পাঁচটি পৃথক মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না—এই মর্মে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিন মাস ধরে কারাগারে থাকা খায়রুল হক নিম্ন আদালতে জামিন না পেয়ে উচ্চ আদালতে পৃথকভাবে পাঁচটি আবেদন করেন। এসব আবেদন ২০ অক্টোবর শুনানির জন্য উত্থাপন করা হয়, যেখানে আদালত জানায় ২৬ অক্টোবর বিষয়টি কার্যতালিকায় থাকবে। আজকের কার্যতালিকায় আবেদনগুলো ৯৮২ থেকে ৯৮৬ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

সকালে খায়রুল হকের আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত বেলা সোয়া দুইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। পরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

খায়রুল হকের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম কামরুল হক সিদ্দিকী ও মোনায়েম নবী শাহীন।

রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।

দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন।

২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন খায়রুল হক। তাঁর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।

গত ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় এক বছর পর রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জুলাই আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এরপর বেআইনি ও জাল রায় দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে আরেকটি মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সংক্রান্ত রায় জালিয়াতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। একই অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় ২৫ আগস্ট মামলা করেন নুরুল ইসলাম মোল্লা নামের আরেক ব্যক্তি।

এ ছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে প্লট গ্রহণের অভিযোগে চলতি বছরের আগস্টে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে।

আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীনের তথ্য অনুযায়ী, এসব পাঁচ মামলায় জামিন চেয়ে পৃথক আবেদনগুলো গত রোববার আদালতে দাখিল করা হয়।