শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল স্বাধীনতা ২.০ এর সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন মহলে বেশ আলাপ-আলোচনা চলছে। শিক্ষা উপদেষ্টা জনসাধারণের আপত্তি ও বাস্তবায়ন জটিলতার কারণে ইতিপূর্বে চালু হওয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এর পরিবর্তে শিক্ষাক্রম ২০১২ পরিমার্জন করে তা পুনরায় চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এ ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল প্রযুক্তি শিরোনামে আইসিটি বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে রাখা হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালের কারিকুলামেও ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিরোনামে এই বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে রাখা হয়েছিল। এখন শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্যে একটি মহল এই বিষয়টিকে বাদ দেওয়া কিংবা নৈর্বাচনিক অথবা চতুর্থ (অপশনাল) বিষয় হিসাবে পরিবর্তন করার কথা বলছেন যা যুক্তিসংগত নয়।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে আইসিটি বা ডিজিটাল স্বাক্ষরতা একটি মৌলিক দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই শিল্পবিপ্লব মোকাবেলা করার জন্য এমন মানবসম্পদ দরকার যারা ডিজিটাল স্বাক্ষরতায় দক্ষ এবং দ্রুতগতির প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে নিতে সক্ষম। বাধ্যতামূলক আইসিটি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষা এই দক্ষতা অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তা নিশ্চিত করে যে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার সাথে পরিচিত ও সজ্জিত হতে পারে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং ডিজিটাল ডিভাইড কমিয়ে আনতে পারে। যেহেতু ফোরআইআর শিল্প এবং অর্থনীতিকে রূপ দিতে চলেছে, ফলে আইসিটি শিক্ষা শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিকই নয়, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা এবং ব্যক্তিগত সাফল্যের জন্যও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রণীত শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪ (জানূযারী-মার্চ) অনুসারে বর্তমানে দেশে প্রায় ২৬ লক্ষ বেকার রয়েছে এবং এই বেকারত্বের হার ক্রমশ বাড়ছে। এই বিশাল বেকার জনশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ শুধুমাত্র সরকারী কিংবা বেসরকারী চাকুরীর মাধ্যমে সম্ভব নয়। এ জন্য মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আউটসোর্সিং কার্যক্রম জোরদার করা আবশ্যক। বর্তমান যুগে উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আউটসোর্সিং কার্যক্রমের জন্য আইসিটি বা ডিজিটাল স্বাক্ষরতা অত্যন্ত জরুরি যা বাধ্যতামূলক ডিজিটাল বা আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে।
বর্তমানে দেশে আইসিটি শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষক রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানেই প্রশিক্ষপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োজিত আছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোতে প্রায় ১৭০ জন শিক্ষক বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারী কলেজে কর্মরত রয়েছেন। এরা সবাই কম্পিউটার বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অথবা ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রীধারী। তাছাড়া এনটিআরসির মাধ্যমে ২০০০ এর অধিক শিক্ষক সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন যাদের অনেকেই বিভিন্ন কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এদেরও আইসিটি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী রয়েছে। প্রায় সকল এমপিওভুক্ত কলেজ এবং সম্প্রতি সরকারি হওয়া সকল কলেজেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োজিত আছেন। আইসিটি বিষয়টি হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য দেশের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাবও রয়েছে। এমনকি জেলা সদরের কিছু নামীধামী কলেজে নেটওয়ার্কসমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাবসহ পৃথক আইসিটি ভবনও রয়েছে। কাজেই যারা ভাবছেন আইসিটি শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব ও অবকাঠামো নেই তাদের ধারণা সঠিক নয়। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আরও অধিক শিক্ষক নিয়োগ করা যেতে পারে এবং কম্পিউটারে ল্যাবে কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ্ বাড়ানো যেতে পারে।
বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ এর ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটির সিলেবাসের শিখনফল ও বিষয়বস্তু কিংবা শিক্ষাক্রম-২০১২ এর ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটির সিলেবাস যেটিই অনুসরণ করা হোক না কেন বর্তমান সময়ে তা পরিমার্জন করা অত্যন্ত জরুরি। এই পরিমার্জন প্রক্রিয়ায় সকল অংশীজনদের মতামত গ্রহণের ভিত্তিতে তা চুড়ান্ত করা উচিৎ। ইতিপূর্বে দেখা গেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড তাদের পছন্দসই কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সিলেবাসের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য চাপিয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি এবং এর ফলে সকল মহলে তা গ্রহণযোগ্যও হয়নি। ইন্ডাস্ট্রি (চাকুরিদাতা ও মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা) ও অ্যাকাডেমিয়া মিলে এই বিষয়টির সিলেবাসকে এমনভাবে তৈরি করা উচিৎ যা ডিজিটাল বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
পরিশেষে বলা যায় যে, ডিজিটাল বা আইসিটির স্বাক্ষরতা মানুষের ঐচ্ছিক দক্ষতা থেকে একুশ শতকে মূল দক্ষতায় রূপান্তরিত হয়েছে যা আধুনিক অর্থনীতি, সমাজ এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নে কার্যকর অংশগ্রহণের জন্য অপরিহার্য। এই দক্ষতা ছাড়া, ব্যক্তি এবং জাতি ডিজিটাল যুগে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। অতএব, বাধ্যতামূলক আইসিটি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষার ধারাটি কোন ভাবেই পরিবর্তন না করে তা অব্যহত রাখা অপরিহার্য। জাতীয় স্বার্থে এই ধারাটি অব্যহত রেখে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে এটির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান/দক্ষতা/শিখনফল/ বিষয়বস্তু ইত্যাদি সময়োপযোগী করে সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি।
শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল স্বাধীনতা ২.০ এর সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন মহলে বেশ আলাপ-আলোচনা চলছে। শিক্ষা উপদেষ্টা জনসাধারণের আপত্তি ও বাস্তবায়ন জটিলতার কারণে ইতিপূর্বে চালু হওয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এর পরিবর্তে শিক্ষাক্রম ২০১২ পরিমার্জন করে তা পুনরায় চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এ ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল প্রযুক্তি শিরোনামে আইসিটি বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে রাখা হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালের কারিকুলামেও ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিরোনামে এই বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে রাখা হয়েছিল। এখন শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্যে একটি মহল এই বিষয়টিকে বাদ দেওয়া কিংবা নৈর্বাচনিক অথবা চতুর্থ (অপশনাল) বিষয় হিসাবে পরিবর্তন করার কথা বলছেন যা যুক্তিসংগত নয়।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে আইসিটি বা ডিজিটাল স্বাক্ষরতা একটি মৌলিক দক্ষতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই শিল্পবিপ্লব মোকাবেলা করার জন্য এমন মানবসম্পদ দরকার যারা ডিজিটাল স্বাক্ষরতায় দক্ষ এবং দ্রুতগতির প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে খাপখাইয়ে নিতে সক্ষম। বাধ্যতামূলক আইসিটি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষা এই দক্ষতা অর্জনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তা নিশ্চিত করে যে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার সাথে পরিচিত ও সজ্জিত হতে পারে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং ডিজিটাল ডিভাইড কমিয়ে আনতে পারে। যেহেতু ফোরআইআর শিল্প এবং অর্থনীতিকে রূপ দিতে চলেছে, ফলে আইসিটি শিক্ষা শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিকই নয়, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা এবং ব্যক্তিগত সাফল্যের জন্যও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রণীত শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪ (জানূযারী-মার্চ) অনুসারে বর্তমানে দেশে প্রায় ২৬ লক্ষ বেকার রয়েছে এবং এই বেকারত্বের হার ক্রমশ বাড়ছে। এই বিশাল বেকার জনশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ শুধুমাত্র সরকারী কিংবা বেসরকারী চাকুরীর মাধ্যমে সম্ভব নয়। এ জন্য মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আউটসোর্সিং কার্যক্রম জোরদার করা আবশ্যক। বর্তমান যুগে উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আউটসোর্সিং কার্যক্রমের জন্য আইসিটি বা ডিজিটাল স্বাক্ষরতা অত্যন্ত জরুরি যা বাধ্যতামূলক ডিজিটাল বা আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে।
বর্তমানে দেশে আইসিটি শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষক রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানেই প্রশিক্ষপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োজিত আছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোতে প্রায় ১৭০ জন শিক্ষক বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারী কলেজে কর্মরত রয়েছেন। এরা সবাই কম্পিউটার বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অথবা ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রীধারী। তাছাড়া এনটিআরসির মাধ্যমে ২০০০ এর অধিক শিক্ষক সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন যাদের অনেকেই বিভিন্ন কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এদেরও আইসিটি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী রয়েছে। প্রায় সকল এমপিওভুক্ত কলেজ এবং সম্প্রতি সরকারি হওয়া সকল কলেজেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োজিত আছেন। আইসিটি বিষয়টি হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়ার জন্য দেশের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাবও রয়েছে। এমনকি জেলা সদরের কিছু নামীধামী কলেজে নেটওয়ার্কসমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাবসহ পৃথক আইসিটি ভবনও রয়েছে। কাজেই যারা ভাবছেন আইসিটি শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব ও অবকাঠামো নেই তাদের ধারণা সঠিক নয়। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আরও অধিক শিক্ষক নিয়োগ করা যেতে পারে এবং কম্পিউটারে ল্যাবে কম্পিউটারের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ্ বাড়ানো যেতে পারে।
বর্তমানে প্রচলিত শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ এর ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটির সিলেবাসের শিখনফল ও বিষয়বস্তু কিংবা শিক্ষাক্রম-২০১২ এর ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটির সিলেবাস যেটিই অনুসরণ করা হোক না কেন বর্তমান সময়ে তা পরিমার্জন করা অত্যন্ত জরুরি। এই পরিমার্জন প্রক্রিয়ায় সকল অংশীজনদের মতামত গ্রহণের ভিত্তিতে তা চুড়ান্ত করা উচিৎ। ইতিপূর্বে দেখা গেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড তাদের পছন্দসই কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সিলেবাসের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য চাপিয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি এবং এর ফলে সকল মহলে তা গ্রহণযোগ্যও হয়নি। ইন্ডাস্ট্রি (চাকুরিদাতা ও মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা) ও অ্যাকাডেমিয়া মিলে এই বিষয়টির সিলেবাসকে এমনভাবে তৈরি করা উচিৎ যা ডিজিটাল বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগের মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
পরিশেষে বলা যায় যে, ডিজিটাল বা আইসিটির স্বাক্ষরতা মানুষের ঐচ্ছিক দক্ষতা থেকে একুশ শতকে মূল দক্ষতায় রূপান্তরিত হয়েছে যা আধুনিক অর্থনীতি, সমাজ এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নে কার্যকর অংশগ্রহণের জন্য অপরিহার্য। এই দক্ষতা ছাড়া, ব্যক্তি এবং জাতি ডিজিটাল যুগে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। অতএব, বাধ্যতামূলক আইসিটি বা ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষার ধারাটি কোন ভাবেই পরিবর্তন না করে তা অব্যহত রাখা অপরিহার্য। জাতীয় স্বার্থে এই ধারাটি অব্যহত রেখে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে এটির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান/দক্ষতা/শিখনফল/ বিষয়বস্তু ইত্যাদি সময়োপযোগী করে সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি।