alt

নগর-মহানগর

৫ বছরেও শেষ হয়নি চুড়িহাট্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিচার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি বিচারকাজ। কবে নাগাদ বিচার শেষ হতে পারে, তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

গতকাল ছিল চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পাঁচ বছরপূর্তি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে প্রায় তিন বছর পর ‘ওয়াহেদ ম্যানশন’ ভবনের মালিক দুই ভাইসহ ৮ জনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল কাইউম। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার বাদী আসিফ আহমেদ সাক্ষ্য দেন। তবে তার জেরা এখনও শেষ হয়নি। আগামী ২১ মার্চ মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে। এই মামলায় মোট সাক্ষী করা হয়েছে ১৬৭ জনকে।

মামলা সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবারই দায়িত্ব রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। তবে সাক্ষীরা সমন পেয়েও ঠিকমতো আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচার শেষ হতে বিলম্বিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের কাজ সাক্ষীদের সমন পাঠানো। সাক্ষীদের হাজির করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের। এখানে উভয় পক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রয়োজনে সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষও চায় মামলাটির বিচার যেন দ্রুত শেষ হয়, আর ভিকটিমের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়।’

এদিকে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী মোস্তফা পাঠান (ফারুক) জানান, মামলাটির বিচার শুরুর পর মাত্র একজনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হলেও তার জেরা এখনও শেষ হয়নি। ওই ঘটনায় আসামিরাই ভিকটিমাইজড। আসামিরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ঘটনায় তারা কীভাবে অভিযুক্ত হন, আমার মাথায় আসে না। এখানে আসামিদের কোনও দোষ নেই। নিছক এটি একটি দুর্ঘটনা মাত্র।

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ আরও আন্তরিক হলে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হবে। বিচার দেরি হওয়ায় আসামিরাই আর্থিক, মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আশা করি, মামলার বিচার শেষ হলে সব আসামি ন্যায়বিচার পাবেন।’ আসামি পক্ষে থেকে সব আসামির খালাসের দাবি জানান এই আইনজীবী।

এ বিষয়ে নিহত জুম্মনের ছেলে মামলার বাদী আসিফ আহমেদ জানান, প্রতি বছর এদিনটা এলেই মানুষজন খোঁজ-খবর নেয়। বাকি দিনগুলোতে আমরা কেমন আছি, কীভাবে চলছে আমাদের পরিবার, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। বলতে গেলে অন্যদের চেয়ে আমরা অনেকটাই ভালো আছি। তবে অনেক পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে খুব খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

আসিফ আহমেদ বলেন, ‘দেখতে দেখতে পাঁচ বছর চলে গেলো। এখনও মামলার বিচার ঠিকমতো শুরুই হলো না। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাসে আদালতে সাক্ষী দিয়ে এসেছি। আর কোনও খোঁজ-খবর নেই। আসামি পক্ষের সময়ের আবেদনের কারণে আমার সাক্ষ্যগ্রহণ ঠিকমতো শেষও করতে পারলাম না। মামলার পরবর্তী তারিখ কবে তাও জানি না ‘

তিনি বলেন, ‘তাহলে কীভাবে বিচার এগোবে। ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় দিন গোনা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তবে আদালত দোষীদের যে শাস্তি দেবেন, তাতেই আমি খুশি।’

বাবা হারানোর পর এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের সরকারি অনুদান পাননি অভিযোগ করে আসিফ বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ৬৬টি পরিবারের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক চাকরি পেলেও বাকিদের খোঁজ-খবর নেওয়া হয়নি। আর সিটি করপোরেশন থেকে যে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সেটা হচ্ছে মাস্টার রোলের। সিটি করপোরেশন বা সরকারের কোনও সংস্থার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত এক টাকাও পাইনি।’ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার দেখা করার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আসিফ আরও বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া জায়গাটি আগের মতো হয়ে গেছে। সেই বিল্ডিং দেখে চেনার উপায় নেই। নতুন করে অফিস ও দোকান হয়েছে। মাঝখান থেকে আমার বাবাকে হারালাম। ৬৬টি পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জন করার হাতিয়ারটা হারালো। সরকার যেন আমাদের এই বিষয়টি একটু সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখে। তাহলে আমরা একটু ভালো থাকতে পারবো।’

ওই ঘটনায় স্থানীয় মো. আসিফ আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন—ভবনের মালিক সহোদর হাসান ওরফে হাসান সুলতান, সোহেল ওরফে শহীদ ওরফে হোসেন, রাসায়নিকের গুদামের মালিক ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিচালক মোজাম্মেল হক, ম্যানেজার মোজাফফর উদ্দিন, মোহাম্মদ জাওয়াদ আতির, মো. নাবিল ও মোহাম্মদ কাশিফ। বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজার মডেল থানার চুড়িহাট্টা শাহী জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় চলন্ত একটি প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশের বিদ্যুতের ট্রান্সমিটারে আগুন লাগে। একইসঙ্গে পাশে আরেকটি প্রাইভেটকারে আগুন লাগলে সেই গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। নন্দকুমার দত্ত রোডের চুড়িহাট্টার রাস্তায় বিল্ডিংয়ের সামনে একটি পিকআপ গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল। ওই পিকআপের সিলিন্ডারগুলো বিস্ফোরিত হয়ে বাড়ির নিচতলা ও রাজমহল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে আগুন লাগে। ওই রাতে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা যায়।

বায়তুল মোকাররমে কঠোর নিরাপত্তা

কারফিউ পুরোপুরি তুলে না নেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

ছবি

জনজীবনে স্বস্তি, রাজধানীতে যানজট

ছবি

স্বাভাবিকতার পথে নগরজীবন

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে রামপুরায় বিটিভি ভবনে অগ্নিকাণ্ড

ছবি

বাড্ডায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ, একজন নিহত

ছবি

মেট্রোরেলের মিরপুর অংশে চলাচল বন্ধ

ছবি

বাড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে পুলিশের রাবার বুলেট ও ছররা গুলিতে আহত অনেকে

ছবি

উত্তাল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, যান চলাচল বন্ধ

ছবি

মিরপুর-১০ রণক্ষেত্র, আ.লীগের সমাবেশ পণ্ড

ছবি

রামপুরা পুলিশ বক্সে আগুন, সড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

ছবি

সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া

ছবি

সহিংসতা পরিহার করুনঃ পুলিশ সদর দপ্তর

ছবি

ঢাকার শনির আখড়ায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ, শিশুসহ ৬ জন গুলিবিদ্ধ

ছবি

ঢাকায় কোটা সংঘর্ষে নিহত ২ঃ পুলিশ বলছে দায় আন্দোলনকারীদের

ছবি

আজ গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল কর্মসূচি

ছবি

সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ

ছবি

"তাণ্ডবের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের মোতায়েন"

ছবি

"কোটা আন্দোলন: ঢাকা মেডিকেলের সামনে সংঘর্ষ ও হাত বোমা বিস্ফোরণ"

রাজধানীতে গ্যাস সংকট, চুলা জ্বলে না বাসাবাড়িতে

ছবি

ডিএনসিসির চিঠি, ‘আতঙ্কে’ গরুর খামারিরা

ছবি

চার দফা দাবিতে রাজধানীতে হরিজন সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ সমাবেশ

ছবি

প্রবল বর্ষণে রাজধানীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে চার শ্রমজীবীর মৃত্যু

৫ বছর পড়ে আছে ৩৮ কোটির সিজেএম ভবন

ছবি

কোটাবিরোধী আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের নামে পুলিশের মামলা

ছবি

সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি, ভাসছে ঢাকা

ছবি

বেবিচক এর মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহের সাথে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনু্ষ্ঠান

ছবি

‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দিল শিক্ষার্থীরা

ছবি

আত্মসাত মামলা: ইউনূসের আবেদনের রায় ২১ জুলাই

ছবি

এসি নষ্ট, আকাশে ৩৭ মিনিট উড়ে ঢাকায় ফিরল বিমান

ছবি

কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হরিজনদের ওপর হামলার অভিযোগ

ছবি

বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিপোর্টার্স ফোরামের নেতৃত্বে সবুজ-কাওসার

ছবি

বিসিএস ও মেডিকেল প্রশ্নফাঁসকারীদের বিচার চায় জবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

কোটা : ঢাবির পর এবার জবি শিক্ষার্থীদের জিরো পয়েন্ট অবরোধ

ছবি

বাংলা ব্লকেডে’ অচল সড়ক, মেট্রোতে উপচেপড়া ভিড়

ছবি

কোটা : স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ আপিল বিভাগের

tab

নগর-মহানগর

৫ বছরেও শেষ হয়নি চুড়িহাট্রায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিচার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি বিচারকাজ। কবে নাগাদ বিচার শেষ হতে পারে, তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

গতকাল ছিল চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পাঁচ বছরপূর্তি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে প্রায় তিন বছর পর ‘ওয়াহেদ ম্যানশন’ ভবনের মালিক দুই ভাইসহ ৮ জনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল কাইউম। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার বাদী আসিফ আহমেদ সাক্ষ্য দেন। তবে তার জেরা এখনও শেষ হয়নি। আগামী ২১ মার্চ মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে। এই মামলায় মোট সাক্ষী করা হয়েছে ১৬৭ জনকে।

মামলা সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবারই দায়িত্ব রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। তবে সাক্ষীরা সমন পেয়েও ঠিকমতো আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচার শেষ হতে বিলম্বিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের কাজ সাক্ষীদের সমন পাঠানো। সাক্ষীদের হাজির করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের। এখানে উভয় পক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রয়োজনে সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষও চায় মামলাটির বিচার যেন দ্রুত শেষ হয়, আর ভিকটিমের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়।’

এদিকে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী মোস্তফা পাঠান (ফারুক) জানান, মামলাটির বিচার শুরুর পর মাত্র একজনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হলেও তার জেরা এখনও শেষ হয়নি। ওই ঘটনায় আসামিরাই ভিকটিমাইজড। আসামিরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ঘটনায় তারা কীভাবে অভিযুক্ত হন, আমার মাথায় আসে না। এখানে আসামিদের কোনও দোষ নেই। নিছক এটি একটি দুর্ঘটনা মাত্র।

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ আরও আন্তরিক হলে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হবে। বিচার দেরি হওয়ায় আসামিরাই আর্থিক, মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আশা করি, মামলার বিচার শেষ হলে সব আসামি ন্যায়বিচার পাবেন।’ আসামি পক্ষে থেকে সব আসামির খালাসের দাবি জানান এই আইনজীবী।

এ বিষয়ে নিহত জুম্মনের ছেলে মামলার বাদী আসিফ আহমেদ জানান, প্রতি বছর এদিনটা এলেই মানুষজন খোঁজ-খবর নেয়। বাকি দিনগুলোতে আমরা কেমন আছি, কীভাবে চলছে আমাদের পরিবার, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। বলতে গেলে অন্যদের চেয়ে আমরা অনেকটাই ভালো আছি। তবে অনেক পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে খুব খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

আসিফ আহমেদ বলেন, ‘দেখতে দেখতে পাঁচ বছর চলে গেলো। এখনও মামলার বিচার ঠিকমতো শুরুই হলো না। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাসে আদালতে সাক্ষী দিয়ে এসেছি। আর কোনও খোঁজ-খবর নেই। আসামি পক্ষের সময়ের আবেদনের কারণে আমার সাক্ষ্যগ্রহণ ঠিকমতো শেষও করতে পারলাম না। মামলার পরবর্তী তারিখ কবে তাও জানি না ‘

তিনি বলেন, ‘তাহলে কীভাবে বিচার এগোবে। ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় দিন গোনা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তবে আদালত দোষীদের যে শাস্তি দেবেন, তাতেই আমি খুশি।’

বাবা হারানোর পর এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের সরকারি অনুদান পাননি অভিযোগ করে আসিফ বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ৬৬টি পরিবারের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক চাকরি পেলেও বাকিদের খোঁজ-খবর নেওয়া হয়নি। আর সিটি করপোরেশন থেকে যে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সেটা হচ্ছে মাস্টার রোলের। সিটি করপোরেশন বা সরকারের কোনও সংস্থার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত এক টাকাও পাইনি।’ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার দেখা করার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আসিফ আরও বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া জায়গাটি আগের মতো হয়ে গেছে। সেই বিল্ডিং দেখে চেনার উপায় নেই। নতুন করে অফিস ও দোকান হয়েছে। মাঝখান থেকে আমার বাবাকে হারালাম। ৬৬টি পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জন করার হাতিয়ারটা হারালো। সরকার যেন আমাদের এই বিষয়টি একটু সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখে। তাহলে আমরা একটু ভালো থাকতে পারবো।’

ওই ঘটনায় স্থানীয় মো. আসিফ আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন—ভবনের মালিক সহোদর হাসান ওরফে হাসান সুলতান, সোহেল ওরফে শহীদ ওরফে হোসেন, রাসায়নিকের গুদামের মালিক ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিচালক মোজাম্মেল হক, ম্যানেজার মোজাফফর উদ্দিন, মোহাম্মদ জাওয়াদ আতির, মো. নাবিল ও মোহাম্মদ কাশিফ। বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজার মডেল থানার চুড়িহাট্টা শাহী জামে মসজিদের সামনে রাস্তায় চলন্ত একটি প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশের বিদ্যুতের ট্রান্সমিটারে আগুন লাগে। একইসঙ্গে পাশে আরেকটি প্রাইভেটকারে আগুন লাগলে সেই গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। নন্দকুমার দত্ত রোডের চুড়িহাট্টার রাস্তায় বিল্ডিংয়ের সামনে একটি পিকআপ গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল। ওই পিকআপের সিলিন্ডারগুলো বিস্ফোরিত হয়ে বাড়ির নিচতলা ও রাজমহল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে আগুন লাগে। ওই রাতে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা যায়।

back to top