সন্ত্রাসীদের হাতে কাটা রাইফেল, রিভলভারসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র
চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। এই সব অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসীরা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমনকি এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করছে। চিহ্নিত অস্ত্রবাজদের গ্রেপ্তার ও তাদের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার জন্য সম্প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২২ মাসে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে গত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে দেশে আনা ও নিজেদের কাছে রাখার অভিযোগে ১ হাজার ১৯২টি অস্ত্র উদ্ধার করছে। এর মধ্যে অস্ত্রধারীদের নিজ হেফাজত (পজিশন) থেকে ১ হাজার ৮১টি অস্ত্র উদ্ধার করছে। আর পরিত্যক্ত অবস্থায় ১১১টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
২০২২ সালে সারাদেশে পুলিশের অভিযানে ৫ হাজার ৮৭৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ১,৫৪০টি।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- চাইনিজ এসএমজি ২টি, ৩০৩ রাইফেল ১৫টি, কাটারাইফেল ৪টি, ডিবিবিএল (দোনালা বন্দুক) ৫টি, এসবিবিএল ৫৮টি, দেশি রিভলভার ১৫টি, বিদেশি রিভলভার ৪৫টি, দেশি পিস্তল ৪১টি, বিদেশি পিস্তল ২০৪টি। বন্দুক ৯৯টি, কাটাবন্দুক ৪টি, পাইপগান ৯৮টি, শাটারগান ২৭টি।
গোয়েন্দা পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, চোরাই পথে আসা রাইফেলের দাম তার জানা নেই। তবে একটি বিদেশি রিভলভার কেনাবেচা হচ্ছে ৬৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। একটি বিদেশি পিস্তল ৭২ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হচ্ছে এমন তথ্য তারা সন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছেন।
এছাড়া দেশি পিস্তল ও রিভলভার বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা। আবার কোনো কোনো অস্ত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করছেন। পুলিশ জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালী, সমুদ্র পথে সন্ত্রাসীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছায়। পরে এই সব অস্ত্র দেশের এলাকাভিত্তিক অপরাধীরা আধিপত্য বিস্তারে কিনে থাকে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম সংবাদকে জানান, কক্সবাজারের মহেশখালী অস্ত্র চোরাচালানীদের একটি রুট, আবার সেখানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে কাটারাইফেলসহ অন্যান্য অস্ত্র রয়েছে। তারা দেশে অস্ত্র তৈরি করে। আবার নদী ও সমুদ্র পথে এনে বিক্রিও করছে। সাতক্ষীরা ও যশোরসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দেশে অস্ত্র ঢুকছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অপরাধমূলক কার্যক্রমে ব্যবহার করছে। কেউ ডাকাতি, কেউ ছিনতাই, কেউ আধিপত্য বিস্তার, জুট ব্যবসার প্রভাব, এমনকি উগ্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্র বিস্ফোরক সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারে।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রভাব বিস্তার করতে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আশঙ্কায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র নিয়ে কোনো এলাকায় গোলাগুলি হয়েছে। কার কাছে অস্ত্র আছে এমন তথ্য উদ্ঘাটন করে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন সংবাদকে জানান, নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করা হয়েছে। অস্ত্রবাজদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।
সন্ত্রাসীদের হাতে কাটা রাইফেল, রিভলভারসহ অত্যাধুনিক অস্ত্র
মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। এই সব অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসীরা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমনকি এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করছে। চিহ্নিত অস্ত্রবাজদের গ্রেপ্তার ও তাদের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার জন্য সম্প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ২২ মাসে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে গত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে দেশে আনা ও নিজেদের কাছে রাখার অভিযোগে ১ হাজার ১৯২টি অস্ত্র উদ্ধার করছে। এর মধ্যে অস্ত্রধারীদের নিজ হেফাজত (পজিশন) থেকে ১ হাজার ৮১টি অস্ত্র উদ্ধার করছে। আর পরিত্যক্ত অবস্থায় ১১১টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
২০২২ সালে সারাদেশে পুলিশের অভিযানে ৫ হাজার ৮৭৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ১,৫৪০টি।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- চাইনিজ এসএমজি ২টি, ৩০৩ রাইফেল ১৫টি, কাটারাইফেল ৪টি, ডিবিবিএল (দোনালা বন্দুক) ৫টি, এসবিবিএল ৫৮টি, দেশি রিভলভার ১৫টি, বিদেশি রিভলভার ৪৫টি, দেশি পিস্তল ৪১টি, বিদেশি পিস্তল ২০৪টি। বন্দুক ৯৯টি, কাটাবন্দুক ৪টি, পাইপগান ৯৮টি, শাটারগান ২৭টি।
গোয়েন্দা পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, চোরাই পথে আসা রাইফেলের দাম তার জানা নেই। তবে একটি বিদেশি রিভলভার কেনাবেচা হচ্ছে ৬৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। একটি বিদেশি পিস্তল ৭২ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হচ্ছে এমন তথ্য তারা সন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছেন।
এছাড়া দেশি পিস্তল ও রিভলভার বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা। আবার কোনো কোনো অস্ত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করছেন। পুলিশ জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালী, সমুদ্র পথে সন্ত্রাসীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছায়। পরে এই সব অস্ত্র দেশের এলাকাভিত্তিক অপরাধীরা আধিপত্য বিস্তারে কিনে থাকে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম সংবাদকে জানান, কক্সবাজারের মহেশখালী অস্ত্র চোরাচালানীদের একটি রুট, আবার সেখানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে কাটারাইফেলসহ অন্যান্য অস্ত্র রয়েছে। তারা দেশে অস্ত্র তৈরি করে। আবার নদী ও সমুদ্র পথে এনে বিক্রিও করছে। সাতক্ষীরা ও যশোরসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দেশে অস্ত্র ঢুকছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অপরাধমূলক কার্যক্রমে ব্যবহার করছে। কেউ ডাকাতি, কেউ ছিনতাই, কেউ আধিপত্য বিস্তার, জুট ব্যবসার প্রভাব, এমনকি উগ্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্র বিস্ফোরক সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারে।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রভাব বিস্তার করতে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই আশঙ্কায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র নিয়ে কোনো এলাকায় গোলাগুলি হয়েছে। কার কাছে অস্ত্র আছে এমন তথ্য উদ্ঘাটন করে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন সংবাদকে জানান, নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করা হয়েছে। অস্ত্রবাজদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।