শরীয়তপুরের জাজিরায় একসাথে একপট গ্রামের ৪টি বাড়ীর গরুঘর ও রান্না ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার(২১ মে) দিবাগত রাত সারে ১২ টার সময় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেং কান্দি গ্রামের ইয়াসিন মুন্সী, ইউনুস সারেং ও পার্শবর্তী নড়িয়া উপজেলার মুক্তারেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি গ্রামের আব্দুল হামিদ মৃধা, আবু কালাম ফকিরের বাড়ীর গরুঘর ও রান্না ঘরে একসাথে আগুন দেয় দুর্বিত্তরা। এরপর স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে সারেং কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন মুন্সীর ২টি ছাগল ও একটি গরু নিহত হয়েছে এবং তার একটি গরুঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। ইয়াসিন মুন্সীর গরু ঘরে আগুনের ভয়াবহতা দেখে তার প্রতিবেশী রুপজান বিবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাথে সাথে মারা যান।
একি গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস সারেং এর ৯টি গরু আগুনে দগ্ধ হয়। এরমধ্যে ২টি গরু মারা যায় এবং বাকী ৭টি গরু আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও তার একটি গরু ঘর, ২টি খরের পালা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
মুক্তারেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ মৃধার একটি রান্নাঘর, একটি গরু ঘর ও একটি টয়লেট সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। একি গ্রামের বাসিন্দা আবু কালাম ফকিরের একটি রান্না ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, তারা সকলেই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা।
ক্ষতিগ্রস্থ ইয়াসিন মুন্সী জানান, রাত ১২ টার পর দিয়ে আমার প্রতিবেশী রুপজান বিবির চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি গরু ঘরে আগুন জ্বলছে। পরে স্থানীদের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি এবং ফায়ার সার্ভিসে জানাই। ততক্ষণে আমার ২টি ছাগল ও ১টি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। আরেকটি গরু কোনরকম বাঁচাতে পেড়েছি কিন্তু খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। আমি এমন নিকৃষ্টতার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাই।
আরেক ক্ষতিগ্রস্থ ইউনুস সারেং বলেন, "আমি কৃষক মানুষ। আমার সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা। কে বা কারা আমার এত বড় ক্ষতি করতে পারে আমি তা ভাবতে পারছি না। আমার ৯টি গরুর মধ্যে ৪টি গরু নিয়মিত দুধ দিত যা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতাম আরেকটি গরু গাভীন(গর্ভবতী) ছিল। কিন্তু ওরা আমার সব শেষ করে দিলো। আমি ঐ নরপশুদের কঠিন বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা নিজাম সারেং বলেন, "এটি খুবই ঘৃণ্যতম একটি কাজ করেছে দুর্বৃত্তরা। এবং মনে হচ্ছে আগে থেকে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কারন আমরা যখন আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে যাই তখন দেখি পানির যোগান বন্ধ করতে টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।
জাজিরা ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ মো: এনামুল হক সুমন বলেন, আমরা রাত পৌনে ১টার সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ২টি ইউনিট মিলে ৩টি বাড়ীতে প্রায় ২ ঘন্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। অন্য একটি বাড়ীতে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহেল সরেজমিনে পরিদর্শন করে বলেন, এটি খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সূপারিশ করব। ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
এবিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান আছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২২ মে ২০২২
শরীয়তপুরের জাজিরায় একসাথে একপট গ্রামের ৪টি বাড়ীর গরুঘর ও রান্না ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার(২১ মে) দিবাগত রাত সারে ১২ টার সময় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের সারেং কান্দি গ্রামের ইয়াসিন মুন্সী, ইউনুস সারেং ও পার্শবর্তী নড়িয়া উপজেলার মুক্তারেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি গ্রামের আব্দুল হামিদ মৃধা, আবু কালাম ফকিরের বাড়ীর গরুঘর ও রান্না ঘরে একসাথে আগুন দেয় দুর্বিত্তরা। এরপর স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে সারেং কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন মুন্সীর ২টি ছাগল ও একটি গরু নিহত হয়েছে এবং তার একটি গরুঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। ইয়াসিন মুন্সীর গরু ঘরে আগুনের ভয়াবহতা দেখে তার প্রতিবেশী রুপজান বিবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাথে সাথে মারা যান।
একি গ্রামের বাসিন্দা ইউনুস সারেং এর ৯টি গরু আগুনে দগ্ধ হয়। এরমধ্যে ২টি গরু মারা যায় এবং বাকী ৭টি গরু আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও তার একটি গরু ঘর, ২টি খরের পালা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
মুক্তারেরচর ইউনিয়নের মোল্লা কান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ মৃধার একটি রান্নাঘর, একটি গরু ঘর ও একটি টয়লেট সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। একি গ্রামের বাসিন্দা আবু কালাম ফকিরের একটি রান্না ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, তারা সকলেই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা।
ক্ষতিগ্রস্থ ইয়াসিন মুন্সী জানান, রাত ১২ টার পর দিয়ে আমার প্রতিবেশী রুপজান বিবির চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি গরু ঘরে আগুন জ্বলছে। পরে স্থানীদের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি এবং ফায়ার সার্ভিসে জানাই। ততক্ষণে আমার ২টি ছাগল ও ১টি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। আরেকটি গরু কোনরকম বাঁচাতে পেড়েছি কিন্তু খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। আমি এমন নিকৃষ্টতার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাই।
আরেক ক্ষতিগ্রস্থ ইউনুস সারেং বলেন, "আমি কৃষক মানুষ। আমার সাথে কারো কোন শত্রুতা ছিলনা। কে বা কারা আমার এত বড় ক্ষতি করতে পারে আমি তা ভাবতে পারছি না। আমার ৯টি গরুর মধ্যে ৪টি গরু নিয়মিত দুধ দিত যা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতাম আরেকটি গরু গাভীন(গর্ভবতী) ছিল। কিন্তু ওরা আমার সব শেষ করে দিলো। আমি ঐ নরপশুদের কঠিন বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা নিজাম সারেং বলেন, "এটি খুবই ঘৃণ্যতম একটি কাজ করেছে দুর্বৃত্তরা। এবং মনে হচ্ছে আগে থেকে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কারন আমরা যখন আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে যাই তখন দেখি পানির যোগান বন্ধ করতে টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।
জাজিরা ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ মো: এনামুল হক সুমন বলেন, আমরা রাত পৌনে ১টার সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ২টি ইউনিট মিলে ৩টি বাড়ীতে প্রায় ২ ঘন্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। অন্য একটি বাড়ীতে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহেল সরেজমিনে পরিদর্শন করে বলেন, এটি খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সূপারিশ করব। ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
এবিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মিন্টু মন্ডল বলেন, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান আছে।