লেবাননের অভ্যন্তরে লড়াইয়ে আইডিএফের ২ সেনা নিহত, আহত ১৮
লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সঙ্গে হিজবুল্লাহর দুই দফায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে দ্বিতীয় দফা হামলায় প্রায় এক টন ওজনের বোমাযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি দেশটিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ইরান। আগ্রাসনের অংশ হিসেবে ইরান এখন গাজা, লেবানন ও পশ্চিম তীরের মতো তেল আবিবের মনোযোগে পরিণত হয়েছে। ইহুদি রাষ্ট্রটি এখন ইরানে হামলার ছক কষছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার ইসরায়েল ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হোদেইদাহ বন্দরে হামলা চালিয়েছে। এই আক্রমণ ইরানে ইসরায়েলের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার ইঙ্গিত দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা তেল অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
কিন্তু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালে তা একই সঙ্গে ইসরায়েল ও মার্কিন স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ধরনের কোনো হামলা চালানো হলে তা পুরো মাত্রার যুদ্ধের সূচনা ঘটাতে পারে। আর তাতে ইরান তাদের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা পূরণে উঠেপরে লাগতে পারে।
ইরানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে তেল ও গ্যাস রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। এসব স্থাপনায় হামলা চালালে ইরান নিশ্চিতভাবে হরমুজ প্রণালির মতো গুরুত্বপূর্ণ জলপথ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করবে। যার অনিবার্য প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি এড়াতে পারবে না।
মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ আছে আর ইসরায়েলকে এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ইরানে হামলার আওতা বিবেচনা করতে হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এ কারণে ওয়াশিংটন যেটিকে উপযুক্ত, বৈধ ও কম ঝুঁকিমুক্ত বলে বিবেচনা করবে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে সম্ভবত তেমন লক্ষ্যই বেছে নিতে হবে। লেবানন ও অন্য যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে মনোযোগ দেয়ার জন্য এই অধ্যায়টি শেষ করার মধ্যেই ইসরায়েলের বৃহত্তম স্বার্থ নিহিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
দুই দফায় মুখোমুখি সংঘর্ষ
লেবাননে হিজবুল্লাহ ধ্বংসে স্থল অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল। এর একদিন পরই সীমান্ত থেকে ৪০০ মিটার দেশটির অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে আইডিএফ। হিজবুল্লাহর দাবি, তারা দক্ষিণ লেবাননের ওদাইশেহ শহরের খুব কাছে অনুপ্রবেশকারীদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। তবে পাল্টা আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ‘ব্লু লাইন’ অতিক্রম করা ইহুদি সেনারা। বুধবার (২ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বরাতে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভোরে লেবাননের সীমান্তবর্তী ওদাইশেহ শহরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই সেনা নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।
ওই সংঘর্ষের আগে সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের ২৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে বলে আইডিএফ। দখলদার সেনারা বলেছে অভিযান শেষ হলে উপযুক্ত সময়ে তাদের নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানাবে।
লেবাননের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বীকার করলেও পরক্ষণে সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেয় আইডিএফ। হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ রয়টার্স ও এনবিসি-কে জানান আইডিএফের সাথে তাদের সংঘর্ষটি ‘যুদ্ধের প্রথম রাউন্ডের’ অংশ। এবং জঙ্গি গোষ্ঠী আইডিএফ-কে প্রতিরোধে তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এদিন দুপুরে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ হয় হিজবুল্লাহর। লেবাননের মারুন আল-রাস শহরে ঢুকে পড়ায় সংঘর্ষটি বাঁধে। শহরটি ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে। পূর্ব দিক থেকে তারা প্রবেশ করেছিল বলে হিজবুল্লাহর দাবি।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জন্য দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান গাজায় প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কেননা হিজবুল্লাহ একটি শক্তিশালী শত্রুপক্ষ, যারা দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তাদের সৈন্যরা সিরিয়ায় অনেক বছর ধরে যুদ্ধ করেছে।
লেবাননের অভ্যন্তরে লড়াইয়ে আইডিএফের ২ সেনা নিহত, আহত ১৮
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সঙ্গে হিজবুল্লাহর দুই দফায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে দ্বিতীয় দফা হামলায় প্রায় এক টন ওজনের বোমাযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি দেশটিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ইরান। আগ্রাসনের অংশ হিসেবে ইরান এখন গাজা, লেবানন ও পশ্চিম তীরের মতো তেল আবিবের মনোযোগে পরিণত হয়েছে। ইহুদি রাষ্ট্রটি এখন ইরানে হামলার ছক কষছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার ইসরায়েল ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা হোদেইদাহ বন্দরে হামলা চালিয়েছে। এই আক্রমণ ইরানে ইসরায়েলের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার ইঙ্গিত দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা তেল অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
কিন্তু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালে তা একই সঙ্গে ইসরায়েল ও মার্কিন স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ধরনের কোনো হামলা চালানো হলে তা পুরো মাত্রার যুদ্ধের সূচনা ঘটাতে পারে। আর তাতে ইরান তাদের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা পূরণে উঠেপরে লাগতে পারে।
ইরানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে তেল ও গ্যাস রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। এসব স্থাপনায় হামলা চালালে ইরান নিশ্চিতভাবে হরমুজ প্রণালির মতো গুরুত্বপূর্ণ জলপথ বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করবে। যার অনিবার্য প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি এড়াতে পারবে না।
মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ আছে আর ইসরায়েলকে এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ইরানে হামলার আওতা বিবেচনা করতে হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এ কারণে ওয়াশিংটন যেটিকে উপযুক্ত, বৈধ ও কম ঝুঁকিমুক্ত বলে বিবেচনা করবে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে সম্ভবত তেমন লক্ষ্যই বেছে নিতে হবে। লেবানন ও অন্য যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে মনোযোগ দেয়ার জন্য এই অধ্যায়টি শেষ করার মধ্যেই ইসরায়েলের বৃহত্তম স্বার্থ নিহিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
দুই দফায় মুখোমুখি সংঘর্ষ
লেবাননে হিজবুল্লাহ ধ্বংসে স্থল অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল। এর একদিন পরই সীমান্ত থেকে ৪০০ মিটার দেশটির অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে আইডিএফ। হিজবুল্লাহর দাবি, তারা দক্ষিণ লেবাননের ওদাইশেহ শহরের খুব কাছে অনুপ্রবেশকারীদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। তবে পাল্টা আক্রমণের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ‘ব্লু লাইন’ অতিক্রম করা ইহুদি সেনারা। বুধবার (২ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বরাতে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভোরে লেবাননের সীমান্তবর্তী ওদাইশেহ শহরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই সেনা নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।
ওই সংঘর্ষের আগে সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের ২৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে বলে আইডিএফ। দখলদার সেনারা বলেছে অভিযান শেষ হলে উপযুক্ত সময়ে তাদের নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানাবে।
লেবাননের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বীকার করলেও পরক্ষণে সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেয় আইডিএফ। হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ রয়টার্স ও এনবিসি-কে জানান আইডিএফের সাথে তাদের সংঘর্ষটি ‘যুদ্ধের প্রথম রাউন্ডের’ অংশ। এবং জঙ্গি গোষ্ঠী আইডিএফ-কে প্রতিরোধে তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এদিন দুপুরে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ হয় হিজবুল্লাহর। লেবাননের মারুন আল-রাস শহরে ঢুকে পড়ায় সংঘর্ষটি বাঁধে। শহরটি ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে। পূর্ব দিক থেকে তারা প্রবেশ করেছিল বলে হিজবুল্লাহর দাবি।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জন্য দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান গাজায় প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কেননা হিজবুল্লাহ একটি শক্তিশালী শত্রুপক্ষ, যারা দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং তাদের সৈন্যরা সিরিয়ায় অনেক বছর ধরে যুদ্ধ করেছে।