alt

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

: সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

নারীদের প্রতি সহিংসতা আমাদের সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতা। এই সহিংসতার বিভিন্ন রূপের মধ্যে ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, যা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও সামাজিকভাবেও একজন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ বলার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই শব্দটি শুনতে খারাপ লাগে এবং আইনেও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

তার এই বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এটিকে ধর্ষকের পক্ষ নেয়ার শামিল বলে অভিযোগ করেছেন। অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরাও মনে করেন, ধর্ষণকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায় এবং বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা মনে করি, সমস্যার মুখোমুখি হতে হলে প্রথমে তার সঠিক পরিচয় দিতে হবে। ধর্ষণ একটি নির্দিষ্ট অপরাধ, যার আইনি সংজ্ঞা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। এটিকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করা মানে অপরাধের গুরুত্বকে হালকা করে দেয়া। নারী নির্যাতনের বিস্তৃত ক্ষেত্রে গালাগাল, শারীরিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক বঞ্চনাÑএমনকি মানসিক অত্যাচারও পড়ে। কিন্তু ধর্ষণ তার মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট এবং গুরুতর অপরাধ। এটির নাম পরিবর্তন করা হলে সমস্যার মূল থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে। অপরাধের নাম স্পষ্টভাবে উচ্চারণ না করলে সমাজে তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি হবে কীভাবে? শুনতে খারাপ লাগে বলে কি আমরা বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যে নারীর সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে এই পন্থা সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে। ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি যখন তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা করেন, সমাজ যখন তাকে দোষারোপ করে বা নীরবতা চাপিয়ে দেয়, তখন এই ধরনের বক্তব্য সেই নীরবতাকে আরও উৎসাহিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা সাহসী ও স্পষ্ট অবস্থান প্রত্যাশা করি। ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে স্বীকার করা এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়াই তাদের প্রধান দায়িত্ব।

একই সঙ্গে সুখবর হলো, গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধন হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। নারীরা এখন তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা চাইতে পারবেন। তবে শুধু প্রযুক্তি নয়, সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ছবি

কাব্যগ্রন্থ ‘একগুচ্ছ পঙ্ক্তিমালা’র মোড়ক উন্মোচন ও বাসপ পুরস্কার-২০২৫ প্রদান

ছবি

সিরাজগঞ্জে লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ছবি

লালনের তিরোধান দিবস: সাধুসঙ্গ, ভক্তদের পদচারণায় মুখর ছেঁউরিয়া

ছবি

কবি হাসান হাফিজের জন্মদিন উদযাপন

ছবি

কাজী নজরুল ইসলামের পুত্র বুলবুলের জন্মশতবর্ষ উদযাপন কলকাতায়

ছবি

সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর বরাদ্দ বাতিল, ‘শরৎ উৎসব’ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

সেন্ট যোসেফ স্কু‌লে ছায়ানটের ‘শরৎ উৎসব’ অনুষ্ঠিত

ছবি

শিল্পকলা একাডেমি পরিষদ ছাড়লেন আরো চারজন

ছবি

বাফা গুলশান-বাড্ডা শাখার নবীন বরণ ও বাৎসরিক সাংস্কৃতিক উৎসব সম্পন্ন

ছবি

কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক

এবার একুশে বইমেলা শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বরে

ছবি

রোটারি ঢাকা নর্থ ওয়েস্ট ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান

ছবি

দর্শক নে, ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে ময়মনসিংহের পূরবী সিনেমা হল

প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে পদত্যাগপত্র, চার শর্ত মানলে ফিরবেন জামিল আহমেদ

ছবি

বইমেলায় তপন কান্তি সরকারের বই ‘নতুন বিশ্বের নতুন ক্যারিয়ার’

ছবি

পর্দা নেমেছে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের

ছবি

পাঠাও-এর ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

শেষ মুহূর্তে স্থগিত ঘোষণা ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব

ছবি

হুমকির মুখে স্থগিত ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব

ছবি

বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কবি আয়েশা মুন্নির ‘গুলবাহার ভোর’

ছবি

সোনারগাঁয়ে লোককারুশিল্প মেলা, লুপ্তপ্রায় ঐতিহ্য শীতল পাটির প্রদর্শনী

ছবি

সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে লোকারন্য লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কারের খবর নেই, এবার সরে গেলেন জুরি সদস্য

ছবি

কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ প্রত্যাখ্যান করেছেন

এবার দশজন পাচ্ছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।

ছবি

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

ছবি

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদীচী যশোর জেলা সংসদের ২২তম সম্মেলন শুরু

ছবি

ভিভো ও এসওএস এর যৌথ উদ্যোগে ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী

ছবি

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী চ্যারিটি মেলা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি

ছবি

শিল্পকলা একাডেমিতে চলচ্চিত্রের জন্য পৃথক বিভাগ চায় চলচ্চিত্রকর্মীরা

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

শিল্পকর্মে বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন

ছবি

এবার শিল্পকলায় নাটক বন্ধের প্রতিবাদ সমাবেশে হামলা

tab

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

নারীদের প্রতি সহিংসতা আমাদের সমাজের একটি কঠিন বাস্তবতা। এই সহিংসতার বিভিন্ন রূপের মধ্যে ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, যা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও সামাজিকভাবেও একজন মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ বলার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই শব্দটি শুনতে খারাপ লাগে এবং আইনেও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

তার এই বক্তব্য সমাজের বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক এটিকে ধর্ষকের পক্ষ নেয়ার শামিল বলে অভিযোগ করেছেন। অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরাও মনে করেন, ধর্ষণকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করলে অপরাধের গুরুত্ব কমে যায় এবং বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা মনে করি, সমস্যার মুখোমুখি হতে হলে প্রথমে তার সঠিক পরিচয় দিতে হবে। ধর্ষণ একটি নির্দিষ্ট অপরাধ, যার আইনি সংজ্ঞা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। এটিকে ‘নারী নির্যাতন’ বলে সাধারণীকরণ করা মানে অপরাধের গুরুত্বকে হালকা করে দেয়া। নারী নির্যাতনের বিস্তৃত ক্ষেত্রে গালাগাল, শারীরিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক বঞ্চনাÑএমনকি মানসিক অত্যাচারও পড়ে। কিন্তু ধর্ষণ তার মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট এবং গুরুতর অপরাধ। এটির নাম পরিবর্তন করা হলে সমস্যার মূল থেকে দূরে সরে যেতে হবে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে। অপরাধের নাম স্পষ্টভাবে উচ্চারণ না করলে সমাজে তার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি হবে কীভাবে? শুনতে খারাপ লাগে বলে কি আমরা বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?

ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যে নারীর সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে এই পন্থা সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে। ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি যখন তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা করেন, সমাজ যখন তাকে দোষারোপ করে বা নীরবতা চাপিয়ে দেয়, তখন এই ধরনের বক্তব্য সেই নীরবতাকে আরও উৎসাহিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা সাহসী ও স্পষ্ট অবস্থান প্রত্যাশা করি। ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে স্বীকার করা এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়াই তাদের প্রধান দায়িত্ব।

একই সঙ্গে সুখবর হলো, গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধন হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। নারীরা এখন তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা চাইতে পারবেন। তবে শুধু প্রযুক্তি নয়, সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

back to top