নগর গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বস্তিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি প্রথমে বঙ্গবন্ধুই করেছিলেন। নগর দরিদ্রদের জন্য রাজউক এর কোনো পরিকল্পনা নেই।’
রোববার ডেইলি স্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জ্বালানি ব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণে চ্যালেঞ্জ: প্রেক্ষিত ঢাকা মহানগরী’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
রান্নার ধোঁয়ার কারণে গত ছয় মাসে ২২ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের গুরুতর কাশির সমস্যা হয়েছে
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজিনাস নলেজ (বারসিক) এবং কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) এর যৌথ আয়োজনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে মূল প্রবন্ধ প্রদান করেন বারসিক এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মো. কামরুজ্জামান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর নির্বাহী পরিচালক সুকান্ত সেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বস্তিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি প্রথমে বঙ্গবন্ধুই করেছিলেন। নগর দরিদ্রদের জন্য রাজউক এর কোন পরিকল্পনা নেই। গবেষণার ফলাফলটি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কাছে পৌঁছাতে হবে। নগর নীতিমালা তৈরি হয়েছে কিন্তু সেটির কোন বাস্তবায়ন নেই। নগর নীতিমালাতে নগর দরিদ্রদের জ্বালানিসহ অন্যান্য অধিকার বিষয় বলা হয়েছে। তাই এটিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বায়ুমান এবং জ্বালানি উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জ্বালানি চাহিদা পূরণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে দিচ্ছে যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি বায়ুমানের ব্যাপক অবনতির কারণ হতে পারে।’
‘জীবাশ্ম জ্বালানি উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলার জন্য একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে,’ বলে তার মত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী বলেন, ‘আমরা যখন কোন প্ল্যান করি তখন বস্তিবাসীদেরকে বাদ দিয়েই প্ল্যান করি। নগরের এই জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে আমরা কখনোই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণের যে চ্যালেঞ্জ সেটি আমাদের এই বস্তিবাসীদেরকে নিয়েই মোকাবেলা করতে হবে।’
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর এনার্জি, ইনভেস্টমেন্ট গ্রান্টস এবং ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্সের অ্যাটাচি - প্রোগ্রাম ম্যানেজার কিয়ারা ভিদুসি বলেন, ‘আমরা জানি নবায়নযোগ্য শক্তিই ভবিষ্যৎ। তাই আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তিকে জনসাধারণের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। সকলের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।’
মুল প্রবন্ধে বলা হয়, ঢাকা মহানগীর ৬৪শতাংশ নগর দরিদ্র পরিবার। রান্না ও বিদ্যুৎ বাবদ গড়ে একটি পরিবার ২ হাজার ৩৮৯ টাকা খরচ করে। অর্থাৎ মোট আয়ের ১৫ শতাংশ চলে যায় জ্বালানি খরচে। গবেষণায় আরও বলা হয়, বিগত দুই বছরের মধ্যে ৮ শতাংশ পরিবারে দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার ৫৪ শতাংশ রান্নার লাকড়ি চুলা থেকে। রান্নার ধোঁয়ার কারণে গত ছয় মাসের মধ্যে ২২ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের গুরুতর কাশির সমস্যা হয়েছে।
গবেষণায় মাত্র ১০ শতাংশ উত্তরদাতা ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি’ শব্দটির সাথে পরিচিত। ঢাকার নগর দরিদ্র পরিবারগুলোতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে আগ্রহের অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন,‘বস্তিবাসীদের ফরমাইল হাউজিং নিয়ে আসতে হবে। কারণ ইনফরমাল হাউজিং-এ তাদের এনার্জি সমস্যা সমাধান করা যাবে না। পরিকল্পনায় বস্তিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফরমাল অ্যাকসেস দিতে হবে সোলার ও গ্যাস সংযোগে।’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে বস্তিবাসীদের অবদান গুরুত্ব দিয়ে গবেষণা করতে হবে। কারণ অর্থনীতিতে তাদের কোন ভূমিকা না থাকলে তারা টিকে থাকতে পারবে না।’
ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এর সভাপতিত্বে উক্ত জাতীয় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন, স্টেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নওজিয়া ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর এনার্জি, ইনভেস্টমেন্ট গ্রান্টস এবং ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্সের অ্যাটাচি-প্রোগ্রাম ম্যানেজার কিয়ারা ভিদুসি।
রোববার, ০২ জুন ২০২৪
নগর গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বস্তিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি প্রথমে বঙ্গবন্ধুই করেছিলেন। নগর দরিদ্রদের জন্য রাজউক এর কোনো পরিকল্পনা নেই।’
রোববার ডেইলি স্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জ্বালানি ব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণে চ্যালেঞ্জ: প্রেক্ষিত ঢাকা মহানগরী’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
রান্নার ধোঁয়ার কারণে গত ছয় মাসে ২২ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের গুরুতর কাশির সমস্যা হয়েছে
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজিনাস নলেজ (বারসিক) এবং কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) এর যৌথ আয়োজনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে মূল প্রবন্ধ প্রদান করেন বারসিক এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মো. কামরুজ্জামান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর নির্বাহী পরিচালক সুকান্ত সেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বস্তিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি প্রথমে বঙ্গবন্ধুই করেছিলেন। নগর দরিদ্রদের জন্য রাজউক এর কোন পরিকল্পনা নেই। গবেষণার ফলাফলটি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কাছে পৌঁছাতে হবে। নগর নীতিমালা তৈরি হয়েছে কিন্তু সেটির কোন বাস্তবায়ন নেই। নগর নীতিমালাতে নগর দরিদ্রদের জ্বালানিসহ অন্যান্য অধিকার বিষয় বলা হয়েছে। তাই এটিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বায়ুমান এবং জ্বালানি উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জ্বালানি চাহিদা পূরণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে দিচ্ছে যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি বায়ুমানের ব্যাপক অবনতির কারণ হতে পারে।’
‘জীবাশ্ম জ্বালানি উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলার জন্য একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে,’ বলে তার মত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী বলেন, ‘আমরা যখন কোন প্ল্যান করি তখন বস্তিবাসীদেরকে বাদ দিয়েই প্ল্যান করি। নগরের এই জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে আমরা কখনোই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণের যে চ্যালেঞ্জ সেটি আমাদের এই বস্তিবাসীদেরকে নিয়েই মোকাবেলা করতে হবে।’
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর এনার্জি, ইনভেস্টমেন্ট গ্রান্টস এবং ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্সের অ্যাটাচি - প্রোগ্রাম ম্যানেজার কিয়ারা ভিদুসি বলেন, ‘আমরা জানি নবায়নযোগ্য শক্তিই ভবিষ্যৎ। তাই আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তিকে জনসাধারণের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। সকলের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।’
মুল প্রবন্ধে বলা হয়, ঢাকা মহানগীর ৬৪শতাংশ নগর দরিদ্র পরিবার। রান্না ও বিদ্যুৎ বাবদ গড়ে একটি পরিবার ২ হাজার ৩৮৯ টাকা খরচ করে। অর্থাৎ মোট আয়ের ১৫ শতাংশ চলে যায় জ্বালানি খরচে। গবেষণায় আরও বলা হয়, বিগত দুই বছরের মধ্যে ৮ শতাংশ পরিবারে দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার ৫৪ শতাংশ রান্নার লাকড়ি চুলা থেকে। রান্নার ধোঁয়ার কারণে গত ছয় মাসের মধ্যে ২২ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের গুরুতর কাশির সমস্যা হয়েছে।
গবেষণায় মাত্র ১০ শতাংশ উত্তরদাতা ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি’ শব্দটির সাথে পরিচিত। ঢাকার নগর দরিদ্র পরিবারগুলোতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে আগ্রহের অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন,‘বস্তিবাসীদের ফরমাইল হাউজিং নিয়ে আসতে হবে। কারণ ইনফরমাল হাউজিং-এ তাদের এনার্জি সমস্যা সমাধান করা যাবে না। পরিকল্পনায় বস্তিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফরমাল অ্যাকসেস দিতে হবে সোলার ও গ্যাস সংযোগে।’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে বস্তিবাসীদের অবদান গুরুত্ব দিয়ে গবেষণা করতে হবে। কারণ অর্থনীতিতে তাদের কোন ভূমিকা না থাকলে তারা টিকে থাকতে পারবে না।’
ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এর সভাপতিত্বে উক্ত জাতীয় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন, স্টেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নওজিয়া ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর এনার্জি, ইনভেস্টমেন্ট গ্রান্টস এবং ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্সের অ্যাটাচি-প্রোগ্রাম ম্যানেজার কিয়ারা ভিদুসি।