ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে ৬০৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সিআইডি ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সিআইডির প্রধান কার্যালয় থেকে বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এফবিআই ও ঢাকার সিআইডির অনুসন্ধানে এসব অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে: সিআইডি কর্মকতা
আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ১০ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ: সিআইডি
মামলায় এজাহারনামীয় ৬ জনসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৫-৭ জন রয়েছে। মামলার সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা হলো- মীনষ নাথ বিশ্বাস, ওয়াহিদুজ্জামান, গোলাম সারওয়ার আজাদ, তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপণ ফকির, রাজিব সর্দার ও উজ্জল কুমার সাধু।
সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নাগরিক কর্তৃক একজন মার্কিন নাগরিক প্রতারিত হলে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই) কর্তৃক বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সহযোগিতামূলক যোগাযোগের সূত্র ধরে সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করেন।
সিআইডির অনুসন্ধানে ওঠে আসে মার্কিন নাগরিক ডেবোরাহ জন্সটন রামলো ডেবি-এর সঙ্গে প্রতারকচক্র বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন ও সখ্য গড়ে তোলে।
অভিযোগের ভাষ্য মতে, এই প্রতারকচক্র তাদের ড্রাগ ইনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ)-এর পরিচয় দিয়ে ২ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার (যার বর্তমান মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ২,৭০,১৬,৩৫১ দশমিক ৭২ টাকা) আত্মসাৎ করেছে।
অনুসন্ধানে ওঠে আসে, প্রতারকচক্র ছলচাতুরী ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আমেরিকার ভুক্তভোগী নাগরিককে বাধ্য করে, যেন তিনি আমেরিকায় অবস্থানরত বিভিন্ন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে এই আত্মসাৎকৃত অর্থ পাঠায়। অন্যদিকে, এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত বাংলাদেশিরা তাদের বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা গ্রহণ করে।
সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা এভাবে দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনায় অভিযুক্তরা নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে বড় অংকের টাকা লেনদেন করে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- আইনক্স ফ্যাশন, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, জামান এন্টারপ্রাইজ। তার মধ্যে আইনক্স ফ্যাশন-এর নামে ইউসিবিল-এ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের নামে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেডে অ্যাকাউন্টের তথ্য পেয়েছে।
এভাবে পৃথক ৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জামান এন্টারপ্রাইজের নামে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড-এ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, নোহা এন্টারপ্রাইজের নামে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডে একটি অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এ সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে। এছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত মনীষ নাথ বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টেও অবৈধ লেনদেনের তথ্য ওঠে আসছে।
মার্কিন নাগরিকের প্রতারিত হওয়ার অভিযোগটি অনুসন্ধানকালে আরও জানা গেছে, অভিযুক্তরা স্বর্ণচোরাচালানি কারবারে জড়িত। তারা মধ্যপ্রাচ্য হতে আগত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ঢাকার তাঁতীবাজারসহ অন্য স্থানের বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙারি স্বর্ণ সংগ্রহ করে তা গলিয়ে পাকা স্বর্ণের বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এসব অপকর্মের মাধ্যমে সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৩৭২ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে ভোগ-বিলাস, অর্থপাচারসহ নামে-বেনামে সম্পত্তির মালিক হয়েছে। যা মানিলন্ডারিং অপরাধের আওতাভুক্ত। এ বিষয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় গতকাল মঙ্গলবার মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার নেপথ্য কাহিনী ও অজ্ঞাতসহ অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা উদ্ঘাটন ও শনাক্তপূর্বক সব আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এদিকে গতকাল বিকেলে সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার বিষয় নিয়ে প্রথমে আমেরিকায় ওই নাগরিক লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে এফবিআইয়ের তদন্তে নেপথ্য কাহিনী বেরিয়ে আসলে তারা বিষয়টি বাংলাদেশকে জানান, তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি অনুসন্ধান চালিয়ে এই জালিয়াত চক্রকে শনাক্ত করেছে। এই চক্র আমেরিকায় লেখাপড়া করে এমন ছাত্রদের মাধ্যমেও মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে তাদের অজান্তে পার্সেল পাঠানোর নামে প্রতারণা করেছে। সিআইডির একটি টিম দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে এই জালিয়াতি উদ্ঘাটন করে মামলা দায়ের করেছে। শ্যাম ঘোষের সম্পত্তি ক্রোক: স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শ্যাম ঘোষ নামে এক ব্যক্তির ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শ্যাম ঘোষের বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানায় ২০২২ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি রুজু করা হয়।
সিআইডির অনুসন্ধান তদন্তে ওঠে এসেছে, শ্যাম ঘোষ একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তার কর্ম জীবনের শুরুতে তিনি সূত্রাপুরে তার পিতার হোটেলে কাজ করতেন। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে চাকরির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রাপ্ত স্বর্ণ বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ক্রয়-বিক্রয় করতো। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অপরাধলব্ধ আয়ের উৎস গোপন করেছে।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, স্বর্ণ চোরাচালানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে শ্যাম ঘোষ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ও দোকান কিনেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যমুনা ফিউচার পার্কে ৬ষ্ঠ তলার সি ব্লকে তিনটি দোকান (দোকান নম্বর ৫সি-০৫৪, ০৫৫, ০৫৬) এবং ইন্ডিয়ান ডোমেস্টিক স্পাই নামক রেস্টুরেন্ট।
এছাড়াও কোতোয়ালি থানার ওয়াইজঘাটে বাবুলী স্টার সিটি ভবনের ৫ম তলায় একটি ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং- ৪/সি এবং স্বামীবাগের ‘স্বর্ণচাপা’ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় নিজে ও তার ভাই যৌথ মালিকানায় ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নম্বর# এ-৬) রয়েছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ব্লক-সি এর লেভেল-৫ এ নন্দন জুয়েলার্স নামক স্বর্ণের দোকানও তার যৌথ মালিকানায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ সিনিয়র মহানগর স্পেশাল জজ আদালত গত ২৫শে সেপ্টেম্বর উক্ত সম্পত্তির ওপর ক্রোক আদেশ দিয়েছেন। ক্রোককৃত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিএমপির কমিশনার ঢাকাকে রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তথ্যসূত্র সিআইডির প্রধান কার্যালয়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫
মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণা, হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে ৬০৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সিআইডি ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সিআইডির প্রধান কার্যালয় থেকে বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এফবিআই ও ঢাকার সিআইডির অনুসন্ধানে এসব অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে: সিআইডি কর্মকতা
আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ১০ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ: সিআইডি
মামলায় এজাহারনামীয় ৬ জনসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৫-৭ জন রয়েছে। মামলার সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা হলো- মীনষ নাথ বিশ্বাস, ওয়াহিদুজ্জামান, গোলাম সারওয়ার আজাদ, তরিকুল ইসলাম ওরফে রিপণ ফকির, রাজিব সর্দার ও উজ্জল কুমার সাধু।
সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নাগরিক কর্তৃক একজন মার্কিন নাগরিক প্রতারিত হলে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই) কর্তৃক বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সহযোগিতামূলক যোগাযোগের সূত্র ধরে সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করেন।
সিআইডির অনুসন্ধানে ওঠে আসে মার্কিন নাগরিক ডেবোরাহ জন্সটন রামলো ডেবি-এর সঙ্গে প্রতারকচক্র বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন ও সখ্য গড়ে তোলে।
অভিযোগের ভাষ্য মতে, এই প্রতারকচক্র তাদের ড্রাগ ইনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ)-এর পরিচয় দিয়ে ২ লাখ ২২ হাজার মার্কিন ডলার (যার বর্তমান মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ২,৭০,১৬,৩৫১ দশমিক ৭২ টাকা) আত্মসাৎ করেছে।
অনুসন্ধানে ওঠে আসে, প্রতারকচক্র ছলচাতুরী ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে আমেরিকার ভুক্তভোগী নাগরিককে বাধ্য করে, যেন তিনি আমেরিকায় অবস্থানরত বিভিন্ন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে এই আত্মসাৎকৃত অর্থ পাঠায়। অন্যদিকে, এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সন্দেহভাজন অভিযুক্ত বাংলাদেশিরা তাদের বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা গ্রহণ করে।
সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা এভাবে দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনায় অভিযুক্তরা নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে বড় অংকের টাকা লেনদেন করে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- আইনক্স ফ্যাশন, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ, জামান এন্টারপ্রাইজ। তার মধ্যে আইনক্স ফ্যাশন-এর নামে ইউসিবিল-এ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের নামে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেডে অ্যাকাউন্টের তথ্য পেয়েছে।
এভাবে পৃথক ৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জামান এন্টারপ্রাইজের নামে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড-এ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, নোহা এন্টারপ্রাইজের নামে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডে একটি অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এ সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে। এছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত মনীষ নাথ বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টেও অবৈধ লেনদেনের তথ্য ওঠে আসছে।
মার্কিন নাগরিকের প্রতারিত হওয়ার অভিযোগটি অনুসন্ধানকালে আরও জানা গেছে, অভিযুক্তরা স্বর্ণচোরাচালানি কারবারে জড়িত। তারা মধ্যপ্রাচ্য হতে আগত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ঢাকার তাঁতীবাজারসহ অন্য স্থানের বিভিন্ন দোকান থেকে ভাঙারি স্বর্ণ সংগ্রহ করে তা গলিয়ে পাকা স্বর্ণের বার আকারে রূপান্তরিত করে দীর্ঘদিন ধরে পাচার করে আসছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এসব অপকর্মের মাধ্যমে সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা প্রায় ৬০৮ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৩৭২ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে ভোগ-বিলাস, অর্থপাচারসহ নামে-বেনামে সম্পত্তির মালিক হয়েছে। যা মানিলন্ডারিং অপরাধের আওতাভুক্ত। এ বিষয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় গতকাল মঙ্গলবার মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার নেপথ্য কাহিনী ও অজ্ঞাতসহ অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা উদ্ঘাটন ও শনাক্তপূর্বক সব আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এদিকে গতকাল বিকেলে সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে প্রতারণার বিষয় নিয়ে প্রথমে আমেরিকায় ওই নাগরিক লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে এফবিআইয়ের তদন্তে নেপথ্য কাহিনী বেরিয়ে আসলে তারা বিষয়টি বাংলাদেশকে জানান, তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি অনুসন্ধান চালিয়ে এই জালিয়াত চক্রকে শনাক্ত করেছে। এই চক্র আমেরিকায় লেখাপড়া করে এমন ছাত্রদের মাধ্যমেও মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে তাদের অজান্তে পার্সেল পাঠানোর নামে প্রতারণা করেছে। সিআইডির একটি টিম দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে এই জালিয়াতি উদ্ঘাটন করে মামলা দায়ের করেছে। শ্যাম ঘোষের সম্পত্তি ক্রোক: স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শ্যাম ঘোষ নামে এক ব্যক্তির ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শ্যাম ঘোষের বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানায় ২০২২ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি রুজু করা হয়।
সিআইডির অনুসন্ধান তদন্তে ওঠে এসেছে, শ্যাম ঘোষ একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তার কর্ম জীবনের শুরুতে তিনি সূত্রাপুরে তার পিতার হোটেলে কাজ করতেন। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে চাকরির মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রাপ্ত স্বর্ণ বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ক্রয়-বিক্রয় করতো। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অপরাধলব্ধ আয়ের উৎস গোপন করেছে।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, স্বর্ণ চোরাচালানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে শ্যাম ঘোষ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ও দোকান কিনেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যমুনা ফিউচার পার্কে ৬ষ্ঠ তলার সি ব্লকে তিনটি দোকান (দোকান নম্বর ৫সি-০৫৪, ০৫৫, ০৫৬) এবং ইন্ডিয়ান ডোমেস্টিক স্পাই নামক রেস্টুরেন্ট।
এছাড়াও কোতোয়ালি থানার ওয়াইজঘাটে বাবুলী স্টার সিটি ভবনের ৫ম তলায় একটি ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং- ৪/সি এবং স্বামীবাগের ‘স্বর্ণচাপা’ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় নিজে ও তার ভাই যৌথ মালিকানায় ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নম্বর# এ-৬) রয়েছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ব্লক-সি এর লেভেল-৫ এ নন্দন জুয়েলার্স নামক স্বর্ণের দোকানও তার যৌথ মালিকানায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ সিনিয়র মহানগর স্পেশাল জজ আদালত গত ২৫শে সেপ্টেম্বর উক্ত সম্পত্তির ওপর ক্রোক আদেশ দিয়েছেন। ক্রোককৃত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিএমপির কমিশনার ঢাকাকে রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তথ্যসূত্র সিআইডির প্রধান কার্যালয়।