আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বাজারে দেশীয় আমের পরিচয় করে দিতে কাতারের রাজধানী দোহায় প্রথমবারের মতো হচ্ছে ‘বাংলাদেশি ফলমেলা’ আম উৎসব। ২৫ জুন সপ্তাহব্যাপী মেলা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকার এমন উদ্যোগ নিলে মধ্যপ্রাচ্যেসহ পৃশিবীর অন্যান্য দেশের বাজারে বাংলাদেশি মৌসুমি ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হবে।
কাতারে বাংলাদেশি ফলমেলা, আমাদের রপ্তানীকারকদের জন্য সুসংবাদ, বড় বাজার ধরার একটা উপলক্ষ্য হতে পারে বলে মনে করেন দেশে কৃষিপণ্য রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা তিন ফ্লাইটে একশ টন আম নিয়ে যাব। মেলায় গেলে বুঝতে পারবো। যেহেতু এটা প্রথম মেলে বাংলাদেশের পরিচিতিটা তো হবে। সেখানকার আপগ্রেট মার্কেটে বাংলাদেশের আমের একটা পরিচিতি হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রেগুলার কার্টুনগুলোতে এক্সপোর্ট হয় আমরা সেগুলো বাদ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা কোয়ালিটি আর প্যাকেজিংটা ডেভেলপ করে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা সবাইকে এমবার্গো দিয়ে দিয়েছি, প্রিন্টন্টেড ও স্টান্ডাট কার্টুনে আম নিতে হবে। সেখানে তো বড় বড় ব্যবসায়ীরা আসবে, দেখবে এজন্য যাতে করে বাংলাদেশের ভাবমুর্তিটা ঠিক থাকে।’
দোহায় ‘ঘরোয়া’ রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী বেলায়াত হোসেন আরজু আমের মেলা নিয়ে উচ্ছ্বাসিত। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘গত দুই-তিন বছর ধরে ভারত ও পাকিস্তানের আম মেলা হলেও এবারই প্রথম বাংলাদেশের আম উৎসব হচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মেলা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের আমকে তুলে ধরার এক অসাধারণ সুযোগ। তার মতে, কাতারের বড় বড় ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলো এগিয়ে এলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশী পণ্যের ব্যাপক পরিচিতি ঘটবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কাতারে ‘ফার্ম থেকে ঘরে’ নামে একটি অনলাইন বিজনেস গ্রুপের স্বাতাধীকারী নূর আলম আকাশ বলেন, মেলা উপলক্ষ্যে দূতাবাস থেকে যে সহোযোগীতা চেয়েছি ওনারা আস্বস্ত করেছেন আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।
মেলায় কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বাত্বক সহোযোগীতা করছে বলে জানায় মেলার সহযোগী পার্টনার হিসেবে কাজ করছে এম্পিরিক রিসার্চ লিমিটেড। প্রতিষ্টানটির চেয়ারম্যান ময়ূরি ফাতেমা ঊর্মি জানান, কাতারে প্রথমবারেরমত আম মেলা দুই দেশের বানিজ্যের নতুন দিগন্ত সূচনা করবে। এই উৎসব কেবল আমের প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার একটি প্ল্যাটফর্ম। সেখানে এজন্য আমাদের দেশের ফলের গুণগত মান ও স্বাদ আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরার এটি একটি উদ্যোগ সেই সাথে বাংলাদেশের কৃষি পণ্য ও কৃষি প্রকৃয়াজাত পণ্যের নতুন বাজার তৈরির সম্ভবনা তৈরি হবে।
এ বিষয়ে কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি শেষ পযায়য়ে। এখানে ছোট উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ীরাও অংশগ্রহণ করছেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমের মেলাটি বাংলাদেশ ও কাতার সরকারের একটি যৌথ প্রয়াস। কাতারের কাতারের সুক ওয়াকিফ ম্যানেজমেন্টের সহযোগীতায় আমরা এ প্রয়াসটি করতে যাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে মেলায় অংশগ্রহণ করতে যাওয়া ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কাজ করছে দূতাবাস। তিনি আরো বলেন, ‘মেলার জন্য বাংলাদেশ থেকে তিনটি বিশেষ বিমানে করে আম নিয়ে আসছি। কাতার সরকার আমাদের যাবতীয় ইনফাসট্রাকচার থেকে শুরু করে সকল ধরণের সহযোগীতা করছে। আমরা আশাকরছি এ উৎসবের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের যে সহযোগীতা তা ভবিষ্যৎ এ অব্যাহত থাকবে।আর আগামীতে আরো বড় বড় প্রোগ্রাম ও দুই দেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক আরো জোরদার হবে।’
কাতারে প্রথমবারের মতো সপ্তাহব্যাপী ফল মেলা শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। কাতার দূতাবাসের উদ্যোগে শুরু হতে যাওয়া সপ্তাহব্যাপী ওই ফল মেলায় ৬০টি স্টল থাকবে। মেলা চলবে আগামী পহেলা জুলাই পর্যন্ত। এর মধ্যে দিয়ে কাতারে আম রফতানি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক(পিডি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সংবাদকে বলেন,‘কাতার ফেয়ারে আগে ভারত ও পাকিস্তান ডমিনেট করতো। কিন্তু এবার আমরা যেহেতু অংশগ্রহণ করছি, তাদের সেই সুযোগ কমে যাবে। প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কাতারে থাকেন। মেলার মাধ্যমে দেশটিতে বাংলাদেশি আমের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সেখানে আমাদের আমের রফতানি বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশি আম বিশ্বজুড়ে তার স্বাদ, গন্ধ ও বৈচিত্র্যের জন্য সুপরিচিত। হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলি, গোপালভোগসহ নানা জাতের আম এই উৎসবে প্রদর্শিত ও বিক্রির জন্য রাখা হবে বলে জানা গেছে। আয়োজকরা আশা করছেন, কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি স্থানীয় অধিবাসীদের কাছেও এটি বাংলাদেশি ফল এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এক দারুণ সুযোগ হয়ে উঠবে।
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বাজারে দেশীয় আমের পরিচয় করে দিতে কাতারের রাজধানী দোহায় প্রথমবারের মতো হচ্ছে ‘বাংলাদেশি ফলমেলা’ আম উৎসব। ২৫ জুন সপ্তাহব্যাপী মেলা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকার এমন উদ্যোগ নিলে মধ্যপ্রাচ্যেসহ পৃশিবীর অন্যান্য দেশের বাজারে বাংলাদেশি মৌসুমি ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হবে।
কাতারে বাংলাদেশি ফলমেলা, আমাদের রপ্তানীকারকদের জন্য সুসংবাদ, বড় বাজার ধরার একটা উপলক্ষ্য হতে পারে বলে মনে করেন দেশে কৃষিপণ্য রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা তিন ফ্লাইটে একশ টন আম নিয়ে যাব। মেলায় গেলে বুঝতে পারবো। যেহেতু এটা প্রথম মেলে বাংলাদেশের পরিচিতিটা তো হবে। সেখানকার আপগ্রেট মার্কেটে বাংলাদেশের আমের একটা পরিচিতি হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রেগুলার কার্টুনগুলোতে এক্সপোর্ট হয় আমরা সেগুলো বাদ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা কোয়ালিটি আর প্যাকেজিংটা ডেভেলপ করে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা সবাইকে এমবার্গো দিয়ে দিয়েছি, প্রিন্টন্টেড ও স্টান্ডাট কার্টুনে আম নিতে হবে। সেখানে তো বড় বড় ব্যবসায়ীরা আসবে, দেখবে এজন্য যাতে করে বাংলাদেশের ভাবমুর্তিটা ঠিক থাকে।’
দোহায় ‘ঘরোয়া’ রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী বেলায়াত হোসেন আরজু আমের মেলা নিয়ে উচ্ছ্বাসিত। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘গত দুই-তিন বছর ধরে ভারত ও পাকিস্তানের আম মেলা হলেও এবারই প্রথম বাংলাদেশের আম উৎসব হচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মেলা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের আমকে তুলে ধরার এক অসাধারণ সুযোগ। তার মতে, কাতারের বড় বড় ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলো এগিয়ে এলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশী পণ্যের ব্যাপক পরিচিতি ঘটবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কাতারে ‘ফার্ম থেকে ঘরে’ নামে একটি অনলাইন বিজনেস গ্রুপের স্বাতাধীকারী নূর আলম আকাশ বলেন, মেলা উপলক্ষ্যে দূতাবাস থেকে যে সহোযোগীতা চেয়েছি ওনারা আস্বস্ত করেছেন আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।
মেলায় কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বাত্বক সহোযোগীতা করছে বলে জানায় মেলার সহযোগী পার্টনার হিসেবে কাজ করছে এম্পিরিক রিসার্চ লিমিটেড। প্রতিষ্টানটির চেয়ারম্যান ময়ূরি ফাতেমা ঊর্মি জানান, কাতারে প্রথমবারেরমত আম মেলা দুই দেশের বানিজ্যের নতুন দিগন্ত সূচনা করবে। এই উৎসব কেবল আমের প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার একটি প্ল্যাটফর্ম। সেখানে এজন্য আমাদের দেশের ফলের গুণগত মান ও স্বাদ আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরার এটি একটি উদ্যোগ সেই সাথে বাংলাদেশের কৃষি পণ্য ও কৃষি প্রকৃয়াজাত পণ্যের নতুন বাজার তৈরির সম্ভবনা তৈরি হবে।
এ বিষয়ে কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি শেষ পযায়য়ে। এখানে ছোট উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ীরাও অংশগ্রহণ করছেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমের মেলাটি বাংলাদেশ ও কাতার সরকারের একটি যৌথ প্রয়াস। কাতারের কাতারের সুক ওয়াকিফ ম্যানেজমেন্টের সহযোগীতায় আমরা এ প্রয়াসটি করতে যাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে মেলায় অংশগ্রহণ করতে যাওয়া ব্যবসায়ীদের সহায়তায় কাজ করছে দূতাবাস। তিনি আরো বলেন, ‘মেলার জন্য বাংলাদেশ থেকে তিনটি বিশেষ বিমানে করে আম নিয়ে আসছি। কাতার সরকার আমাদের যাবতীয় ইনফাসট্রাকচার থেকে শুরু করে সকল ধরণের সহযোগীতা করছে। আমরা আশাকরছি এ উৎসবের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের যে সহযোগীতা তা ভবিষ্যৎ এ অব্যাহত থাকবে।আর আগামীতে আরো বড় বড় প্রোগ্রাম ও দুই দেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক আরো জোরদার হবে।’
কাতারে প্রথমবারের মতো সপ্তাহব্যাপী ফল মেলা শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। কাতার দূতাবাসের উদ্যোগে শুরু হতে যাওয়া সপ্তাহব্যাপী ওই ফল মেলায় ৬০টি স্টল থাকবে। মেলা চলবে আগামী পহেলা জুলাই পর্যন্ত। এর মধ্যে দিয়ে কাতারে আম রফতানি আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক(পিডি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সংবাদকে বলেন,‘কাতার ফেয়ারে আগে ভারত ও পাকিস্তান ডমিনেট করতো। কিন্তু এবার আমরা যেহেতু অংশগ্রহণ করছি, তাদের সেই সুযোগ কমে যাবে। প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কাতারে থাকেন। মেলার মাধ্যমে দেশটিতে বাংলাদেশি আমের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সেখানে আমাদের আমের রফতানি বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশি আম বিশ্বজুড়ে তার স্বাদ, গন্ধ ও বৈচিত্র্যের জন্য সুপরিচিত। হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলি, গোপালভোগসহ নানা জাতের আম এই উৎসবে প্রদর্শিত ও বিক্রির জন্য রাখা হবে বলে জানা গেছে। আয়োজকরা আশা করছেন, কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি স্থানীয় অধিবাসীদের কাছেও এটি বাংলাদেশি ফল এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এক দারুণ সুযোগ হয়ে উঠবে।