সরকারি চিংড়ি এস্টেটে জমি বরাদ্দে অনিয়ম
সরকারি চিংড়ি এস্টেটে জমি বরাদ্দে অনিয়ম
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিলুপ্ত সুন্দরবনের সাত হাজার একর সরকারি জমিতে ১৯৮১-৮২ সালে গড়ে ওঠা সরকারি চিংড়ি এস্টেট— বা চিংড়িজোন— চার দশক পেরিয়ে এখন বিস্তৃত হয়েছে ২৫ হাজার একরেরও বেশি এলাকায়। সরকার ঘোষিত ১০ ও ১১ একরের মোট ৫৮৭টি প্লটের পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে নতুন করে গড়ে ওঠা হাজারো প্লট মিলিয়ে এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ মাছ উৎপাদনের শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। তবে বরাদ্দনীতি ও ব্যবহার নিয়ে শুরু থেকেই অভিযোগ রয়েছে গুরুতর অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রভাবশালীদের দখলদারিত্বের।
সূত্র জানায়, ১৯৭৯ সালে সরকারের গবেষণার ভিত্তিতে চকরিয়ার উপকূলীয় জলাভূমিকে পরিকল্পিতভাবে প্লটে ভাগ করে রপ্তানিমুখী চিংড়ি শিল্প গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৮১-৮২ সালে ৭ হাজার একর বনভূমি অধিগ্রহণ করে প্রকৃত চাষিদের চাষের জন্য হস্তান্তরের লক্ষ্য ছিল স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভর করা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধি করা। কিন্তু বাস্তবে স্থানীয় চাষিদের প্রাপ্তি ছিল সামান্য; বরাদ্দের বড় অংশ গেছে বহিরাগত সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের স্বজনদের কাছে।
চিংড়িজোনের বাসিন্দা ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টুর অভিযোগ, সরকার প্রকৃত চাষিদের হাতে প্লট দিয়ে উৎপাদন বাড়াতে চাইলেও বরাদ্দ পেয়েছেন মূলত প্রভাবশালীরা। এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে এবং স্থানীয় চাষিরা শ্রমিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন।
২০১৩ সালের নতুন নীতিমালায় ইজারায় অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছিল স্থানীয় ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষিদের। আবেদন, যাচাই-বাছাই, লটারি ও চুক্তির সব প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার নির্দেশও ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নে ফের অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অনেকেই প্লট নিয়ে চিংড়ি না চাষ করে লবণ চাষ, মৌসুমি মাছ চাষ, ইটভাটা ও অন্য ব্যবসায় ব্যবহার করছেন যা নীতিমালা লঙ্ঘন ও পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
টিআইবির অনুপ্রাণিত সংগঠন সনাকের সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান মাহমুদের মতে, চার দশক ধরে বরাদ্দে অনিয়ম চলমান। মাঠপর্যায়ে তদারকি দুর্বল থাকায় এবং নিয়ম ভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বাঁধ নির্মাণ, রাসায়নিক ব্যবহার ও সড়ক কাটা-পাথরের কারণে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা বাড়ছে।
অপরাধ ও দুর্নীতি: দেশে ও লন্ডনে আনোয়ারুজ্জামানের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক
অপরাধ ও দুর্নীতি: ৪৩ বছর ধরে প্লট দখলে আমলা-রাজনীতিকরা, বঞ্চিত স্থানীয় চাষিরা