দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় গ্রেপ্তার করা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরীর বাসা থেকে ১৬ লাখ ২৫ হাজার নগদ টাকা, সাড়ে চার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতের নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ধানমন্ডিতে এস কে সুরের বাসায় অভিযান চালিয়েছে সংস্থার একটি দল। তিনি বলেন, দুদক পরিচালক মো. সাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে চালানো এ অভিযানে তার বাসায় এই নগদ অর্থ, সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতের নথি পাওয়া গেছে।
১৪ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এস কে সুরের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার নিজের ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে বেনামে অর্জিত সব স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিলের আদেশ দেয়া হয়।
তিনি ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর নিজ স্বাক্ষরে সেই আদেশ ও সম্পদ বিবরণী ফরম গ্রহণ করেন। কিন্তু আদেশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি। সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন আছে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর ২০২৪ সালে ২৩ ডিসেম্বর এস কে সুরের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। সে বছর ২৮ অগাস্ট এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেয় আদালত। পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই বছরের মার্চে তাকে তলব করে সংস্থাটি।
এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের আগস্টে এস কে সুর ও তার পরিবারের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসরে রয়েছেন।
অভিযোগ আছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ‘সহযোগিতা’ করেছেন এবং ‘সুবিধা’ নিয়েছেন।
পি কে হালদারের কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে এস কে সুর ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় এনবিআর। সে বছর ১৫ মার্চ হাইকোর্ট এক এক আদেশে প্রশ্ন তোলে, এস কে সুর চৌধুরীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তবে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার পর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
পিকে হালদার নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন এবং এ কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’ ছিল বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দেশ ছাড়ার পর দুই বছর আগে ভারতে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদার। গত সপ্তাহে অর্থ পাচারের এক মামলায় তাকে জামিন দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একটি আদালত।
অর্থ-বাণিজ্য: আমদানি চাপে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে ৭৫০ কোটি ডলার
ক্যাম্পাস: ওসমান হাদীর মৃত্যুতে জবিতে দোয়া মাহফিল
অর্থ-বাণিজ্য: শওকত আজিজ আবারও বিটিএমএর সভাপতি
অর্থ-বাণিজ্য: ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংকের লাইসেন্স কে দেবে, তা এখনো ঠিক হয়নি
অর্থ-বাণিজ্য: আইসিএমএবি বেস্ট করপোরেট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান
অর্থ-বাণিজ্য: প্রথম নারী এমডি পেল ডিএসই