alt

শিক্ষা

প্রকল্পের আওতায় সাধারণ হাইস্কুলে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, ৫ বছরেও শিক্ষক নিয়োগের সুরাহা হয়নি

রাকিব উদ্দিন : বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

সাধারণ ধারার ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিমূলক শিক্ষা কর্মসূচির পাঁচ বছর হলেও প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা থাকছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় প্রতি বছর ৫১ হাজার ২শ’ শিক্ষার্থীর পাঠ লাভের সুযোগে থাকলেও মাত্র ২৪/২৫ হাজার এই ‘ট্রেড’ পড়ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্পের আওতায় ২০২০ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের মোট ২০টি সরকারি এবং ৬২০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘দুটি’ করে দশটি ‘ট্রেডে’ (বিষয়) বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করেছে।

এই সময়ে অধিকাংশ বেসরকারি বিদ্যালয়ে একজন করে ‘ইনস্ট্রাক্টর’ নিয়োগ পেলেও অনেকেই চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। আবার ২২টি সরকারি বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত ওই দশ ট্রেডে একজন শিক্ষক বা ইনস্ট্রাক্টরের পদও সৃষ্টি হয়নি। এ কারণে ২২ প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক নিয়োগও পায়নি।

‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’র (সেসিপ) আওতায় সাধারণ বিদ্যালয়ে ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষা’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প অফিস থেকে বারবার ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। এই সঙ্কট নিরসনে করণীয় নির্ধারণের জন্য গত ৪ ডিসেম্বর সেসিপের পক্ষ থেকে রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) দিনব্যাপী এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে সেসিপের যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক অধ্যাপক সামসুন নাহার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেসিপের আওতায় মাধ্যমিক স্তরের সাধারণ শিক্ষাধারার ৬৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (২২টি সরকারি বিদ্যালয়, ৫২৯টি এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় ও ৮৯টি মাদ্রাসা) ২০২০ শিক্ষাবর্ষ হতে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো বা এমপিও নীতিমালা সংশোধনপূর্বক ট্রেড ইন্সট্রাক্টরের ২টি করে পদ সুজন এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে এক হাজার ২২২ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

কিন্তু ‘অন্যত্র ভালো কর্মে সুযোগ ও অন্যান্য কারণে’ বেশকিছু সংখ্যক শিক্ষক অব্যাহতি নিলেও এমপিওভুক্ত এক হাজার ২৩০টি পদের বিপরীতে বর্তমানে ৯৩৪ জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর কর্মরত রয়েছেন এবং ২৯৬টি পদ শূন্য রয়েছে।

এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে চাহিত রেজিস্ট্রেশন ও ই-রিকুইজিশন সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জটিলতার কারণে শূন্য পদসমূহ যথাসময়ে পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

একইভাবে এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দু’জন করে ট্রেড এ্যাসিসটেন্টের পদ সৃজন করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে এক হাজার ২৩০টি পদের বিপরীতে ৭৩৫ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হলেও বর্তমানে ৫৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে, যা বিভিন্ন জটিলতার কারণে যথাসময়ে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে অধ্যাপক সামসুন নাহার সংবাদকে বলেছেন, তিনি বৃত্তিমূলক শিক্ষা পাঠদানকারী স্কুলগুলোতে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট নিয়োগের জন্য ‘সর্বাত্ত্বক’ চেষ্টা করেছেন। বারবার চিঠি ও তাগিদপত্র দিয়েছেন। এরপরও ‘সঙ্কট’ নিরসন হচ্ছে না। কী কারণে ‘সঙ্কট’ নিরসন হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এনটিআরসিএ দিতে (ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট নিয়োগ) পারছে না। আবার নিয়োগ পাওয়ার পর অনেকেই অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।’

সম্প্রতি অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়া সামসুন নাহার আরও বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দুটি করে ‘ল্যাব নির্মাণপূর্বক আন্তর্জাতিকমানের মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো পরিচালনা করার মতো লোকবল নেই। এজন্য শিক্ষা উপকরণগুলো ‘নষ্ট’ হচ্ছে।

২০২০ শিক্ষাবর্ষ হতে এ পর্যন্ত ১০টি ট্রেডে নবম ও দশম শ্রেণীতে দুই লাখ ১৯৬ জন শিক্ষার্থী টেকনোলজি শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করেছে বলে প্রকল্প অফিস থেকে জানা গেছে।

এখানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৫১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থাকলেও ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও সচেতনতার অভাবে প্রতি বছর প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীর আসন শূন্য রয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী টেকনোলজি শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত শূন্য পদ পূরণ করার এবং শূন্য পদ পূরণে কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তা সেই বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সে প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানসমূহের শূন্য পদে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট পদে নিয়োগ, ভোকেশনাল শিক্ষা কর্মসূচিতে ২০২৫ সালে নবম শ্রেণীতে আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির প্রচার প্রচারণামূলক জোড়ালো কার্যক্রম গ্রহণ এবং পাঠদানের জটিলতা নিরসনের লক্ষে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তার অংশগ্রহণে গত ৪ ডিসেম্বর দিনব্যাপী কর্মশালা করা হয় নায়েমে।

এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। সংস্থাটি অনেক প্রতিষ্ঠানেই চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছে না। ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষা’র ট্রেড পড়াতে সাধারণ বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করছে।

২০২০ শিক্ষাবর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের চুন্টা এসি একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন’ এবং ‘রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং’ ট্রেড চালু হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে দুটি ট্রেডেই বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলেও গতবছর মাত্র একজন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

মাধ্যমিকের ৩টি বইয়ের ছাপা ২০ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করতে চায় এনসিটিবি

জাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি ও ভিসি কোটা বাতিল; ইউনিট থাকছে ৭টি

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: গুচ্ছে থাকতে ‘তৃতীয় অনুরোধ’ মন্ত্রণালয়ের

চার বছর পর ৬ লাখ শিক্ষার্র্থীর বৃত্তির বকেয়া টাকা ছাড়

ছবি

মিডওয়াইফারি ডিপ্লোমা কোর্সে শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে বিকাশ

ছবি

প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে জাইকা ও সরকারের ৩৭.৮ কোটি টাকার অনুদান চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ

ছবি

২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

অভিবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নে আমি প্রবাসী ও শিখো

ছবি

স্কুলে ভর্তির ফল প্রকাশ,‌ জানবেন যেভাবে

ছবি

প্রাথমিকের মাত্র ১ কোটি বই উপজেলায় পৌঁছেছে

ছবি

আইডাব্লিউএস অনলাইন স্কুলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০% পর্যন্ত স্কলারশিপ

ছবি

বাউবি প্রকাশ করেছে ২০২৪ সালের এইচএসসি (নিশ-১) পরীক্ষার ফলাফল

ছবি

টেকসই বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের মধ্যে সেরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি

ছবি

অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও বলবৎ হবে

পাঠ্যপুস্তক ছাপা ও শিক্ষাক্রমের ওপর ‘শে^তপত্র’ প্রকাশ: বই ছাপায় অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পায়নি এনসিটিবি

ছবি

টিএমজিবি সদস্যদের সন্তানদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

ছবি

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু, রুটিন প্রকাশ

ছবি

র‌্যাগিংয়ের দায়ে চুয়েটের ১১ শিক্ষার্থী ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার

ইএফটিতে শিক্ষকদের এমপিও প্রক্রিয়ায় জটিলতা

ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের অস্থায়ী সমাধান

ছবি

স্কুলে ভর্তির ‘ভাগ্য নির্ধারণ’ ১৭ ডিসেম্বর, মাউশির বিজ্ঞপ্তি

ছবি

৮৫ শতাংশ উপস্থিতি ছাড়া প্রাথমিকে উপবৃত্তি নয়

ছবি

১১তম বেলটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ স্থগিত আদেশ বহাল

ছবি

প্রাথমিকে শরীরচর্চা, সংগীত, চারুকলার শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ: উপদেষ্টা

ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের বেকারত্ব ২৮ শতাংশ

ছবি

আইসিপিসি ঢাকা রিজিওনাল ২০২৪ এ চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

স্কুলে ভর্তির লটারির তারিখ পরিবর্তন করে ১৭ ডিসেম্বর

মাধ্যমিকের ৩১ কোটি বই ছাপার কাজ এখনও শুরু হয়নি

ছবি

ব্যাটেল অব মাইন্ডস ২০২৪ এর বিজয়ী বিইউপি’র টিম পারডন আস, কামিং থ্রু

ছবি

৬৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ‘টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন

ছবি

প্রকৌশল গুচ্ছ ভাঙছে, চুয়েটও ভর্তি পরীক্ষা নেবে এককভাবে

ছবি

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা : অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

ছবি

ঢাকা কলেজগুলোতে উত্তেজনা নিরসনে বৈঠকের আহ্বান, কিন্তু দুই অধ্যক্ষের অনীহা

ছবি

ডিআইইউ এর সাথে বিশ্বের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

tab

শিক্ষা

প্রকল্পের আওতায় সাধারণ হাইস্কুলে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, ৫ বছরেও শিক্ষক নিয়োগের সুরাহা হয়নি

রাকিব উদ্দিন

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

সাধারণ ধারার ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিমূলক শিক্ষা কর্মসূচির পাঁচ বছর হলেও প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা থাকছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় প্রতি বছর ৫১ হাজার ২শ’ শিক্ষার্থীর পাঠ লাভের সুযোগে থাকলেও মাত্র ২৪/২৫ হাজার এই ‘ট্রেড’ পড়ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্পের আওতায় ২০২০ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের মোট ২০টি সরকারি এবং ৬২০টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘দুটি’ করে দশটি ‘ট্রেডে’ (বিষয়) বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করেছে।

এই সময়ে অধিকাংশ বেসরকারি বিদ্যালয়ে একজন করে ‘ইনস্ট্রাক্টর’ নিয়োগ পেলেও অনেকেই চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। আবার ২২টি সরকারি বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত ওই দশ ট্রেডে একজন শিক্ষক বা ইনস্ট্রাক্টরের পদও সৃষ্টি হয়নি। এ কারণে ২২ প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক নিয়োগও পায়নি।

‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’র (সেসিপ) আওতায় সাধারণ বিদ্যালয়ে ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষা’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প অফিস থেকে বারবার ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। এই সঙ্কট নিরসনে করণীয় নির্ধারণের জন্য গত ৪ ডিসেম্বর সেসিপের পক্ষ থেকে রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) দিনব্যাপী এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে সেসিপের যুগ্ম প্রোগ্রাম পরিচালক অধ্যাপক সামসুন নাহার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেসিপের আওতায় মাধ্যমিক স্তরের সাধারণ শিক্ষাধারার ৬৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (২২টি সরকারি বিদ্যালয়, ৫২৯টি এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় ও ৮৯টি মাদ্রাসা) ২০২০ শিক্ষাবর্ষ হতে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো বা এমপিও নীতিমালা সংশোধনপূর্বক ট্রেড ইন্সট্রাক্টরের ২টি করে পদ সুজন এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে এক হাজার ২২২ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

কিন্তু ‘অন্যত্র ভালো কর্মে সুযোগ ও অন্যান্য কারণে’ বেশকিছু সংখ্যক শিক্ষক অব্যাহতি নিলেও এমপিওভুক্ত এক হাজার ২৩০টি পদের বিপরীতে বর্তমানে ৯৩৪ জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর কর্মরত রয়েছেন এবং ২৯৬টি পদ শূন্য রয়েছে।

এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে চাহিত রেজিস্ট্রেশন ও ই-রিকুইজিশন সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জটিলতার কারণে শূন্য পদসমূহ যথাসময়ে পূরণ করা সম্ভব হবে না বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

একইভাবে এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দু’জন করে ট্রেড এ্যাসিসটেন্টের পদ সৃজন করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে এক হাজার ২৩০টি পদের বিপরীতে ৭৩৫ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হলেও বর্তমানে ৫৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে, যা বিভিন্ন জটিলতার কারণে যথাসময়ে পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে অধ্যাপক সামসুন নাহার সংবাদকে বলেছেন, তিনি বৃত্তিমূলক শিক্ষা পাঠদানকারী স্কুলগুলোতে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট নিয়োগের জন্য ‘সর্বাত্ত্বক’ চেষ্টা করেছেন। বারবার চিঠি ও তাগিদপত্র দিয়েছেন। এরপরও ‘সঙ্কট’ নিরসন হচ্ছে না। কী কারণে ‘সঙ্কট’ নিরসন হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এনটিআরসিএ দিতে (ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট নিয়োগ) পারছে না। আবার নিয়োগ পাওয়ার পর অনেকেই অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।’

সম্প্রতি অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়া সামসুন নাহার আরও বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দুটি করে ‘ল্যাব নির্মাণপূর্বক আন্তর্জাতিকমানের মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো পরিচালনা করার মতো লোকবল নেই। এজন্য শিক্ষা উপকরণগুলো ‘নষ্ট’ হচ্ছে।

২০২০ শিক্ষাবর্ষ হতে এ পর্যন্ত ১০টি ট্রেডে নবম ও দশম শ্রেণীতে দুই লাখ ১৯৬ জন শিক্ষার্থী টেকনোলজি শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করেছে বলে প্রকল্প অফিস থেকে জানা গেছে।

এখানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে ৫১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থাকলেও ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও সচেতনতার অভাবে প্রতি বছর প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীর আসন শূন্য রয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী টেকনোলজি শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত শূন্য পদ পূরণ করার এবং শূন্য পদ পূরণে কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে তা সেই বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা প্রদান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সে প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানসমূহের শূন্য পদে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেড এ্যাসিসটেন্ট পদে নিয়োগ, ভোকেশনাল শিক্ষা কর্মসূচিতে ২০২৫ সালে নবম শ্রেণীতে আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির প্রচার প্রচারণামূলক জোড়ালো কার্যক্রম গ্রহণ এবং পাঠদানের জটিলতা নিরসনের লক্ষে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তার অংশগ্রহণে গত ৪ ডিসেম্বর দিনব্যাপী কর্মশালা করা হয় নায়েমে।

এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। সংস্থাটি অনেক প্রতিষ্ঠানেই চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছে না। ‘বৃত্তিমূলক শিক্ষা’র ট্রেড পড়াতে সাধারণ বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করছে।

২০২০ শিক্ষাবর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের চুন্টা এসি একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন’ এবং ‘রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং’ ট্রেড চালু হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে দুটি ট্রেডেই বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলেও গতবছর মাত্র একজন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

back to top