alt

বাংলাদেশি পাসপোর্টে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা

বিমানবন্দরে আটক রোহিঙ্গাদের স্বীকারোক্তি

বাকী বিল্লাহ : শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নানা কৌশলে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। তারা প্রথমে কক্সবাজার এলাকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে তাদের সহায়তায় বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করতে যেসব কাগজপত্র দরকার তার সব কিছু ব্যবস্থা করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।

ওই সব আবেদনে কাগজপত্র দেখে কোন কোন তদন্ত কর্মকর্তা বিভ্রান্তিতে পড়ে বা রহস্য জনক কারণে ভেরিফিকেশন করেও দেয়। এমনকি পাসপোর্ট অফিস পর্যন্ত সব কিছু প্যাকেজ প্রোগ্রামের মতো চুক্তি করে তারা পাসপোর্ট হাতে পায়। ওই সব পাসপোর্টে তারা বাংলাদেশি পরিচয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যায়। আবার মাঝে মধ্যে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ধরাও পড়ে।

সম্প্রতি তিন রোহিঙ্গা সদস্য বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভিসাসহ সব কাজ শেষ করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ, এসবির পাসপোর্ট শাখা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশন (পিবিআই) একাধিক ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইমিগ্রেশনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, কিছু কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী নানা কৌশলে দালাল চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করে। এরপর আবার দালালদের দিয়ে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ভিসা নিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করে। তার মধ্যে কিছু কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী আটক হলেও কেউ কেউ আবার বিদেশে চলে যান।

সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে তিন যাত্রীর কথা-বার্তা, আচরণ ও পাসপোর্ট দেখে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তির তথ্য অনুযায়ী ইমিগ্রেশন কর্র্তৃপক্ষ তদন্তে নেমেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে নেয়া পাসপোর্ট বাতিল করার প্রস্তাব পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়েছেন বলে জানান।

আটককৃত তিন রোহিঙ্গার তথ্য ও স্বীকারোক্তি নেয়া শেষে তাদেরকে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঈদের ছুটির কারণে ঘটনাটি প্রকাশিত হয়নি। গতকাল একজন ঊর্ধ্বতন অফিসারের সঙ্গে সংবাদের আলোচনার সময় তিনি ঘটনাটি জানিয়েছেন। এরপর খোঁজ নিয়ে নানা কাহিনী বেরিয়ে আসছে।

ইমিগ্রেশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, বিমানবন্দরে প্রায় সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আটকা পড়েন। আবার অনেক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বিদেশে গেছেন। দেশে ফেরার সময় তারা আবার কাগজপত্র জাল করে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কক্সবাজারের স্থানীয় কিছু লোকজনের সঙ্গে আত্মীয়ের সম্পর্ক গড়ে তোলে কৌশলে তাদের (দালাল) সহযোগিতায় কাগজপত্র সংগ্রহ করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অন্যদিকে পুলিশের কেউ তা ভেরিফিকেশন করতে গেলে বিভ্রান্তির শিকার হয়ে বা যে কোনভাবে তদন্তে কাগজপত্র দেখে ছাড়পত্র দেন। তবে শনাক্ত করার সময় কিছু জালিয়তি ধরা পড়েছে। কোন কোন রোহিঙ্গা জন্মসনদ, এনআইডি (জাতীয়পরিচয়পত্রের ফটোকপি) সব কিছু তারা অনিয়মের মাধ্যমে করে থাকে। তার সময় কক্সবাজারে কঠোর নিয়ম করার কারণে অনেকটা কমে গেছে বলেও তিনি জানান। এখন দেশে ডিজিটাল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে জালিয়াতি কমবে বলে তিনি আশাবাদী।

পাসপোর্ট শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, শরণার্থী কিছু কিছু রোহিঙ্গা সদস্য জাতীয়পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। এরপর অন্যান্য কাগজপত্র দেখিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে ঢাকার বাইরের বিভাগ ও জেলা থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে। এদের নিদিষ্ট দালাল চক্র রয়েছে। তারাই সব কিছু করে দেয়। কাগজপত্র তৈরি থেকে পাসপোর্ট পর্যন্ত সবই প্যাকেজের আওতায় (টাকার বিনিময়ে) ম্যানেজ করা হয়। গ্রাম পর্যায়ে এসব জ্বালিয়াতি বেশি হয়। কিন্তু যে পাসপোর্ট করবে তার সঙ্গে কথা বললে শনাক্ত হয়ে যায়। এছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ার সময় জালিয়াতি শনাক্ত হতে পারে। কিন্তু এই চক্র চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে সব কিছু অনিয়মের মাধ্যমে করে থাকে। এরপরও রোহিঙ্গা মাঝেমধ্যে ধরা পড়েন বলে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ নাগরিকরা পাসপোর্ট করতে গেলে পদে পদে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। তার জন্য ধারে ধারে ঘুরতে হচ্ছে। এমনকি পুলিশ ভেরিফিকেশন করার জন্য অনেকেই তদবির করেন। এরপরও পাওয়া কষ্টকর। পাসপোর্ট অফিসে দালাল চক্রের সহায়তা নিতে গিয়েও বিপাকে পড়েন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট কীভাবে দ্রুতগতিতে হয় তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। একবার পুলিশ ভেরিফিকেশন কিছুদিনের জন্য উঠিয়ে দেয়ার পর রোহিঙ্গারা ওই সুবিধা নিয়েছে। অনেকেই বিদেশ গিয়ে আবার ধরা পড়ছে। কেউ পাসপোর্ট লুকিয়ে পালিয়ে কাজ করেন। এই ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান।

ছবি

এস আলমের আরও ৪৬৯ একর জমি জব্দের আদেশ

ছবি

খুলনায় জোড়া খুন: ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

সোনারগাঁয়ে ডাকাতির মালামাল ভাগ নিয়ে দুই ডাকাত গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৩

ছবি

অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার

ছবি

পার্বতীপুরে লগি-বৈঠার নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

সিরাজদিখানে র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় আমামি গ্রেপ্তার

ছবি

বাঘায় চর দখলের সংঘর্ষে গুলিতে ২ জন নিহত

ছবি

সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে

ছবি

জেনেভা ক্যাম্পে বোমা বিস্ফোরণে যুবক নিহতের মামলায় ৪ জন রিমান্ডে

ছবি

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি: ৮ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিআইডির মানিলন্ডারিং আইনে মামলা

ছবি

সোনাইমুড়ীতে মাদারাসায় ঘুমন্ত ছাত্রকে জবাই করে হত্যা, হত্যাকারী আটক

ছবি

শেওড়াপাড়ায় কিশোরী নির্যাতন: গৃহকর্ত্রী পারভীন চৌধুরীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, ফরিদপুরের সৌরভকে গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করলো র‍্যাব

ছবি

নির্বাচন কমিশনের সামনে ‘ককটেল বিস্ফোরণ’, আটক ১

ছবি

পাঁচ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন নিয়ে হাইকোর্টের রুল

ছবি

হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

ছবি

৬ ভরি স্বর্ণ লুট করতে শরীয়তপুরের ওই নারীকে হত্যা করা হয়: র‌্যাব

ছবি

রাউজানে ১৮ দিনের মাথায় আরও এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

ছবি

বদলগাছীতে প্রবাসীর বাড়িতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা; আহত ২

ছবি

জামালপুরে ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

ছবি

সালিশ বৈঠকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

মোহাম্মদপুরে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ৩১, সারাদেশে ১৭২৬

কদমতলীতে ছুরিকাঘাতে আহত পোশাককর্মীর মৃত্যু

ছবি

কুমিল্লায় বিচারের নামে নারী নির্যাতন ইউপি মেম্বারের, ভিডিও ভাইরা

ছবি

যশোরে গুলি ছুড়ে পালানোর সময় দুই সন্ত্রাসীকে আটক করল জনতা

ছবি

মেয়েকে হত্যার দায়ে পিতার কারাদণ্ড

ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতের কন্যাকে দলবেঁধে ধর্ষণ: তিন আসামির কারাদণ্ড

ছবি

শিশুকে ঢাকা থেকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ, কনস্টেবল কারাগারে

ছবি

রাজধানীর ১৫টির বেশি স্থানে ঝটিকা মিছিল, ১৩১ জন গ্রেপ্তার

ছবি

কবিরাজের কাছে জিন ছাড়াতে গিয়ে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

ছবি

চোলাই মদ বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ছবি

৯০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কর্মকর্তাসহ ৬ জনের কারাদণ্ড

ছবি

রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৪

ছবি

বিইউপি ছাত্রীকে ধর্ষণ: প্রধান আসামি সোহেল তিনদিনের রিমান্ডে

ছবি

পর্নো ভিডিও তৈরির অভিযোগে যুগল গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণালংকার লুটের জন্য মা-মেয়েকে হত্যা

tab

বাংলাদেশি পাসপোর্টে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা

বিমানবন্দরে আটক রোহিঙ্গাদের স্বীকারোক্তি

বাকী বিল্লাহ

শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নানা কৌশলে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। তারা প্রথমে কক্সবাজার এলাকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে তাদের সহায়তায় বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করতে যেসব কাগজপত্র দরকার তার সব কিছু ব্যবস্থা করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।

ওই সব আবেদনে কাগজপত্র দেখে কোন কোন তদন্ত কর্মকর্তা বিভ্রান্তিতে পড়ে বা রহস্য জনক কারণে ভেরিফিকেশন করেও দেয়। এমনকি পাসপোর্ট অফিস পর্যন্ত সব কিছু প্যাকেজ প্রোগ্রামের মতো চুক্তি করে তারা পাসপোর্ট হাতে পায়। ওই সব পাসপোর্টে তারা বাংলাদেশি পরিচয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যায়। আবার মাঝে মধ্যে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ধরাও পড়ে।

সম্প্রতি তিন রোহিঙ্গা সদস্য বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভিসাসহ সব কাজ শেষ করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ইমিগ্রেশন পুলিশ, এসবির পাসপোর্ট শাখা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিশন (পিবিআই) একাধিক ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইমিগ্রেশনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, কিছু কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী নানা কৌশলে দালাল চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করে। এরপর আবার দালালদের দিয়ে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ভিসা নিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করে। তার মধ্যে কিছু কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী আটক হলেও কেউ কেউ আবার বিদেশে চলে যান।

সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে তিন যাত্রীর কথা-বার্তা, আচরণ ও পাসপোর্ট দেখে সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তির তথ্য অনুযায়ী ইমিগ্রেশন কর্র্তৃপক্ষ তদন্তে নেমেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে নেয়া পাসপোর্ট বাতিল করার প্রস্তাব পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়েছেন বলে জানান।

আটককৃত তিন রোহিঙ্গার তথ্য ও স্বীকারোক্তি নেয়া শেষে তাদেরকে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঈদের ছুটির কারণে ঘটনাটি প্রকাশিত হয়নি। গতকাল একজন ঊর্ধ্বতন অফিসারের সঙ্গে সংবাদের আলোচনার সময় তিনি ঘটনাটি জানিয়েছেন। এরপর খোঁজ নিয়ে নানা কাহিনী বেরিয়ে আসছে।

ইমিগ্রেশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, বিমানবন্দরে প্রায় সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আটকা পড়েন। আবার অনেক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বিদেশে গেছেন। দেশে ফেরার সময় তারা আবার কাগজপত্র জাল করে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কক্সবাজারের স্থানীয় কিছু লোকজনের সঙ্গে আত্মীয়ের সম্পর্ক গড়ে তোলে কৌশলে তাদের (দালাল) সহযোগিতায় কাগজপত্র সংগ্রহ করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অন্যদিকে পুলিশের কেউ তা ভেরিফিকেশন করতে গেলে বিভ্রান্তির শিকার হয়ে বা যে কোনভাবে তদন্তে কাগজপত্র দেখে ছাড়পত্র দেন। তবে শনাক্ত করার সময় কিছু জালিয়তি ধরা পড়েছে। কোন কোন রোহিঙ্গা জন্মসনদ, এনআইডি (জাতীয়পরিচয়পত্রের ফটোকপি) সব কিছু তারা অনিয়মের মাধ্যমে করে থাকে। তার সময় কক্সবাজারে কঠোর নিয়ম করার কারণে অনেকটা কমে গেছে বলেও তিনি জানান। এখন দেশে ডিজিটাল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে জালিয়াতি কমবে বলে তিনি আশাবাদী।

পাসপোর্ট শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, শরণার্থী কিছু কিছু রোহিঙ্গা সদস্য জাতীয়পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। এরপর অন্যান্য কাগজপত্র দেখিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে ঢাকার বাইরের বিভাগ ও জেলা থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে। এদের নিদিষ্ট দালাল চক্র রয়েছে। তারাই সব কিছু করে দেয়। কাগজপত্র তৈরি থেকে পাসপোর্ট পর্যন্ত সবই প্যাকেজের আওতায় (টাকার বিনিময়ে) ম্যানেজ করা হয়। গ্রাম পর্যায়ে এসব জ্বালিয়াতি বেশি হয়। কিন্তু যে পাসপোর্ট করবে তার সঙ্গে কথা বললে শনাক্ত হয়ে যায়। এছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ার সময় জালিয়াতি শনাক্ত হতে পারে। কিন্তু এই চক্র চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে সব কিছু অনিয়মের মাধ্যমে করে থাকে। এরপরও রোহিঙ্গা মাঝেমধ্যে ধরা পড়েন বলে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ নাগরিকরা পাসপোর্ট করতে গেলে পদে পদে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। তার জন্য ধারে ধারে ঘুরতে হচ্ছে। এমনকি পুলিশ ভেরিফিকেশন করার জন্য অনেকেই তদবির করেন। এরপরও পাওয়া কষ্টকর। পাসপোর্ট অফিসে দালাল চক্রের সহায়তা নিতে গিয়েও বিপাকে পড়েন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট কীভাবে দ্রুতগতিতে হয় তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। একবার পুলিশ ভেরিফিকেশন কিছুদিনের জন্য উঠিয়ে দেয়ার পর রোহিঙ্গারা ওই সুবিধা নিয়েছে। অনেকেই বিদেশ গিয়ে আবার ধরা পড়ছে। কেউ পাসপোর্ট লুকিয়ে পালিয়ে কাজ করেন। এই ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান।

back to top