ময়মনসিংহ নগরীর সতিয়াখালী বাজারে এই খানকা শরিফে একদল মানুষ হামলা ও ভাঙচুর করে -সংবাদ
‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালানোর অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার জুমার নামজের পরে একদল যুবক
ময়মনসিংহ নগরীর সুতিয়াখালি বাজারে ‘আত্তে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
তবে এলাকাবাসী ও বাজার কমিটির লোকজন জানিয়েছেন, সেখানে কোনো ‘অসামাজিক কার্যকলাপ হতো না’। খানকা পরিচালনাকারীরাও বলছেন, এখানে কোনো ‘অসামাজিক’ কাজ হয় না।
সেখানে প্রতি শুক্রবার রাতে মিলাদ মাহফিল শেষে তবারক বিতরণ করা হতো। আর রাতে সামা কাওয়ালী গান হতো।
দুই মাস আগে থেকে এ খানকা ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সম্পৃক্ত কয়েকজন যুবকের কথায় জানা গেল। হামলাকারীরা বলছেন, “গান-বাজনা, ‘মাদকসেবনসহ’ রাতভর বিভিন্ন ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপের কারণেই এটা ভেঙে দেয়া হয়েছে।”
নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আত্তে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফে’ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘ঘর-দরজা ভেঙে, কুপিয়ে তছনছ করা হয়েছে টিন শেডের এ দরবার শরীফ। ভেঙে ফেলা হয়েছে একতারা, হারমোনিয়াম, সরাজ, ঢোল, মন্দিরাসহ সব বাদ্যযন্ত্র। বাইরে পরে আছে ভাঙা সাউন্ডবক্স। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বেহালা।’
স্থানীয় বাসিন্দা উসমান গণি ফকির প্রায় ১৮ বছর আগে বাজারের এক পাশে সরকারি জমিতে একটি ঘর করে সেখানে ‘অষ্টগুরু সামাদ পাগলার’ শিষ্যত্ব বরণ করে এ খানকা গড়ে তোলেন। এখানে নিজের ভক্তদের নিয়ে আড্ডা দিতেন উমসান গণি ফকির। স্থানীয় লোকজন এটিকে গণি ফকিরের আস্তানা নামে জানে। সম্প্রতি ‘অসামাজিক কার্যকলাপের’ আখ্যা দিয়ে এটি বন্ধের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন একদল স্থানীয় যুবক।
দায়রা শরিফের খাদেম উসমান গণি ফকির বলেন, ‘গত জুমার নামাজের সময় কিছু দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় খানকায় ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। হামলার সময় আমরা কেউ সেখানে ছিলাম না। ঘর-দরজা ভেঙে, কুপিয়ে তছনছ করেছে, সাউন্ডবক্সের সেট নিয়ে গেছে। এখানে প্রায় সাড়ে ১৭ বছর ধরে আস্তানা আছে। খাজা বাবার দায়রা শরিফে মিলাদ হতো, গান-বাজনা হতো। কিন্তু কোনো কিছু না বলে হঠাৎ আজ ভেঙে দেয়া হয়। প্রতি শুক্রবার এখানে অনেক লোক এসে মিলাদ পড়ে। জিকির শেষে সামা কাওয়ালি গান হয়।’
তিনি শুনেছেন, মসজিদে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়। কী কারণে হামলা হয়েছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। ‘বাজারের ইজারাদারদের কোনো অভিযোগ ছিল না। মসজিদ কমিটিও কোনো দিন কিছু বলেনি। এখন আমি ও আমার সহযোগীরা আতংকগ্রস্ত অবস্থায় আছি।’ থানায় অভিযোগ দিয়েছেলে বলে জানান তিনি।
খানকা শরিফ থেকে সুতিয়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ দূরত্ব ৫০ গজের মতো। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের ইমাম মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা তুলতে মাইকে কথা বলছিলেন। এ সময় ইমামের কাছ থেকে মাইক নিয়ে খানকা ভাঙার ঘোষণা দেন স্থানীয় রুবেল মিয়ার ১৯ বছর বয়সী ছেলে মো. তানভীর।
মসজিদের মোয়াজ্জিন নূর মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ছেলেটি হুজুরের কাছ থেকে মাইক নিয়ে বলতে থাকেÑ ‘গনি মিয়ার মাজারটি আমরা ভাঙতে চাই। এখানে নষ্টামি হয়’ এই বলে মাইক্রোফোন রেখে চলে যায়। পরে সুন্নত নামাজ শেষে ভাঙচুরের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি অনেক ছেলেপেলে সেখানে ভাঙচুর করছে। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে মসজিদের কোনো লোক ও মুসল্লিদের সম্পৃক্ততা নেই।”
বাজারের ব্যবসায়ী আলম বলেন, ‘আমি বাজারের ব্যবসায়ী হয়ে কোনো দিন এ গনি মিয়ার আস্তানায় অসামাজিক কোনো কার্যকলাপ হতে দেখিনি। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভাঙা হয়েছে। কাজটি খুবই খারাপ হয়েছে। বাজারের লোক হিসেবে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই।’
সুতিয়াখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আলীমুল আজিম বলেন, বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এ খানকা শরীফের কার্যক্রম চলছিল। অসামাজিক কোনো কার্যক্রমের কিছু তারা দেখেননি। তিনি বলেন, ‘তেমন কিছু হলে সমিতির পক্ষ থেকেই বন্ধ করে দেয়া হতো। কিন্তু হঠাৎ গত জুমার নামাজ শেষে যে কায়দায় কাজটি করা হয়েছে, তাতে বাজারের ব্যবসায়ীরাও আতংকিত হয়ে পরেছেন।’
সরজমিনে সোমবার, (২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) খানকা শরিফ ঘুরে মসজিদের মাইকে ঘোষণাকারী তানভীরের বাড়ি গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। এ সময় এক বৃদ্ধা তানভীরের দাদি পরিচয় দিয়ে বলেন, সকালেও তানভীর বাড়িতে ছিল। কিন্তু এখন তানভীরসহ তার বাবা-মা কেউ বাড়িতে নেই। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সোমবার, বাজারে মাজার ভাঙচুর করা হয়েছে শুনেছি। এখানে আমার নাতি ছিল কিনা বলতে পারি না।’ তিনি ছেলে ও নাতির মোবাইল নম্বর দিতে পারেননি।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রিকশা থেকে নেমে স্থানীয় দুই তরুণ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাদের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া এক তরুণ বলেন, ‘আমরা দুই মাস ধরে এটি ভাঙার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। দুই-তিনবার সেখান গেলে সিনিয়রদের বাধায় ভাঙা হয়নি। পরে সোমবার, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ভাঙচুর করেছি। বাজারের মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত গান-বাজনার কারণে আশপাশের মানুষ ঘুমাতে পারে না। পাশে মসজিদ আছে। সেসব কারণে এটি ভেঙে দিয়েছি। তবে সেখান থেকে আমাদের কেউ পাঁচটি টাকাও আনেনি।’
সজীব আহমেদ নামে অন্য তরুণের দাবি, ‘এটি ভাঙার কারণ রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গান-বাজনার সঙ্গে মদ, গাঁজা সেবনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। সেখানে আওয়ামী লীগের আমল থেকে মাদক কারবার চলছে। এলাকার যুবসমাজ মেনে নিতে না পারায় ভাঙচুর করেছে। অনেক দিন ধরে তাদের বললেও কাজ হয়নি। সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে ভেঙেছে। আগেও দুবার ভাঙার জন্য প্রশাসনের কাছে কাগজ পাঠানো হয়।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পীরের আস্তানা রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রকমের কার্যকলাপ হয়, যা স্থানীয় সাধারণ মানুষের পছন্দ হচ্ছিল না। সোমবার, এ আস্তানাটি ভাঙার খবর পাই। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে কোতয়ালি থানাায় ৫০/৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জড়িতদের ধরতে আমরা কাজ করছি।’
সোমবার, কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, এ মামলায় জড়িত দুই আসামিকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের অভিযান চলছে।
ময়মনসিংহ নগরীর সতিয়াখালী বাজারে এই খানকা শরিফে একদল মানুষ হামলা ও ভাঙচুর করে -সংবাদ
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালানোর অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার জুমার নামজের পরে একদল যুবক
ময়মনসিংহ নগরীর সুতিয়াখালি বাজারে ‘আত্তে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
তবে এলাকাবাসী ও বাজার কমিটির লোকজন জানিয়েছেন, সেখানে কোনো ‘অসামাজিক কার্যকলাপ হতো না’। খানকা পরিচালনাকারীরাও বলছেন, এখানে কোনো ‘অসামাজিক’ কাজ হয় না।
সেখানে প্রতি শুক্রবার রাতে মিলাদ মাহফিল শেষে তবারক বিতরণ করা হতো। আর রাতে সামা কাওয়ালী গান হতো।
দুই মাস আগে থেকে এ খানকা ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সম্পৃক্ত কয়েকজন যুবকের কথায় জানা গেল। হামলাকারীরা বলছেন, “গান-বাজনা, ‘মাদকসেবনসহ’ রাতভর বিভিন্ন ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপের কারণেই এটা ভেঙে দেয়া হয়েছে।”
নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আত্তে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফে’ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘ঘর-দরজা ভেঙে, কুপিয়ে তছনছ করা হয়েছে টিন শেডের এ দরবার শরীফ। ভেঙে ফেলা হয়েছে একতারা, হারমোনিয়াম, সরাজ, ঢোল, মন্দিরাসহ সব বাদ্যযন্ত্র। বাইরে পরে আছে ভাঙা সাউন্ডবক্স। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বেহালা।’
স্থানীয় বাসিন্দা উসমান গণি ফকির প্রায় ১৮ বছর আগে বাজারের এক পাশে সরকারি জমিতে একটি ঘর করে সেখানে ‘অষ্টগুরু সামাদ পাগলার’ শিষ্যত্ব বরণ করে এ খানকা গড়ে তোলেন। এখানে নিজের ভক্তদের নিয়ে আড্ডা দিতেন উমসান গণি ফকির। স্থানীয় লোকজন এটিকে গণি ফকিরের আস্তানা নামে জানে। সম্প্রতি ‘অসামাজিক কার্যকলাপের’ আখ্যা দিয়ে এটি বন্ধের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন একদল স্থানীয় যুবক।
দায়রা শরিফের খাদেম উসমান গণি ফকির বলেন, ‘গত জুমার নামাজের সময় কিছু দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় খানকায় ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। হামলার সময় আমরা কেউ সেখানে ছিলাম না। ঘর-দরজা ভেঙে, কুপিয়ে তছনছ করেছে, সাউন্ডবক্সের সেট নিয়ে গেছে। এখানে প্রায় সাড়ে ১৭ বছর ধরে আস্তানা আছে। খাজা বাবার দায়রা শরিফে মিলাদ হতো, গান-বাজনা হতো। কিন্তু কোনো কিছু না বলে হঠাৎ আজ ভেঙে দেয়া হয়। প্রতি শুক্রবার এখানে অনেক লোক এসে মিলাদ পড়ে। জিকির শেষে সামা কাওয়ালি গান হয়।’
তিনি শুনেছেন, মসজিদে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়। কী কারণে হামলা হয়েছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। ‘বাজারের ইজারাদারদের কোনো অভিযোগ ছিল না। মসজিদ কমিটিও কোনো দিন কিছু বলেনি। এখন আমি ও আমার সহযোগীরা আতংকগ্রস্ত অবস্থায় আছি।’ থানায় অভিযোগ দিয়েছেলে বলে জানান তিনি।
খানকা শরিফ থেকে সুতিয়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ দূরত্ব ৫০ গজের মতো। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদের ইমাম মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা তুলতে মাইকে কথা বলছিলেন। এ সময় ইমামের কাছ থেকে মাইক নিয়ে খানকা ভাঙার ঘোষণা দেন স্থানীয় রুবেল মিয়ার ১৯ বছর বয়সী ছেলে মো. তানভীর।
মসজিদের মোয়াজ্জিন নূর মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ছেলেটি হুজুরের কাছ থেকে মাইক নিয়ে বলতে থাকেÑ ‘গনি মিয়ার মাজারটি আমরা ভাঙতে চাই। এখানে নষ্টামি হয়’ এই বলে মাইক্রোফোন রেখে চলে যায়। পরে সুন্নত নামাজ শেষে ভাঙচুরের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি অনেক ছেলেপেলে সেখানে ভাঙচুর করছে। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে মসজিদের কোনো লোক ও মুসল্লিদের সম্পৃক্ততা নেই।”
বাজারের ব্যবসায়ী আলম বলেন, ‘আমি বাজারের ব্যবসায়ী হয়ে কোনো দিন এ গনি মিয়ার আস্তানায় অসামাজিক কোনো কার্যকলাপ হতে দেখিনি। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভাঙা হয়েছে। কাজটি খুবই খারাপ হয়েছে। বাজারের লোক হিসেবে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই।’
সুতিয়াখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আলীমুল আজিম বলেন, বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এ খানকা শরীফের কার্যক্রম চলছিল। অসামাজিক কোনো কার্যক্রমের কিছু তারা দেখেননি। তিনি বলেন, ‘তেমন কিছু হলে সমিতির পক্ষ থেকেই বন্ধ করে দেয়া হতো। কিন্তু হঠাৎ গত জুমার নামাজ শেষে যে কায়দায় কাজটি করা হয়েছে, তাতে বাজারের ব্যবসায়ীরাও আতংকিত হয়ে পরেছেন।’
সরজমিনে সোমবার, (২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) খানকা শরিফ ঘুরে মসজিদের মাইকে ঘোষণাকারী তানভীরের বাড়ি গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। এ সময় এক বৃদ্ধা তানভীরের দাদি পরিচয় দিয়ে বলেন, সকালেও তানভীর বাড়িতে ছিল। কিন্তু এখন তানভীরসহ তার বাবা-মা কেউ বাড়িতে নেই। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সোমবার, বাজারে মাজার ভাঙচুর করা হয়েছে শুনেছি। এখানে আমার নাতি ছিল কিনা বলতে পারি না।’ তিনি ছেলে ও নাতির মোবাইল নম্বর দিতে পারেননি।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রিকশা থেকে নেমে স্থানীয় দুই তরুণ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাদের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া এক তরুণ বলেন, ‘আমরা দুই মাস ধরে এটি ভাঙার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। দুই-তিনবার সেখান গেলে সিনিয়রদের বাধায় ভাঙা হয়নি। পরে সোমবার, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ভাঙচুর করেছি। বাজারের মধ্যে গভীর রাত পর্যন্ত গান-বাজনার কারণে আশপাশের মানুষ ঘুমাতে পারে না। পাশে মসজিদ আছে। সেসব কারণে এটি ভেঙে দিয়েছি। তবে সেখান থেকে আমাদের কেউ পাঁচটি টাকাও আনেনি।’
সজীব আহমেদ নামে অন্য তরুণের দাবি, ‘এটি ভাঙার কারণ রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত গান-বাজনার সঙ্গে মদ, গাঁজা সেবনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। সেখানে আওয়ামী লীগের আমল থেকে মাদক কারবার চলছে। এলাকার যুবসমাজ মেনে নিতে না পারায় ভাঙচুর করেছে। অনেক দিন ধরে তাদের বললেও কাজ হয়নি। সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে ভেঙেছে। আগেও দুবার ভাঙার জন্য প্রশাসনের কাছে কাগজ পাঠানো হয়।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এলাকাটিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পীরের আস্তানা রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রকমের কার্যকলাপ হয়, যা স্থানীয় সাধারণ মানুষের পছন্দ হচ্ছিল না। সোমবার, এ আস্তানাটি ভাঙার খবর পাই। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে কোতয়ালি থানাায় ৫০/৬০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জড়িতদের ধরতে আমরা কাজ করছি।’
সোমবার, কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, এ মামলায় জড়িত দুই আসামিকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের অভিযান চলছে।