????????????? ????? ?????? ?????? ?????
কারো ফোন পেয়ে বাবার সঙ্গে কথা বলে বাসা থেকে ৯ জুন রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. আরিফ মাহমুদ সুমন। এরপর থেকে আরিফের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ ছিল পরিবারের। সারারাত ছেলের কোন খবর না পেয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বাবা মো. আলী আকবর। জিডির পর আলী আকবরের কাছে খবর আসে তার ছেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। পাগল হয়ে ছেলেকে শনাক্ত করার পর জানতে পারেন ছেলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত। উন্নত চিকিৎসার জন্য ছেলেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চিকিৎসারত আরিফ ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে শত চেষ্টা করেও তাকে আর ফেরানো যায়নি। ২৫ জুলাই আইসিইউতে চিকিৎরত অবস্থায় মেধাবী এ ছাত্রের মৃত্যু হয়। প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, আরিফ কিভাবে মাথায় আঘাত পেলেন, আর কে বা কারা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। তার মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
এদিকে সুমনের মৃত্যুর রহস্য তদন্ত না করে পুলিশ পরিবারের কাছ থেকে একটি মুচলেকা নিয়েছে। সেখানে তারা পরিবারকে সুমনের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় হয় বলে স্বীকার করে নিয়ে স্বাক্ষর করতে বলেন। উপায় না দেখে পুলিশের কথা মেনে নিয়ে সুমনকে ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়। পরিবারের দাবি, পরিস্থিতিতে ফেলে পুলিশ তাদের দিয়ে এ কাজ করিয়েছে। তারা সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
গত ২৫ জুলাই ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে শেষ পর্যন্ত হার মানেন আরিফ মাহমুদ সমুন। প্রায় ২ মাস ছেলের জন্য ১০ লাখ টাকার বেশি খবর করেও ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি সরকারি কর্মকর্তা মো. আলি আকবর। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আরিফের মা এখন পাগলপ্রায়। পরিবারের দাবি, তার ছেলেকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা কোন না কোন কারণে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু পুলিশ এ মৃত্যুকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে ঘটনা তদন্ত করছে না। পরিবারের দাবি, সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক।
সুমনের ঘনিষ্ট স্বজনরা বলছেন, সুমন সোনারগাঁয়ে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। তার বাবা আলী আকবর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করছেন। সুমনের মা গৃহিনী। পরিবারের সঙ্গে তেজগাঁও এলাকায় সরকারি কোয়ার্টারে থাকত সুমন। পড়াশোনা ছাড়া তেমন কোন অপ্রয়োনীয় আড্ডায় মিশত না সুমন। বিশ্ববিদ্যালয় আর বাসায় সুমনের বেশি সময় কাটত। এলাকায় কারো সঙ্গে কোন বিরোধ ছিল না। তার এমন মৃত্যু কোনভাবেই স্বাভাবিক মৃত্যু বা দুর্ঘটনা মানতে পারছে না পরিবার।
আলী আকবর বলেন, অপারেশনসহ ছেলের চিকিৎসায় রীতিমতো ধারদেনা করে ১০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। অন্যদিকে সুমনও পরিপূর্ণ সুস্থ না হওয়ায় কিভাবে মাথায় আঘাত পেয়েছেন তা বলতে পারছিলেন না। এর মধ্যে সুমন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে বাসায় নিয়ে আসেন। এর মধ্যে পুলিশ তাদের বলেছে সুমন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তারা সেটা শুনে মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু সুমন তার মাকে বাসায় বলেছে, মা আমি দুর্ঘটনায় আহত হয়নি। আমার সঙ্গে কি হয়েছে সেটা আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে তোমাদের কাছে বলব।
এ বিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই ও জিডির তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, এটা একটি সড়ক দুর্ঘটনা। সে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পড়ে ছিল। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বিষয়টি হাতিরঝিল থানার। তাই আমরা আর এ বিষয়ে তদন্ত করিনি।
হাতিরঝিল থানা পুলিশের দাবি, সুমন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে এবং লাশ ময়নাতদন্ত করবে না এমনটা মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করে সুমনের বাবা। এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে সুমনের পরিবার বলছে সুমনের সঙ্গে কোন ছেলের পূর্বশত্রুতা থাকতে পারে এমনটি তাদের জানা নেই। ঘটনার দিন সুমন কারো ফোন পেয়েই বের হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সেগুলো কিছুই তদন্ত করেনি। সমুনের মৃত্যুর পর পারিবারিকভাবে জানাজা শেষে যখন আমরা লাশ দাফনে যাই তখন হাতিরঝিল থানা পুলিশ এসে হাজির হয়। সাদা কাজগে স্বাক্ষর না করলে লাশ নিয়ে যাবে। ময়নাতদন্ত করতে অনেক ঝামেলা হবে ইত্যাদি নানা কথা জটিলভাবে পুলিশ বলতে থাকে। ঝুট ঝামেলা এড়ানোর জন্যই তারা সেদিন পুলিশের কথায় রাজি হয়ে যায়। কিন্তু পরে তাদের কাছে মনে হয়েছে, তারা এটি ভুল করেছে। এখন তারা ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
সারাদেশ: যশোরে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরাধ ও দুর্নীতি: লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা