কুমিল্লার চান্দিনায় বসত ঘরে চুরি কালে দুই চোরকে হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাদেরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিলে আহত দুই চোরকে থানা হেফাজতে না নিয়ে ঘটনাস্থল থেকেই ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জনতার হাতে আটক চোরদেরকে শারীরিকভাবে অসুস্থতার অযুহাত দেখিয়ে তাদেরকে থানায় না আনার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

গত সোমবার দিনগত রাতে উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান এর বসত ঘরে চুরি করতে ঢুকে জাকির হোসেন ও হানিফ নামের দুই চোর। এসময় গৃহকর্তা টের পেয়ে জাকির হোসেনকে ধরে ফেলে। অপর চোর হানিফ পালিয়ে যায়। আটক জাকির হোসেনকে স্থানীয় জনতা গণপিটুনি দেয়ার পর তার দেয়ার তথ্যমতে হানিফকেও খুঁজে আটক করে গণপিটুনি দেয়।

আটক চোর জাকির হোসেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নে ইন্দ্রারচর গ্রামের বাসিন্দা। সে বসন্তপুর গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরজামাই থাকেন এবং সেখানে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র তৈরি করে। তার সহযোগী হানিফ বসন্তপুর গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান- দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় গরু চুরি, বসত ঘরে চুরির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বসন্তপুর গ্রামবাসী। সোমবার মধ্য রাতে ওই গ্রামের মিজানুর রহমানের বসত ঘরে চুরি করতে ঢুকে চোর চক্র। তাদেরকে আটক করে গণপিটুনি দিলে এলাকার প্রায় সকল চুরির কথা স্বীকার করে তারা। ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর এলাকাবাসী পুলিশের জরুরী নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে চান্দিনা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ.এস.আই) শাহাদাত হোসেন এর নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি দেখে চোরেরা গুরুতর অসুস্থতার অভিনয় করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পুলিশ তাদেরকে ঘটনাস্থলে ফেলে চলে আসে।

চান্দিনা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহাদাত হোসেন জানান, চোরদেরকে এলাকাবাসী পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। যে কারণে তাদেরকে থানায় না এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলি। এছাড়া এলাকার জনপ্রনিধিরা বিষয়টি নিয়ে ২/১ দিনের মধ্যে বসে সমাধান করবে বলেও আশ্বাস দেন।

গল্লাই ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ. আনিছুর রহমান মিন্টু জানান, বিষয়টি সমাধান করার বিষয়টি মূলত এলাকার অনেক মুরব্বিরাই বলেছে। তাদের চিকিৎসার পর সুস্থ হলে আমরা বিষয়টি সমাধান করবো।

এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, তারা কেউ সেটা অভিযোগ করছে না, তারা নিজেরা নিজেরা আপোষ মিমাংশা করে ফেলছে। সেজন্য পুলিশ গুরুতর অবস্থায় কাউকে নিয়ে আসেনি। যাদের ঘরে চুরি হইছে তারা কোন মামলা করবে না। অভিযোগও দেয়নি এমনকি থানা পর্যন্তও আসেনি।