রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুর রহমান মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) এ আদেশ দেন। তবে আশফাক ও তার স্ত্রীকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলো পুলিশ।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এসআই হেলাল উদ্দিন জানান, আইনজীবী অশোক কুমার বিশ্বাস, চৈতন্য চন্দ্র হালদার, আশরাফ উল আলম আসামিদের রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানির সময় আসামিরা নিজেদের পক্ষ নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের উত্তর দেন বলে জানান এসআই হেলাল।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হাসান বলেন,‘তাদের বাসায় যে সিসি ক্যামেরা আছে, সেটার মেমোরি কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। সেটা তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা উদ্ধার করা গেলে তদন্তে অনেক অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে দুইজনকে রিমান্ড পাওয়া গেছে, তাদের দিয়ে মেমোরি কার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে শাহজাহান রোডের জেনিভা ক্যাম্প সংলগ্ন ভবনের ৯তলায় আশফাকুল হকের বাসা থেকে পড়ে মারা যায় প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামের লোকেশ উরাংয়ের মেয়ে প্রীতি প্রায় দুই বছর ধরে ওই বাসায় গৃহ সহায়ক হিসেবে ছিলেন।
খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ আশফাক, তানিয়াসহ তাদের পরিবারের ৬জনকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের দুইজনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুর থানায় এসে মামলা দায়ের করেন লোকেশ উরাং। আশফাক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়। সেদিনই দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়ে দুই আসামিকে তিনদিন কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক। একইসঙ্গে আসামিদের জামিনের আবেদনও নাকচ করে দেন।
আশফাক হকের বাসায় সিসি ক্যামেরা থাকলেও তার মেমোরি কার্ড না পাওয়াকে সন্দেহের চোখে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বাসার বাইরের ভিডিও পাওয়া গেলেও সেখানে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু মেলেনি।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক বলেন, তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার দুইজনকেই ‘নিবিড়ভাবে’ জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু ঘটনায় হত্যার অভিযোগ তুলে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন। আগের দিন সোমবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রীতির মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তার বাবা লোকেশ উরাং ও পরিবারের সদস্যরা।
সেখানে লোকেশ বলেন, ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মিন্টু দেশোয়ারার কথাবার্তার মাধ্যমে তার মেয়ে আশফাকুল হকের বাসায় কাজের জন্য যায়। শুরু থেকেই মেয়ের তেমন খোঁজ-খবর পাওয়া যেত না অভিযোগ করে লোকেশ বলেন, প্রীতির মৃত্যুর দিন মিন্টু দেশোয়ারা তাদের শ্রীমঙ্গল যেতে বলেন। শ্রীমঙ্গল যাওয়ার পর মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ বলে তাদের ঢাকায় নিয়ে যায়। ঢাকা যাওয়ার পর সরাসরি তাদের থানায় নিয়ে যায়।
‘তিনি বলেন,‘গিয়ে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনি। পরে মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি চলে আসি। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।’
ডেইলি স্টার এক বিবৃতিতে বলেছে,‘আমাদের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী ও নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় এক কিশোরী গৃহ সহায়কের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনার জন্য আমরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্তে কী পাওয়া গেল, তা জানার অপেক্ষায় আছি আমরা।’
গত বছরের ৬ অগাস্টে একই ধরনের ঘটনা ঘটে আশফাকুল হকের বাসার। সেবার ৯বছরের এক শিশু গৃহকর্মী লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হক ও শিল্পী নামের আরেক নারীকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা।
মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুর রহমান মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) এ আদেশ দেন। তবে আশফাক ও তার স্ত্রীকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলো পুলিশ।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এসআই হেলাল উদ্দিন জানান, আইনজীবী অশোক কুমার বিশ্বাস, চৈতন্য চন্দ্র হালদার, আশরাফ উল আলম আসামিদের রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানির সময় আসামিরা নিজেদের পক্ষ নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের উত্তর দেন বলে জানান এসআই হেলাল।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হাসান বলেন,‘তাদের বাসায় যে সিসি ক্যামেরা আছে, সেটার মেমোরি কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। সেটা তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা উদ্ধার করা গেলে তদন্তে অনেক অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে দুইজনকে রিমান্ড পাওয়া গেছে, তাদের দিয়ে মেমোরি কার্ড উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে শাহজাহান রোডের জেনিভা ক্যাম্প সংলগ্ন ভবনের ৯তলায় আশফাকুল হকের বাসা থেকে পড়ে মারা যায় প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামের লোকেশ উরাংয়ের মেয়ে প্রীতি প্রায় দুই বছর ধরে ওই বাসায় গৃহ সহায়ক হিসেবে ছিলেন।
খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ আশফাক, তানিয়াসহ তাদের পরিবারের ৬জনকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের দুইজনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুর থানায় এসে মামলা দায়ের করেন লোকেশ উরাং। আশফাক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ করা হয়। সেদিনই দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়ে দুই আসামিকে তিনদিন কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক। একইসঙ্গে আসামিদের জামিনের আবেদনও নাকচ করে দেন।
আশফাক হকের বাসায় সিসি ক্যামেরা থাকলেও তার মেমোরি কার্ড না পাওয়াকে সন্দেহের চোখে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বাসার বাইরের ভিডিও পাওয়া গেলেও সেখানে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু মেলেনি।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক বলেন, তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার দুইজনকেই ‘নিবিড়ভাবে’ জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু ঘটনায় হত্যার অভিযোগ তুলে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন। আগের দিন সোমবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রীতির মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তার বাবা লোকেশ উরাং ও পরিবারের সদস্যরা।
সেখানে লোকেশ বলেন, ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মিন্টু দেশোয়ারার কথাবার্তার মাধ্যমে তার মেয়ে আশফাকুল হকের বাসায় কাজের জন্য যায়। শুরু থেকেই মেয়ের তেমন খোঁজ-খবর পাওয়া যেত না অভিযোগ করে লোকেশ বলেন, প্রীতির মৃত্যুর দিন মিন্টু দেশোয়ারা তাদের শ্রীমঙ্গল যেতে বলেন। শ্রীমঙ্গল যাওয়ার পর মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ বলে তাদের ঢাকায় নিয়ে যায়। ঢাকা যাওয়ার পর সরাসরি তাদের থানায় নিয়ে যায়।
‘তিনি বলেন,‘গিয়ে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনি। পরে মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি চলে আসি। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।’
ডেইলি স্টার এক বিবৃতিতে বলেছে,‘আমাদের জ্যেষ্ঠ সহকর্মী ও নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় এক কিশোরী গৃহ সহায়কের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। দুর্ভাগ্যজনক এ ঘটনার জন্য আমরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্তে কী পাওয়া গেল, তা জানার অপেক্ষায় আছি আমরা।’
গত বছরের ৬ অগাস্টে একই ধরনের ঘটনা ঘটে আশফাকুল হকের বাসার। সেবার ৯বছরের এক শিশু গৃহকর্মী লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হক ও শিল্পী নামের আরেক নারীকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা।