোলনের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করছেন একদল শিক্ষার্থী। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী, হল খোলার দাবিতে আগামীকাল রবিবার (৬ জুন) রাজু ভাস্কর্যে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

তাদের মতে, হল না খোলার শর্তে সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্তকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং আমাদের দাবি ধাপে ধাপে পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দিতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে‍। পূর্বে স্থগিত যেসব পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সেগুলো ১৫ জুন থেকেই নিতে হবে‍।

সধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দাবিও একই। তাদের মতে, আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে তা অবান্তর। করোনার এই বন্ধে যেসব নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী টিউশনি করে তাদের পড়াশোনা চালাতো তারা আর্থিক-মানসিকভাবে খুবই বিপদে আছে। তারা এখন কিভাবে মেসভাড়া দিয়ে পরীক্ষা দিবে? এই অবস্থায় সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার আগে হলগুলো খুলে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার যে বক্তব্য-সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে তা অবান্তর। কারণ যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি করে চলতো তারা কিভাবে মেসভাড়া দিয়ে পরীক্ষা দিবে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের অনেকে এখনো হলে অবস্থান করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি? তারা যদি হলে থাকতে পারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন পারবে না?

“প্রথমত, একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। তারপর করোনা টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অনেক সংকট সৃষ্টি হবে।

পূর্ব পরিকল্পনা অর্থাৎ রোডম্যাপ থাকলে এ সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব হবে। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নরুল হক নুর বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই এই পরিস্থিতিতে এত দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকেনি। সেক্ষেত্রে ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন ছাত্র-সংগঠন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এখন অন্ততঃ বিকল্প উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা উচিত। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে পাঁচদিনের পরিবর্তে অন্ততঃ দুইদিন ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া দেশে যেহেতু ভ্যাকসিন আসছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলেই শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে পারে।

“দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তারা মাদক, অনলাইন আসক্তিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাই যেকোনো ভাবে হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াটা এখন সময়ের দাবি।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, হল খুলে দেওয়ার দাবিটা খুবই যৌক্তিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রদের পারিবারিক-আর্থিক-মানসিক অবস্থা খুবই বিপর্যস্ত। এটা কত ভয়ানক যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে। অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে ধরলে এই সংখ্যা ৪০ এরও বেশি।

তিনি বলেন, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা যারা টিউশনি করে তাদের পড়াশোনা চালাতো তারা আর্থিক-মানসিকভাবে খুবই বিপদে আছে। অথচ পুরো সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াইনি। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার আগে হলগুলো খুলে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুবই ম্যাচিউর। অন্যান্য যেকোনো স্থানের তুলনায় এখানে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব।

ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমদের পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানিয়ে আসছি ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার জন্য। যেখানে দেশের সবকিছু আগের মত চলছে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রশাসনে পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরের যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সেটা ভুলে গিয়ে গণভবনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া সরকারের যে দুর্বৃত্তায়ন, গুম, খুন-রাহাজানি চলছে, এগুলোর বিরুদ্ধে একটা প্রচন্ড গণ-আন্দোলনের হতে পারে এই ভয়ে তারা ক্যাম্পাস খুলে দিতে চাচ্ছে না।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোন বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসকে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

back to top