ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জ্ঞাত আয়ের বাইরে ‘সম্পদ অর্জন’ এবং ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে পূর্বাচলে ‘প্লট আত্মসাতের’ অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে দুটি আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলা দায়েরের তথ্য দেন। ‘অবৈধ’ সম্পদের মামলায় বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকা থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
তার বিরুদ্ধে দুদকের করা ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের মামলাটিতে যুক্তরাজ্যে দুটি বাড়ি কেনার অভিযোগও করা হয়েছে। পাচারের ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬২০ টাকায় তিনি বাড়ি কেনেন বলে এজাহারে বলা হয়েছে। আর প্লট আত্মসাতে বিচারপতি মানিক ছাড়াও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামাল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, এম জয়নাল আবেদীন ভুইয়াও রয়েছেন। এছাড়া রাজউক কর্মকর্তা মো. আবু বক্কার সিকদার, এম মাহবুবুল আলম ও আব্দুল হাইও রয়েছেন আসামি তালিকায়।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও মিথ্যা হলফনামার মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেন। পরবর্তীতে লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে বেআইনিভাবে প্লট হস্তান্তর ও আত্মসাৎ করেন। দুদক বলছে, নিয়ম অনুযায়ী রাজউকের অধিক্ষেত্রে কারও পূর্বে বাড়ি থাকলে নতুন প্লট বরাদ্দ দেয়া যায় না। আবেদনকারীকেও প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষরিত হলফনামা দিতে হয়, যাতে বলা থাকবে তিনি বা তার নির্ভরশীলরা এ এলাকায় জমি, ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিক নন।
কিন্তু শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাড্ডা থানার ভাটারা মৌজায় পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমি এবং নির্মাণাধীন বাড়ি থাকা সত্ত্বেও হলফনামায় অসত্য তথ্য দেন। পরবর্তীতে রাজউক কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট নিজের নামে রেজিস্ট্রিভুক্ত করেন। তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ) মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার এবং সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল
আলম লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে কাশমিরি কামালকে আমমোক্তার হিসেবে অনুমোদন দেন। পরে ৫০ লাখ টাকায় জমিটি বিক্রি করে তার নামে নামজারির অনুমোদন দেন তৎকালীন সদস্য আব্দুল হাই ও সাবেক চেয়ারম্যান জি এম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া।
তারা সক্রিয়ভাবে বিচারপতি মানিককে প্লট আত্মসাতে সহায়তা করেন। কাশমিরি কামালও প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা অঙ্গীকারনামা দিয়ে লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করেন। তিনি প্রথমে আমমোক্তার হন এবং পরে জমিটি ক্রয় করে নিজের নামে নেন। আসামিরা যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারি প্লট আত্মসাৎ করেছেন, যা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, বলছে দুদক।
১৯৭৮ সালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৯৯৬ সালে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে সরকার তাকে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিলেও বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে অপসারণ করে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাই কোর্টের এক রায়ে তিনি বিচারকের পদে পুনর্বহাল হন। ২০১৩ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে আপিল বিভাগের বিচারক হন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জ্ঞাত আয়ের বাইরে ‘সম্পদ অর্জন’ এবং ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে পূর্বাচলে ‘প্লট আত্মসাতের’ অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে দুটি আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থার উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলা দায়েরের তথ্য দেন। ‘অবৈধ’ সম্পদের মামলায় বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকা থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
তার বিরুদ্ধে দুদকের করা ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের মামলাটিতে যুক্তরাজ্যে দুটি বাড়ি কেনার অভিযোগও করা হয়েছে। পাচারের ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬২০ টাকায় তিনি বাড়ি কেনেন বলে এজাহারে বলা হয়েছে। আর প্লট আত্মসাতে বিচারপতি মানিক ছাড়াও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামাল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, এম জয়নাল আবেদীন ভুইয়াও রয়েছেন। এছাড়া রাজউক কর্মকর্তা মো. আবু বক্কার সিকদার, এম মাহবুবুল আলম ও আব্দুল হাইও রয়েছেন আসামি তালিকায়।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও মিথ্যা হলফনামার মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেন। পরবর্তীতে লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে বেআইনিভাবে প্লট হস্তান্তর ও আত্মসাৎ করেন। দুদক বলছে, নিয়ম অনুযায়ী রাজউকের অধিক্ষেত্রে কারও পূর্বে বাড়ি থাকলে নতুন প্লট বরাদ্দ দেয়া যায় না। আবেদনকারীকেও প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষরিত হলফনামা দিতে হয়, যাতে বলা থাকবে তিনি বা তার নির্ভরশীলরা এ এলাকায় জমি, ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিক নন।
কিন্তু শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাড্ডা থানার ভাটারা মৌজায় পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমি এবং নির্মাণাধীন বাড়ি থাকা সত্ত্বেও হলফনামায় অসত্য তথ্য দেন। পরবর্তীতে রাজউক কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট নিজের নামে রেজিস্ট্রিভুক্ত করেন। তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ) মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার এবং সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল
আলম লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করে কাশমিরি কামালকে আমমোক্তার হিসেবে অনুমোদন দেন। পরে ৫০ লাখ টাকায় জমিটি বিক্রি করে তার নামে নামজারির অনুমোদন দেন তৎকালীন সদস্য আব্দুল হাই ও সাবেক চেয়ারম্যান জি এম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া।
তারা সক্রিয়ভাবে বিচারপতি মানিককে প্লট আত্মসাতে সহায়তা করেন। কাশমিরি কামালও প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা অঙ্গীকারনামা দিয়ে লিজ দলিলের শর্ত ভঙ্গ করেন। তিনি প্রথমে আমমোক্তার হন এবং পরে জমিটি ক্রয় করে নিজের নামে নেন। আসামিরা যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারি প্লট আত্মসাৎ করেছেন, যা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, বলছে দুদক।
১৯৭৮ সালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৯৯৬ সালে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে সরকার তাকে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিলেও বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে অপসারণ করে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাই কোর্টের এক রায়ে তিনি বিচারকের পদে পুনর্বহাল হন। ২০১৩ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে আপিল বিভাগের বিচারক হন।