ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) প্রক্রিয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনভাতা দিতে বেকায়দায় পড়েছে শিক্ষা প্রশাসন। কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং শিক্ষাগত সনদের তথ্যে ‘গড়মিল’ বা ‘অসঙ্গতি’ শনাক্ত হচ্ছে। এগুলির সমাধানও সময়সাপেক্ষ বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নির্ধারিত সময়ে প্রায় ২০ হাজার স্কুল-কলেজের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান এই প্রক্রিয়ায় বেতনভাতা নেয়ার আবেদনই করেনি বা করতে পারেনি। আবার আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রায় ৪০ হাজারের মতো আবেদন ‘রিজেক্ট’ (নাকচ) হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) আগামী জানুয়ারি থেকে ইএফটি প্রক্রিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এজন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকাভুক্তি বা এমপিওভুক্তি, উচ্চতর গ্রেড, বিএড স্কেলসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাওয়ার আবেদনের সময় পুননির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সেই অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল, জুনের মত প্রতি ‘জোড়’ মাসের ৬ তারিখের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তি ও এ সংক্রান্ত আবেদন করতে পারবেন। এর আগে ‘জোড়’ মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ ছিল।
আর জানুয়ারি, মার্চ, মে বা জুলাইয়ের মত প্রতি ‘বেজোড়’ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এমপিও কমিটি সভা করে আবেদন করা নতুন এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেবে।
সরকারি কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পান। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরাবর পাঠানো হয়। এতে প্রায়ই বেতন ভাতা পেতে কিছুটা দেরি হয়।
এজন্য শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি কর্মীদের মত মাসের শুরুতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকভাবে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে ছাড় করতে তথ্য সংগ্রহ করছে শিক্ষা প্রশাসন।
ইএফটির তালিকাভুক্ত হতে মাউশির ‘এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ (ইএমআইএস) সেলের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ইএমআইএস সেল থেকে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী গত ৫ ডিসেম্বর এই আবেদনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই সময়ে প্রায় ২০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের মধ্যে ১৯ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই দু’তিনজন করে শিক্ষক-কর্মচারীর এনআইডি ও শিক্ষাগত সনদের মধ্যে ‘গড়মিল’ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার সাইফুল ইসলাম সংবাদকে বলেছেন, ‘ইএফটির জন্য শিক্ষকদের তথ্য নেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। আমরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য নেব।’
তথ্য নেয়ার সময় বাড়ানোর কারণ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘পৌনে চার লাখের মতো শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। অনেকের সার্টিফিকেটের সঙ্গে এনআইডির নামের মিল নেই। এনআইডিতে অনেকের নামের বানান ভুল রয়েছে, জন্ম তারিখে ভুল রয়েছে। আমরা এগুলি সংশোধনের জন্য শিক্ষকদের কাছে সময় দিচ্ছি।’
অনেক প্রতিষ্ঠানের ইএফটি তালিকাভুক্তি হতে আবেদন না করার প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের (সরকার পরিবর্তন) পর অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নেই; অনেক শিক্ষক নেই। এ কারণে বাদ পড়ে থাকতে পারে। আমরা সময় দিচ্ছি।’
ইএমআইএস সেলের অন্য একজন প্রোগ্রামার সংবাদকে জানিয়েছেন, একজন শিক্ষকের শিক্ষাগত সনদের চেয়ে এনআইডিতে বয়স ১০ বছর বেশি। এখন ইএফটিতে এমপিওভুক্তি কার্যকর হলে ওই শিক্ষককে অবসরে চলে যেতে হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান থেকেই দু’জন, তিনজন বা একজনের আবেদন রিজেক্ট হয়েছে। সবমিলিয়ে ২০ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ রকম অন্তত ৪০ হাজার শিক্ষকের নানা রকম ভুল-বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া গেছে।
এই ধরণের ভুল নিয়ে ইএমআইএস সেলের কর্মকর্তারা গত ৭ ডিসেম্বর বৈঠক করেছেন। পরে বিষয়টি মাউশিকে অবহিত করা হয়।
রাজধানীর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এনআইডিতে তার বয়স এক বছর বেশি দেখানো হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও এই ‘ভুল’ সংশোধন করতে পারেননি। তার আশঙ্কা ‘ভুল’ তথ্যে ইএফটির আবেদন করলে তার এমপিও ‘স্থগিত’ হয়ে যেতে পারে।
ঢাকার একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ‘মাউশির নির্দেশনা হলো-জাতীয় পরিচয়পত্রে যাই থাকুক না কেন-সেই তথ্য অনুযায়ীই ইএফটির আবেদন করতে হবে।’
শিক্ষকরা জানান, এমপিও সংক্রান্ত যাবতীয় আবেদন শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষাগত সনদ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়ে আসছে। এজন্য এতদিন এনআইডির খুব একটা প্রয়োজন হয়নি। অনেকের এনআইডিতে ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলেও তা সংশোধন হয়নি।
গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক সভায় আগামী জানুয়ারি থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি তাদের টার্গেট। এ তথ্য সংগ্রহ শেষে তা ‘আইবাস প্লাস প্লাস’ প্রক্রিয়ায় অর্ন্তভুক্ত করা গেলে তারা জানুয়ারি থেকেই ইএফটিতে এমপিও দেয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।
মাউশির নতুন নির্দেশনা
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে ইলেকটনিক্স ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি) বেতন-ভাতা দিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য দেয়ার জন্য নতুন একটি অপশন চালু করা হয়েছে।
ইএমআইএস সেলে নির্ধারিত পাঁচটি অপশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়-এমন নতুন স্থগিত বা সাময়িক স্থগিত- এই অপশনে তথ্য দিতে পারবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা ১১ ডিসেম্বরের (বুধবার) মধ্যে আর উপ-পরিচালক ও আঞ্চলিক পরিচালকেরা ১২ ডিসেম্বরের (আজ) মধ্যে এ তথ্য অধিদপ্তরে পাঠাবেন। গত ১০ ডিসেম্বর মাউশির এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।
মাউশি জানিয়েছে, কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের তথ্য দেয়নি। যে সব প্রতিষ্ঠান বরখাস্তকৃত জনবল, প্রতিষ্ঠানে অননুমোদিত অনুপস্থিত জনবল বা আগের পাঁচটি অপশনের মধ্যে কোনো অপশনের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন জনবলের তথ্য দেয়ার জন্য নতুন একটি অপশন ‘স্থগিত-সাময়িক স্থগিত’ সংযোজন করা হয়েছে। আগের পাঁচটি অপশন হলো- কর্মরত, মৃত, পদত্যাগকৃত, অস্তিত্ব নেই বা জাতীয়করণকৃত।
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) প্রক্রিয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনভাতা দিতে বেকায়দায় পড়েছে শিক্ষা প্রশাসন। কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং শিক্ষাগত সনদের তথ্যে ‘গড়মিল’ বা ‘অসঙ্গতি’ শনাক্ত হচ্ছে। এগুলির সমাধানও সময়সাপেক্ষ বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নির্ধারিত সময়ে প্রায় ২০ হাজার স্কুল-কলেজের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান এই প্রক্রিয়ায় বেতনভাতা নেয়ার আবেদনই করেনি বা করতে পারেনি। আবার আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রায় ৪০ হাজারের মতো আবেদন ‘রিজেক্ট’ (নাকচ) হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) আগামী জানুয়ারি থেকে ইএফটি প্রক্রিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এজন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকাভুক্তি বা এমপিওভুক্তি, উচ্চতর গ্রেড, বিএড স্কেলসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পাওয়ার আবেদনের সময় পুননির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সেই অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল, জুনের মত প্রতি ‘জোড়’ মাসের ৬ তারিখের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তি ও এ সংক্রান্ত আবেদন করতে পারবেন। এর আগে ‘জোড়’ মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত এমপিওভুক্তির আবেদনের সুযোগ ছিল।
আর জানুয়ারি, মার্চ, মে বা জুলাইয়ের মত প্রতি ‘বেজোড়’ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এমপিও কমিটি সভা করে আবেদন করা নতুন এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেবে।
সরকারি কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পান। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরাবর পাঠানো হয়। এতে প্রায়ই বেতন ভাতা পেতে কিছুটা দেরি হয়।
এজন্য শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি কর্মীদের মত মাসের শুরুতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকভাবে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে ছাড় করতে তথ্য সংগ্রহ করছে শিক্ষা প্রশাসন।
ইএফটির তালিকাভুক্ত হতে মাউশির ‘এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ (ইএমআইএস) সেলের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ইএমআইএস সেল থেকে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী গত ৫ ডিসেম্বর এই আবেদনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই সময়ে প্রায় ২০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের মধ্যে ১৯ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই দু’তিনজন করে শিক্ষক-কর্মচারীর এনআইডি ও শিক্ষাগত সনদের মধ্যে ‘গড়মিল’ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ইএমআইএস সেলের প্রোগ্রামার সাইফুল ইসলাম সংবাদকে বলেছেন, ‘ইএফটির জন্য শিক্ষকদের তথ্য নেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। আমরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য নেব।’
তথ্য নেয়ার সময় বাড়ানোর কারণ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘পৌনে চার লাখের মতো শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। অনেকের সার্টিফিকেটের সঙ্গে এনআইডির নামের মিল নেই। এনআইডিতে অনেকের নামের বানান ভুল রয়েছে, জন্ম তারিখে ভুল রয়েছে। আমরা এগুলি সংশোধনের জন্য শিক্ষকদের কাছে সময় দিচ্ছি।’
অনেক প্রতিষ্ঠানের ইএফটি তালিকাভুক্তি হতে আবেদন না করার প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্টের (সরকার পরিবর্তন) পর অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নেই; অনেক শিক্ষক নেই। এ কারণে বাদ পড়ে থাকতে পারে। আমরা সময় দিচ্ছি।’
ইএমআইএস সেলের অন্য একজন প্রোগ্রামার সংবাদকে জানিয়েছেন, একজন শিক্ষকের শিক্ষাগত সনদের চেয়ে এনআইডিতে বয়স ১০ বছর বেশি। এখন ইএফটিতে এমপিওভুক্তি কার্যকর হলে ওই শিক্ষককে অবসরে চলে যেতে হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান থেকেই দু’জন, তিনজন বা একজনের আবেদন রিজেক্ট হয়েছে। সবমিলিয়ে ২০ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ রকম অন্তত ৪০ হাজার শিক্ষকের নানা রকম ভুল-বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া গেছে।
এই ধরণের ভুল নিয়ে ইএমআইএস সেলের কর্মকর্তারা গত ৭ ডিসেম্বর বৈঠক করেছেন। পরে বিষয়টি মাউশিকে অবহিত করা হয়।
রাজধানীর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এনআইডিতে তার বয়স এক বছর বেশি দেখানো হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও এই ‘ভুল’ সংশোধন করতে পারেননি। তার আশঙ্কা ‘ভুল’ তথ্যে ইএফটির আবেদন করলে তার এমপিও ‘স্থগিত’ হয়ে যেতে পারে।
ঢাকার একটি থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ‘মাউশির নির্দেশনা হলো-জাতীয় পরিচয়পত্রে যাই থাকুক না কেন-সেই তথ্য অনুযায়ীই ইএফটির আবেদন করতে হবে।’
শিক্ষকরা জানান, এমপিও সংক্রান্ত যাবতীয় আবেদন শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষাগত সনদ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়ে আসছে। এজন্য এতদিন এনআইডির খুব একটা প্রয়োজন হয়নি। অনেকের এনআইডিতে ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলেও তা সংশোধন হয়নি।
গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক সভায় আগামী জানুয়ারি থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও ইএফটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি তাদের টার্গেট। এ তথ্য সংগ্রহ শেষে তা ‘আইবাস প্লাস প্লাস’ প্রক্রিয়ায় অর্ন্তভুক্ত করা গেলে তারা জানুয়ারি থেকেই ইএফটিতে এমপিও দেয়া যাবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।
মাউশির নতুন নির্দেশনা
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে ইলেকটনিক্স ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি) বেতন-ভাতা দিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য দেয়ার জন্য নতুন একটি অপশন চালু করা হয়েছে।
ইএমআইএস সেলে নির্ধারিত পাঁচটি অপশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়-এমন নতুন স্থগিত বা সাময়িক স্থগিত- এই অপশনে তথ্য দিতে পারবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা ১১ ডিসেম্বরের (বুধবার) মধ্যে আর উপ-পরিচালক ও আঞ্চলিক পরিচালকেরা ১২ ডিসেম্বরের (আজ) মধ্যে এ তথ্য অধিদপ্তরে পাঠাবেন। গত ১০ ডিসেম্বর মাউশির এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।
মাউশি জানিয়েছে, কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের তথ্য দেয়নি। যে সব প্রতিষ্ঠান বরখাস্তকৃত জনবল, প্রতিষ্ঠানে অননুমোদিত অনুপস্থিত জনবল বা আগের পাঁচটি অপশনের মধ্যে কোনো অপশনের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন জনবলের তথ্য দেয়ার জন্য নতুন একটি অপশন ‘স্থগিত-সাময়িক স্থগিত’ সংযোজন করা হয়েছে। আগের পাঁচটি অপশন হলো- কর্মরত, মৃত, পদত্যাগকৃত, অস্তিত্ব নেই বা জাতীয়করণকৃত।