alt

সংস্কৃতি

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করেছেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ ঘোষণার পর বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং পুরস্কারের তালিকা স্থগিত করতে হয়। এরই মধ্যে কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ তাঁর পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সেলিম মোরশেদের স্ত্রী ইশরাত তানিয়া তাঁর স্বামীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, সেলিম মোরশেদ পুরস্কারটি গ্রহণ করবেন না এবং এই ব্যাপারে তিনি নিজেই তার মতামত ফেইসবুকে প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সেলিম মোরশেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তাঁর স্ত্রী ইশরাত তানিয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে রাতেই ফেইসবুকে পোস্ট করে সেলিম মোরশেদ তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। আমি সেই পোস্টটি ফেইসবুকে দিয়েছি।"

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন তিনি জানায়, "এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য এখনই করব না। পুরস্কারের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।"

গত বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করার পর এটি নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে, তালিকাভুক্ত কিছু পুরস্কৃতদের সম্পর্কে অভিযোগ ওঠার ফলে শনিবার পুরস্কার স্থগিত করার ঘোষণা আসে। বাংলা একাডেমি জানায়, আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পুরস্কারের তালিকা পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং সে অনুযায়ী নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে।

শুক্রবার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেইসবুকে মন্তব্য করেন, পুরস্কার তালিকায় কোনো নারী লেখকের নাম না থাকার বিষয়টি বিস্ময়কর। এ মন্তব্যের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরস্কার স্থগিতের বিষয়টি নিয়ে আরও বিতর্ক শুরু হয়। তার পোস্টের প্রেক্ষিতে কিছু ব্যক্তি দাবি করেছেন, পুরস্কার স্থগিতের পেছনে ফারুকীর হস্তক্ষেপ রয়েছে।

রোববার, পুরস্কার স্থগিত হওয়ার পর বাংলা একাডেমির সামনে ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ ও জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লব নামের দুটি প্ল্যাটফর্ম বাংলা একাডেমির সংস্কারের দাবিতে শ্লোগান দেয়। তারা ‘ফ্যাসিবাদী’দের অপসারণ এবং পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

সেলিম মোরশেদ পুরস্কারের বিষয়ে নিজের মতামত ফেইসবুকে প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, "এই ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, ঢাকা থেকে যশোরে চলে আসার পর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানলাম আমাকে এ বছর কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। আমি যতটা না খুশি হয়েছি, তার চেয়ে বিস্মিত হয়েছি বেশি।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলা একাডেমি বা এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা কেন থাকবে, তা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছি। এরপর দেখলাম কিছু মানুষের আনন্দ, বিশেষ করে যশোর শহরবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাস। এই আনন্দ আমাকে বিপরীত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেয়নি।"

সেলিম মোরশেদ তাঁর পোস্টে আরও বলেন, "পুরস্কারের বিষয়ে আমার ‘না’ বলার সুযোগও ছিল না। কারণ পুরস্কার ঘোষণার আগে একাডেমি যোগাযোগ করেনি। আচমকাই আমি জানতে পারি, আমাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।"

তিনি বলেন, "যৌক্তিক জায়গাগুলো পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। একবার বলা হচ্ছে— ‘তিনি কি যোগ্য?’ অনেকেই বলছেন ‘যোগ্য’। দ্বিতীয়বার বলা হচ্ছে— রাজনৈতিকভাবেও তার স্ট্যান্ড পয়েন্ট কী?" তিনি জানিয়ে দেন, "আমি জানি, জুলাই ২৪ এ ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পক্ষে আমার অবস্থান স্পষ্ট ছিল।"

এছাড়া, সেলিম মোরশেদ দাবি করেন, বিগত চৌদ্দ বছরে তিনি একজন বন্ধুর সঙ্গে শুধুমাত্র একটি দিন ফোনে কথা বলেছিলেন এবং সেই বন্ধুর মাধ্যমে কিছু বিতর্কিত বিষয় উঠে আসে, যা তাঁর কাছে খুবই অবাক করার মতো ছিল।

তিনি জানান, "যখন পুরস্কারের তালিকা স্থগিত হলো, তখন আমার কাছে এটা আর সম্মানজনক রইল না। কারণ, আমি দেখলাম কিছু অ-লেখক এবং লোভী-লেখকদের তৎপরতা, যারা আমার সম্মান নিয়ে খেলা করছে।"

সেলিম মোরশেদ আরও বলেন, "জীবিত লেখকদের মধ্যে আমি বোধহয় সেই লেখক, যে নিজের বিচার-বুদ্ধি অনুসারে চলি। আমি বাংলা একাডেমির এই পুরস্কার বিনীতভাবে প্রত্যাখান করছি।"

তিনি আরো জানিয়েছেন, "এটা আমি আমার পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করেছি। যাদের ওপর পুরস্কার দেওয়ার দায়ী করা হচ্ছে এবং বাংলা একাডেমির ডিজি মহোদয় মোহাম্মদ আজমকে অসম্মান করা হচ্ছে— আমি তাদের হারানো সম্মান কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলাম।"

সেলিম মোরশেদ প্রকাশ করেন যে, "যাদের হাতে এখনো লেখা আসেনি তাদের আলটিমেটামের ওপর অন্তত আমার সাহিত্য দাঁড়িয়ে নেই। বাংলা একাডেমির এই বিব্রতকর পরিস্থিতি উদ্ভবের কারণ— প্রস্তাবক বা নির্বাচক মণ্ডলী তাদের সাহিত্যরুচির শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিলেন।"

সেলিম মোরশেদ আরো বলেন, "আমার পক্ষে যাদের দায়ী করা হচ্ছে এবং যারা বাংলা একাডেমির ডিজি মহোদয়ের অসম্মান করেছেন, তারা জানেন, আমি কখনোই মিডিয়ার খোরাক দেয়ার মতো লিখি না, লিখবোও না। তারপরও যে ঝুঁকিটা তারা নিলেন, সেটা আমার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।"

তিনি উল্লেখ করেন, "এ কথাও সত্য যে, ছাত্র-সমন্বয়কদের কথা ভেবে আমি বার বার সম্মত হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বিষয়টা সেদিকে গেল না। নানান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির কর্মীদের অভিলাষ দেখে চিন্তিত হলাম।"

শেষে, সেলিম মোরশেদ লেখেন, "আমি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করলাম। অন্যরা নিশ্চয় কথাসাহিত্যে আমার চেয়ে গুণী লেখক খুঁজে পাবেন। যারা আমার সত্যিকারের পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের জন্য ভালোবাসা।"

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কার দেওয়ার কথা রয়েছে।

ছবি

সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে লোকারন্য লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের খবর নেই, এবার সরে গেলেন জুরি সদস্য

এবার দশজন পাচ্ছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

ছবি

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

ছবি

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদীচী যশোর জেলা সংসদের ২২তম সম্মেলন শুরু

ছবি

ভিভো ও এসওএস এর যৌথ উদ্যোগে ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী

ছবি

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী চ্যারিটি মেলা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি

ছবি

শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্রের জন্য পৃথক বিভাগ চায় চলচ্চিত্রকর্মীরা

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

এবার শিল্পকলায় নাটক বন্ধের প্রতিবাদ সমাবেশে হামলা

ছবি

রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

ছবি

শহীদদের স্মরণে সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বান: ভয়কে জয় করে চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়

ছবি

রিয়েলমি’র আয়োজনে ন্যাশনাল মোবাইল ফটোগ্রাফি কনটেস্ট ২০২৪

ছবি

ময়মনসিংহে ৩ শতাধিক আলোকচিত্র নিয়ে ’ফ্যাসিস্ট প্রদর্শনী’

ছবি

ফ্লোরিডায় সোহরাব আলমের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী

ছবি

ডিজিটাল মিডিয়ার আসক্তি পৃথিবীকে অশান্ত করছে

জাতীয় সাংস্কৃতিক মৈত্রী নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

ছবি

মাসজুড়ে ভিভো’র ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা

ছবি

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী পদত্যাগ

ছবি

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মো. হারুন-উর-রশীদ আসকারীর পদত্যাগ

ছবি

মাটি ও মানুষের শিল্পী সুলতানের জন্মশত বার্ষিকী আজ

ছবি

শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দ্রুত সব ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে

ছবি

কুমিল্লা শাখায় কাব্যকথার নবিন-প্রবীণ কবি সাহিত্যিকের মিলনমেলা

ছবি

গ্যালারী কায়ার ২০ তম প্রষ্ঠিাবার্ষিকীতে বিশেষ প্রদর্শনী

ছবি

দৃকে চলছে বাংলাদেশ প্রেস ফটো প্রদর্শনী ২০২৪

ছবি

লা গ্যালারিতে চলছে ‘গল্পের বাস্তবতা’ শীর্ষক একক চিত্র প্রদর্শনী

ছবি

বাউল-ফকিরদের ওপর নির্যাতন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতিবাদ

ছবি

অ্যানিমেশন ফিল্ম খোকা এর প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত

ছবি

স্মৃতি সংরক্ষণে ৫ দফা দাবি

ছবি

রাজশাহীতে দু’দিনব্যাপী হাসান আজিজুল হক সাহিত্য উৎসব শুরু

ছবি

জাতীয় জাদুঘরে ‘কলের গান: সেকাল-একাল’ শীর্ষক প্রদর্শনী

শুক্রবার থেকে ৩ দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব

ছবি

‘রোড টু বালুরঘাট’, মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থীদের চিত্র প্রদর্শন

tab

সংস্কৃতি

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করেছেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ ঘোষণার পর বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং পুরস্কারের তালিকা স্থগিত করতে হয়। এরই মধ্যে কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ তাঁর পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সেলিম মোরশেদের স্ত্রী ইশরাত তানিয়া তাঁর স্বামীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, সেলিম মোরশেদ পুরস্কারটি গ্রহণ করবেন না এবং এই ব্যাপারে তিনি নিজেই তার মতামত ফেইসবুকে প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সেলিম মোরশেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তাঁর স্ত্রী ইশরাত তানিয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে রাতেই ফেইসবুকে পোস্ট করে সেলিম মোরশেদ তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। আমি সেই পোস্টটি ফেইসবুকে দিয়েছি।"

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন তিনি জানায়, "এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য এখনই করব না। পুরস্কারের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।"

গত বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করার পর এটি নিয়ে বেশ কিছু বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে, তালিকাভুক্ত কিছু পুরস্কৃতদের সম্পর্কে অভিযোগ ওঠার ফলে শনিবার পুরস্কার স্থগিত করার ঘোষণা আসে। বাংলা একাডেমি জানায়, আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পুরস্কারের তালিকা পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং সে অনুযায়ী নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে।

শুক্রবার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেইসবুকে মন্তব্য করেন, পুরস্কার তালিকায় কোনো নারী লেখকের নাম না থাকার বিষয়টি বিস্ময়কর। এ মন্তব্যের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুরস্কার স্থগিতের বিষয়টি নিয়ে আরও বিতর্ক শুরু হয়। তার পোস্টের প্রেক্ষিতে কিছু ব্যক্তি দাবি করেছেন, পুরস্কার স্থগিতের পেছনে ফারুকীর হস্তক্ষেপ রয়েছে।

রোববার, পুরস্কার স্থগিত হওয়ার পর বাংলা একাডেমির সামনে ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ ও জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লব নামের দুটি প্ল্যাটফর্ম বাংলা একাডেমির সংস্কারের দাবিতে শ্লোগান দেয়। তারা ‘ফ্যাসিবাদী’দের অপসারণ এবং পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

সেলিম মোরশেদ পুরস্কারের বিষয়ে নিজের মতামত ফেইসবুকে প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, "এই ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, ঢাকা থেকে যশোরে চলে আসার পর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানলাম আমাকে এ বছর কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। আমি যতটা না খুশি হয়েছি, তার চেয়ে বিস্মিত হয়েছি বেশি।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলা একাডেমি বা এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা কেন থাকবে, তা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছি। এরপর দেখলাম কিছু মানুষের আনন্দ, বিশেষ করে যশোর শহরবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাস। এই আনন্দ আমাকে বিপরীত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেয়নি।"

সেলিম মোরশেদ তাঁর পোস্টে আরও বলেন, "পুরস্কারের বিষয়ে আমার ‘না’ বলার সুযোগও ছিল না। কারণ পুরস্কার ঘোষণার আগে একাডেমি যোগাযোগ করেনি। আচমকাই আমি জানতে পারি, আমাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।"

তিনি বলেন, "যৌক্তিক জায়গাগুলো পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। একবার বলা হচ্ছে— ‘তিনি কি যোগ্য?’ অনেকেই বলছেন ‘যোগ্য’। দ্বিতীয়বার বলা হচ্ছে— রাজনৈতিকভাবেও তার স্ট্যান্ড পয়েন্ট কী?" তিনি জানিয়ে দেন, "আমি জানি, জুলাই ২৪ এ ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পক্ষে আমার অবস্থান স্পষ্ট ছিল।"

এছাড়া, সেলিম মোরশেদ দাবি করেন, বিগত চৌদ্দ বছরে তিনি একজন বন্ধুর সঙ্গে শুধুমাত্র একটি দিন ফোনে কথা বলেছিলেন এবং সেই বন্ধুর মাধ্যমে কিছু বিতর্কিত বিষয় উঠে আসে, যা তাঁর কাছে খুবই অবাক করার মতো ছিল।

তিনি জানান, "যখন পুরস্কারের তালিকা স্থগিত হলো, তখন আমার কাছে এটা আর সম্মানজনক রইল না। কারণ, আমি দেখলাম কিছু অ-লেখক এবং লোভী-লেখকদের তৎপরতা, যারা আমার সম্মান নিয়ে খেলা করছে।"

সেলিম মোরশেদ আরও বলেন, "জীবিত লেখকদের মধ্যে আমি বোধহয় সেই লেখক, যে নিজের বিচার-বুদ্ধি অনুসারে চলি। আমি বাংলা একাডেমির এই পুরস্কার বিনীতভাবে প্রত্যাখান করছি।"

তিনি আরো জানিয়েছেন, "এটা আমি আমার পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করেছি। যাদের ওপর পুরস্কার দেওয়ার দায়ী করা হচ্ছে এবং বাংলা একাডেমির ডিজি মহোদয় মোহাম্মদ আজমকে অসম্মান করা হচ্ছে— আমি তাদের হারানো সম্মান কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলাম।"

সেলিম মোরশেদ প্রকাশ করেন যে, "যাদের হাতে এখনো লেখা আসেনি তাদের আলটিমেটামের ওপর অন্তত আমার সাহিত্য দাঁড়িয়ে নেই। বাংলা একাডেমির এই বিব্রতকর পরিস্থিতি উদ্ভবের কারণ— প্রস্তাবক বা নির্বাচক মণ্ডলী তাদের সাহিত্যরুচির শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিলেন।"

সেলিম মোরশেদ আরো বলেন, "আমার পক্ষে যাদের দায়ী করা হচ্ছে এবং যারা বাংলা একাডেমির ডিজি মহোদয়ের অসম্মান করেছেন, তারা জানেন, আমি কখনোই মিডিয়ার খোরাক দেয়ার মতো লিখি না, লিখবোও না। তারপরও যে ঝুঁকিটা তারা নিলেন, সেটা আমার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।"

তিনি উল্লেখ করেন, "এ কথাও সত্য যে, ছাত্র-সমন্বয়কদের কথা ভেবে আমি বার বার সম্মত হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বিষয়টা সেদিকে গেল না। নানান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির কর্মীদের অভিলাষ দেখে চিন্তিত হলাম।"

শেষে, সেলিম মোরশেদ লেখেন, "আমি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করলাম। অন্যরা নিশ্চয় কথাসাহিত্যে আমার চেয়ে গুণী লেখক খুঁজে পাবেন। যারা আমার সত্যিকারের পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের জন্য ভালোবাসা।"

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুরস্কার দেওয়ার কথা রয়েছে।

back to top