এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন কেন্দ্রেই আসেনি ১৯ হাজার ৩৫৯ জন শিক্ষার্থী। এদিন বহিস্কার হয়েছে ২৪ জন পরীক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক।
এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৯ হাজার ৭৩১ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ঢাকা বোর্ডে এবং সবচেয়ে কম ছিল সিলেট বোর্ডে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এদিন বহিস্কার হয়েছে ছয়জন শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় এক হাজার ৯৬৮ অনুপস্থিত ছিল এবং বহিষ্কার হয় ১১জন। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় প্রথমদিন অনুপস্থিত ছিল সাত হাজার ৬৬০ জন এবং বহিস্কার হয়েছে সাতজন।
আন্ত:শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা গেছে, প্রথমদিন অসদুপায় অবলম্বন করায় মোট ২৪ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রে নিয়ম লঙ্ঘন করায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একজন কক্ষ পরিদর্শক বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরীক্ষা ‘নিয়ন্ত্রণ কক্ষ’ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ ৯টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ১৮ হাজার ২৯২ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৪ লাখ আট হাজার ৫৬১ জন। কেন্দ্রে অনুপস্থিত নয় হাজার ৭৩১ জন। মোট পরীক্ষার্থীর হিসাবে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে অনুপস্থিতির হার শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ।
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে সবচেয়ে ঢাকা বোর্ডে। এ বোর্ডে দুই হাজার ৩৪৫ জন শিক্ষার্থী প্রথমদিন পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেনি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮০৯ জন, রাজশাহীতে এক হাজার ১৮১, বরিশালে ৬৮২, সিলেটে ৫৬৪, দিনাজপুরে এক হাজার ৪৩, কুমিল্লায় এক হাজার ৩৭০, ময়মনসিংহে ৬০৪ এবং যশোর শিক্ষা বোর্ডে এক হাজার ১৩৩ জন অনুপস্থিত ছিল।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন সহজ হচ্ছে:
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন অভিভাবকদের জন্য সহজবোধ্য করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মূল্যায়ন পদ্ধতি অভিভাবকদের জন্য সহজবোধ্য করা যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানিয়েছেন।
মন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার পর অভিভাবকরা যাতে সেটা বুঝতে পারেন তার সন্তান কতটুকু দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছে সেই ‘বোঝার জায়গাটি’ সহজ করা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
শিখন ফল অর্জিত হয়েছে কি না সেটি দেখার জন্য মূল্যায়ন করা হয় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, মূল্যায়নের একটি পদ্ধতি হলো পরীক্ষা। অতীতে ও এখনো দেখা যাচ্ছে, যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়ন করছি শিক্ষার্থীদের, তাতে যথার্থভাবে জানতে পারছি না শিক্ষার্থীর শিখন ফল অর্জন হয়েছে কি না। পরীক্ষার ফল ভালো, কিন্তু শিখন ফলের জায়গায় ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পাচ্ছে, কিন্তু তার নানা বিষয়ে যে কাঙ্খিত দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনের কথা ছিল, সেটি হচ্ছে না।
এ কারণে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় পর ‘জ্ঞানের যাচাই’ (পরীক্ষা) করার পাশাপাশি বছরের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারবেন, যে আসলেই শিক্ষার্থী দক্ষতা অর্জন করতে পারছে কি না।
এর পাশাপাশি আগের মতো কিছু পদ্ধতি থাকবে জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি মিশ্র পদ্ধতি হতে হবে।
বছরের প্রথম থেকেই মূল্যায়ন শুরু:
নতুন শিক্ষাক্রমে নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে যারা শিক্ষাবর্ষ শুরু করেছে তাদের মূল্যায়ন বছরের প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘একটি স্মার্ট প্লাটফর্মে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের তথ্য সংরক্ষণ হচ্ছে। আমরা ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেই জানতে পারবো তারা কতটুকু দক্ষতা অর্জন করেছে। আগের পদ্ধতিতে এটি জানতে বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। তখন আর সুযোগ থাকতো না শিক্ষার্থীর ঘাটতি পূরণ করার।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
কেন্দ্র পরিদর্শনে যাননি শিক্ষামন্ত্রী:
এবার কোন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাননি শিক্ষামন্ত্রী। এর যুক্তিকতা সর্ম্পকে দিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কথা চিন্তা করে আমরা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাইনি। যদিও আমাদের মন্ত্রণালয়ের টিম পরিদর্শনে থাকবেন। নিজের সন্তানের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এই জড়ো হওয়া থেকে বিরত থাকি।’
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ায়; যারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এটি করে। আবার আরেকটি গোষ্ঠী প্রতারণার জন্য এসব করে থাকে।’
এ বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অভিভাবকরা যেন নৈতিক অবস্থানে কোনও আপস না করেন। মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষায় একই রকম কাজ করা হয়। মেডিক্যাল পরীক্ষায় সহযোগিতার জন্য মেসেজ পাঠানো হয় আমাকেও।’
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার পরীক্ষার্থীদের উদ্বেগ:
গত কিছুদিন ধরে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধাবস্থা চলছে। এ কারণে মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে আছে।
এ বিষয়ে বিশেষ কোনও উদ্যোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ চলছে। সংঘর্ষের কারণে সেখানে কোনও শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে আমরা তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারবো। চট্টগ্রাম বোর্ড তাদের জন্য ব্যবস্থা নেবে।’
সারা রাত মাইক বাজিয়ে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়:
এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার সময় সারা রাত মাইক বাজিয়ে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
পরীক্ষার সময় এ ধরণের কাজকে ‘অমানবিক’ আখ্যায়িত করে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দেখা যায় অনেক উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে শুধু সংগীতানুষ্ঠানই নয়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানও করা হচ্ছে। অনেক সময় সারা রাত মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান হয়।
অন্যান্য সময়ও সারা রাত মাইক বাজানো ‘সমীচীন’ নয় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা রাত মাইক বাজানো রোগী-পরীক্ষার্থী সবার জন্যই একটি অসুবিধা। ধর্মীয় নেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন– মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিন কেন্দ্রেই আসেনি ১৯ হাজার ৩৫৯ জন শিক্ষার্থী। এদিন বহিস্কার হয়েছে ২৪ জন পরীক্ষার্থী ও একজন শিক্ষক।
এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৯ হাজার ৭৩১ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ঢাকা বোর্ডে এবং সবচেয়ে কম ছিল সিলেট বোর্ডে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এদিন বহিস্কার হয়েছে ছয়জন শিক্ষার্থী।
এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় এক হাজার ৯৬৮ অনুপস্থিত ছিল এবং বহিষ্কার হয় ১১জন। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় প্রথমদিন অনুপস্থিত ছিল সাত হাজার ৬৬০ জন এবং বহিস্কার হয়েছে সাতজন।
আন্ত:শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা গেছে, প্রথমদিন অসদুপায় অবলম্বন করায় মোট ২৪ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রে নিয়ম লঙ্ঘন করায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একজন কক্ষ পরিদর্শক বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরীক্ষা ‘নিয়ন্ত্রণ কক্ষ’ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ ৯টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ১৮ হাজার ২৯২ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৪ লাখ আট হাজার ৫৬১ জন। কেন্দ্রে অনুপস্থিত নয় হাজার ৭৩১ জন। মোট পরীক্ষার্থীর হিসাবে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে অনুপস্থিতির হার শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ।
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে সবচেয়ে ঢাকা বোর্ডে। এ বোর্ডে দুই হাজার ৩৪৫ জন শিক্ষার্থী প্রথমদিন পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেনি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮০৯ জন, রাজশাহীতে এক হাজার ১৮১, বরিশালে ৬৮২, সিলেটে ৫৬৪, দিনাজপুরে এক হাজার ৪৩, কুমিল্লায় এক হাজার ৩৭০, ময়মনসিংহে ৬০৪ এবং যশোর শিক্ষা বোর্ডে এক হাজার ১৩৩ জন অনুপস্থিত ছিল।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন সহজ হচ্ছে:
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন অভিভাবকদের জন্য সহজবোধ্য করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মূল্যায়ন পদ্ধতি অভিভাবকদের জন্য সহজবোধ্য করা যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানিয়েছেন।
মন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার পর অভিভাবকরা যাতে সেটা বুঝতে পারেন তার সন্তান কতটুকু দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছে সেই ‘বোঝার জায়গাটি’ সহজ করা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
শিখন ফল অর্জিত হয়েছে কি না সেটি দেখার জন্য মূল্যায়ন করা হয় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, মূল্যায়নের একটি পদ্ধতি হলো পরীক্ষা। অতীতে ও এখনো দেখা যাচ্ছে, যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়ন করছি শিক্ষার্থীদের, তাতে যথার্থভাবে জানতে পারছি না শিক্ষার্থীর শিখন ফল অর্জন হয়েছে কি না। পরীক্ষার ফল ভালো, কিন্তু শিখন ফলের জায়গায় ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পাচ্ছে, কিন্তু তার নানা বিষয়ে যে কাঙ্খিত দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনের কথা ছিল, সেটি হচ্ছে না।
এ কারণে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় পর ‘জ্ঞানের যাচাই’ (পরীক্ষা) করার পাশাপাশি বছরের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে পারবেন, যে আসলেই শিক্ষার্থী দক্ষতা অর্জন করতে পারছে কি না।
এর পাশাপাশি আগের মতো কিছু পদ্ধতি থাকবে জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি মিশ্র পদ্ধতি হতে হবে।
বছরের প্রথম থেকেই মূল্যায়ন শুরু:
নতুন শিক্ষাক্রমে নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে যারা শিক্ষাবর্ষ শুরু করেছে তাদের মূল্যায়ন বছরের প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘একটি স্মার্ট প্লাটফর্মে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের তথ্য সংরক্ষণ হচ্ছে। আমরা ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেই জানতে পারবো তারা কতটুকু দক্ষতা অর্জন করেছে। আগের পদ্ধতিতে এটি জানতে বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। তখন আর সুযোগ থাকতো না শিক্ষার্থীর ঘাটতি পূরণ করার।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
কেন্দ্র পরিদর্শনে যাননি শিক্ষামন্ত্রী:
এবার কোন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাননি শিক্ষামন্ত্রী। এর যুক্তিকতা সর্ম্পকে দিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কথা চিন্তা করে আমরা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাইনি। যদিও আমাদের মন্ত্রণালয়ের টিম পরিদর্শনে থাকবেন। নিজের সন্তানের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এই জড়ো হওয়া থেকে বিরত থাকি।’
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ায়; যারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এটি করে। আবার আরেকটি গোষ্ঠী প্রতারণার জন্য এসব করে থাকে।’
এ বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অভিভাবকরা যেন নৈতিক অবস্থানে কোনও আপস না করেন। মেডিক্যালের ভর্তি পরীক্ষায় একই রকম কাজ করা হয়। মেডিক্যাল পরীক্ষায় সহযোগিতার জন্য মেসেজ পাঠানো হয় আমাকেও।’
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার পরীক্ষার্থীদের উদ্বেগ:
গত কিছুদিন ধরে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধাবস্থা চলছে। এ কারণে মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে আছে।
এ বিষয়ে বিশেষ কোনও উদ্যোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ চলছে। সংঘর্ষের কারণে সেখানে কোনও শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে আমরা তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারবো। চট্টগ্রাম বোর্ড তাদের জন্য ব্যবস্থা নেবে।’
সারা রাত মাইক বাজিয়ে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়:
এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার সময় সারা রাত মাইক বাজিয়ে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
পরীক্ষার সময় এ ধরণের কাজকে ‘অমানবিক’ আখ্যায়িত করে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দেখা যায় অনেক উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে শুধু সংগীতানুষ্ঠানই নয়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানও করা হচ্ছে। অনেক সময় সারা রাত মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান হয়।
অন্যান্য সময়ও সারা রাত মাইক বাজানো ‘সমীচীন’ নয় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা রাত মাইক বাজানো রোগী-পরীক্ষার্থী সবার জন্যই একটি অসুবিধা। ধর্মীয় নেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন– মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্ত:শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার প্রমুখ।