পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব সাত বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন—আরাভ খানের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া, মামুন ইমরানের বন্ধু রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মিজান শেখ, আতিক হাছান ওরফে দিলু শেখ এবং সারোয়ার হোসেন।
দণ্ডিতদের মধ্যে আরাভ খান ও তাঁর স্ত্রী পলাতক। রহমত উল্লাহ ও সারোয়ার হোসেন জামিনে ছিলেন এবং রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি চারজনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর ৬ আসামিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আরাভ খান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই এসবি পরিদর্শক মামুন ইমরান খান বনানীর একটি বাসায় গিয়ে খুন হন। তদন্তে জানা যায়, বন্ধু রহমত উল্লাহর সঙ্গে ওই বাসায় গিয়ে খুন হন মামুন। পরদিন গাজীপুরের উলুখোলার জঙ্গল থেকে তাঁর আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৮ সালের ৯ জুলাই মামুনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আরাভ খানের নেতৃত্বে একটি চক্র বিত্তবানদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করত। তাদের টার্গেট ছিল রহমত উল্লাহ। তাঁকে ফাঁদে ফেলতে জন্মদিনের নাটক সাজিয়ে বনানীর বাসায় ডাকা হয়। সেখানেই বন্ধু মামুন খুন হন।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
রবিউল ইসলামই যে দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাভ খান, তা ২০২৩ সালে আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানসহ তারকাদের উপস্থিতির পর প্রকাশ্যে আসে। এরপর পুলিশ নিশ্চিত করে, রবিউলই আরাভ।
মামলার পর রবিউল ভারতে পালিয়ে যান এবং ভারতীয় পাসপোর্টে আরাভ খান নামে দুবাইয়ে চলে যান। তাঁকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা হয়, তবে তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হওয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচার চলে।
মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন সাক্ষ্য দেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালত রায়ের জন্য ৫ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করেন। পরে তা তিন দফা পেছানো হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ৯ মে এক অস্ত্র মামলায় আরাভ খানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। সেই মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি রবিউল তাঁর শ্বশুরকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের জন্য মগবাজারের বাসায় যান। পুলিশ তাঁকে একটি গুলিভর্তি রিভলবারসহ গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ জামিন নিয়ে তিনি পলাতক হন এবং ওই বছরের ২৪ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব সাত বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন—আরাভ খানের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া, মামুন ইমরানের বন্ধু রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মিজান শেখ, আতিক হাছান ওরফে দিলু শেখ এবং সারোয়ার হোসেন।
দণ্ডিতদের মধ্যে আরাভ খান ও তাঁর স্ত্রী পলাতক। রহমত উল্লাহ ও সারোয়ার হোসেন জামিনে ছিলেন এবং রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি চারজনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর ৬ আসামিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আরাভ খান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই এসবি পরিদর্শক মামুন ইমরান খান বনানীর একটি বাসায় গিয়ে খুন হন। তদন্তে জানা যায়, বন্ধু রহমত উল্লাহর সঙ্গে ওই বাসায় গিয়ে খুন হন মামুন। পরদিন গাজীপুরের উলুখোলার জঙ্গল থেকে তাঁর আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৮ সালের ৯ জুলাই মামুনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আরাভ খানের নেতৃত্বে একটি চক্র বিত্তবানদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করত। তাদের টার্গেট ছিল রহমত উল্লাহ। তাঁকে ফাঁদে ফেলতে জন্মদিনের নাটক সাজিয়ে বনানীর বাসায় ডাকা হয়। সেখানেই বন্ধু মামুন খুন হন।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
রবিউল ইসলামই যে দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাভ খান, তা ২০২৩ সালে আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানসহ তারকাদের উপস্থিতির পর প্রকাশ্যে আসে। এরপর পুলিশ নিশ্চিত করে, রবিউলই আরাভ।
মামলার পর রবিউল ভারতে পালিয়ে যান এবং ভারতীয় পাসপোর্টে আরাভ খান নামে দুবাইয়ে চলে যান। তাঁকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা হয়, তবে তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হওয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচার চলে।
মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন সাক্ষ্য দেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালত রায়ের জন্য ৫ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করেন। পরে তা তিন দফা পেছানো হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ৯ মে এক অস্ত্র মামলায় আরাভ খানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। সেই মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি রবিউল তাঁর শ্বশুরকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের জন্য মগবাজারের বাসায় যান। পুলিশ তাঁকে একটি গুলিভর্তি রিভলবারসহ গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ জামিন নিয়ে তিনি পলাতক হন এবং ওই বছরের ২৪ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।