‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ প্রতিপাদকে সামনে রেখে প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হলো ‘প্রজাপতি’ মেলা ২০২৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ব্যতিক্রমী এ মেলার আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে মেলার ১৪তম আসরের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রজাপতির কাছ থেকে মানুষের শেখার আছে। প্রজাপতি পরাগায়নের মাধ্যমে কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই আমাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ধর্ম, বর্ণ এবং বৈচিত্র্যভেদে মানুষের কাছেও সকল মানুষ নিরাপদ হতে হবে। প্রজাপতির কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে গোটা বিশ্বকে নিরাপদ রাখার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে মানুষকে। সকল ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে হবে। এছাড়াও প্রকৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় নানান ধরনের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণী উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও মেলা উপলক্ষ্যে প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। দিনব্যাপী সেখানে জীবন্ত প্রজাপতি, প্রজাপতিবান্ধব বৃক্ষরাজি ও প্রজনন ক্ষেত্রসহ উন্মুক্ত বাগান ঘুরে দেখেন দর্শনার্থীরা।
সকাল থেকেই রঙিন প্রজাপতির ওড়াওড়ি দেখতে মেলায় ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এছাড়া অনেকে আসেন ছুটির দিনটি ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য। মেলায় শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। সাভার থেকে বাবা-মার সঙ্গে আগত শিশু আনান বলেন, আমি আজকে প্রথম প্রজাপতি মেলাতে এসেছি আব্বু-আম্মুর সঙ্গে। অনেক রঙের প্রজাপতি দেখলাম। খুব ভালো লাগছে।
এবারের মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য বন ও প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘প্লানটেশন ফর নেচার’-এর প্রতিষ্ঠাতা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলী সবুজ চাকমা-কে বাটারফ্লাই এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট এওয়ার্ড প্রদান করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ সাব্বির আহাম্মেদ-কে। এছাড়া ফটোগ্রাফি ও মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি এই পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরাগায়নের মাধ্যমে প্রজাপতি পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং বনাঞ্চল রক্ষায় ভূমিকা রাখছে। প্রজাপতিসহ বিভিন্ন পতঙ্গ আমাদের বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রেখেছে। তিনি প্রজাপতি রক্ষায় এর বাসযোগ্য পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং প্রজাপতিসহ সকল পতঙ্গ টিকিয়ে রাখতে জৈববৈচিত্রের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত মাস্টারপ্লান কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা মুকিত মজুমদার বাবু, বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মুরাদ বিন আজিজ প্রমুখ।
শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ প্রতিপাদকে সামনে রেখে প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হলো ‘প্রজাপতি’ মেলা ২০২৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ব্যতিক্রমী এ মেলার আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে মেলার ১৪তম আসরের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রজাপতির কাছ থেকে মানুষের শেখার আছে। প্রজাপতি পরাগায়নের মাধ্যমে কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই আমাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ধর্ম, বর্ণ এবং বৈচিত্র্যভেদে মানুষের কাছেও সকল মানুষ নিরাপদ হতে হবে। প্রজাপতির কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে গোটা বিশ্বকে নিরাপদ রাখার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে মানুষকে। সকল ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে হবে। এছাড়াও প্রকৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় নানান ধরনের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণী উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও মেলা উপলক্ষ্যে প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। দিনব্যাপী সেখানে জীবন্ত প্রজাপতি, প্রজাপতিবান্ধব বৃক্ষরাজি ও প্রজনন ক্ষেত্রসহ উন্মুক্ত বাগান ঘুরে দেখেন দর্শনার্থীরা।
সকাল থেকেই রঙিন প্রজাপতির ওড়াওড়ি দেখতে মেলায় ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এছাড়া অনেকে আসেন ছুটির দিনটি ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য। মেলায় শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। সাভার থেকে বাবা-মার সঙ্গে আগত শিশু আনান বলেন, আমি আজকে প্রথম প্রজাপতি মেলাতে এসেছি আব্বু-আম্মুর সঙ্গে। অনেক রঙের প্রজাপতি দেখলাম। খুব ভালো লাগছে।
এবারের মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে সার্বিক অবদানের জন্য বন ও প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘প্লানটেশন ফর নেচার’-এর প্রতিষ্ঠাতা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলী সবুজ চাকমা-কে বাটারফ্লাই এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট এওয়ার্ড প্রদান করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ সাব্বির আহাম্মেদ-কে। এছাড়া ফটোগ্রাফি ও মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি এই পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরাগায়নের মাধ্যমে প্রজাপতি পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং বনাঞ্চল রক্ষায় ভূমিকা রাখছে। প্রজাপতিসহ বিভিন্ন পতঙ্গ আমাদের বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রেখেছে। তিনি প্রজাপতি রক্ষায় এর বাসযোগ্য পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং প্রজাপতিসহ সকল পতঙ্গ টিকিয়ে রাখতে জৈববৈচিত্রের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত মাস্টারপ্লান কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা মুকিত মজুমদার বাবু, বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মুরাদ বিন আজিজ প্রমুখ।