alt

প্রকৌশল অধিদপ্তর

আড়াই হাজার পদ শূন্য রেখেই নতুন ৮ শতাধিক পদ সৃষ্টির উদ্যোগ

রাকিব উদ্দিন : বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

নতুন পদ সৃজন নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) প্রকৌশলীরা। সংস্থার বিভিন্ন স্তরে প্রায় আড়াই হাজার পদ শূন্য রেখেই প্রধান প্রকৌশলী নতুন আট শতাধিক পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি গ্রাজুয়েট প্রকৌশলীদের পদ সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা এর বিরোধিতা করছেন। প্রধান প্রকৌশলীর কাছে তাদের অভিযোগ, ‘উপজেলা পর্যায়ে অফিস না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৩২৪টি পদে ছাড়পত্র না দেয়ার যে অনুরোধ জানানো হয়েছে তা অনতিবিলম্বে বাতিল করার অনুরোধ জানানো হয়।’

জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ের জন্য ১ম শ্রেণীর জন্য বিদ্যমান পদের অতিরিক্ত ১২৮টি, ২য় শ্রেণীর ৯৮টি, ৩য় শ্রেণীর ১৫০টি এবং ৪র্থ শ্রেণীর ৪৩৭টি নতুন পদ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে প্রধান প্রকৌশলী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়া ‘শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি’র এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পূর্ণাঙ্গ অর্গানোগ্রাম না পাঠিয়ে আংশিকভাবে প্রেরণ করায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত প্রকৌশলীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’

রাজস্বখাতে ১১-১৬ গ্রেড পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৩২৪টি শূন্যপদে ছাড়পত্র না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা।

চিঠিতে অধিদপ্তরের ‘ভাবমূর্তি’ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে অফিস স্থাপনসহ সব শূন্য পদে নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছেন ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির নেতারা।

এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার সংবাদকে বলেন, এ দেশে ভালো কাজ করা ‘খুব কঠিন’। ভালো কাজে বিরোধিতা আসবেই। এরপরও এগিয়ে যেতে হবে।

অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ইইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীর কুমার রজক দাসের বিরুদ্ধে সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অর্গানোগ্রাম সংশোধনের একপেশে প্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবি, কমিটির সর্বশেষ সভায় মাঠ পর্যায়ের পদ সৃৃজনের সুপারিশে সবাই একমত পোষণ করেন এবং পরবর্তী সভায় প্রধান কার্যালয় ও মেট্রোপলিটন এলাকায় অতিরিক্ত কি কি পদ সৃষ্টি করা গেলে কাজের মান আরও ভালো হবে সে বিষয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু অর্গানোগ্রাম কমিটির আর কোনো সভা না করে শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়, যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে এর ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ইইডি প্রধান কার্যালয়ের বিদ্যমান ৩১২টি পদের সঙ্গে নতুন ৩৭০টি পদ সৃজনসহ মোট ৬৮২টি পদের প্রস্তাব এবং অফিস সরঞ্জামাদি টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ জানা আবশ্যক’।

বিষয়গুলো হলোÑ ‘অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ বিদ্যমান শূন্য পদ পূরণের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা; প্রধান কার্যালয়ের জনবল বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা; মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা প্রধান বিষয়ে সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনামূলক বিবরণী; নতুন প্রস্তাবিত পদের সুনির্দিষ্ট জব ডেসক্রিপশন নির্ধারণ; নতুন প্রস্তাবিত পদের খসড়া নিয়োগবিধি এবং সহকারী প্রকৌশলী থেকে প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য পদের সংখ্যার ক্ষেত্রে পিরামিড অনুসরণ করা হয়েছে কিনা।’ এসব বিষয় সন্নিবেশিত করে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় প্রধান প্রকৌশলীকে।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সংকট
জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে ইইডির ৬৯টি অফিস রয়েছে। পদ থাকলেও এগুলোতে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কর্মরত নেই। এ কারণে এসব অফিস পরিচালনা করা ‘কষ্টসাধ্য’ হয়ে পড়েছে। এ কারণে যেসকল উপজেলায় অফিস আছে অথচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নেই সেখানে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদায়ন এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের শূন্যপদ পূরণের দাবি জানিয়েছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির নেতারা।

যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা আপাতত উপজেলা পর্যায়ে ইইডির অফিস স্থাপনের বিরুদ্ধে। এ কারণে তারা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদে নিয়োগ দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন। ইইডির শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন।

এ বিষয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী সিকদার বলেন, ‘নতুন পদ সৃজন করতে হবে কেন? পদতো তৈরি করাই আছে। কিন্তু স্যার (প্রধান প্রকৌশলী) ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদগুলো বাদ রেখে অন্য পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। অথচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদগুলো শূন্য থাকায় সারাদেশের অফিসে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

ইইডির ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির অন্য এক নেতা সংবাদকে বলেন, তারা প্রতিষ্ঠানের ‘স্বার্থে’ নতুন পদ সৃজনের বিরোধিতা করছেন না। তারা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে ইইডির সারাদেশের অফিসে পদ সৃজনের পক্ষে। কিন্তু প্রধান কার্যালয়ে ‘অন্য ও ব্যক্তি স্বার্থে’ পদ সৃজনের বিপক্ষে।

ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার গত ২০ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের (সোলেমান খান) কাছে এক চিঠিতে বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ইইডির রাজস্ব খাতে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৫১৩টি পদের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৫২৬টি সৃজিত পদের মধ্যে ৪৯৪টি পদ উপজেলা পর্যায়ে পদায়নযোগ্য।’

এসব পদ ২০১৯ সালে সৃজন করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইইডির দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য উপজেলা পর্যায়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় স্থাপনের জন্য এখনও কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এ কারণে এর আগে নিয়োগ পাওয়া উপসহকারী প্রকৌশলীসহ সম্প্রতি পদায়নকৃত ১৬-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জেলা পর্যায়ে অবস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে অবস্থান করতে হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলীদের কার্যালয়ে স্থান স্বল্পতার কারণে এসব অতিরিক্ত জনবলের অবস্থানের ফলে অফিসগুলোর স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ ‘বিঘিœত’ হচ্ছে বলে প্রধান প্রকৌশলী মনে করেন।

চিঠিতে তিনি আরো বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় স্থাপনের জন্য কক্ষ বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত ছাড়পত্রপ্রাপ্ত ৩২৪টি পদে জনবল নিয়োগ সমীচীন নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

শূন্যপদ পূরণে অনিহা
ইইডির বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা তিন হাজার ৮২১টি। এর মধ্যে বর্তমানে দুই হাজার ৩৪টি পদই শূন্য রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু পদে জনবল নিয়োগের কোন উদ্যোগ নেই। এর মধ্যে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর একটিমাত্র পদ অন্তত পাঁচ বছর ধরে ফাঁকা রয়েছে। এই সময়ে প্রধান প্রকৌশলী রুটিন ও চলতি দায়িত্বে থাকায় ওই পদে ‘কার্যত’ কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। আবার যিনি প্রধান প্রকৌশলী হন তিনিও চান না তার কাছাকাছি কেউ থাকুক।

এর মধ্যে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নতুন আরো তিনটি পদ সৃজনের প্রস্তাব করেছেন প্রধান প্রকৌশলী। যদিও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর শূন্য পদ ভাগাতে মন্ত্রণালয়ের নানা স্তরে নিয়মিত তদবির করছেন একজন জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। এই স্তরে নতুন পদ সৃজনের বিরোধিতাও করা হয়েছে।

অন্যান্য পদের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) এর ৭২টি পদের মধ্যে বর্তমানে ৪৫টি পদই শূন্য রয়েছে। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এর ২টি পদের একটি শূন্য, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) এর একটি পদের নিয়োগ হয়নি, পরিচালক (অর্থ), উপ-পরিচালকের (অর্থ) পদও দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা এবং ডেপুটি চিফ আর্কিটেক্ট (চতুর্থ গ্রেড), ঊর্ধ্বতন স্থপতি (পঞ্চম গ্রেড), সহকারি প্রধান স্থপতি (নির্বাহী প্রকৌশলী সমতুল্য), সহকারী আর্কিটেক্টসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে ইইডির জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগযোগ্য ৬৪৭টি পদও দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা রয়েছে।

ছবি

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১১ দিনের লম্বা ছুটিতে স্কুল-কলেজ

ছবি

তৃতীয় আবেদনেও কলেজ পায়নি জিপিএ-৫ পাওয়া ২৯৫ জনসহ ৫ হাজার শিক্ষার্থী

ছবি

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই: প্রাথমিকের বই ছাপা শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহে

ছবি

ঢাকা কলেজ অর্থনীতি বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠিত

ছবি

এসএসসি ২০২৬: নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত, অনিয়মিতদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস

ছবি

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু

ছবি

এসএসসি খাতা মূল্যায়নে অবহেলা, কালো তালিকায় ৭১ শিক্ষক

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা হয়ে গেল সাত কলেজ

ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নয়, পরীক্ষার্থী তৈরি করছে: উপাচার্য

ছবি

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত: ১৫ দিন পর মাইলস্টোন কলেজে লেখাপড়া শুরু

ছবি

পরীক্ষার্থীদের সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ

ছবি

মারিয়া স্কোডোস্কা-কুরি ডক্টরাল ফেলোশিপ পেলেন আইইউবির আবরার

ছবি

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানব বন্ধন

ছবি

কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল নারায়ণগঞ্জ ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ

ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনে এআই অ্যাপ ‘এলসা স্পিক’ এর যাত্রা শুরু

ছবি

ইসলামপুরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট উপহার

ছবি

সর্বোচ্চ ফি সাড়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ, একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ

ছবি

স্থগিত হওয়া চার দিনের এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করল শিক্ষা বোর্ড

ছবি

সহিংসতায় রণক্ষেত্র গোপালগঞ্জ, এক বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত

ছবি

স্বতন্ত্র কাউন্সিলের দাবিতে আন্দোলন: ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত

ছবি

পাসের হার ও জিপিএ-৫-এ ছাত্রীদের এগিয়ে থাকার ধারা বজায়

ছবি

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে এসএসসি ও সমমানের ফল, পুনঃনিরীক্ষার আবেদন ১১ জুলাই থেকে

ছবি

এসএসসির ফল ১০ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে

ছবি

শিক্ষার্থীর ‘কটূক্তি’র অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

এইচএসসি পরীক্ষায় বসছে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

ছবি

২৬ জুন শুরু এইচএসসি, কেন্দ্র এলাকায় চলাচলে ডিএমপির বিধিনিষেধ জারি

ছবি

রাতের ঘটনায় আসন বাতিল, শৃঙ্খলা কমিটিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমার প্রস্তুতি

পরীক্ষার আগের সপ্তাহ পর্যন্ত ফরম পূরণের সুযোগ, জানাল শিক্ষা বোর্ড

ছবি

মহামারির আশঙ্কায় এইচএসসি কেন্দ্রে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও ডেঙ্গু প্রতিরোধের নির্দেশ

পরীক্ষা পেছানোর পরিকল্পনা নেই, প্রস্তুত শিক্ষা বোর্ডগুলো

ছবি

ভিসি নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ২৬ জুন

ছবি

আদালতের রায়ে এক যুগ পর চাকরিতে ফিরছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী

ছবি

‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ চালু না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির অধীনেই চলবে সাত কলেজ

ছবি

উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি, আন্দোলনে ছাত্রদলসহ শিক্ষার্থীরা

ছবি

শাহরিয়ার সাম্য হত্যার ঘটনায় ঢাবিতে অর্ধদিবস শ্রদ্ধা, নিরাপত্তা জোরদারে উদ্যোগ

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল স্থানান্তর ও রাজস্ব ফাঁকিতে দুদকের নজরে দুই প্রতিষ্ঠান

tab

প্রকৌশল অধিদপ্তর

আড়াই হাজার পদ শূন্য রেখেই নতুন ৮ শতাধিক পদ সৃষ্টির উদ্যোগ

রাকিব উদ্দিন

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

নতুন পদ সৃজন নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) প্রকৌশলীরা। সংস্থার বিভিন্ন স্তরে প্রায় আড়াই হাজার পদ শূন্য রেখেই প্রধান প্রকৌশলী নতুন আট শতাধিক পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি গ্রাজুয়েট প্রকৌশলীদের পদ সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা এর বিরোধিতা করছেন। প্রধান প্রকৌশলীর কাছে তাদের অভিযোগ, ‘উপজেলা পর্যায়ে অফিস না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৩২৪টি পদে ছাড়পত্র না দেয়ার যে অনুরোধ জানানো হয়েছে তা অনতিবিলম্বে বাতিল করার অনুরোধ জানানো হয়।’

জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ের জন্য ১ম শ্রেণীর জন্য বিদ্যমান পদের অতিরিক্ত ১২৮টি, ২য় শ্রেণীর ৯৮টি, ৩য় শ্রেণীর ১৫০টি এবং ৪র্থ শ্রেণীর ৪৩৭টি নতুন পদ সৃষ্টির জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে প্রধান প্রকৌশলী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়া ‘শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি’র এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পূর্ণাঙ্গ অর্গানোগ্রাম না পাঠিয়ে আংশিকভাবে প্রেরণ করায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত প্রকৌশলীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’

রাজস্বখাতে ১১-১৬ গ্রেড পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৩২৪টি শূন্যপদে ছাড়পত্র না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা।

চিঠিতে অধিদপ্তরের ‘ভাবমূর্তি’ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে অফিস স্থাপনসহ সব শূন্য পদে নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছেন ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির নেতারা।

এ বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার সংবাদকে বলেন, এ দেশে ভালো কাজ করা ‘খুব কঠিন’। ভালো কাজে বিরোধিতা আসবেই। এরপরও এগিয়ে যেতে হবে।

অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ইইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীর কুমার রজক দাসের বিরুদ্ধে সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অর্গানোগ্রাম সংশোধনের একপেশে প্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের দাবি, কমিটির সর্বশেষ সভায় মাঠ পর্যায়ের পদ সৃৃজনের সুপারিশে সবাই একমত পোষণ করেন এবং পরবর্তী সভায় প্রধান কার্যালয় ও মেট্রোপলিটন এলাকায় অতিরিক্ত কি কি পদ সৃষ্টি করা গেলে কাজের মান আরও ভালো হবে সে বিষয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু অর্গানোগ্রাম কমিটির আর কোনো সভা না করে শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ে কয়েকটি নির্বাহী প্রকৌশলীর পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়, যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে এর ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ইইডি প্রধান কার্যালয়ের বিদ্যমান ৩১২টি পদের সঙ্গে নতুন ৩৭০টি পদ সৃজনসহ মোট ৬৮২টি পদের প্রস্তাব এবং অফিস সরঞ্জামাদি টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ জানা আবশ্যক’।

বিষয়গুলো হলোÑ ‘অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ বিদ্যমান শূন্য পদ পূরণের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা; প্রধান কার্যালয়ের জনবল বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা; মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা প্রধান বিষয়ে সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনামূলক বিবরণী; নতুন প্রস্তাবিত পদের সুনির্দিষ্ট জব ডেসক্রিপশন নির্ধারণ; নতুন প্রস্তাবিত পদের খসড়া নিয়োগবিধি এবং সহকারী প্রকৌশলী থেকে প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য পদের সংখ্যার ক্ষেত্রে পিরামিড অনুসরণ করা হয়েছে কিনা।’ এসব বিষয় সন্নিবেশিত করে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় প্রধান প্রকৌশলীকে।

ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সংকট
জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে ইইডির ৬৯টি অফিস রয়েছে। পদ থাকলেও এগুলোতে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কর্মরত নেই। এ কারণে এসব অফিস পরিচালনা করা ‘কষ্টসাধ্য’ হয়ে পড়েছে। এ কারণে যেসকল উপজেলায় অফিস আছে অথচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নেই সেখানে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদায়ন এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের শূন্যপদ পূরণের দাবি জানিয়েছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির নেতারা।

যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা আপাতত উপজেলা পর্যায়ে ইইডির অফিস স্থাপনের বিরুদ্ধে। এ কারণে তারা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদে নিয়োগ দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন। ইইডির শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন।

এ বিষয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী সিকদার বলেন, ‘নতুন পদ সৃজন করতে হবে কেন? পদতো তৈরি করাই আছে। কিন্তু স্যার (প্রধান প্রকৌশলী) ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদগুলো বাদ রেখে অন্য পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। অথচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদগুলো শূন্য থাকায় সারাদেশের অফিসে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’

ইইডির ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির অন্য এক নেতা সংবাদকে বলেন, তারা প্রতিষ্ঠানের ‘স্বার্থে’ নতুন পদ সৃজনের বিরোধিতা করছেন না। তারা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে ইইডির সারাদেশের অফিসে পদ সৃজনের পক্ষে। কিন্তু প্রধান কার্যালয়ে ‘অন্য ও ব্যক্তি স্বার্থে’ পদ সৃজনের বিপক্ষে।

ইইডির প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার গত ২০ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের (সোলেমান খান) কাছে এক চিঠিতে বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ইইডির রাজস্ব খাতে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৫১৩টি পদের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ৫২৬টি সৃজিত পদের মধ্যে ৪৯৪টি পদ উপজেলা পর্যায়ে পদায়নযোগ্য।’

এসব পদ ২০১৯ সালে সৃজন করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইইডির দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য উপজেলা পর্যায়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় স্থাপনের জন্য এখনও কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এ কারণে এর আগে নিয়োগ পাওয়া উপসহকারী প্রকৌশলীসহ সম্প্রতি পদায়নকৃত ১৬-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জেলা পর্যায়ে অবস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে অবস্থান করতে হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলীদের কার্যালয়ে স্থান স্বল্পতার কারণে এসব অতিরিক্ত জনবলের অবস্থানের ফলে অফিসগুলোর স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ ‘বিঘিœত’ হচ্ছে বলে প্রধান প্রকৌশলী মনে করেন।

চিঠিতে তিনি আরো বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় স্থাপনের জন্য কক্ষ বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত ছাড়পত্রপ্রাপ্ত ৩২৪টি পদে জনবল নিয়োগ সমীচীন নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়।’

শূন্যপদ পূরণে অনিহা
ইইডির বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা তিন হাজার ৮২১টি। এর মধ্যে বর্তমানে দুই হাজার ৩৪টি পদই শূন্য রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু পদে জনবল নিয়োগের কোন উদ্যোগ নেই। এর মধ্যে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর একটিমাত্র পদ অন্তত পাঁচ বছর ধরে ফাঁকা রয়েছে। এই সময়ে প্রধান প্রকৌশলী রুটিন ও চলতি দায়িত্বে থাকায় ওই পদে ‘কার্যত’ কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। আবার যিনি প্রধান প্রকৌশলী হন তিনিও চান না তার কাছাকাছি কেউ থাকুক।

এর মধ্যে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নতুন আরো তিনটি পদ সৃজনের প্রস্তাব করেছেন প্রধান প্রকৌশলী। যদিও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর শূন্য পদ ভাগাতে মন্ত্রণালয়ের নানা স্তরে নিয়মিত তদবির করছেন একজন জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। এই স্তরে নতুন পদ সৃজনের বিরোধিতাও করা হয়েছে।

অন্যান্য পদের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) এর ৭২টি পদের মধ্যে বর্তমানে ৪৫টি পদই শূন্য রয়েছে। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এর ২টি পদের একটি শূন্য, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) এর একটি পদের নিয়োগ হয়নি, পরিচালক (অর্থ), উপ-পরিচালকের (অর্থ) পদও দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা এবং ডেপুটি চিফ আর্কিটেক্ট (চতুর্থ গ্রেড), ঊর্ধ্বতন স্থপতি (পঞ্চম গ্রেড), সহকারি প্রধান স্থপতি (নির্বাহী প্রকৌশলী সমতুল্য), সহকারী আর্কিটেক্টসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে ইইডির জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগযোগ্য ৬৪৭টি পদও দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা রয়েছে।

back to top