নায়িকা শবনম
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ‘আম্মাজান’খ্যাত নায়িকা শবনম আজ ৭৯ বছরে পার রাখছেন। আর চলচ্চিত্র জীবনের পথচলায় তিনি ৬৫ বছরে পা রাখলেন। ১৯৬০ সালের ২ সেপ্টেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা এহতেশাম পরিচালিত ‘রাজধানীর বুকে’ সিনেমায় ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি’ গানেই শুধু পারফর্ম করে প্রথম আলোচনায় আসেন শবনম।
তার পারফর্ম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শক। যে কারণে এহতেশামের প্রযোজনায় তারই ভাই মুস্তাফিজ ‘ হারানো দিন’ সিনেমাতে ‘রহমান-শবনম’কে জুটি হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেন। সিনেমাটি ১৯৬১ সালের ৪ আগস্ট মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই রহমান-শবনম’র অভিনয়ে মুগ্ধ হয় দর্শক।
এরপর তারা দু’জন বাংলা-উর্দু সিনেমায় জুটি হিসেবে অভিনয় করেন ‘জোয়ার ভাটা’, ‘আমার সংসার’,‘ চান্দা’,‘ তালাশ’, ‘প্রীত না জানে রীত’,‘ দরশন’,‘ চলো মান গায়ে’,‘ চাহাত’সহ আরো বেশ কয়েকটি সিনেমা। ১৯৬১-এর পর পরপর কয়েকটি বছর ছিলো শবনমের জন্য সৌভাগ্যের বছর। কারণ ১৯৬২ সালে মুক্তি পায় এহতেশামের ‘চান্দা’, ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায় মুস্তাফিজের ‘তালাশ’, মসউদ চৌধুরীর ‘প্রীত না জানে রীত’, ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় মুস্তাফিজের ‘পয়সে’, (৬৪ সালেই সুভাষ দত্তের সুতরাং সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে নায়িকা কবরীর অভিষেক হয়), ১৯৬৫ সালে মুক্তি পায় সাদেক খানের ‘ক্যায়সে কাহু’, ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় সুরুর বারা বাঙ্কভী’র ‘আখেরী স্টেশন’ ( যে সিনেমায় নায়ক রাজ রাজ্জাক প্রথম ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন)। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় রহমানের ‘দরশন’। একই বছর চলচ্চিত্রে এহতেশোমের ‘চকোরী’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা শাবানার। ‘ তবে একটা সময় এসে শবনম পাকিস্তানের সিনেমায় অভিনয়ে তুমুল ব্যস্ত হয়ে উঠায় বাংলাদেশে খুউব বেশি সিনেমাতে অভিনয় করার সুযোগ হয়ে উঠেনি। অশোক ঘোষের ‘নাচের পুতুল’ সিনেমাতে অভিনয় করে আবারো সাড়া ফেলেন শবনম।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৮ জানুয়ারি সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই সিনেমারই গান ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’ এখনো শ্রোতা দর্শকের ভীষণ প্রিয় একটি গান। এরপরও শবনম ‘শর্ত’,‘ সন্ধান’,‘ জুলি’, ‘কারণ’, ‘যোগাযোগ’,‘ সন্দেহ’ সিনেমাতে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালের ২৫ জুন দীর্ঘ বিরতির পর বাংলাদেশে শবনম অভিনীত কেবানো সিনেমা মুক্তি পায়।
সিনেমাটির নাম ছিলো ‘আম্মাজান’, এটি নির্মাণ করেছিলেন কাজী হায়াৎ। এই সিনেমাতে তিনি নায়ক মান্নার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটিই ছিলো তার অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা। আর সর্বশেষ সিনেমাতেই অনবদ্য অভিনয়ের কারণে এখনো দর্শকের কাছে তিনি ‘আম্মাজান’ হিসেবেই সমাদৃত হয়ে আছেন।
এদিকে আজ শবনমের জন্মদিন। জন্মদিনে কখনোই তিনি বিশেষ কোনো আয়োজন করেন না। দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপনও করেন না তিনি। শবনম বলেন,‘ ছোটবেলায় জন্মদিন উদযাপন ছিলো অনেক আনন্দের। গিফট পেতাম, খুউব ভালোলাগতো। বাবা মা’কে সবসময়ই ভীষণ মিস করি। মিস করি ছোটবেলার বন্ধুদের।
আর মিস করি ফেলে আসা দিন। জীবনের শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছি। সবার কাছে দোয়া চাই যতোদিন বাঁচি, যেন সুস্থ অবস্থাতেই বাঁচি। আর আমার দেশটা যেন ভালো থাকে, দেশের মানুষ যেন শান্তিতে থাকে।’
নায়িকা শবনম
রোববার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ‘আম্মাজান’খ্যাত নায়িকা শবনম আজ ৭৯ বছরে পার রাখছেন। আর চলচ্চিত্র জীবনের পথচলায় তিনি ৬৫ বছরে পা রাখলেন। ১৯৬০ সালের ২ সেপ্টেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা এহতেশাম পরিচালিত ‘রাজধানীর বুকে’ সিনেমায় ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি’ গানেই শুধু পারফর্ম করে প্রথম আলোচনায় আসেন শবনম।
তার পারফর্ম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শক। যে কারণে এহতেশামের প্রযোজনায় তারই ভাই মুস্তাফিজ ‘ হারানো দিন’ সিনেমাতে ‘রহমান-শবনম’কে জুটি হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেন। সিনেমাটি ১৯৬১ সালের ৪ আগস্ট মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই রহমান-শবনম’র অভিনয়ে মুগ্ধ হয় দর্শক।
এরপর তারা দু’জন বাংলা-উর্দু সিনেমায় জুটি হিসেবে অভিনয় করেন ‘জোয়ার ভাটা’, ‘আমার সংসার’,‘ চান্দা’,‘ তালাশ’, ‘প্রীত না জানে রীত’,‘ দরশন’,‘ চলো মান গায়ে’,‘ চাহাত’সহ আরো বেশ কয়েকটি সিনেমা। ১৯৬১-এর পর পরপর কয়েকটি বছর ছিলো শবনমের জন্য সৌভাগ্যের বছর। কারণ ১৯৬২ সালে মুক্তি পায় এহতেশামের ‘চান্দা’, ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায় মুস্তাফিজের ‘তালাশ’, মসউদ চৌধুরীর ‘প্রীত না জানে রীত’, ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় মুস্তাফিজের ‘পয়সে’, (৬৪ সালেই সুভাষ দত্তের সুতরাং সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে নায়িকা কবরীর অভিষেক হয়), ১৯৬৫ সালে মুক্তি পায় সাদেক খানের ‘ক্যায়সে কাহু’, ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় সুরুর বারা বাঙ্কভী’র ‘আখেরী স্টেশন’ ( যে সিনেমায় নায়ক রাজ রাজ্জাক প্রথম ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন)। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় রহমানের ‘দরশন’। একই বছর চলচ্চিত্রে এহতেশোমের ‘চকোরী’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা শাবানার। ‘ তবে একটা সময় এসে শবনম পাকিস্তানের সিনেমায় অভিনয়ে তুমুল ব্যস্ত হয়ে উঠায় বাংলাদেশে খুউব বেশি সিনেমাতে অভিনয় করার সুযোগ হয়ে উঠেনি। অশোক ঘোষের ‘নাচের পুতুল’ সিনেমাতে অভিনয় করে আবারো সাড়া ফেলেন শবনম।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৮ জানুয়ারি সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই সিনেমারই গান ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’ এখনো শ্রোতা দর্শকের ভীষণ প্রিয় একটি গান। এরপরও শবনম ‘শর্ত’,‘ সন্ধান’,‘ জুলি’, ‘কারণ’, ‘যোগাযোগ’,‘ সন্দেহ’ সিনেমাতে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালের ২৫ জুন দীর্ঘ বিরতির পর বাংলাদেশে শবনম অভিনীত কেবানো সিনেমা মুক্তি পায়।
সিনেমাটির নাম ছিলো ‘আম্মাজান’, এটি নির্মাণ করেছিলেন কাজী হায়াৎ। এই সিনেমাতে তিনি নায়ক মান্নার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটিই ছিলো তার অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা। আর সর্বশেষ সিনেমাতেই অনবদ্য অভিনয়ের কারণে এখনো দর্শকের কাছে তিনি ‘আম্মাজান’ হিসেবেই সমাদৃত হয়ে আছেন।
এদিকে আজ শবনমের জন্মদিন। জন্মদিনে কখনোই তিনি বিশেষ কোনো আয়োজন করেন না। দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপনও করেন না তিনি। শবনম বলেন,‘ ছোটবেলায় জন্মদিন উদযাপন ছিলো অনেক আনন্দের। গিফট পেতাম, খুউব ভালোলাগতো। বাবা মা’কে সবসময়ই ভীষণ মিস করি। মিস করি ছোটবেলার বন্ধুদের।
আর মিস করি ফেলে আসা দিন। জীবনের শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছি। সবার কাছে দোয়া চাই যতোদিন বাঁচি, যেন সুস্থ অবস্থাতেই বাঁচি। আর আমার দেশটা যেন ভালো থাকে, দেশের মানুষ যেন শান্তিতে থাকে।’