রাজধানীর আজিমপুরের একটি বাসায় দিনে দুপুরে ডাকাতি করতে ঢুকে মালামালের সঙ্গে একটি দুধের শিশুকেও নিয়ে চলে গেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় লালবাগ টাওয়ারের পাশের একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। এক নারী সাবলেট ভাড়া নেয়ার একদিন পরেই তার সহযোগীদের মাধ্যমে এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশের একাধিক টিম।
শিশুটির ছবিসহ একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, শিশুটির বাবা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ও মা ফারজানা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করেন। তারা আজিমপুর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ দেয়া হলেও সঙ্গে সঙ্গে থানা-পুলিশ তদন্তে নেমেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন নারী ও তিনজন পুরুষ ওই শিশুসহ কিছু মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। তবে দুর্বৃত্তদের চেহারা বোঝা যাচ্ছিলো না।
শিশুর ছবিসহ একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে ফেইসবুকে। যে বাসায় ডাকাতি হয়েছে তার গৃহকর্ত্রীর এক সহকর্মী ওই পোস্টে লিখেছেন, ‘শুক্রবার আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার, লালবাগ টাওয়ারের পাশের গলি থেকে আমার অফিস কলিগ ফারজানার বাসায় ডাকাতি হয়েছে। ডাকাত (একজন মহিলা আর দুইজন পুরুষ) জিনিসপত্র ও একমাত্র বাচ্চা নিয়ে গেছে।
শিশুটিকে পাওয়া গেলে যোগাযোগের জন্য ওই পোস্টে দুটি মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। দুটি নম্বরে কল করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেন তিনি। তবে ডাকাতির ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানেন না দাবি করে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজী হননি। নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ফারজানা আমাদের সহকর্মী। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এক নারীকে ফারজানাদের বাসার একটি রুম সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেয়া হয় এমনটা শুনেছি। ডাকাতির সময় মালামালের সঙ্গে শিশুটিকেও নিয়ে যায় ডাকাতরা। শিশুটির খোঁজ পাওয়া গেলে যোগাযোগের জন্য ফেইসবুক পোস্টে তার নম্বর দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ থানার ওসি শ্যৈনু মারমা বলেন, ‘ডাকাতি করতে এসে দুর্বৃত্তরা বাচ্চা নিয়ে গেছে। শিশুটির মা সরকারি চাকরি করেন, একদিন আগে ওই বাসায় সাবলেট হিসাবে এক নারী সদস্য ভাড়া নেয়। ভাড়া দেয়ার একদিন পরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি বা শিশু হারানোর কোনো অভিযোগ থানায় দেয়া হয়নি। তবে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
সিসিটিভি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একজন নারী ও তিনজন পুরুষ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দুবৃর্ত্তদের আইডেন্টিফাই করা যায়নি। এই ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
ওসি আরও বলেন, ‘পরিচিত হিসেবে কোনো ডকুমেন্টস না রেখেই মেয়েটিকে ওঠানো হয়। সেই মেয়েটি আমাদের প্রধান সাসপেক্ট। কিন্তু তার নাম-ঠিকানা বা কোথায় কাজ করত কিছুই বলতে পারছেন না গৃহকর্ত্রী।’ ঘটনার সময় গৃহকর্ত্রী এবং সাবলেট ওঠা ওই নারী বাসায় ছিলেন জানিয়ে ওসি বলেন, ‘জড়িত অন্যরা এলে সাবলেটে ওঠা মেয়েটি দরজা খুলে দেয়। তারপর তারা গৃহকর্ত্রীকে বেঁধে অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে বাচ্চাটিকে নিয়ে চলে যায়।’ খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে সিসিটিভি ভিডিও দেখেছে পুলিশ। সেখানে তিনজন পুরুষকে বাসায় ঢুকতে দেখা যায়। পরে তাদের সঙ্গে সাবলেট ওঠা ওই নারীকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসীমউদ্দীন বলেন, ‘ডাকাতি করতে এসে দুর্বৃত্তরা বাচ্চা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।’ মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
২৫ মিনিটে গৃহকর্ত্রীকে বেঁধে সন্তানকে নিয়ে যায় ‘ডাকাতরা’
শুক্রবার পুলিশ আসার পর প্রতিবেশীরা জানতে পারেন, ওই বাসা থেকে লুটের পর তাদের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। জাইফা নামে শিশুটির বয়স মোটে ৮ মাস, সে এখনো মায়ের দুধ খায়।
গৃহকর্তা আবু জাফর হাওলাদারের ভাই সোহাগ হাওলাদার বলেন, ১৬-১৭ বছর আগে ফারজানের সঙ্গে আবু জাফরের বিয়ে হয়। তাদের বাচ্চা ছিল না। এ বছর তাদের বাচ্চা হয়। অনেক সাধনার সন্তান তাদের। ঘটনা শুনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফারজানার সহকর্মী ও স্বজনেরা শুক্রবার বাসায় ভিড় করেন।
তাদের পারিবারিক বন্ধু ও ফারজানার সহকর্মীর স্বামী মো. রানা জানান, সকালে ঘটনা শুনে তারা বাসায় এসে দেখেন, আলমারি খোলা, ফারজানার নাকে, কানে সাধারণ যে গয়নাগুলো থাকে সেগুলোও নেই। ফারজানা তাকে বলেছেন, আলমারিতে থাকা দেড় লাখ টাকাও নিয়ে গেছে ডাকাতরা। যাওয়ার সময় বলে গেছে,‘তোর বাচ্চাকে ইনডিয়ায় পাঠায় দেব।’
গত এক মাস বাচ্চা দেখাশোনার জন্য ফারজানার বাবা-মা এ বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার সকালে তারা বরিশালে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। তার আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফারজানা ওই ‘পেয়িং গেস্ট’কে বাসায় রাখেন। সকালবেলা ফারজানার বাবা মা বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই তিনজন লোক বাসায় আসে। পেয়িং গেস্ট সেই নারী তাদের দড়জা খুলে দেন।
সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে তারা বাসায় ঢোকে। এর মধ্যে ফারজানাকে বেঁধে লুটপাট শেষে শিশুটিকে নিয়ে ৯টা ২৪ মিনিটে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় তারা।
যেভাবে ঘটনা
মো. রানা জানান, ফারজানা তাদের বলেছেন, পেয়িং গেস্ট হিসেবে বাসা ওঠা ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল স্টাফ বাসে। ওই নারী ফারজানাকে বলেছেন, তিনি সরকারি পরিবহন পুলে চাকরি করেন, পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর ফারজানা তাকে বাসায় থাকার কথা বলেন।
ফারজানা তাদের (রানা ও তার স্ত্রীকে) বলেছেন, সকালে তার বাবা-মা চলে যাওয়ার পর মেয়েটি বাজার করার কথা বলে বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরেও আসেন। কিছুক্ষণ পর কলিংবেল বাজলে মেয়েটি দরজা খুলে দেয়। এরপর তিনজন পুরুষ বাসায় ঢুকে পড়ে। ‘ঢুকেই তারা ফারজানার উপর আক্রমণ চালায়। ফারজানাকে বেঁধে টাকা পয়সা লুট করে তার শিশুটিকে নিয়ে তারা চলে যায়।’ এদিকে ফারজানার প্রতিবেশীরা বলছেন, ফারজানা ও জাফর ওই বাসায় ওঠেন দুই বছর আগে। তবে প্রায় দুই মাস ধরে জাফর বাসায় আসতেন না নিয়মিত। ফারজানার বাবা-মাই এখানে থেকে বাচ্চার দেখাশোনা করতেন।
এ ঘটনার পর পুলিশ ফারজানার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে বলে প্রতিবেশীদের ভাষ্য। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ফারজানার স্বামীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
ওই বাড়ির মালিকের নাম শরিফুল ইসলাম। ওই এলাকায় তার পাশাপাশি দুটো বাড়ি রয়েছে। বাড়িগুলো দেখাশোনা ও ভাড়া আদায় করেন মোহাম্মদ ইসরাফিল সরকার নামের একজন। ইসরাফিল বলেন,‘প্রায় দুই বছর ধরে সাড়ে চৌদ্দ হাজার টাকা ভাড়ায় তারা (ফারজানা ও জাফর) এখানে রয়েছে। তবে গত কয়েক মাস ধরে স্বামী স্ত্রীর মনোমালিন্য চলছিল। স্বামী কয়েক মাস ধরে বাসায় আসে না। তবে ঘটনার পর সকালে বাচ্চার বাবা বাসায় এসেছিল। দুপুর পর্যন্ত এখানেই ছিল।’
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
রাজধানীর আজিমপুরের একটি বাসায় দিনে দুপুরে ডাকাতি করতে ঢুকে মালামালের সঙ্গে একটি দুধের শিশুকেও নিয়ে চলে গেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় লালবাগ টাওয়ারের পাশের একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটে। এক নারী সাবলেট ভাড়া নেয়ার একদিন পরেই তার সহযোগীদের মাধ্যমে এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশের একাধিক টিম।
শিশুটির ছবিসহ একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, শিশুটির বাবা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ও মা ফারজানা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করেন। তারা আজিমপুর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ দেয়া হলেও সঙ্গে সঙ্গে থানা-পুলিশ তদন্তে নেমেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন নারী ও তিনজন পুরুষ ওই শিশুসহ কিছু মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। তবে দুর্বৃত্তদের চেহারা বোঝা যাচ্ছিলো না।
শিশুর ছবিসহ একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে ফেইসবুকে। যে বাসায় ডাকাতি হয়েছে তার গৃহকর্ত্রীর এক সহকর্মী ওই পোস্টে লিখেছেন, ‘শুক্রবার আজিমপুর মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার, লালবাগ টাওয়ারের পাশের গলি থেকে আমার অফিস কলিগ ফারজানার বাসায় ডাকাতি হয়েছে। ডাকাত (একজন মহিলা আর দুইজন পুরুষ) জিনিসপত্র ও একমাত্র বাচ্চা নিয়ে গেছে।
শিশুটিকে পাওয়া গেলে যোগাযোগের জন্য ওই পোস্টে দুটি মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। দুটি নম্বরে কল করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেন তিনি। তবে ডাকাতির ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানেন না দাবি করে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজী হননি। নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ফারজানা আমাদের সহকর্মী। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এক নারীকে ফারজানাদের বাসার একটি রুম সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেয়া হয় এমনটা শুনেছি। ডাকাতির সময় মালামালের সঙ্গে শিশুটিকেও নিয়ে যায় ডাকাতরা। শিশুটির খোঁজ পাওয়া গেলে যোগাযোগের জন্য ফেইসবুক পোস্টে তার নম্বর দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ থানার ওসি শ্যৈনু মারমা বলেন, ‘ডাকাতি করতে এসে দুর্বৃত্তরা বাচ্চা নিয়ে গেছে। শিশুটির মা সরকারি চাকরি করেন, একদিন আগে ওই বাসায় সাবলেট হিসাবে এক নারী সদস্য ভাড়া নেয়। ভাড়া দেয়ার একদিন পরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি বা শিশু হারানোর কোনো অভিযোগ থানায় দেয়া হয়নি। তবে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
সিসিটিভি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একজন নারী ও তিনজন পুরুষ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দুবৃর্ত্তদের আইডেন্টিফাই করা যায়নি। এই ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
ওসি আরও বলেন, ‘পরিচিত হিসেবে কোনো ডকুমেন্টস না রেখেই মেয়েটিকে ওঠানো হয়। সেই মেয়েটি আমাদের প্রধান সাসপেক্ট। কিন্তু তার নাম-ঠিকানা বা কোথায় কাজ করত কিছুই বলতে পারছেন না গৃহকর্ত্রী।’ ঘটনার সময় গৃহকর্ত্রী এবং সাবলেট ওঠা ওই নারী বাসায় ছিলেন জানিয়ে ওসি বলেন, ‘জড়িত অন্যরা এলে সাবলেটে ওঠা মেয়েটি দরজা খুলে দেয়। তারপর তারা গৃহকর্ত্রীকে বেঁধে অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে বাচ্চাটিকে নিয়ে চলে যায়।’ খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে সিসিটিভি ভিডিও দেখেছে পুলিশ। সেখানে তিনজন পুরুষকে বাসায় ঢুকতে দেখা যায়। পরে তাদের সঙ্গে সাবলেট ওঠা ওই নারীকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসীমউদ্দীন বলেন, ‘ডাকাতি করতে এসে দুর্বৃত্তরা বাচ্চা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।’ মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
২৫ মিনিটে গৃহকর্ত্রীকে বেঁধে সন্তানকে নিয়ে যায় ‘ডাকাতরা’
শুক্রবার পুলিশ আসার পর প্রতিবেশীরা জানতে পারেন, ওই বাসা থেকে লুটের পর তাদের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। জাইফা নামে শিশুটির বয়স মোটে ৮ মাস, সে এখনো মায়ের দুধ খায়।
গৃহকর্তা আবু জাফর হাওলাদারের ভাই সোহাগ হাওলাদার বলেন, ১৬-১৭ বছর আগে ফারজানের সঙ্গে আবু জাফরের বিয়ে হয়। তাদের বাচ্চা ছিল না। এ বছর তাদের বাচ্চা হয়। অনেক সাধনার সন্তান তাদের। ঘটনা শুনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফারজানার সহকর্মী ও স্বজনেরা শুক্রবার বাসায় ভিড় করেন।
তাদের পারিবারিক বন্ধু ও ফারজানার সহকর্মীর স্বামী মো. রানা জানান, সকালে ঘটনা শুনে তারা বাসায় এসে দেখেন, আলমারি খোলা, ফারজানার নাকে, কানে সাধারণ যে গয়নাগুলো থাকে সেগুলোও নেই। ফারজানা তাকে বলেছেন, আলমারিতে থাকা দেড় লাখ টাকাও নিয়ে গেছে ডাকাতরা। যাওয়ার সময় বলে গেছে,‘তোর বাচ্চাকে ইনডিয়ায় পাঠায় দেব।’
গত এক মাস বাচ্চা দেখাশোনার জন্য ফারজানার বাবা-মা এ বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার সকালে তারা বরিশালে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। তার আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফারজানা ওই ‘পেয়িং গেস্ট’কে বাসায় রাখেন। সকালবেলা ফারজানার বাবা মা বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই তিনজন লোক বাসায় আসে। পেয়িং গেস্ট সেই নারী তাদের দড়জা খুলে দেন।
সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা গেছে সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে তারা বাসায় ঢোকে। এর মধ্যে ফারজানাকে বেঁধে লুটপাট শেষে শিশুটিকে নিয়ে ৯টা ২৪ মিনিটে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় তারা।
যেভাবে ঘটনা
মো. রানা জানান, ফারজানা তাদের বলেছেন, পেয়িং গেস্ট হিসেবে বাসা ওঠা ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল স্টাফ বাসে। ওই নারী ফারজানাকে বলেছেন, তিনি সরকারি পরিবহন পুলে চাকরি করেন, পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। তাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর ফারজানা তাকে বাসায় থাকার কথা বলেন।
ফারজানা তাদের (রানা ও তার স্ত্রীকে) বলেছেন, সকালে তার বাবা-মা চলে যাওয়ার পর মেয়েটি বাজার করার কথা বলে বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরেও আসেন। কিছুক্ষণ পর কলিংবেল বাজলে মেয়েটি দরজা খুলে দেয়। এরপর তিনজন পুরুষ বাসায় ঢুকে পড়ে। ‘ঢুকেই তারা ফারজানার উপর আক্রমণ চালায়। ফারজানাকে বেঁধে টাকা পয়সা লুট করে তার শিশুটিকে নিয়ে তারা চলে যায়।’ এদিকে ফারজানার প্রতিবেশীরা বলছেন, ফারজানা ও জাফর ওই বাসায় ওঠেন দুই বছর আগে। তবে প্রায় দুই মাস ধরে জাফর বাসায় আসতেন না নিয়মিত। ফারজানার বাবা-মাই এখানে থেকে বাচ্চার দেখাশোনা করতেন।
এ ঘটনার পর পুলিশ ফারজানার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে বলে প্রতিবেশীদের ভাষ্য। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ফারজানার স্বামীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
ওই বাড়ির মালিকের নাম শরিফুল ইসলাম। ওই এলাকায় তার পাশাপাশি দুটো বাড়ি রয়েছে। বাড়িগুলো দেখাশোনা ও ভাড়া আদায় করেন মোহাম্মদ ইসরাফিল সরকার নামের একজন। ইসরাফিল বলেন,‘প্রায় দুই বছর ধরে সাড়ে চৌদ্দ হাজার টাকা ভাড়ায় তারা (ফারজানা ও জাফর) এখানে রয়েছে। তবে গত কয়েক মাস ধরে স্বামী স্ত্রীর মনোমালিন্য চলছিল। স্বামী কয়েক মাস ধরে বাসায় আসে না। তবে ঘটনার পর সকালে বাচ্চার বাবা বাসায় এসেছিল। দুপুর পর্যন্ত এখানেই ছিল।’