পুড়িয়ে দেয়া একটি মাজার
কুমিল্লার হোমনায় ৪টি মাজারে ব্যাপক ভাঙচুর, দান বাক্সের টাকা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২ সহস্রাধিক।
অজ্ঞাত আসামি দুই সহস্রাধিক
মাজারে মাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
পরিস্থিতি থমথমে
থানার এসআই তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেন। তবে গ্রেপ্তার হয়নি কেউ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আসাদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করে আসাদপুর গ্রামের তিন দশকের ঐতিহ্যবাহী কফিল উদ্দিন ফকিরের মাজার ও তার পরিবারের মাজারসহ ৩টি ঘরে ভাঙচুর, লুটপাট করে দাহ্য পদার্থ ঢেলে ঘরগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।
এ সময় ওই এলাকার স্কুল মাঠের দক্ষিণ পাশের আবদু শাহ, পূর্ব পাশের হাওয়ালীর মাজার ও নোয়াগাও গ্রামের ঐতিহ্যবাহী কালু শাহর মাজারে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
এর মধ্যে হাওয়ালীর মাজার ও চিৎপুর গ্রামের হাসান শাহর দরবারে আগুন জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।
মাজারগুলোতে থাকা দানবাক্স ও ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও মালামাল ব্যাপক লুটপাট করে তারা। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; তবে পুলিশের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।
কফিল উদ্দিন ফকিরের ভক্ত মো. মনির জানায়, পরিকল্পিতভাবে লোকজন হামলা করে, দান বাক্স, ঘরের স্টিলের আলমারি ও শোকেস থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালামাল সব লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং বিক্ষোভকারীদের অনেকেই অকটেন ও পেট্রোল নিয়ে ঘরগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
আলেক শাহর মেয়ে কানন বেগম বলে, আমরা তাদের হাতে-পায়ে ধরেও ঘরগুলো রক্ষা করতে পারিনি, প্রাণ ভয়ে অন্য বাড়িতে চলে গেছি। ওরা সব লুটপাট করে একেবারে সব শেষ করে দিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, আব্দু শাহর মাজারের ভক্ত খায়ের, মঙ্গল ও মো. কামাল জানান, স্কুলের মাঠে শত শত মানুষ একত্রে আন্দোলন করেই মাজারে এসে হামলা করে দান বাক্স ভেঙে সব টাকা লুটপাট করে মাজার ও ঘরে ভাঙচুর করে প্রায় ৮/৯লাখ টাকার ক্ষতি করে যায়। আমাদের মাজারে মিলাদ মাহফিল ও বাৎসরিক ওরশ পালন করতাম।
এসব ঘটনার পর পুলিশ, সেনা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকায় টহল জোরদার করেন। বর্তমানে মাজার এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার,(১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জুমার নামাজের আগে ও পরে মসজিদের মাইকে জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং মাজারগুলোতে পুলিশ ও সেনা টহল রয়েছে।
হোমনা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে এবং প্রতিটি মাজার এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত আছি। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করা গেছে কিনা- এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত কাজ চলছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এলাকায় পুলিশ ও সেনা টহল অব্যাহত আছে। প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, যেন আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
গত বুধবার হোমনার আসাদপুর ফকির বাড়ির কফিল উদ্দিন ফকিরের নাতী মহসিনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ‘বেমজা মহসীন’ নামে হযরত মুহাম্মদ (স.) কে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে একদল স্থানীয় বিক্ষোভ করে। পুলিশ দ্রুত তার বিরুদ্ধে মামলা করে রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। কিন্তু পরে এলাকার ৪টি মাজার, ১টি দরবারসহ ৪টি ঘর-বাড়িতে হামলা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
পুড়িয়ে দেয়া একটি মাজার
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুমিল্লার হোমনায় ৪টি মাজারে ব্যাপক ভাঙচুর, দান বাক্সের টাকা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২ সহস্রাধিক।
অজ্ঞাত আসামি দুই সহস্রাধিক
মাজারে মাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
পরিস্থিতি থমথমে
থানার এসআই তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেন। তবে গ্রেপ্তার হয়নি কেউ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আসাদপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করে আসাদপুর গ্রামের তিন দশকের ঐতিহ্যবাহী কফিল উদ্দিন ফকিরের মাজার ও তার পরিবারের মাজারসহ ৩টি ঘরে ভাঙচুর, লুটপাট করে দাহ্য পদার্থ ঢেলে ঘরগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।
এ সময় ওই এলাকার স্কুল মাঠের দক্ষিণ পাশের আবদু শাহ, পূর্ব পাশের হাওয়ালীর মাজার ও নোয়াগাও গ্রামের ঐতিহ্যবাহী কালু শাহর মাজারে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।
এর মধ্যে হাওয়ালীর মাজার ও চিৎপুর গ্রামের হাসান শাহর দরবারে আগুন জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।
মাজারগুলোতে থাকা দানবাক্স ও ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও মালামাল ব্যাপক লুটপাট করে তারা। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; তবে পুলিশের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।
কফিল উদ্দিন ফকিরের ভক্ত মো. মনির জানায়, পরিকল্পিতভাবে লোকজন হামলা করে, দান বাক্স, ঘরের স্টিলের আলমারি ও শোকেস থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালামাল সব লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং বিক্ষোভকারীদের অনেকেই অকটেন ও পেট্রোল নিয়ে ঘরগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
আলেক শাহর মেয়ে কানন বেগম বলে, আমরা তাদের হাতে-পায়ে ধরেও ঘরগুলো রক্ষা করতে পারিনি, প্রাণ ভয়ে অন্য বাড়িতে চলে গেছি। ওরা সব লুটপাট করে একেবারে সব শেষ করে দিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, আব্দু শাহর মাজারের ভক্ত খায়ের, মঙ্গল ও মো. কামাল জানান, স্কুলের মাঠে শত শত মানুষ একত্রে আন্দোলন করেই মাজারে এসে হামলা করে দান বাক্স ভেঙে সব টাকা লুটপাট করে মাজার ও ঘরে ভাঙচুর করে প্রায় ৮/৯লাখ টাকার ক্ষতি করে যায়। আমাদের মাজারে মিলাদ মাহফিল ও বাৎসরিক ওরশ পালন করতাম।
এসব ঘটনার পর পুলিশ, সেনা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকায় টহল জোরদার করেন। বর্তমানে মাজার এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার,(১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জুমার নামাজের আগে ও পরে মসজিদের মাইকে জনসাধারণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং মাজারগুলোতে পুলিশ ও সেনা টহল রয়েছে।
হোমনা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে এবং প্রতিটি মাজার এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা দিতে প্রস্তুত আছি। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত করা গেছে কিনা- এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আমাদের তদন্ত কাজ চলছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এলাকায় পুলিশ ও সেনা টহল অব্যাহত আছে। প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, যেন আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
গত বুধবার হোমনার আসাদপুর ফকির বাড়ির কফিল উদ্দিন ফকিরের নাতী মহসিনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ‘বেমজা মহসীন’ নামে হযরত মুহাম্মদ (স.) কে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে একদল স্থানীয় বিক্ষোভ করে। পুলিশ দ্রুত তার বিরুদ্ধে মামলা করে রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। কিন্তু পরে এলাকার ৪টি মাজার, ১টি দরবারসহ ৪টি ঘর-বাড়িতে হামলা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।