ঈদ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে আয়োজিত ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী স্থানীয় একটি ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। তিনি এই ঘটনাকে একটি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর সরাসরি মবের হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘সিনেমা নয়, বন্ধ করতে হবে মবের উল্লম্ফন।’
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে আশফাক নিপুন লিখেছেন—
> “অতি সম্প্রতি তৌহিদী জনতার হুমকির কারণে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ, সিলেটে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ… আর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আপনি এখনো পড়ে আছেন চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে?”
তিনি সরাসরি সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলে বলেন,
> “বন্দরের ব্যাপারে যেভাবে যেকোনো প্রতিরোধ মোকাবিলার ঘোষণা আসে আপনার কাছ থেকে, মব নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সে রকম কঠোর প্রতিরোধের ঘোষণা কবে আসবে আপনার কাছ থেকে?”
পোস্টের একপর্যায়ে তিনি লেখেন—
> “অবিলম্বে কালিহাতীতে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করুন, যেকোনো পর্যটনকেন্দ্র, পাবলিক প্লেসকে ঝুঁকিমুক্ত করার ব্যবস্থা করুন এবং সবার আগে মবের উল্লম্ফন বন্ধ করুন। গত ১০ মাসে এটা না করতে পারার কাফফারা হিসেবে আগামী ১০ মাস আপনার মূল কাজ হওয়া উচিত এটা।”
কী ঘটেছিল কালিহাতীতে?
ঈদের দিন থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকার জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী কামরুজ্জামান (সাইফুল) ও সাজু মেহেদী।
তাঁরা হলটি জেলা পরিষদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে পাঁচ দিনের জন্য অগ্রিম অর্থ প্রদান করেন, প্রচারণা চালান, টিকিট ছাপান এবং পরিবেশ তৈরি করেন।
তবে গত শুক্রবার বিকেলে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেখানে দাবি ওঠে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের। আন্দোলনকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে মসজিদ-মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে এবং “অসামাজিক কার্যকলাপ” ঘটতে পারে।
পরদিন আয়োজকেরা নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ করে দেন।
প্রশাসনের ভূমিকা কী?
কালিহাতী উপজেলার ইউএনও খায়রুল ইসলাম বলেন,
> “জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে তাঁরা সিনেমা চালাচ্ছিলেন। বন্ধের জন্য আমার অফিসে আবেদন জমা পড়েছে। তবে আমি ছুটিতে আছি।”
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান,
> “ভাড়া দেওয়ার সময় শর্ত ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হলে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। এর বাইরে কী হয়েছে, জানি না।”
তবে কালিহাতী থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন,
> “কিছু লোক সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধের দাবি নিয়ে এসেছিল। আমি বলেছি, অনুমতির বিষয়টি প্রশাসনের। আয়োজকেরা আমাদের কাছে নিরাপত্তার কথা বলেননি।”
আয়োজকদের আর্থিক ক্ষতি
আয়োজক সাইফুল ও মেহেদী জানিয়েছেন,
সিনেমা প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।
তাঁদের দাবি, শুরু থেকেই একটি মহল এর বিরোধিতা করেছে, পোস্টার লাগাতে দেয়নি, প্রচারণায় বাধা দিয়েছে। দর্শকের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হয়েছে।
বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নির্মাতা নিপুনের মতে, এই ঘটনা শুধু একটি সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ হওয়ার ঘটনা নয়; এটি মব বা ধর্মীয় চাপের মুখে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ।
তাঁর বক্তব্য, রাষ্ট্রকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শিল্পচর্চার অধিকার রক্ষা করতে হবে।
বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
ঈদ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে আয়োজিত ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী স্থানীয় একটি ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। তিনি এই ঘটনাকে একটি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর সরাসরি মবের হস্তক্ষেপ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘সিনেমা নয়, বন্ধ করতে হবে মবের উল্লম্ফন।’
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে আশফাক নিপুন লিখেছেন—
> “অতি সম্প্রতি তৌহিদী জনতার হুমকির কারণে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ, সিলেটে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ… আর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আপনি এখনো পড়ে আছেন চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে?”
তিনি সরাসরি সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলে বলেন,
> “বন্দরের ব্যাপারে যেভাবে যেকোনো প্রতিরোধ মোকাবিলার ঘোষণা আসে আপনার কাছ থেকে, মব নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সে রকম কঠোর প্রতিরোধের ঘোষণা কবে আসবে আপনার কাছ থেকে?”
পোস্টের একপর্যায়ে তিনি লেখেন—
> “অবিলম্বে কালিহাতীতে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করুন, যেকোনো পর্যটনকেন্দ্র, পাবলিক প্লেসকে ঝুঁকিমুক্ত করার ব্যবস্থা করুন এবং সবার আগে মবের উল্লম্ফন বন্ধ করুন। গত ১০ মাসে এটা না করতে পারার কাফফারা হিসেবে আগামী ১০ মাস আপনার মূল কাজ হওয়া উচিত এটা।”
কী ঘটেছিল কালিহাতীতে?
ঈদের দিন থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকার জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনের উদ্যোগ নেন স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী কামরুজ্জামান (সাইফুল) ও সাজু মেহেদী।
তাঁরা হলটি জেলা পরিষদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে পাঁচ দিনের জন্য অগ্রিম অর্থ প্রদান করেন, প্রচারণা চালান, টিকিট ছাপান এবং পরিবেশ তৈরি করেন।
তবে গত শুক্রবার বিকেলে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেখানে দাবি ওঠে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের। আন্দোলনকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে মসজিদ-মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে এবং “অসামাজিক কার্যকলাপ” ঘটতে পারে।
পরদিন আয়োজকেরা নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ করে দেন।
প্রশাসনের ভূমিকা কী?
কালিহাতী উপজেলার ইউএনও খায়রুল ইসলাম বলেন,
> “জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে তাঁরা সিনেমা চালাচ্ছিলেন। বন্ধের জন্য আমার অফিসে আবেদন জমা পড়েছে। তবে আমি ছুটিতে আছি।”
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান,
> “ভাড়া দেওয়ার সময় শর্ত ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হলে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। এর বাইরে কী হয়েছে, জানি না।”
তবে কালিহাতী থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন,
> “কিছু লোক সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধের দাবি নিয়ে এসেছিল। আমি বলেছি, অনুমতির বিষয়টি প্রশাসনের। আয়োজকেরা আমাদের কাছে নিরাপত্তার কথা বলেননি।”
আয়োজকদের আর্থিক ক্ষতি
আয়োজক সাইফুল ও মেহেদী জানিয়েছেন,
সিনেমা প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।
তাঁদের দাবি, শুরু থেকেই একটি মহল এর বিরোধিতা করেছে, পোস্টার লাগাতে দেয়নি, প্রচারণায় বাধা দিয়েছে। দর্শকের আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে প্রদর্শনী বন্ধ করতে হয়েছে।
বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
নির্মাতা নিপুনের মতে, এই ঘটনা শুধু একটি সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধ হওয়ার ঘটনা নয়; এটি মব বা ধর্মীয় চাপের মুখে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ।
তাঁর বক্তব্য, রাষ্ট্রকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শিল্পচর্চার অধিকার রক্ষা করতে হবে।