২০২০ সালের ২০ আগস্ট কারাগার থেকে বেরিয়ে ‘অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্য’ করছে টগর: র্যাব
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুয়েট শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগ করার পর মুশফিক উদ্দিন টগর (৫০) ‘অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র’ বেচাকেনায় জড়িত হন বলে জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে মুশফিককে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি রিভলবার, ১৫৬টি গুলি, একটি গুলির খোসা, দু’টি মুখোশ, দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টগর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে বিভিন্ন মানুষের কাছে সরবরাহ করতো। সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগের পর টগর ২০২০ সালের ২০ আগস্ট কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুর আরেফীন বলেছেন, ‘টগরকে গ্রেপ্তারে প্রথমে আমরা সনি হত্যার বিষয়টা মূল্যায়ন করিনি। আমরা অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি সে ওই মামলার আসামি।’ টগর সনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল ২০০২ সালের ২৪ জুন। ২০২০ সালে কারামুক্তির পর থেকে সে ‘স্বাভাবিক জীবনযাপন’ করছিল, বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী আমাদের অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’
তার বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অস্ত্র মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেছেন, ‘সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বুঝতে পারি, তার কাছে আরও অস্ত্রের সন্ধান থাকতে পারে? গতকালই তাকে গ্রেপ্তার করেছি। কিছু নম্বর পেয়েছি, সেগুলো নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
তার রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয় প্রশ্ন করা হলে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, সে অপরাধী। তাকে কোনো দল গ্রহণ করে না। আমরা তাকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করছি। তার কাছে যা পাচ্ছি, সেটার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি।
টগরের বিরুদ্ধে মুগদা থানায় একটি মাদকের মামলা রয়েছে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, সনি হতা মামলায় সাজাভোগ করে মুক্তি পেয়েছে।
বর্তমানে অস্ত্র মামলায় নতুনভাবে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর টগর অস্ত্র এনে কাকে দিয়েছে, সে তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে র্যাব। ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েটে দরপত্র নিয়ে ছাত্রদলের দুইপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের ৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের ছাত্র টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েছিল তিনি। দীর্র্ঘ আন্দোলনের পর আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিচারে নিম্ন আদালতে মুকি, টগর ও নুরুল ইসলাম সাগরের মৃত্যুদণ্ডর রায় দেয় আদালত। ২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এসএম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেয় উচ্চ আদালত।
মুকি পালিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ায়, সাগরও পলাতক রয়েছে। আর টগর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিল। পরে তার মুক্তি মিলে। তবে এবার তাকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করছে র্যাব।
২০২০ সালের ২০ আগস্ট কারাগার থেকে বেরিয়ে ‘অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্য’ করছে টগর: র্যাব
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুয়েট শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগ করার পর মুশফিক উদ্দিন টগর (৫০) ‘অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র’ বেচাকেনায় জড়িত হন বলে জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে মুশফিককে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি রিভলবার, ১৫৬টি গুলি, একটি গুলির খোসা, দু’টি মুখোশ, দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টগর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে বিভিন্ন মানুষের কাছে সরবরাহ করতো। সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগের পর টগর ২০২০ সালের ২০ আগস্ট কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুর আরেফীন বলেছেন, ‘টগরকে গ্রেপ্তারে প্রথমে আমরা সনি হত্যার বিষয়টা মূল্যায়ন করিনি। আমরা অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি সে ওই মামলার আসামি।’ টগর সনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল ২০০২ সালের ২৪ জুন। ২০২০ সালে কারামুক্তির পর থেকে সে ‘স্বাভাবিক জীবনযাপন’ করছিল, বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী আমাদের অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’
তার বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অস্ত্র মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেছেন, ‘সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বুঝতে পারি, তার কাছে আরও অস্ত্রের সন্ধান থাকতে পারে? গতকালই তাকে গ্রেপ্তার করেছি। কিছু নম্বর পেয়েছি, সেগুলো নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
তার রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয় প্রশ্ন করা হলে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, সে অপরাধী। তাকে কোনো দল গ্রহণ করে না। আমরা তাকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করছি। তার কাছে যা পাচ্ছি, সেটার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি।
টগরের বিরুদ্ধে মুগদা থানায় একটি মাদকের মামলা রয়েছে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, সনি হতা মামলায় সাজাভোগ করে মুক্তি পেয়েছে।
বর্তমানে অস্ত্র মামলায় নতুনভাবে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর টগর অস্ত্র এনে কাকে দিয়েছে, সে তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে র্যাব। ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েটে দরপত্র নিয়ে ছাত্রদলের দুইপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের ৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের ছাত্র টগর গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েছিল তিনি। দীর্র্ঘ আন্দোলনের পর আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিচারে নিম্ন আদালতে মুকি, টগর ও নুরুল ইসলাম সাগরের মৃত্যুদণ্ডর রায় দেয় আদালত। ২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এসএম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেয় উচ্চ আদালত।
মুকি পালিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ায়, সাগরও পলাতক রয়েছে। আর টগর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিল। পরে তার মুক্তি মিলে। তবে এবার তাকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করছে র্যাব।