অভিযুক্ত দুই তরুণী গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহ : শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলা থেকে অভিযুক্ত সুন্দরী দুই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
ময়মনসিংহ নগরীতে ফেইসবুকে ‘টু-লেট’ বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন কলেজছাত্র নাজমুল। ময়মনসিংহ নগরের একটি বাড়িতে ওই ছাত্রকে আটকে মারধর করে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। পরে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
পরে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয় এবং পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করেছে। তারা হলেন- সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েল (১৯)। তাদের দুজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়।
ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান নাঈম (২৩) কয়েক মাস ধরেই নতুন বাসার সন্ধান করছিলেন। ফেইসবুক স্ক্রল করতে গিয়ে হঠাৎ সামনে আসে সাবলেট ভাড়ার একটি বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেয়া মোবাইল ফোনে কথা বলে সেই বাসা দেখতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। বাসার লোকজন আটকে রেখে মারধর করে তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে ভয় দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
ভুক্তভোগী নাজমুল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে কোতয়ালী পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করে।
ঘটনার শিকার নাজমুল জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ভূরারবাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি বর্তমানে নগরীর কলেজ রোডের মীরবাড়ি এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন। সেখানে ট্রেনের শব্দে পড়ালেখার সমস্যা হওয়ায় নতুন বাসার সন্ধান করছিলেন।
নাজমুল হাসান জানান, ফেইসবুকে ‘টু-লেট ময়মনসিংহ’ লেখা গ্রুপে ব্যাচেলর ১ রুমের সাবলেট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখতে পান তিনি। সেখানে দেয়া মোবাইল ফোনের নম্বরে কথা বলে জানা যায় দুই কক্ষের বাসায় এক কক্ষে স্বামী-স্ত্রী থাকেন অন্য কক্ষ সাবলেট ভাড়া দেয়া হবে। এ কথা শুনে তিনি বাসাটি দেখতে যান।
তিনি বলেন, বাসা দেখতে গেলে নগরীর গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আমাকে যে কক্ষটি সাবলেট ভাড়া দেয়া হবে সেটি দেখানোর জন্য ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর চারজন নারী ও চারজন যুবক সেই রুমে ঢোকে এবং আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করতে থাকে। আমাকে বলা হয়, খারাপ কাজ করতে এসেছি। মারধরের একপর্যায়ে তারা আমার আইফোন, ল্যাপটপ নিয়ে যায় এবং সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
আমার কাছ থেকে লিখিত একটি জবানবন্দিও নেয় তারা, যেন বোঝাতে পারে আমি এখানে খারাপ কাজ করতে এসে আটকা পড়েছিলাম। এরপর সেই বাসা থেকে বের করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এটিএম বুথে থেকে ২০ হাজার টাকা তুলে শানকিপাড়া হেলথ অফিসারের গলিতে নামিয়ে দেয়। তারা বলে, এ নিয়ে কাউকে কিছু বললে আমার ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়। পরে আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাই।
পুলিশ জানায়, কলেজ ছাত্রের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। সাবলেট ভাড়ার নামে তরুণকে আটকে মারধর করা বাসায় অভিযান চালিয়ে সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েলকে আটক করা হয়। সাদিয়া ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর ফারিয়া তাড়াইল উপজেলার সহিনাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ চক্রের চারজন তরুণী ও চারজন তরুণের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। দুই তরুণীর জিম্মা থেকে কলেজ ছাত্রের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, এটি একটি চক্র। এই চক্রটি নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে ফেইসবুক পেইজ অথবা হোয়াটসঅ্যাপে সাবলেট ভাড়ার জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলেদের ম্যাসেজ পাঠায়। এরপর বাসা দেখতে এলে এদের আটকে রেখে নানাভাবে প্রতারণার ফাঁদ আটে। চক্রটির সুন্দরী নারী শিক্ষার্থীরা ওই তরুণ যুবক বা শিক্ষার্থীর সঙ্গে নগ্ন ছবি তুলে পরিবারকে জানিয়ে দেয়ার কথা বলে মারধর করে ব্লেকমেইল করার চেষ্টা করে। এরপর নগদ টাকা, মোবাইল ফোন অথবা সঙ্গে থাকা ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করে ছেড়ে দেয়।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে ওই দুই তরুণী প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। নগরীতে এ রকম একাধিক চক্র রয়েছে। চক্রটির সঙ্গে বখাটে ছাত্ররাও জড়িত। এদের সন্ধানে কোতোয়ালি পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ আটককৃত দুই নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ওই ছাত্রের খোয়া যাওয়া মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা জব্দ করেছে। এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই তরুণী গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহ : শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলা থেকে অভিযুক্ত সুন্দরী দুই নারী শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ময়মনসিংহ নগরীতে ফেইসবুকে ‘টু-লেট’ বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন কলেজছাত্র নাজমুল। ময়মনসিংহ নগরের একটি বাড়িতে ওই ছাত্রকে আটকে মারধর করে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। পরে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
পরে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয় এবং পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করেছে। তারা হলেন- সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েল (১৯)। তাদের দুজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়।
ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান নাঈম (২৩) কয়েক মাস ধরেই নতুন বাসার সন্ধান করছিলেন। ফেইসবুক স্ক্রল করতে গিয়ে হঠাৎ সামনে আসে সাবলেট ভাড়ার একটি বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেয়া মোবাইল ফোনে কথা বলে সেই বাসা দেখতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। বাসার লোকজন আটকে রেখে মারধর করে তার মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে ভয় দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
ভুক্তভোগী নাজমুল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে কোতয়ালী পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করে।
ঘটনার শিকার নাজমুল জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ভূরারবাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি বর্তমানে নগরীর কলেজ রোডের মীরবাড়ি এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন। সেখানে ট্রেনের শব্দে পড়ালেখার সমস্যা হওয়ায় নতুন বাসার সন্ধান করছিলেন।
নাজমুল হাসান জানান, ফেইসবুকে ‘টু-লেট ময়মনসিংহ’ লেখা গ্রুপে ব্যাচেলর ১ রুমের সাবলেট ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখতে পান তিনি। সেখানে দেয়া মোবাইল ফোনের নম্বরে কথা বলে জানা যায় দুই কক্ষের বাসায় এক কক্ষে স্বামী-স্ত্রী থাকেন অন্য কক্ষ সাবলেট ভাড়া দেয়া হবে। এ কথা শুনে তিনি বাসাটি দেখতে যান।
তিনি বলেন, বাসা দেখতে গেলে নগরীর গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আমাকে যে কক্ষটি সাবলেট ভাড়া দেয়া হবে সেটি দেখানোর জন্য ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর চারজন নারী ও চারজন যুবক সেই রুমে ঢোকে এবং আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করতে থাকে। আমাকে বলা হয়, খারাপ কাজ করতে এসেছি। মারধরের একপর্যায়ে তারা আমার আইফোন, ল্যাপটপ নিয়ে যায় এবং সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
আমার কাছ থেকে লিখিত একটি জবানবন্দিও নেয় তারা, যেন বোঝাতে পারে আমি এখানে খারাপ কাজ করতে এসে আটকা পড়েছিলাম। এরপর সেই বাসা থেকে বের করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এটিএম বুথে থেকে ২০ হাজার টাকা তুলে শানকিপাড়া হেলথ অফিসারের গলিতে নামিয়ে দেয়। তারা বলে, এ নিয়ে কাউকে কিছু বললে আমার ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়। পরে আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাই।
পুলিশ জানায়, কলেজ ছাত্রের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। সাবলেট ভাড়ার নামে তরুণকে আটকে মারধর করা বাসায় অভিযান চালিয়ে সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েলকে আটক করা হয়। সাদিয়া ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর ফারিয়া তাড়াইল উপজেলার সহিনাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ চক্রের চারজন তরুণী ও চারজন তরুণের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। দুই তরুণীর জিম্মা থেকে কলেজ ছাত্রের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, এটি একটি চক্র। এই চক্রটি নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে ফেইসবুক পেইজ অথবা হোয়াটসঅ্যাপে সাবলেট ভাড়ার জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলেদের ম্যাসেজ পাঠায়। এরপর বাসা দেখতে এলে এদের আটকে রেখে নানাভাবে প্রতারণার ফাঁদ আটে। চক্রটির সুন্দরী নারী শিক্ষার্থীরা ওই তরুণ যুবক বা শিক্ষার্থীর সঙ্গে নগ্ন ছবি তুলে পরিবারকে জানিয়ে দেয়ার কথা বলে মারধর করে ব্লেকমেইল করার চেষ্টা করে। এরপর নগদ টাকা, মোবাইল ফোন অথবা সঙ্গে থাকা ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করে ছেড়ে দেয়।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে ওই দুই তরুণী প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। নগরীতে এ রকম একাধিক চক্র রয়েছে। চক্রটির সঙ্গে বখাটে ছাত্ররাও জড়িত। এদের সন্ধানে কোতোয়ালি পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ আটককৃত দুই নারী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ওই ছাত্রের খোয়া যাওয়া মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা জব্দ করেছে। এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।