লালন শাহের তিরোধান দিবসে রাষ্ট্রীয় আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি -সংবাদ
বাউল সম্রাট লালন ফকিরের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ায়। দিবসটি উপলক্ষে আখড়া বাড়িতে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন আয়োজকরা।
উৎসবকে ঘিরে লালন শাহের আখড়াবাড়ীতে সাধু, গুরু আর ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত পুরো এলাকা। কোন চিঠি বা দাওয়াত দেয়া লাগে না। এক অজানা টানে লালনের ভক্তরা মাজার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানের আগে থেকেই হাজির হন, আবার নির্দিষ্ট সময় শেষে নিজেরাই চলে যান।
আজ বিকেলে কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে লালন ফকিরের ১৩৫তম তিরোধান দিবসের এ আয়োজনের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।
উদ্বোধনী দিনে প্রয়াত সংগীত শিল্পী ফরিদা পারভিনের স্মরণে একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন এবং প্রতিদিন আলোচনা সভা শেষে গভীর রাত অবধি চলবে লালন সংগীতের আসর। এবার একটু আগেভাগেই লালন আখড়াবাড়িতে জড়ো হয়েছেন সাধু ভক্ত-অনুসারীরা। অনুষ্ঠানমালা চলবে আগামী রোববার মধ্য রাত পর্যন্ত।
এদিকে তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে মরা কালী গঙ্গা পাড়ের মাঠে বসেছে মেলা। সরেজমিন দেখা যায়, ১৩৫তম লালন তিরোধান দিবসে মরা কালী গঙ্গার তীরের বিশাল মাঠে শতাধিক বাউল ভক্ত-অনুসারীরা অস্থায়ী তাবু গেড়েছেন থাকার জন্য। আর এসব পৃথক পৃথক আস্তানার মধ্যে অবস্থান নেয়া বাউল অনুসারীরা একতারা-দোতারাসহ নানা বাদ্যের তালে গেছে চলেছেন লালন শাহ্ রচিত বাউল গান। আর মাঠের দক্ষিণে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ এবং উত্তরে বসেছে নানা পণ্য সামগ্রীর দোকান।
এছাড়াও লালন শাহের সমাধির পাশের উন্মুক্ত সেডের নীচেও বসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীরা। এখানেও তারা লালনের অমর বাণী গেয়ে চলেছেন আপন মনে।
এক সাধু বলেন, ‘সরকারের এমন উদ্যোগ অনেক আগেই নেয়া উচিত ছিল। অনেক দেরিতে হলেও এত বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে লালণের বানী দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা এবং লালনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়ায় আমরা সবাই আনন্দিত।’
দর্শনাথীরা বলেন, ‘প্রতিবছরই আমি এখানে আসি। এবারে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ নেয়ায় দর্শনার্থীরা আগেই আশা শুরু করেছে। প্রতিবছরের তুলনায় আরও বেশি মানুষের সমাগম হবে এবার।’
স্থানীয় লালন অনুসারী সাধুরা জানান, এখানে আসি মুলত: নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে শাঁইজীর মর্মবাণী চর্চাসহ ভক্তদের উজ্জীবিত করা ও পরস্পর ভাব বিনিময়ের জন্য। তারা বলেন, এখানে হিংসা-অহঙ্কার নেই, জাত-পাত নেই। বড়-ছোট নেই। সেই দীক্ষা নিই আর সাধু-গুরুদের গান পরিবেশন ও ভাব বিনিময় দেখি। খুব ভালো লাগে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, লালন শাহের ১৩৫তম স্মরণোৎসব উদযাপনে তিন দিনের আয়োজনকে ঘিরে লালন একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক বাউল স¤্রাট ফকির লালন শাহ-এর দেহত্যাগের পর থেকে তার স্মরণে এতদিন লালন একাডেমি ও জেলা প্রশাসন এমন আয়োজন করে আসছে। এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে লালন তিরোধান দিবস উদযাপন হচ্ছে।
লালন শাহের তিরোধান দিবসে রাষ্ট্রীয় আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বাউল সম্রাট লালন ফকিরের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ায়। দিবসটি উপলক্ষে আখড়া বাড়িতে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন আয়োজকরা।
উৎসবকে ঘিরে লালন শাহের আখড়াবাড়ীতে সাধু, গুরু আর ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত পুরো এলাকা। কোন চিঠি বা দাওয়াত দেয়া লাগে না। এক অজানা টানে লালনের ভক্তরা মাজার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানের আগে থেকেই হাজির হন, আবার নির্দিষ্ট সময় শেষে নিজেরাই চলে যান।
আজ বিকেলে কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে লালন ফকিরের ১৩৫তম তিরোধান দিবসের এ আয়োজনের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।
উদ্বোধনী দিনে প্রয়াত সংগীত শিল্পী ফরিদা পারভিনের স্মরণে একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন এবং প্রতিদিন আলোচনা সভা শেষে গভীর রাত অবধি চলবে লালন সংগীতের আসর। এবার একটু আগেভাগেই লালন আখড়াবাড়িতে জড়ো হয়েছেন সাধু ভক্ত-অনুসারীরা। অনুষ্ঠানমালা চলবে আগামী রোববার মধ্য রাত পর্যন্ত।
এদিকে তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে মরা কালী গঙ্গা পাড়ের মাঠে বসেছে মেলা। সরেজমিন দেখা যায়, ১৩৫তম লালন তিরোধান দিবসে মরা কালী গঙ্গার তীরের বিশাল মাঠে শতাধিক বাউল ভক্ত-অনুসারীরা অস্থায়ী তাবু গেড়েছেন থাকার জন্য। আর এসব পৃথক পৃথক আস্তানার মধ্যে অবস্থান নেয়া বাউল অনুসারীরা একতারা-দোতারাসহ নানা বাদ্যের তালে গেছে চলেছেন লালন শাহ্ রচিত বাউল গান। আর মাঠের দক্ষিণে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ এবং উত্তরে বসেছে নানা পণ্য সামগ্রীর দোকান।
এছাড়াও লালন শাহের সমাধির পাশের উন্মুক্ত সেডের নীচেও বসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীরা। এখানেও তারা লালনের অমর বাণী গেয়ে চলেছেন আপন মনে।
এক সাধু বলেন, ‘সরকারের এমন উদ্যোগ অনেক আগেই নেয়া উচিত ছিল। অনেক দেরিতে হলেও এত বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে লালণের বানী দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা এবং লালনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়ায় আমরা সবাই আনন্দিত।’
দর্শনাথীরা বলেন, ‘প্রতিবছরই আমি এখানে আসি। এবারে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ নেয়ায় দর্শনার্থীরা আগেই আশা শুরু করেছে। প্রতিবছরের তুলনায় আরও বেশি মানুষের সমাগম হবে এবার।’
স্থানীয় লালন অনুসারী সাধুরা জানান, এখানে আসি মুলত: নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে শাঁইজীর মর্মবাণী চর্চাসহ ভক্তদের উজ্জীবিত করা ও পরস্পর ভাব বিনিময়ের জন্য। তারা বলেন, এখানে হিংসা-অহঙ্কার নেই, জাত-পাত নেই। বড়-ছোট নেই। সেই দীক্ষা নিই আর সাধু-গুরুদের গান পরিবেশন ও ভাব বিনিময় দেখি। খুব ভালো লাগে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, লালন শাহের ১৩৫তম স্মরণোৎসব উদযাপনে তিন দিনের আয়োজনকে ঘিরে লালন একাডেমি, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক বাউল স¤্রাট ফকির লালন শাহ-এর দেহত্যাগের পর থেকে তার স্মরণে এতদিন লালন একাডেমি ও জেলা প্রশাসন এমন আয়োজন করে আসছে। এবারই প্রথম জাতীয়ভাবে লালন তিরোধান দিবস উদযাপন হচ্ছে।