ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
প্রাথমিকে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) ১০ মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ শীর্ষক প্রোগ্রামটি আগামী জানুয়ারিতে দেশের ১২টি পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।
পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পিটিআইয়ের এই প্রোগ্রাম চালু হবে। মোট ১২ হাজার টাকা দিয়ে স্নাতক ও সমমানের ডিগ্রিধারীরা এই প্রোগ্রামটি করতে পারবেন। নেপের পরিচালনায় চলবে প্রোগ্রামটি।
মঙ্গলবার, (১৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। এ সময় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘আমি আশা করি উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এসব কোর্স ধীরে ধীরে চালু করবে। পরে যখন দক্ষ জনবল পেয়ে যাব, তখন আমরা শুধু এর মধ্য থেকে নিয়োগ করতে পারবো। এখন সেই সুযোগটা নেই। তবে ভবিষ্যতে আশা করবো, আমাদের দেশেও শিক্ষকদের জন্য লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু হোক।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিপিএড ডিগ্রিধারীরা এই মুহূর্তেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন না। তবে ভবিষ্যতে যখন এই কোর্সের পরিধি বাড়বে এবং পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল থেকে শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও মাধ্যমিকে বিএড কোর্স থাকলে বাড়তি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়।
লিখিত বক্তব্যে ফরিদ আহমদ বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আগামী জানুয়ারিতে যে ১২টি পিটিআইয়ে ডিপ্লোমা প্রোগ্রামটি চালু হচ্ছে সেগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, জয়দেবপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া। এটির মেয়াদ হবে ১০ মাস এবং তা অনাবাসিক ও বৈকালিক।
তিনি আরও বলেন- শিক্ষাদর্শন, শিক্ষণ কৌশল ও মূল্যায়ন কাঠামো শেখার মাধ্যমে এই ডিগ্রিধারী আধুনিক শিক্ষক হিসেবে দক্ষ হয়ে উঠবেন। যা ভবিষ্যৎ পেশাগত জীবনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
নেপ মহাপরিচালক জানান, দেশের যে কোনো স্থায়ী নাগরিক এই প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২ দশমিক ২৫ এবং ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২ দশমিক ৮) স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষা জীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
আবেদনকারীকে নেপের ডিপিএড বোর্ড আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মোট আসন ১ হাজার ৩২০টি। নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য ৫০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান; সময় ৫০ মিনিট) ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা ভর্তির শর্ত পূরণ সাপেক্ষে পিটিআইভিত্তিক মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি হবেন।
দুটি সেমিস্টারে ১০ মাসের এই প্রোগ্রামের ফি সেমিস্টার প্রতি ছয় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রোগ্রামটিতে মোট ১২০০ নম্বরের মূল্যায়ন হবে। ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয়া যাবে না। প্রোগ্রামে তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে শিক্ষা পরিচিতি ও শিক্ষাদর্শন, শিশুর বিকাশ ও শিখন, শিক্ষণ পদ্ধতি-কৌশল ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাক্রম ও শিখন সামগ্রী, শিখন মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন, ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন-বাংলা ও ইংরেজি, গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গঠন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শিল্পকলা কোর্সগুলো এবং হাতে কলমে অনুশীলনের জন্য চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া বিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ বলেন, এবার ১২টি পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কোর্সটি চালু হচ্ছে। অর্থাৎ সংখ্যাটি খুব বেশি হচ্ছে না। সেই সুবাদে কৌশলগত কারণে এই কোর্স করলেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন বা বাড়তি সুবিধা পাবেন এমন কোনো শর্ত এই পর্যায়ে নেই।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রাথমিকে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) ১০ মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু হচ্ছে। ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ শীর্ষক প্রোগ্রামটি আগামী জানুয়ারিতে দেশের ১২টি পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।
পর্যায়ক্রমে অন্যান্য পিটিআইয়ের এই প্রোগ্রাম চালু হবে। মোট ১২ হাজার টাকা দিয়ে স্নাতক ও সমমানের ডিগ্রিধারীরা এই প্রোগ্রামটি করতে পারবেন। নেপের পরিচালনায় চলবে প্রোগ্রামটি।
মঙ্গলবার, (১৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। এ সময় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘আমি আশা করি উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এসব কোর্স ধীরে ধীরে চালু করবে। পরে যখন দক্ষ জনবল পেয়ে যাব, তখন আমরা শুধু এর মধ্য থেকে নিয়োগ করতে পারবো। এখন সেই সুযোগটা নেই। তবে ভবিষ্যতে আশা করবো, আমাদের দেশেও শিক্ষকদের জন্য লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু হোক।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডিপিএড ডিগ্রিধারীরা এই মুহূর্তেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন না। তবে ভবিষ্যতে যখন এই কোর্সের পরিধি বাড়বে এবং পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল থেকে শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও মাধ্যমিকে বিএড কোর্স থাকলে বাড়তি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়।
লিখিত বক্তব্যে ফরিদ আহমদ বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে আগামী জানুয়ারিতে যে ১২টি পিটিআইয়ে ডিপ্লোমা প্রোগ্রামটি চালু হচ্ছে সেগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, জয়দেবপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া। এটির মেয়াদ হবে ১০ মাস এবং তা অনাবাসিক ও বৈকালিক।
তিনি আরও বলেন- শিক্ষাদর্শন, শিক্ষণ কৌশল ও মূল্যায়ন কাঠামো শেখার মাধ্যমে এই ডিগ্রিধারী আধুনিক শিক্ষক হিসেবে দক্ষ হয়ে উঠবেন। যা ভবিষ্যৎ পেশাগত জীবনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
নেপ মহাপরিচালক জানান, দেশের যে কোনো স্থায়ী নাগরিক এই প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২ দশমিক ২৫ এবং ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২ দশমিক ৮) স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষা জীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
আবেদনকারীকে নেপের ডিপিএড বোর্ড আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মোট আসন ১ হাজার ৩২০টি। নির্ধারিত আসনে ভর্তির জন্য ৫০ নম্বরের বহুনির্বাচনী প্রশ্নে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান; সময় ৫০ মিনিট) ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা ভর্তির শর্ত পূরণ সাপেক্ষে পিটিআইভিত্তিক মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি হবেন।
দুটি সেমিস্টারে ১০ মাসের এই প্রোগ্রামের ফি সেমিস্টার প্রতি ছয় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রোগ্রামটিতে মোট ১২০০ নম্বরের মূল্যায়ন হবে। ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয়া যাবে না। প্রোগ্রামে তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে শিক্ষা পরিচিতি ও শিক্ষাদর্শন, শিশুর বিকাশ ও শিখন, শিক্ষণ পদ্ধতি-কৌশল ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাক্রম ও শিখন সামগ্রী, শিখন মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন, ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন-বাংলা ও ইংরেজি, গাণিতিক ও বৈজ্ঞানিক দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গঠন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শিল্পকলা কোর্সগুলো এবং হাতে কলমে অনুশীলনের জন্য চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া বিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে নেপের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ বলেন, এবার ১২টি পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে কোর্সটি চালু হচ্ছে। অর্থাৎ সংখ্যাটি খুব বেশি হচ্ছে না। সেই সুবাদে কৌশলগত কারণে এই কোর্স করলেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন বা বাড়তি সুবিধা পাবেন এমন কোনো শর্ত এই পর্যায়ে নেই।