অভিজাত এলাকায় স্পা সেন্টারের আড়ালে অসামাজিক কার্যক্রমের অভিযোগ নতুন নয়। তবে সম্প্রতি এই স্পা সেন্টারের সাথে জড়িত রয়েছে বাড়ীওয়ালা ও বাড়ির ম্যানেজা। অতি লোভোর আশায় অসাধু ব্যবসায়ীদের এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান ভাড়া দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়ার পরও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে ২০২২ সালে অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসান এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অনেকটা নিয়ন্ত্রনে এনেছিল। বর্তমানে এই অসামাজিক কর্মকাণ্ডের হোতাদের দৌরাত্ম্য কমছে না। তবে পুলিশ বলছে, স্পা সেন্টারের আড়ালে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালায় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে পুলিশ।
গোয়েন্দা তথ্যমতে, রাজধানীতে কতগুলো স্পা সেন্টার রয়েছে তার কোনো সঠিক তালিকা কারো কাছে নেই। কারণ সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে হোটেল, বিউটি পার্লার, সেলুন আর ব্যায়ামাগারের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে এসব অবৈধ স্পা সেন্টার। বাড়ির মালিকদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কোনো একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েই শুরু করছে স্পা সেন্টারের কার্যক্রম। যার পেছনে রয়েছে অশ্লীলতা। এদের বিরুদ্ধে মানবপাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। গুলশান ও বনানী থানা পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে মানবপাচার আইনে ৩৬টি মামলা দায়ের করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, স্পা সেন্টারগুলো তাদের ফেসবুক পেইজ-সহ ওয়েবসাইটে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করছে। ইংরেজিতে লেখা বিজ্ঞাপনগুলো বাংলা অনুবাদ করলে দেখা যায় ‘ আমাদের সেন্টারে নতুন চারটি মেয়ে রয়েছে’। আবার কোনো বিজ্ঞাপনে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের কর্মীরা তরুণ এবং আকর্ষণীয়’। এমন অশ্লীল বিজ্ঞাপন দিয়ে স্পা সেন্টারগুলো গ্রহকদের কী বোঝাতে চাইছে এমন প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, এসব স্পা সেন্টারে আসা অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছেন। স্পা সেন্টারের নারী কর্মীদের নিয়ে ওই সব ব্যক্তিদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই ছবি দিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
গুলশানের ১৩০ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাড়িতে রয়েছে এমন দুটি স্পা সেন্টার যাহা পরিচালনা করছেন লাবনী আক্তার ইভা এবং অপরটি পরিচালনা করছেন। রাবেয়া আক্তার ওরফে মেঘলা নামের এক নারী। অভিযোগ রয়েছে এরা দেহ ব্যবসা ও মাদকবাণিজ্য চালিয়ে আসছেন নিয়মিত। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য রেখেছেন এস্কর্ট সার্ভিস। সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে তাহের হোসেন পাপু নামের একজন। এই মেঘলার বিরুদ্ধে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের আওতায় অবৈধ পতিতালয় স্থাপন পরিচালনা ও পতিতাবৃত্তির অভিযোগে মামলা হয়।
এদিকে সুমনা ওরফে সুলতানা এক নারী ১০-১২ জন নারী দিয়ে বডি ম্যাসাজ পার্লার শুরু করেছেন গুলশানে ১৩১ নম্বর সড়কের খুশবু রেস্টুরেন্টের ৪র্থ তলায় সুন্দরী যুবতীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিষয় উল্লেখ করে গ্রাহকদের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিত খদ্দের যোগান দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি মাদক কারবারীরা নিয়োমিত যাতায়ত রয়েছে।
অপরদিকে ২৪ নং সড়কে ৯১/বি বাড়িটির ৪র্থ তলায় জারা ও নুরুল ইসলামের অন্যতম প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে জানা গেছে নুর-ইসলামের বনানীর আউয়াল টাওয়ারে তার একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। সেই প্রতিষ্ঠানে একটি হত্যার ঘটনা ঘটে এবং তার প্রধান আসামী ছিলেন উক্ত নুর-ইসলাম। এসব ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক, প্রসসাশনের উর্ধতন কর্মকর্তা বা অন্যান্য পরিচয়ে ক্ষমতার দাপটে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
সম্প্রত্তি, সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছেন বাহার ও কুদ্দুস নামের দুই ব্যক্তি। যাদের সড়ক ৪১, হাইজ -৭/এ ২য় তলায় এবং ৯৯ নং সড়কে ৪র্থ তলায় বাহারের সেলুনের নামে অবৈধ স্পা সেন্টার রয়েছে।
এবিষয়ে কুদ্দুস ও বাহার বলেন থানা পুলিশ ঠিক থাকলে সব ঠিক। তাই আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন ঝামলা নেই।
এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন করায় রামপুরায় অবস্থিত একটি পত্রিকা অফিসে অসাধু ব্যবসায়ীদের সন্ত্রাসী দ্বারা গত ১৪ জুলাই হামলার চেষ্টা চালায়। এবিষয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়।
এই বিষয়ে গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা কাউকে চালাতে দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে আমরা তালিকা তৈরি করছি। তালিকা অনুযায়ী শিগগিরই অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।
রোববার, ৩০ জুলাই ২০২৩
অভিজাত এলাকায় স্পা সেন্টারের আড়ালে অসামাজিক কার্যক্রমের অভিযোগ নতুন নয়। তবে সম্প্রতি এই স্পা সেন্টারের সাথে জড়িত রয়েছে বাড়ীওয়ালা ও বাড়ির ম্যানেজা। অতি লোভোর আশায় অসাধু ব্যবসায়ীদের এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান ভাড়া দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়ার পরও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে ২০২২ সালে অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসান এগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অনেকটা নিয়ন্ত্রনে এনেছিল। বর্তমানে এই অসামাজিক কর্মকাণ্ডের হোতাদের দৌরাত্ম্য কমছে না। তবে পুলিশ বলছে, স্পা সেন্টারের আড়ালে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালায় এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে পুলিশ।
গোয়েন্দা তথ্যমতে, রাজধানীতে কতগুলো স্পা সেন্টার রয়েছে তার কোনো সঠিক তালিকা কারো কাছে নেই। কারণ সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে হোটেল, বিউটি পার্লার, সেলুন আর ব্যায়ামাগারের নামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে এসব অবৈধ স্পা সেন্টার। বাড়ির মালিকদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কোনো একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েই শুরু করছে স্পা সেন্টারের কার্যক্রম। যার পেছনে রয়েছে অশ্লীলতা। এদের বিরুদ্ধে মানবপাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। গুলশান ও বনানী থানা পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে মানবপাচার আইনে ৩৬টি মামলা দায়ের করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, স্পা সেন্টারগুলো তাদের ফেসবুক পেইজ-সহ ওয়েবসাইটে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করছে। ইংরেজিতে লেখা বিজ্ঞাপনগুলো বাংলা অনুবাদ করলে দেখা যায় ‘ আমাদের সেন্টারে নতুন চারটি মেয়ে রয়েছে’। আবার কোনো বিজ্ঞাপনে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের কর্মীরা তরুণ এবং আকর্ষণীয়’। এমন অশ্লীল বিজ্ঞাপন দিয়ে স্পা সেন্টারগুলো গ্রহকদের কী বোঝাতে চাইছে এমন প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, এসব স্পা সেন্টারে আসা অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছেন। স্পা সেন্টারের নারী কর্মীদের নিয়ে ওই সব ব্যক্তিদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই ছবি দিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
গুলশানের ১৩০ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাড়িতে রয়েছে এমন দুটি স্পা সেন্টার যাহা পরিচালনা করছেন লাবনী আক্তার ইভা এবং অপরটি পরিচালনা করছেন। রাবেয়া আক্তার ওরফে মেঘলা নামের এক নারী। অভিযোগ রয়েছে এরা দেহ ব্যবসা ও মাদকবাণিজ্য চালিয়ে আসছেন নিয়মিত। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য রেখেছেন এস্কর্ট সার্ভিস। সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে তাহের হোসেন পাপু নামের একজন। এই মেঘলার বিরুদ্ধে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের আওতায় অবৈধ পতিতালয় স্থাপন পরিচালনা ও পতিতাবৃত্তির অভিযোগে মামলা হয়।
এদিকে সুমনা ওরফে সুলতানা এক নারী ১০-১২ জন নারী দিয়ে বডি ম্যাসাজ পার্লার শুরু করেছেন গুলশানে ১৩১ নম্বর সড়কের খুশবু রেস্টুরেন্টের ৪র্থ তলায় সুন্দরী যুবতীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিষয় উল্লেখ করে গ্রাহকদের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিত খদ্দের যোগান দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি মাদক কারবারীরা নিয়োমিত যাতায়ত রয়েছে।
অপরদিকে ২৪ নং সড়কে ৯১/বি বাড়িটির ৪র্থ তলায় জারা ও নুরুল ইসলামের অন্যতম প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে জানা গেছে নুর-ইসলামের বনানীর আউয়াল টাওয়ারে তার একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। সেই প্রতিষ্ঠানে একটি হত্যার ঘটনা ঘটে এবং তার প্রধান আসামী ছিলেন উক্ত নুর-ইসলাম। এসব ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক, প্রসসাশনের উর্ধতন কর্মকর্তা বা অন্যান্য পরিচয়ে ক্ষমতার দাপটে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।
সম্প্রত্তি, সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছেন বাহার ও কুদ্দুস নামের দুই ব্যক্তি। যাদের সড়ক ৪১, হাইজ -৭/এ ২য় তলায় এবং ৯৯ নং সড়কে ৪র্থ তলায় বাহারের সেলুনের নামে অবৈধ স্পা সেন্টার রয়েছে।
এবিষয়ে কুদ্দুস ও বাহার বলেন থানা পুলিশ ঠিক থাকলে সব ঠিক। তাই আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন ঝামলা নেই।
এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন করায় রামপুরায় অবস্থিত একটি পত্রিকা অফিসে অসাধু ব্যবসায়ীদের সন্ত্রাসী দ্বারা গত ১৪ জুলাই হামলার চেষ্টা চালায়। এবিষয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়।
এই বিষয়ে গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা কাউকে চালাতে দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে আমরা তালিকা তৈরি করছি। তালিকা অনুযায়ী শিগগিরই অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।