ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্র্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেছেন, প্লট দুর্নীতির অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতে যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে বিচার সম্পন্ন হয়েছে, তা ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘এ রায়কে গুরুত্ব দেয়ার কিছু আমি দেখছি না। এই পুরো প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ এবং প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের’ ফলাফল যেমন অনুমানযোগ্য ছিল, তেমনি এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’
ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম সোমবার,( ০১ ডিসেম্বর ২০২৫) এ রায়ে টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি তার মা শেখ রেহানাকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং খালা, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ ছিল, ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও ‘সেই তথ্য গোপন করে আইন ভেঙে দুর্নীতির মাধ্যমে’ শেখ রেহানা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নেন। শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে বোনকে প্লট বরাদ্দে ‘সহায়তা’ করেন এবং ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক তার মা রেহানাকে প্লট পাইয়ে দিতে খালা শেখ হাসিনাকে ‘প্রভাবিত’ করেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে টিউলিপ বলে আসছেন, এগুলো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’।
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। বোন শেখ রেহানাও সে সময় তার সঙ্গে যান। আর টিউলিপ যুক্তরাজ্যেই থাকেন।
তাদের ‘পলাতক’ দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। ফলে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী মামলা লড়ার সুযোগ পাননি।
যুক্তরাজ্যের পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে লেখা এক চিঠিতে এ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এই মামলা লড়ার ‘ন্যূনতম অধিকারও পাননি’; অভিযোগ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা বা আইনজীবীর নিয়োগের সুযোগ- ‘কিছুই তিনি পাননি।’
বাংলাদেশে টিউলিপ যাকে আইনজীবীকে হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন, তাকে ‘সরে দাঁড়াতে বাধ্য করার পাশাপাশি গৃহবন্দী করা হয় এবং তার মেয়েকে হুমকিও দেয়া হয়’ বলেও অভিযোগ করা হয় ওই চিঠিতে।
*বিচারকের পর্যবেক্ষণ*
সোমবার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক রবিউল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় পৃথিবীর যেখানে অবস্থান করুক না কেন সেই আসামিকে বিচার করতে আইনে কোনো বাধা নেই। কেবলমাত্র মৃত্যুদণ্ডের ধারার মামলার ক্ষেত্রে পলাতক আসামির ক্ষেত্রে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রনিযুক্ত) ল ইয়ার নিয়োগ দেয়ার বিধান রয়েছে। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের কোনো ধারার অভিযোগ না থাকায় আসামিদের জন্য ডিফেন্স ল ইয়ার নিয়োগ প্রদানের কোনো সুযোগ নেই।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার ও আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক।
তার আগে আওয়ামী লীগের পতনের পরপর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও টিউলিপের নাম আসে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর টিউলিপ ও তার বোনের পাওয়া ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
মা-বাবার কাছ থেকে পাওয়া গুলশানের একটি ফ্ল্যাট টিউলিপ সিদ্দিক তার বোন রূপন্তীকে ২০১৫ সালে হস্তান্তর করেন। তবে সেই হস্তান্তরে যে নোটারি ব্যবহার করা হয় তা তদন্তে ‘ভুয়া’ প্রমাণিত হওয়ার কথা বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের মামলায় টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় গত এপ্রিলে তার আইনজীবী অভিযোগ করেন, দুদক ‘প্রামাণিক নথির ভিত্তিতে’ টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর কথা বললেও কোনো প্রামাণিক নথি উপস্থাপন করেনি।
সেই সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায়ও ‘সাড়া দেয়নি’। তাতে টিউলিপের ‘ন্যায়বিচারের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ লেবার এমপির আইনজীবীরা।
অন্যদিকে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সে সময় বলেছিলেন, ‘টিউলিপ নির্দোষ হলে কেন পদত্যাগ করলেন? কেন তিনি তার আইনজীবীদের দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললেন? দুদক তার আইনজীবীকে ইমেইলের মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন বাংলাদেশে এই মামলার আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন।’
গত বছরের মাঝামাঝিতে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে সরকার গঠন করে লেবার পার্টি, যাতে আর্থিক সেবাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান টানা চারবারের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ প্রথমবার এমপি হন ২০১৫ সালে। পরে ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও পুনঃনির্বাচিত হন।
লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করা টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির অন্য তিন মামলায় গত বৃহস্পতিবার টিউলিপের খালা শেখ হাসিনাকে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় অন্য একটি আদালত। হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দেয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড।
তার আগে গত ১৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির আরও দুটো মামলা আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। ওই দুই মামলায় শেখ হাসিনা ও টিউলিপের সঙ্গে টিউলিপের ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীও আসামি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্র্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেছেন, প্লট দুর্নীতির অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতে যে প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে বিচার সম্পন্ন হয়েছে, তা ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, ‘এ রায়কে গুরুত্ব দেয়ার কিছু আমি দেখছি না। এই পুরো প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ এবং প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের’ ফলাফল যেমন অনুমানযোগ্য ছিল, তেমনি এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’
ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম সোমবার,( ০১ ডিসেম্বর ২০২৫) এ রায়ে টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি তার মা শেখ রেহানাকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং খালা, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ ছিল, ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও ‘সেই তথ্য গোপন করে আইন ভেঙে দুর্নীতির মাধ্যমে’ শেখ রেহানা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নেন। শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে বোনকে প্লট বরাদ্দে ‘সহায়তা’ করেন এবং ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক তার মা রেহানাকে প্লট পাইয়ে দিতে খালা শেখ হাসিনাকে ‘প্রভাবিত’ করেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে টিউলিপ বলে আসছেন, এগুলো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’।
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। বোন শেখ রেহানাও সে সময় তার সঙ্গে যান। আর টিউলিপ যুক্তরাজ্যেই থাকেন।
তাদের ‘পলাতক’ দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। ফলে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী মামলা লড়ার সুযোগ পাননি।
যুক্তরাজ্যের পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে লেখা এক চিঠিতে এ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এই মামলা লড়ার ‘ন্যূনতম অধিকারও পাননি’; অভিযোগ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা বা আইনজীবীর নিয়োগের সুযোগ- ‘কিছুই তিনি পাননি।’
বাংলাদেশে টিউলিপ যাকে আইনজীবীকে হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন, তাকে ‘সরে দাঁড়াতে বাধ্য করার পাশাপাশি গৃহবন্দী করা হয় এবং তার মেয়েকে হুমকিও দেয়া হয়’ বলেও অভিযোগ করা হয় ওই চিঠিতে।
*বিচারকের পর্যবেক্ষণ*
সোমবার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক রবিউল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় পৃথিবীর যেখানে অবস্থান করুক না কেন সেই আসামিকে বিচার করতে আইনে কোনো বাধা নেই। কেবলমাত্র মৃত্যুদণ্ডের ধারার মামলার ক্ষেত্রে পলাতক আসামির ক্ষেত্রে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রনিযুক্ত) ল ইয়ার নিয়োগ দেয়ার বিধান রয়েছে। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের কোনো ধারার অভিযোগ না থাকায় আসামিদের জন্য ডিফেন্স ল ইয়ার নিয়োগ প্রদানের কোনো সুযোগ নেই।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার ও আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক।
তার আগে আওয়ামী লীগের পতনের পরপর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও টিউলিপের নাম আসে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর টিউলিপ ও তার বোনের পাওয়া ‘উপহারের’ ফ্ল্যাট নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
মা-বাবার কাছ থেকে পাওয়া গুলশানের একটি ফ্ল্যাট টিউলিপ সিদ্দিক তার বোন রূপন্তীকে ২০১৫ সালে হস্তান্তর করেন। তবে সেই হস্তান্তরে যে নোটারি ব্যবহার করা হয় তা তদন্তে ‘ভুয়া’ প্রমাণিত হওয়ার কথা বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের মামলায় টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় গত এপ্রিলে তার আইনজীবী অভিযোগ করেন, দুদক ‘প্রামাণিক নথির ভিত্তিতে’ টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর কথা বললেও কোনো প্রামাণিক নথি উপস্থাপন করেনি।
সেই সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায়ও ‘সাড়া দেয়নি’। তাতে টিউলিপের ‘ন্যায়বিচারের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ লেবার এমপির আইনজীবীরা।
অন্যদিকে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সে সময় বলেছিলেন, ‘টিউলিপ নির্দোষ হলে কেন পদত্যাগ করলেন? কেন তিনি তার আইনজীবীদের দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললেন? দুদক তার আইনজীবীকে ইমেইলের মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন বাংলাদেশে এই মামলার আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন।’
গত বছরের মাঝামাঝিতে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে সরকার গঠন করে লেবার পার্টি, যাতে আর্থিক সেবাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান টানা চারবারের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ প্রথমবার এমপি হন ২০১৫ সালে। পরে ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও পুনঃনির্বাচিত হন।
লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করা টিউলিপের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্মেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির অন্য তিন মামলায় গত বৃহস্পতিবার টিউলিপের খালা শেখ হাসিনাকে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় অন্য একটি আদালত। হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দেয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড।
তার আগে গত ১৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতির আরও দুটো মামলা আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। ওই দুই মামলায় শেখ হাসিনা ও টিউলিপের সঙ্গে টিউলিপের ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীও আসামি।