সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে সৃষ্টি করা সংগীত শিক্ষক পদ বাতিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রকল্পটির ‘পরিকল্পনায় ত্রুটি ও বৈষম্যের আশঙ্কা’ থাকার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটি প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি এবং বৈষম্যের সম্ভাবনা দেখায়, যার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরামর্শ দেয়। সচিব কমিটির মতে, এত অল্প সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না; বরং এতে বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তীকালে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সকল বিদ্যালয়ে এরকম নতুন বিষয়ের শিক্ষক পদ সৃষ্টি এবং সেসব পদে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি মত দিয়েছে।
এর আগে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে রোববার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক পদ বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে শরীরচর্চা শিক্ষকের নতুন পদটিও বাতিল করা হয়।
এ দুটি পদ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’-এ কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাবনা বাতিল বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সরকারের নজরে এসেছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। তবে সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সরকারি হিসাবে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সচিব কমিটি মনে করে, এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশে প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দিলে একই শিক্ষককে ২০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যা সময় ব্যবস্থাপনার দিক থেকে কার্যকর নয়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে এর পরপরই ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির সমালোচনা শুরু করে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করে প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান। একই দিনে এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারাও সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির তীব্র সমালোচনা করেন।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলাম এই পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী এজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে বিধিমালা বাতিলের দাবি জানায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে সৃষ্টি করা সংগীত শিক্ষক পদ বাতিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রকল্পটির ‘পরিকল্পনায় ত্রুটি ও বৈষম্যের আশঙ্কা’ থাকার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কমিটি প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি এবং বৈষম্যের সম্ভাবনা দেখায়, যার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরামর্শ দেয়। সচিব কমিটির মতে, এত অল্প সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না; বরং এতে বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
তবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তীকালে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সকল বিদ্যালয়ে এরকম নতুন বিষয়ের শিক্ষক পদ সৃষ্টি এবং সেসব পদে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি মত দিয়েছে।
এর আগে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে রোববার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক পদ বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে শরীরচর্চা শিক্ষকের নতুন পদটিও বাতিল করা হয়।
এ দুটি পদ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’-এ কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাবনা বাতিল বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সরকারের নজরে এসেছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। তবে সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সরকারি হিসাবে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সচিব কমিটি মনে করে, এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশে প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দিলে একই শিক্ষককে ২০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যা সময় ব্যবস্থাপনার দিক থেকে কার্যকর নয়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে এর পরপরই ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির সমালোচনা শুরু করে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করে প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান। একই দিনে এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারাও সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির তীব্র সমালোচনা করেন।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলাম এই পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী এজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে বিধিমালা বাতিলের দাবি জানায়।