গত ৫ মাস যাবৎ ব্যবসায়ী পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল মায়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (এআরএসএ) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। সোমবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকার ওই ফ্ল্যাট থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
গত নভেম্বর মাসে আতাউল্লাহ নিজেকে ট্রলার ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভূমিপল্লী এলাকার ‘ভূমিপল্লী টাওয়ার’ নামে একটি বহুতল (১০ তলা) ভবনের ৩য় তলার একটি ফ্লাট বাসা ভাড়া নেন।
ফ্ল্যাট মালিক কবির হোসেন বলেন, বাসা ভাড়া নেবার সময় আতাউল্লাহ অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কাছে এসে বাসাভাড়া নিয়ে থাকতে চান বলে জানিয়েছিলেন৷ ৯ সদস্যের পরিবার ছোট ফ্ল্যাটে থাকতে পারছেন না, এ কথা জানিয়ে ভবনের ৮ তলার কেয়ার টেকার খোরশেদের থেকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়।
এলাকাবাসীরা জানান, আতাউল্লাহ ও অন্যান্যদের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল না। নামাজের সময় আরসা প্রধান মসজিদেই নামাজ পড়তেন। শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ও অবর্জনা ফেলতে বাসার বাইরে আসতো তার পরিবার সদস্যরা। তবে এলাকার কারো সাথে তেমন একটা যোগাযোগ করতো না।
ভূমিপল্লী টাওয়ারের তৃতীয় তলার মালিক কবির হোসেন জানায়, গত নভেম্বর মাসে তার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেয় আতাউল্লাহ। এ সময় তার সাথে দুইজন ব্যক্তি ছিলেন যারা নিজেদেরকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছিলেন। আরেক ব্যক্তি ছিলেন যিনি নিজেকে একটি সংস্থার সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। আতাউল্লাহ নিজেকে ট্রলার ব্যবসায়ী এবং নিজের শারীরিক অসুস্থ দাবি করেছিল।
তিনি বলেন, "অসুস্থ ব্যক্তি তাই সরল বিশ্বাসে তখন তাদের ফ্লাট ভাড়া দিয়েছিলাম।"
ভবনের কেয়ার টেকার ইমরান জানায়, মাঝে মধ্যে তাদেরকে বাজারসহ নিত্যপন্য ক্রয় করে বাসায় প্রবেশ করতে দেখতাম। একইভাবে বাসার ময়লা-অবর্জনা ফেলতে মাঝে মধ্যে বের হতেন। আতাউল্লাহ ও আরো দুইজন নামাজ পড়তে মসজিদে যেত। তবে তাদের সাথে তেমন কথা হতো না।
'ছায়া ভবন' নামে পাশের ভবনের কেয়ারটেকার আবুল কালাম বলেন, আতাউল্লাহর সাথে আমি নামাজ পড়তে মসজিদে যেতাম-আসতাম। আমাগো লগে থাইক্কা গেলো কিন্তু আমরাই কইতে পারলাম না তারা এতবড় কিছু।
সোমবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকার ভূমিপল্লি টাওয়ার ও ময়মনসিংহের নতুন বাজার মোড় এলাকার গার্ডেন সিটি থেকে আরসা প্রধান ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মায়ানমারের আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ (৪৮), সেকেন্ড ইন কমান্ড মোস্তাক আহাম্মদ (৬৬), মনিরুজ্জামান (৩৩), সলিমুল্লাহ (২৭), মোসা. আসমাউল হুসনা (২৩), হাসান (১৫), আসমত উল্লাহ (২৪), হাসান (৪৩), মোসা. শাহিনা (২২) ও মোসা. সেনোয়ারা (১৭)।
এদের মধ্যে মনিরুজ্জামান (২৪) বাংলাদেশের নাগরিক বলে র্যাবের দায়ের করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তার বাড়ি ময়মংসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার চরআলগী এলাকায়। মনিরুজ্জামানের পিতার নাম আতিকুল ইসলাম ও মাতার নাম মার্জিয়া আক্তার চম্পা। এসময় তাদের কাছে নগদ ৫১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১’শত টাকা, ইউএস ডলার ও রিঙ্গিত, আরসার কমবাট ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে। যা মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১০ টায় র্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আরাকান রোহিঙ্গা বিদ্রোহী স্যালভেশন (এআরএসএ) এর গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহে নাশকতা ও অপরাধ মূলক কর্মকান্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিল। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ধারালো চাকু ও চেইন উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, র্যাব-১১ সদস্যরা গ্রেফতারকৃতদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করলে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় দুইটি মামলায়। দুই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাদের৷
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
গত ৫ মাস যাবৎ ব্যবসায়ী পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল মায়ানমারের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (এআরএসএ) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ ও তার বাহিনীর সদস্যরা। সোমবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকার ওই ফ্ল্যাট থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
গত নভেম্বর মাসে আতাউল্লাহ নিজেকে ট্রলার ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভূমিপল্লী এলাকার ‘ভূমিপল্লী টাওয়ার’ নামে একটি বহুতল (১০ তলা) ভবনের ৩য় তলার একটি ফ্লাট বাসা ভাড়া নেন।
ফ্ল্যাট মালিক কবির হোসেন বলেন, বাসা ভাড়া নেবার সময় আতাউল্লাহ অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কাছে এসে বাসাভাড়া নিয়ে থাকতে চান বলে জানিয়েছিলেন৷ ৯ সদস্যের পরিবার ছোট ফ্ল্যাটে থাকতে পারছেন না, এ কথা জানিয়ে ভবনের ৮ তলার কেয়ার টেকার খোরশেদের থেকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়।
এলাকাবাসীরা জানান, আতাউল্লাহ ও অন্যান্যদের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল না। নামাজের সময় আরসা প্রধান মসজিদেই নামাজ পড়তেন। শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ও অবর্জনা ফেলতে বাসার বাইরে আসতো তার পরিবার সদস্যরা। তবে এলাকার কারো সাথে তেমন একটা যোগাযোগ করতো না।
ভূমিপল্লী টাওয়ারের তৃতীয় তলার মালিক কবির হোসেন জানায়, গত নভেম্বর মাসে তার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেয় আতাউল্লাহ। এ সময় তার সাথে দুইজন ব্যক্তি ছিলেন যারা নিজেদেরকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছিলেন। আরেক ব্যক্তি ছিলেন যিনি নিজেকে একটি সংস্থার সদস্য হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। আতাউল্লাহ নিজেকে ট্রলার ব্যবসায়ী এবং নিজের শারীরিক অসুস্থ দাবি করেছিল।
তিনি বলেন, "অসুস্থ ব্যক্তি তাই সরল বিশ্বাসে তখন তাদের ফ্লাট ভাড়া দিয়েছিলাম।"
ভবনের কেয়ার টেকার ইমরান জানায়, মাঝে মধ্যে তাদেরকে বাজারসহ নিত্যপন্য ক্রয় করে বাসায় প্রবেশ করতে দেখতাম। একইভাবে বাসার ময়লা-অবর্জনা ফেলতে মাঝে মধ্যে বের হতেন। আতাউল্লাহ ও আরো দুইজন নামাজ পড়তে মসজিদে যেত। তবে তাদের সাথে তেমন কথা হতো না।
'ছায়া ভবন' নামে পাশের ভবনের কেয়ারটেকার আবুল কালাম বলেন, আতাউল্লাহর সাথে আমি নামাজ পড়তে মসজিদে যেতাম-আসতাম। আমাগো লগে থাইক্কা গেলো কিন্তু আমরাই কইতে পারলাম না তারা এতবড় কিছু।
সোমবার দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকার ভূমিপল্লি টাওয়ার ও ময়মনসিংহের নতুন বাজার মোড় এলাকার গার্ডেন সিটি থেকে আরসা প্রধান ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মায়ানমারের আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ (৪৮), সেকেন্ড ইন কমান্ড মোস্তাক আহাম্মদ (৬৬), মনিরুজ্জামান (৩৩), সলিমুল্লাহ (২৭), মোসা. আসমাউল হুসনা (২৩), হাসান (১৫), আসমত উল্লাহ (২৪), হাসান (৪৩), মোসা. শাহিনা (২২) ও মোসা. সেনোয়ারা (১৭)।
এদের মধ্যে মনিরুজ্জামান (২৪) বাংলাদেশের নাগরিক বলে র্যাবের দায়ের করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তার বাড়ি ময়মংসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার চরআলগী এলাকায়। মনিরুজ্জামানের পিতার নাম আতিকুল ইসলাম ও মাতার নাম মার্জিয়া আক্তার চম্পা। এসময় তাদের কাছে নগদ ৫১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১’শত টাকা, ইউএস ডলার ও রিঙ্গিত, আরসার কমবাট ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে। যা মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১০ টায় র্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আরাকান রোহিঙ্গা বিদ্রোহী স্যালভেশন (এআরএসএ) এর গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহে নাশকতা ও অপরাধ মূলক কর্মকান্ড পরিচালনার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিল। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ধারালো চাকু ও চেইন উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম জানান, র্যাব-১১ সদস্যরা গ্রেফতারকৃতদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করলে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনায় দুইটি মামলায়। দুই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাদের৷