জুলাই আন্দোলনের এক বছর না পার হতেই এর স্পিরিট হারাতে বসেছে বলে মনে করছেন লেখক ও চিন্তক সলিমুল্লাহ খান। তাঁর মতে, এই বিষয়টি গভীরভাবে বোঝা জরুরি। আন্দোলন নিয়ে আরও বই প্রকাশের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি বলেছেন।
শনিবার ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) প্রকাশিত গ্রন্থ পনেরো সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার–এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন শিবলী আজাদ ও মিনহাজুল ইসলাম, যেখানে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার সংকলিত হয়েছে।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, "১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ছিল বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে, আর এবারের আন্দোলন হয়েছে দেশের ভেতরের শক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের সাম্য ও মানবিক মর্যাদার মূল মন্ত্রই আবার উচ্চারিত হয়েছে জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে।" তিনি আরও বলেন, "জুলাই আন্দোলনে অনেক শিক্ষক দাঁড়ালেও অধিকাংশ শিক্ষক বিরোধিতা করেছেন।"
তিনি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিভাজন না করারও আহ্বান জানান। ইউপিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সাক্ষাৎকার সংকলনটি শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বৈশ্বিক গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, "কেন সাধারণ মানুষ এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, সেটা বোঝা জরুরি। সন্তানদের পাশে দাঁড়ানোর দায় থেকেই অনেক বাবা-মাও রাজপথে নেমেছিলেন।" তিনি আরও বলেন, জুনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রথমে এগিয়ে এসে সিনিয়রদেরও আন্দোলনে অংশ নিতে বাধ্য করেছিল, এ প্রক্রিয়াটি বোঝা প্রয়োজন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, "আট মাসের মধ্যে দেখা গেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ব্রাহ্মণ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে শূদ্র, আর নারীরা নমশূদ্র।" তিনি মনে করেন, এই বৈষম্যই স্বৈরাচারী শাসকদের শক্তিশালী করছে।
তিনি বলেন, "আন্দোলনে নারীদের এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা না থাকলে তা সফল হত না।" স্নিগ্ধা আরও বলেন, "প্রথমে নারীদের কৃতিত্ব অস্বীকার করা হয়েছে, পরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান খাটো করা হয়েছে—এভাবেই জুলাই স্পিরিটকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।" তাঁর মতে, বইটিতে নারী সমন্বয়কদের ভূমিকা আরও বেশি করে তুলে ধরা উচিত ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ বলেন, "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ভূমিকা রেখেও যথাযথ মূল্যায়ন পায়নি। এখন দেখছি, আন্দোলন ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানো হয়েছে, তারাই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ব্যর্থ।"
অনুষ্ঠানে বইটির সম্পাদক শিবলী আজাদ ও মিনহাজুল ইসলামসহ ইউপিএলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের এক বছর না পার হতেই এর স্পিরিট হারাতে বসেছে বলে মনে করছেন লেখক ও চিন্তক সলিমুল্লাহ খান। তাঁর মতে, এই বিষয়টি গভীরভাবে বোঝা জরুরি। আন্দোলন নিয়ে আরও বই প্রকাশের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি বলেছেন।
শনিবার ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) প্রকাশিত গ্রন্থ পনেরো সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার–এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন শিবলী আজাদ ও মিনহাজুল ইসলাম, যেখানে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার সংকলিত হয়েছে।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, "১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ছিল বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে, আর এবারের আন্দোলন হয়েছে দেশের ভেতরের শক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের সাম্য ও মানবিক মর্যাদার মূল মন্ত্রই আবার উচ্চারিত হয়েছে জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে।" তিনি আরও বলেন, "জুলাই আন্দোলনে অনেক শিক্ষক দাঁড়ালেও অধিকাংশ শিক্ষক বিরোধিতা করেছেন।"
তিনি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিভাজন না করারও আহ্বান জানান। ইউপিএলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সাক্ষাৎকার সংকলনটি শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বৈশ্বিক গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, "কেন সাধারণ মানুষ এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, সেটা বোঝা জরুরি। সন্তানদের পাশে দাঁড়ানোর দায় থেকেই অনেক বাবা-মাও রাজপথে নেমেছিলেন।" তিনি আরও বলেন, জুনিয়র শিক্ষার্থীরা প্রথমে এগিয়ে এসে সিনিয়রদেরও আন্দোলনে অংশ নিতে বাধ্য করেছিল, এ প্রক্রিয়াটি বোঝা প্রয়োজন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, "আট মাসের মধ্যে দেখা গেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে ব্রাহ্মণ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে শূদ্র, আর নারীরা নমশূদ্র।" তিনি মনে করেন, এই বৈষম্যই স্বৈরাচারী শাসকদের শক্তিশালী করছে।
তিনি বলেন, "আন্দোলনে নারীদের এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা না থাকলে তা সফল হত না।" স্নিগ্ধা আরও বলেন, "প্রথমে নারীদের কৃতিত্ব অস্বীকার করা হয়েছে, পরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান খাটো করা হয়েছে—এভাবেই জুলাই স্পিরিটকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।" তাঁর মতে, বইটিতে নারী সমন্বয়কদের ভূমিকা আরও বেশি করে তুলে ধরা উচিত ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ বলেন, "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ভূমিকা রেখেও যথাযথ মূল্যায়ন পায়নি। এখন দেখছি, আন্দোলন ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানো হয়েছে, তারাই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ব্যর্থ।"
অনুষ্ঠানে বইটির সম্পাদক শিবলী আজাদ ও মিনহাজুল ইসলামসহ ইউপিএলের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।