alt

মানবাধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যর্থ

সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্র সবাইকে সমান চোখে দেখবে : সুলতানা কামাল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘সংবিধান বলে দিয়েছে রাষ্ট্র সবাইকে সমান চোখে দেখবে। প্রত্যেকের অধিকার সংরক্ষণ করবে। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতেই হয়, মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা; তা জনগোষ্ঠী যেকোন শ্রেণীর হোক, সংখ্যার হোক, জাতির হোক, বর্ণের হোক।’ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যা ও আদিবাসী ভূমি দখলের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ৯টি সংগঠন নরেন্দ্র মুন্ডা হত্যায় জড়িতদের শাস্তি ও ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘একজনের মানুষের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র যদি ব্যর্থ হয়ে থাকে সে ব্যর্থতার দায়ভার তাকে গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আদিবাসীদের জীবনে একটির পর একটি নিগ্রহ, অত্যাচার, ধর্ষণ, হত্যা চলতেই থাকবে। তাদের সম্পত্তি বেদখল হতেই থাকবে। তারা সে সংগ্রাম, আন্দোলন করেই জীবন পার করবে। একজন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তাদের অধিকার, বঞ্চনার কথা যদি আমরা না শুনি তাহলে আমার মনে হয় আসলে আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচার অধিকারটুকু রাখি কি না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারের কথা বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের নীতি ধারণ করছি। মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনাকে ধারণ-বহন করছে সেটা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, তারা কিন্তু ক্ষমতায় গেছেন জনগণের মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, ব্যক্তিগত জীবনের অধিকার সুরক্ষিত রাখার অঙ্গীকার করে। তারা সে অধিকার রক্ষা করছেন না বরং কখনো কখনো দেখা যায় তারা সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করছেন।’ সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘আদিবাসীদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে একই গল্প শুনতে পাই, তাদের সহায় সম্পত্তি, জমি দখল করা হয়েছে এবং সেটার জন্য হত্যাকান্ড ঘটছে, ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটছে। তাদের ওপর শারীরিক অত্যাচার, নারী নির্যাতন হচ্ছে। এগুলোর কোন বিচার হচ্ছে না। এ ধরনের ঘটনাগুলোর বিচার চাই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে। মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রকে সে ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিনিয়ত আদিবাসীদের মর্যাদা-সম্মান হুমকির মুখে এবং বিচারহীনতার যে কষ্ট তাতে নিপতিত হতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা স্বাধীন দেশে চলতে পারে না।’

নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যাকান্ডের সূত্র ধরে সুলতানা কামাল বলেন, ‘যে সরকার নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তাদের আমলে এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি সেটা হয়ে থাকে তবে বলতে বাধ্য হবো, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে গেছেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যস্ত আছেন। ক্ষমতাকে জনগণের অধিকার রক্ষায় ব্যবহার করছেন না। তারা কোন অবস্থাতেই আমাদের এ বার্তা দিতে পারছেন না, জনগণের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।’

‘দেশের বিভিন্ন স্থানে আদিবাসীদের ওপর সুপরিকল্পিত নির্যাতন হচ্ছে এবং পুলিশের ভূমিকার কথা আর বলা যাচ্ছে না। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানাতে জানাতে আমরা ক্লান্ত। এখন সময় এসেছে পুলিশ একবার তাদের নিজেদের দিকে ঘুরে তাকাক। পুলিশের সব সদস্য যে খারাপ সেটা বলতে চাই না। কারণ অনেক কাজে আমরা পুলিশের সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু সার্বিকভাবে, সাধারণভাবে পুলিশের এমন ভূমিকা কোথাও দেখিনি সঙ্গে সঙ্গে এসে যারা আক্রান্ত হয়েছে সে জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সুষ্ঠু সুরাহা করে দিতে পেরেছে। কেন আমাদের একটি ঘটনা ঘটলে, অধিকার বঞ্চনার ঘটনা ঘটলে, একটি অত্যাচারের ঘটনা ঘটলে, দুষ্কৃতকারীদের ঘটনায় কেন আমাদের সংবাদ সম্মেলন করে বিচার চাইতে হয়? একটা সভ্য সমাজে, একটা গণতান্ত্রিক সমাজে যারা দুষ্কৃতকারী, যারা অন্যায় করেছে, অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি চাইতে হবে কেন? যদি সংবাদ সম্মেলনে তেজের সঙ্গে করা যায়, যদি প্রভাব খাটানো যায় তখনই দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি হয়। এটা একটি দেশের নিয়ম হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক সমাজ, সভ্য সমাজের নিয়ম হতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘মুন্ডাপল্লীতে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে সংখ্যালঘু জনগণ চরম নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছেন। বাসিন্দাদের আতঙ্কের মূল কারণ আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন তৎপর নয়। থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। রাষ্ট্র ও সরকারকে আন্তরিকতার সঙ্গে এ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

মুন্ডাদের অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির সদস্য-সচিব গোপালচন্দ্র মুন্ডা বলেন, ‘মুন্ডা সম্প্রদায় আমাদের জমি দখলের ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে গিয়েও বিচার পায়নি। ভূমিদস্যু মহল আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে অনেক জমি দখল করে নিয়েছে। সরকারের কাছে দাবি থাকবে এসব জমি উদ্ধার করা।’

মুন্ডাদের অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আশিক-ই-এলাহী বলেন, ‘সাতক্ষীরায় ভূমি আন্দোলনে ২২-২৫ জন মারা গেছেন। মুন্ডাদের আক্রমণ করা হয়েছে। প্রশাসনের গ্রুপ আছে, সরকারের লোকজন এসব জমি দখলের চেষ্টা করছে।’

বিইউপি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনে ফ্লাইট বাতিল, কয়েকটি ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তন

ছবি

শাহজালালে আগুন লাগে কুরিয়ার গুদামে

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন

ছবি

‘সুযোগ সন্ধানীদের’ আশঙ্কায় পদযাত্রা স্থগিত, শুক্রবার থেকে আমরণ অনশন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

ছবি

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বিএফআইইউর সাবেক প্রধান শাহীনুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর

বাড়ি ভাতা বাড়ানোর দাবিতে শাহবাগ অবরোধ শেষে শহীদ মিনারে অবস্থান, বৃহস্পতিবার পদযাত্রার ঘোষণা

ছবি

শাহবাগ মোড় ব্লকেডের ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু অন্তত ১৬

ছবি

জিজ্ঞাসাবাদের নামে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে মারধরের অভিযোগে মামলা

ছবি

মিরপুরের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ১৬

ছবি

পুলিশের বাধায় থমকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রা

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ৯ জনের মৃত্যু

ছবি

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন

ছবি

সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ছবি

কলাবাগানে ফ্রিজের ভেতর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ছবি

চায়ের দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ছবি

বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থানে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার

ছবি

পুলিশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে

ছবি

ঢাকায় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক

ছবি

বাধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর গেন্ডারিয়ায়ও ক‌রা যায়নি ‘শরৎ উৎসব’

ঘুষি মেরে বিমানের মনিটর ভেঙে ফেললেন লন্ডন থেকে সিলেট যাওয়া যাত্রী

ছবি

এফডিসি মোড়ে যাত্রীবাহী বাসে ‘অজ্ঞানপার্টি’ সন্দেহে পাঁচজনকে গণপিটুনি

ছবি

মৌচাকে দোকান থে‌কে ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির অ‌ভি‌যোগ

ছবি

ভেন্টিলেশন ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহার

ছবি

ঢাকায় ওএমএস ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ, প্রতিবাদে বঞ্চিতদের বিক্ষোভ

ছবি

কোরআন অবমাননার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গণপিটুনি, পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে

সিলেট নগরের যানজট নিরসনে এনসিপির ২৭ প্রস্তাব

ছবি

গাজীপুরে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত, আহত ৩

ছবি

রাজধানীর মিরপুরে বাসে আগুন

ছবি

বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন শুরু, সদরঘাটে কঠোর নিরাপত্তা

ছবি

রাতভর বৃষ্টিতে ডুবলো রাজধানী, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি

tab

মানবাধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যর্থ

সংবিধানে বলা আছে রাষ্ট্র সবাইকে সমান চোখে দেখবে : সুলতানা কামাল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘সংবিধান বলে দিয়েছে রাষ্ট্র সবাইকে সমান চোখে দেখবে। প্রত্যেকের অধিকার সংরক্ষণ করবে। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতেই হয়, মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা; তা জনগোষ্ঠী যেকোন শ্রেণীর হোক, সংখ্যার হোক, জাতির হোক, বর্ণের হোক।’ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যা ও আদিবাসী ভূমি দখলের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ৯টি সংগঠন নরেন্দ্র মুন্ডা হত্যায় জড়িতদের শাস্তি ও ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘একজনের মানুষের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র যদি ব্যর্থ হয়ে থাকে সে ব্যর্থতার দায়ভার তাকে গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আদিবাসীদের জীবনে একটির পর একটি নিগ্রহ, অত্যাচার, ধর্ষণ, হত্যা চলতেই থাকবে। তাদের সম্পত্তি বেদখল হতেই থাকবে। তারা সে সংগ্রাম, আন্দোলন করেই জীবন পার করবে। একজন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তাদের অধিকার, বঞ্চনার কথা যদি আমরা না শুনি তাহলে আমার মনে হয় আসলে আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচার অধিকারটুকু রাখি কি না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি, মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারের কথা বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের নীতি ধারণ করছি। মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনাকে ধারণ-বহন করছে সেটা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, তারা কিন্তু ক্ষমতায় গেছেন জনগণের মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, ব্যক্তিগত জীবনের অধিকার সুরক্ষিত রাখার অঙ্গীকার করে। তারা সে অধিকার রক্ষা করছেন না বরং কখনো কখনো দেখা যায় তারা সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করছেন।’ সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘আদিবাসীদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে একই গল্প শুনতে পাই, তাদের সহায় সম্পত্তি, জমি দখল করা হয়েছে এবং সেটার জন্য হত্যাকান্ড ঘটছে, ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটছে। তাদের ওপর শারীরিক অত্যাচার, নারী নির্যাতন হচ্ছে। এগুলোর কোন বিচার হচ্ছে না। এ ধরনের ঘটনাগুলোর বিচার চাই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে। মানুষের যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রকে সে ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিনিয়ত আদিবাসীদের মর্যাদা-সম্মান হুমকির মুখে এবং বিচারহীনতার যে কষ্ট তাতে নিপতিত হতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা স্বাধীন দেশে চলতে পারে না।’

নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা হত্যাকান্ডের সূত্র ধরে সুলতানা কামাল বলেন, ‘যে সরকার নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তাদের আমলে এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি সেটা হয়ে থাকে তবে বলতে বাধ্য হবো, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে গেছেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যস্ত আছেন। ক্ষমতাকে জনগণের অধিকার রক্ষায় ব্যবহার করছেন না। তারা কোন অবস্থাতেই আমাদের এ বার্তা দিতে পারছেন না, জনগণের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।’

‘দেশের বিভিন্ন স্থানে আদিবাসীদের ওপর সুপরিকল্পিত নির্যাতন হচ্ছে এবং পুলিশের ভূমিকার কথা আর বলা যাচ্ছে না। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানাতে জানাতে আমরা ক্লান্ত। এখন সময় এসেছে পুলিশ একবার তাদের নিজেদের দিকে ঘুরে তাকাক। পুলিশের সব সদস্য যে খারাপ সেটা বলতে চাই না। কারণ অনেক কাজে আমরা পুলিশের সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু সার্বিকভাবে, সাধারণভাবে পুলিশের এমন ভূমিকা কোথাও দেখিনি সঙ্গে সঙ্গে এসে যারা আক্রান্ত হয়েছে সে জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সুষ্ঠু সুরাহা করে দিতে পেরেছে। কেন আমাদের একটি ঘটনা ঘটলে, অধিকার বঞ্চনার ঘটনা ঘটলে, একটি অত্যাচারের ঘটনা ঘটলে, দুষ্কৃতকারীদের ঘটনায় কেন আমাদের সংবাদ সম্মেলন করে বিচার চাইতে হয়? একটা সভ্য সমাজে, একটা গণতান্ত্রিক সমাজে যারা দুষ্কৃতকারী, যারা অন্যায় করেছে, অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি চাইতে হবে কেন? যদি সংবাদ সম্মেলনে তেজের সঙ্গে করা যায়, যদি প্রভাব খাটানো যায় তখনই দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি হয়। এটা একটি দেশের নিয়ম হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক সমাজ, সভ্য সমাজের নিয়ম হতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘মুন্ডাপল্লীতে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে সংখ্যালঘু জনগণ চরম নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছেন। বাসিন্দাদের আতঙ্কের মূল কারণ আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন তৎপর নয়। থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। রাষ্ট্র ও সরকারকে আন্তরিকতার সঙ্গে এ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’

মুন্ডাদের অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির সদস্য-সচিব গোপালচন্দ্র মুন্ডা বলেন, ‘মুন্ডা সম্প্রদায় আমাদের জমি দখলের ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে গিয়েও বিচার পায়নি। ভূমিদস্যু মহল আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে অনেক জমি দখল করে নিয়েছে। সরকারের কাছে দাবি থাকবে এসব জমি উদ্ধার করা।’

মুন্ডাদের অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আশিক-ই-এলাহী বলেন, ‘সাতক্ষীরায় ভূমি আন্দোলনে ২২-২৫ জন মারা গেছেন। মুন্ডাদের আক্রমণ করা হয়েছে। প্রশাসনের গ্রুপ আছে, সরকারের লোকজন এসব জমি দখলের চেষ্টা করছে।’

back to top